শিল্প সীমানা মানে না -চারদিক by জাহিদ মুস্তাফা
যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে পৌঁছালাম, তখন সূর্য ম্রিয়মাণ। শীত-বিকেলের শরম যেন তার চোখে-মুখে। দিনটি ছিল ১১ নভেম্বর ২০০৯। নবীন প্রাণের মেলা যেন বসেছে দেড় যুগ আগে ছেড়ে আসা আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে। মৃিশল্প বিভাগের শ্রেণীকক্ষে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী গোল হয়ে ঘিরে দেখছে মার্কিন এক মৃিশল্পীর কাজ। হুইল ঘুরিয়ে মাটি দিয়ে তিনি তৈরি করছেন সরু থেকে গোল পেট হয়ে ক্রমান্বয়ে সরু হয়ে মাথার ওপর ঢাকনার চেয়েও ক্ষুদ্রকায় এক বর্তুল আকৃতিসংবলিত এক পটারি। এটিই ঐতিহ্যবাহী রাকু পটারি নামে খ্যাত। নবীন মৃিশল্পীদের এটির নির্মাণকৌশল শেখাচ্ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই থেকে আসা বিশিষ্ট রাকু পটারিশিল্পী রেমন কামারিল্লো।
৮ থেকে ১১ নভেম্বর ২০০৯ অবধি চার দিনের এক রাকু পটারি কর্মশালা পরিচালনা করলেন তিনি ওই মৃিশল্প বিভাগে ঢাকার আমেরিকান সেন্টারের সহায়তায়। মাত্র ১০ দিনের সফরে সস্ত্রীক ঢাকায় উড়ে এসেছিলেন রেমন। সঙ্গে এনেছেন একগাদা মাটির রাকু পটারি, সহজ বহনযোগ্য একটি চুল্লি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান। তাঁর আসার উপলক্ষই মূলত কর্মশালা।
গত এপ্রিল থেকে রেমন যোগাযোগ রাখছিলেন মৃিশল্প বিভাগের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তাঁর আগ্রহ ছিল কর্মশালাটি আরও একটু দীর্ঘ করার—অন্তত দুই সপ্তাহব্যাপী। কিন্তু রেমনের ব্যস্ততা ঢাকার আমেরিকান সেন্টারের কর্মব্যস্ত শিডিউল, নিরাপত্তা—এসব মিলিয়ে চার দিনের বেশি সময় চালানো গেল না। মাত্র চার দিন, তাও আবার বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা—চার ঘণ্টা করে সাকল্যে ১৬ ঘণ্টার সহাবস্থান। এই অল্প সময়েই কাজ আর বন্ধুতার সমন্বয়ে অদ্ভুত এক ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল সুদূর হাওয়াইয়ের রেমন কামারিল্লোর সঙ্গে বাংলাদেশের নবীন মৃিশল্প শিক্ষার্থী প্রকাশ, অনন্যা, আকতারদের সঙ্গে।
এ সময়ে রেমন শিখিয়েছেন—ওরা শিখেছে রাকু পটারি করার মৃেকৗশল এবং পিট ফায়ারিং পদ্ধতি। মানব সভ্যতার অগ্রগতির গোড়ার দিকে পটারির জন্ম। মানুষ যখন আগুনের ব্যবহার শিখে বন্যতার বাকল থেকে নিজেদের মুক্ত করার প্রয়াস পাচ্ছে, তখন সেই কৃষিকর্মে প্রথম নিবেদনকালে ফসল-বীজ সংরক্ষণের প্রয়োজনে, রান্নাবান্নার শুরুতে ক্রমান্বয়ে পটারি সৃজন শুরু করেছিল প্রাচীন মানুষ। আমাদের বাংলার মৃিশল্পের বয়সই তো আড়াই হাজার বছর পুরোনো!
