ফিলিপাইন: যেখানে প্রেসিডেন্টকে হত্যার হুমকি দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট
তাদের মধ্যে ঐকমত্য হয় মারকোস প্রেসিডেন্ট হবেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন সারা দুতের্তে। এ দুটি পদের প্রার্থী নির্বাচন হয় আলাদাভাবে। কিন্তু নির্বাচনের শেষের দিকে তারা একটি নির্বাচনী টিম গঠন করবেন। এর মূলে বলা হবে, সারা দুতের্তে তারপর আগামী ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূল পদে জলে আসবেন। একটি অত্যন্ত কার্যকর কৌশল হিসেবে কাজ করেছে এটা। তারা নিজেদেরকে প্রকাশ করেন দ্য ইউনিটিম হিসেবে। ভূমিধস জয় পান। দুতের্তেকে যেকেউ হয়তো বলেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদটি হলো আলঙ্করিক। এর তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। এ জন্য সারা দুতের্তে প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চেয়েছিলেন নিজের কাছে। তার পরিবর্তে তাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেন প্রেসিডেন্ট মারকোস। এরপর তিনি তার রাজনৈতিক উত্তরসূরি দিক থেকে আকস্মিকভাবে সরে যান। দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে চীনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ফিলিপাইনের নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডদের। তার এই নীতি ছিল প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তের অবস্থানের বিরোধী। তিনি ওই অঞ্চলে চীনের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এক পর্যায়ে রড্রিগো দুতের্তে ঘোষণা দেন যে, তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ভালবাসেন। প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তের মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিষয়েও তেমন কোনো কথা বলেননি মার্কোস। ওই লড়াইয়ে মাদকের ডিলার সন্দেহে কয়েক হাজার মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার করেন দুতের্তে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রড্রিগোর বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত করেছিল। এ জন্য আইসিসিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। তার প্রেসিডেন্সির সময়ে ফিলিপাইনে যে পরিমাণ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে তা নিয়ে ফিলিপাইনের সিনেটের সামনে শুনানিতে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট রড্রিগোর। এতসব ঘটনায় তিনি পাড় পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু যখন রড্রিগো দুতের্তের মেয়ে সারা কাজ পেয়ে যান এবং তাকে গোপনীয় তহবিল ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়, তখন সারা দুতের্তের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ। এর সঙ্গে যোগ ছিল মারকোসের মিত্রদের। ফলে দুই পক্ষের মধুচন্দ্রিমা বিষাক্ত হয়ে উঠতে থাকে। জুলাইয়ে শিক্ষার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা। তখন থেকেই তার বক্তব্য জ্বালাময়ী হতে শুরু করে।
তবে বিতর্কে সারা দুতের্তে নবাগত নন। ১৩ বছর আগে তিনি ডাভাও শহরের মেয়র ছিলেন। সেসময় আদালতের একজন কর্মকর্তাকে অব্যাহতভাবে ঘুষি মারতে দেখা যায় তাকে। এ দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করা হয়। তার তুখোড় বক্তা পিতা যে রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে উঠে এসেছেন, তিনিও তাই। তারা কঠোর ভাষায় কথা বলার জন্য সর্বজন পরিচিত। রড্রিগো দুতের্তে পোপকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। এক সময় প্রেসিডেন্ট মারকোসের মিত্র থাকা সারা দুতের্তে তাকে হুমকি দিয়ে বসেন। দুতের্তের এসব মন্তব্যকে বেপরোয়া ও হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট মারকোস। প্রেসিডেন্টকে হুমকি দেয়ার কারণে শুক্রবার এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ভাইস প্রেসিডেন্টকে তলব করে ফিলিপাইনস ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের সমতুল্য বলে বিবেচনা করা হয়।
No comments