মধুর সমাপ্তির অপেক্ষায় ইংল্যান্ড

১৯৮৫-৮৬-এর পর ২০১০-১১। মাইক গ্যাটিংয়ের পর অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। এই দুটি বিষয় এখন নিশ্চিত। প্রকৃতি খুব বড়সড় কোনো ঝামেলা না করলে নিশ্চিত ৩-১-এ সিরিজ জয়ও। এই সিরিজের গতিপথ মনে রাখলে শেষ ৩ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১৫১ রান তুলে ফেলাটা অসম্ভবের কাছাকাছি। অনেকটা নিশ্চিত তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের তাদের মাটিতেই এক সিরিজে তিনবার ইনিংসে হারানোর লজ্জায় ডোবানো। অপেক্ষা কেবল স্বপ্নপূরণের সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। অপেক্ষা আবার ‘স্প্রিঙ্কলার’ কিংবা নতুন কোনো আনন্দনৃত্যের।
পুরো সিরিজটাকেই যেন অপূর্ণতা ঘোচানো আর অনেক অপেক্ষার ইতি টানার মিশন হিসেবে নিয়েছে ইংল্যান্ড। আগের দিন সেঞ্চুরি করলেন ইয়ান বেল, কাল অ্যাশেজে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ম্যাট প্রিয়র। এই সেঞ্চুরিটি সিরিজে ইংল্যান্ডের নবম, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোনো সফরকারী দল এত সেঞ্চুরি করতে পারেনি কখনোই। সেঞ্চুরির পর উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে চার ক্যাচ নিয়েছেন প্রিয়র, আর একটি নিতে পারলেই হয়ে যাবেন সেঞ্চুরি ও ৫ ক্যাচের ডাবল করা ইংল্যান্ডের প্রথম আর ইতিহাসের পঞ্চম উইকেটকিপার।
প্রিয়রের সেঞ্চুরির পর লোয়ার-অর্ডার ইংল্যান্ডকে তুলে দিয়েছে ৬৪৪ রানের চূড়ায়, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের সর্বোচ্চ রান। এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক সিরিজে দুবার ছয় শ করল ইংল্যান্ড, দ্বিতীয় টেস্টে অ্যাডিলেডে করেছিল ৫ উইকেটে ৬২০ (ডিক্লে.)। এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক সিরিজে চারবার পাঁচ শ করল ইংল্যান্ড। আজ অস্ট্রেলিয়া ইনিংসে হারলে গত এক বছরের মধ্যে এটি হবে চতুর্থ ইনিংস পরাজয়। অথচ ১৯৮৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০১০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সব মিলিয়ে তাদের ইনিংস হার ছিল মাত্র তিনটি!
শেষ বিকেলে পরপর দুই বলে হাডিন ও জনসনকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর জয়োৎসবটা কালকেই করতে আধঘণ্টা সময় বাড়িয়ে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু অষ্টম উইকেটে স্মিথ-সিডলের ৪২ রানের জুটিতে ম্যাচটা অন্তত পঞ্চম দিনে নিতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ৩৬৪ রানে পিছিয়ে থেকে শুরু করতে গিয়ে ওয়াটসন ছিলেন স্বভাবগত আক্রমণাত্মক। কিন্তু নিজের ভুলে রানআউট হয়ে আরও একবার বিসর্জন দেন ভালো সূচনাকে, আরও একবার ব্যর্থ ফিল হিউজ।
৬৫ রানের তৃতীয় জুটিতে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন উসমান খাজা ও মাইকেল ক্লার্ক। আবারও খাজার ব্যাটে ছিল প্রতিশ্রুতি, ক্লার্কের ব্যাট দিয়েছিল দুঃসময় কাটানোর ইঙ্গিত। কিন্তু অ্যান্ডারসনের দুর্দান্ত বোলিং ভেঙে দিয়েছে তাঁদের প্রতিরোধ। চা-বিরতির পর রিভার্স সুইং বোলিংয়ের দুর্দান্ত এক প্রদর্শনী রেখে অ্যান্ডারসন ৭ ওভারের অসাধারণ স্পেলটিতে ১১ রান খরচায় নিয়েছেন ওই দুই উইকেট। ৩৭ রানের ছোট্ট একটি জুটির পর হাসি-হাডিন-জনসন ফিরে গেছেন ১০ রানের মধ্যে।
সকালে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা নাকাল হয়েছেন প্রিয়র আর ইংলিশ লোয়ার-অর্ডারের হাতে। বিয়ারকে কাভার ড্রাইভে চার মেরে চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন প্রিয়র। শেষ তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকেও এসেছে ৮৩ রান। জনসনের দুই ওভারে ৩৫ রান নিয়েছেন সোয়ান-ট্রেমলেটের শেষ উইকেট জুটি। ওয়েবসাইট।

বোথামের পর
প্রিয়রের ১০৯ বলের সেঞ্চুরি ১৯৮১-তে ইয়ান বোথামের ৮৬ বলে সেঞ্চুরির পর অ্যাশেজে ইংলিশদের দ্রুততম

No comments

Powered by Blogger.