রাকু পটারির জন্ম জাপানে প্রাচীন জেন চা-উত্সব থেকে। ষোড়শ শতকে জাপানের নেতৃস্থানীয় যোদ্ধা নৃপতি সোগান টয়োটমি হিদেয়োসিদি—চজিরো নামের একজন মৃিশল্পীকে নিযুক্ত করেন চা-উত্সবের জন্য বিশেষ ধরনের পাত্র তৈরি করতে। চজিরো তাঁর পরিবারের নাম থেকেই বিশেষ এই মৃত্ পাত্রের নাম রাখেন রাকু। সেই শুরু। তারপর ১৬ প্রজন্ম ধরে বংশপরম্পরায় জাপানি রাকুশিল্পীরা নিয়োজিত আছেন চা-উত্সব সফল করতে। জাপানিদের কাছে রাকুর গুরুত্ব সংস্কৃতি ও ধর্মীয় উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই। পশ্চিমে রাকুর প্রচলন কেবল এর কম উষ্ণতায় পোড়ানো, টেক্সচার সৃষ্টি—এসব কলাকৌশলের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রে রাকু পটারি এসেছে গত শতকের পঞ্চাশের দশকে। রেমন কামারিল্লো এই মাধ্যমে কাজ করছেন আশির দশক থেকে। এ ক্ষেত্রে তাঁর অভিজ্ঞতা ৩২ বছর।
রেমন ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ সাল অবধি মৃিশল্পশিক্ষা নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের লিওয়ার্ড কমিউনিটি কলেজ থেকে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন বাজার ব্যবস্থাপনায় হাওয়াই প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে ১৯৯২ ও ১৯৯৪ সালে। কিন্তু রেমন নিজেকে সুপরিচিত করেছেন তাঁর দেশে একজন রাকুশিল্পী হিসেবে। দুটি একক পটারি প্রদর্শনী করেছেন ওয়াশিংটন ডিসি ও ইংল্যান্ডের ওয়েলসে। মৃিশল্পী হিসেবে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে বাইরেও। মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ার বিখ্যাত টর্পেডো ফ্যাক্টরিতে তিনি জুরি সদস্য, দলস চার্চের লি আর্ট সেন্টারে তিনি আবাসিক শিল্পী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ভিয়েনায় কেটেছে এক দশকের বেশি সময়। মৃিশল্পে রেমনের স্বকীয়তা ও দক্ষতার এক অতুলনীয় উদাহরণ হচ্ছে, একক হুইলে ২৫ পাউন্ড মাটি দিয়ে পটারি তৈরি করা। তাঁর কাজের আরেক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, থিকনেস কম রেখে তিনি অনেক বড় পটারি বানাতে পারেন।
চারুকলার মৃিশল্প বিভাগে রেমন কামারিল্লোর সঙ্গে পরিচয়। অবয়বে মঙ্গোলীয় বৈশিষ্ট্য। শরীর খর্বকায়, রং ফর্সা। নীল রঙের অ্যাপ্রোন পরে হুইলে কাজ করছিলেন আর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁর কাজের কলাকৌশল নিয়ে কথা বলছিলেন। পাশেই আরেকটি হুইলে কাজ করছিলেন চারুকলার শিক্ষক মৃিশল্পী স্বপন কুমার সিকদার। দেখে মনে হলো, এই হুইলে দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছেন হাওয়াইয়ের রেমন। অথচ মাত্র চার দিন ধরে তিনি এখানে এসেছেন। একজন শিল্পী বলেই এটি সম্ভব হয়েছে। শিল্পের যে কোনো সীমানা নেই।
রেমন স্ত্রী ডরিনসহ ঢাকায় এসেছিলেন ৪ নভেম্বর। গিয়েছিলেন সাভার ও ধামরাইয়ে আমাদের ঐতিহ্যবাহী মৃিশল্প ও কাঁসা-পিতলশিল্পের জায়গায়। বাংলাদেশের মৃিশল্পের ঐতিহ্য আড়াই হাজার বছর আগের—এ তথ্যে দারুণ অবাক হয়েছেন রেমন। বললেন, আমার বন্ধুরা এ সত্য বিশ্বাসই করবে না। বাংলাদেশের মানুষকে তাঁর অসম্ভব ভালো লেগেছে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী মৃিশল্প ও কাঁসা-পিতলশিল্প তাঁকে অভিভূত করেছে। আর আধুনিক মৃিশল্পচর্চার ধরনেরও গুণগান করলেন এই বলে—ইউরোপের মৃিশল্পের চেয়ে তোমাদের কাজ আরও ভালো। আর মাত্র ১০ দিন থাকার পর তাঁর এ দেশকে মনে হয়েছে নিজেরই আরেকটা দেশ, আরেকটা আত্মীয়।
চারুকলা অনুষদের লেকচার থিয়েটারে রাকু পটারি কর্মশালার সমাপনীতে অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হলো আমেরিকান কালচার সেন্টার থেকে। সনদ বিতরণ করলেন শিল্পী রেমন কামারিল্লো, আমেরিকান সেন্টারের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা ক্যাথরিন হ্যালো ও মৃিশল্প বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম। এরপর ছিল ছোট্ট মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমেই হাওয়াইন গিটার বাজিয়ে চমত্কার এক স্বদেশি ঐতিহ্যের গান গাইলেন রেমন। তাঁর গানের তালে তালে নাচলেন স্ত্রী ডরিন। অদ্ভুত সুন্দর সে নাচ, আমাদের ঐতিহ্যবাহী নাচের সঙ্গে তার দারুণ মিল।
রেমন চলে গেছেন ১৪ নভেম্বর। মাত্র ১০ দিনে দারুণ মিশে গিয়েছিলেন এ দেশের শিল্প আর শিল্পীদের সঙ্গে। বিদায় নেওয়ার সময় তিনি বললেন, ‘আমি এখানে আবারও আসব, বন্ধুরা। তোমরাও এসো আমাদের দেশে। শিল্প সীমানা মানে না।’
৮ থেকে ১১ নভেম্বর ২০০৯ অবধি চার দিনের এক রাকু পটারি কর্মশালা পরিচালনা করলেন তিনি ওই মৃিশল্প বিভাগে ঢাকার আমেরিকান সেন্টারের সহায়তায়। মাত্র ১০ দিনের সফরে সস্ত্রীক ঢাকায় উড়ে এসেছিলেন রেমন। সঙ্গে এনেছেন একগাদা মাটির রাকু পটারি, সহজ বহনযোগ্য একটি চুল্লি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান। তাঁর আসার উপলক্ষই মূলত কর্মশালা।
গত এপ্রিল থেকে রেমন যোগাযোগ রাখছিলেন মৃিশল্প বিভাগের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তাঁর আগ্রহ ছিল কর্মশালাটি আরও একটু দীর্ঘ করার—অন্তত দুই সপ্তাহব্যাপী। কিন্তু রেমনের ব্যস্ততা ঢাকার আমেরিকান সেন্টারের কর্মব্যস্ত শিডিউল, নিরাপত্তা—এসব মিলিয়ে চার দিনের বেশি সময় চালানো গেল না। মাত্র চার দিন, তাও আবার বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা—চার ঘণ্টা করে সাকল্যে ১৬ ঘণ্টার সহাবস্থান। এই অল্প সময়েই কাজ আর বন্ধুতার সমন্বয়ে অদ্ভুত এক ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল সুদূর হাওয়াইয়ের রেমন কামারিল্লোর সঙ্গে বাংলাদেশের নবীন মৃিশল্প শিক্ষার্থী প্রকাশ, অনন্যা, আকতারদের সঙ্গে।
এ সময়ে রেমন শিখিয়েছেন—ওরা শিখেছে রাকু পটারি করার মৃেকৗশল এবং পিট ফায়ারিং পদ্ধতি। মানব সভ্যতার অগ্রগতির গোড়ার দিকে পটারির জন্ম। মানুষ যখন আগুনের ব্যবহার শিখে বন্যতার বাকল থেকে নিজেদের মুক্ত করার প্রয়াস পাচ্ছে, তখন সেই কৃষিকর্মে প্রথম নিবেদনকালে ফসল-বীজ সংরক্ষণের প্রয়োজনে, রান্নাবান্নার শুরুতে ক্রমান্বয়ে পটারি সৃজন শুরু করেছিল প্রাচীন মানুষ। আমাদের বাংলার মৃিশল্পের বয়সই তো আড়াই হাজার বছর পুরোনো!
রাকু পটারির জন্ম জাপানে প্রাচীন জেন চা-উত্সব থেকে। ষোড়শ শতকে জাপানের নেতৃস্থানীয় যোদ্ধা নৃপতি সোগান টয়োটমি হিদেয়োসিদি—চজিরো নামের একজন মৃিশল্পীকে নিযুক্ত করেন চা-উত্সবের জন্য বিশেষ ধরনের পাত্র তৈরি করতে। চজিরো তাঁর পরিবারের নাম থেকেই বিশেষ এই মৃত্ পাত্রের নাম রাখেন রাকু। সেই শুরু। তারপর ১৬ প্রজন্ম ধরে বংশপরম্পরায় জাপানি রাকুশিল্পীরা নিয়োজিত আছেন চা-উত্সব সফল করতে। জাপানিদের কাছে রাকুর গুরুত্ব সংস্কৃতি ও ধর্মীয় উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই। পশ্চিমে রাকুর প্রচলন কেবল এর কম উষ্ণতায় পোড়ানো, টেক্সচার সৃষ্টি—এসব কলাকৌশলের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রে রাকু পটারি এসেছে গত শতকের পঞ্চাশের দশকে। রেমন কামারিল্লো এই মাধ্যমে কাজ করছেন আশির দশক থেকে। এ ক্ষেত্রে তাঁর অভিজ্ঞতা ৩২ বছর।
রেমন ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ সাল অবধি মৃিশল্পশিক্ষা নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের লিওয়ার্ড কমিউনিটি কলেজ থেকে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন বাজার ব্যবস্থাপনায় হাওয়াই প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে ১৯৯২ ও ১৯৯৪ সালে। কিন্তু রেমন নিজেকে সুপরিচিত করেছেন তাঁর দেশে একজন রাকুশিল্পী হিসেবে। দুটি একক পটারি প্রদর্শনী করেছেন ওয়াশিংটন ডিসি ও ইংল্যান্ডের ওয়েলসে। মৃিশল্পী হিসেবে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে বাইরেও। মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ার বিখ্যাত টর্পেডো ফ্যাক্টরিতে তিনি জুরি সদস্য, দলস চার্চের লি আর্ট সেন্টারে তিনি আবাসিক শিল্পী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ভিয়েনায় কেটেছে এক দশকের বেশি সময়। মৃিশল্পে রেমনের স্বকীয়তা ও দক্ষতার এক অতুলনীয় উদাহরণ হচ্ছে, একক হুইলে ২৫ পাউন্ড মাটি দিয়ে পটারি তৈরি করা। তাঁর কাজের আরেক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, থিকনেস কম রেখে তিনি অনেক বড় পটারি বানাতে পারেন।
চারুকলার মৃিশল্প বিভাগে রেমন কামারিল্লোর সঙ্গে পরিচয়। অবয়বে মঙ্গোলীয় বৈশিষ্ট্য। শরীর খর্বকায়, রং ফর্সা। নীল রঙের অ্যাপ্রোন পরে হুইলে কাজ করছিলেন আর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁর কাজের কলাকৌশল নিয়ে কথা বলছিলেন। পাশেই আরেকটি হুইলে কাজ করছিলেন চারুকলার শিক্ষক মৃিশল্পী স্বপন কুমার সিকদার। দেখে মনে হলো, এই হুইলে দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছেন হাওয়াইয়ের রেমন। অথচ মাত্র চার দিন ধরে তিনি এখানে এসেছেন। একজন শিল্পী বলেই এটি সম্ভব হয়েছে। শিল্পের যে কোনো সীমানা নেই।
রেমন স্ত্রী ডরিনসহ ঢাকায় এসেছিলেন ৪ নভেম্বর। গিয়েছিলেন সাভার ও ধামরাইয়ে আমাদের ঐতিহ্যবাহী মৃিশল্প ও কাঁসা-পিতলশিল্পের জায়গায়। বাংলাদেশের মৃিশল্পের ঐতিহ্য আড়াই হাজার বছর আগের—এ তথ্যে দারুণ অবাক হয়েছেন রেমন। বললেন, আমার বন্ধুরা এ সত্য বিশ্বাসই করবে না। বাংলাদেশের মানুষকে তাঁর অসম্ভব ভালো লেগেছে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী মৃিশল্প ও কাঁসা-পিতলশিল্প তাঁকে অভিভূত করেছে। আর আধুনিক মৃিশল্পচর্চার ধরনেরও গুণগান করলেন এই বলে—ইউরোপের মৃিশল্পের চেয়ে তোমাদের কাজ আরও ভালো। আর মাত্র ১০ দিন থাকার পর তাঁর এ দেশকে মনে হয়েছে নিজেরই আরেকটা দেশ, আরেকটা আত্মীয়।
চারুকলা অনুষদের লেকচার থিয়েটারে রাকু পটারি কর্মশালার সমাপনীতে অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হলো আমেরিকান কালচার সেন্টার থেকে। সনদ বিতরণ করলেন শিল্পী রেমন কামারিল্লো, আমেরিকান সেন্টারের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা ক্যাথরিন হ্যালো ও মৃিশল্প বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম। এরপর ছিল ছোট্ট মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমেই হাওয়াইন গিটার বাজিয়ে চমত্কার এক স্বদেশি ঐতিহ্যের গান গাইলেন রেমন। তাঁর গানের তালে তালে নাচলেন স্ত্রী ডরিন। অদ্ভুত সুন্দর সে নাচ, আমাদের ঐতিহ্যবাহী নাচের সঙ্গে তার দারুণ মিল।
রেমন চলে গেছেন ১৪ নভেম্বর। মাত্র ১০ দিনে দারুণ মিশে গিয়েছিলেন এ দেশের শিল্প আর শিল্পীদের সঙ্গে। বিদায় নেওয়ার সময় তিনি বললেন, ‘আমি এখানে আবারও আসব, বন্ধুরা। তোমরাও এসো আমাদের দেশে। শিল্প সীমানা মানে না।’
No comments