ইসরাইলের ব্লকেড বা অবরোধ অব্যাহত। চলছে গাজায় হামলা। মরছে মানুষ। এটাই যেন গাজার মানুষের নিয়তি এখন। অন্তত গত একটি বছরের উপরে তাদেরকে নির্বিচারে এভাবেই হত্যা করছে ইসরাইলি সেনারা। এ অবস্থায় জাতিসংঘ বলেছে, ইসরাইলের অব্যাহত অবরোধের ফলে গাজা উপত্যকার পুরোটায় এ পর্যন্ত খাদ্যের পর্যাপ্ততা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। দখলীকৃত গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষরা বলছেন, তাদের সরবরাহ এরই মধ্যে পুরোপুরি ফুরিয়ে গেছে। ফিলিস্তিন বিষয়ক জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপে লাজ্জারিনি বলেছেন, বিশ্বের মধ্যে মাথাপিছু সবচেয়ে বেশি শিশুর অঙ্গহানি ঘটছে গাজায়। যুদ্ধাহত প্রতি চারজনের মধ্যে একজন এমন জখম নিয়ে বেঁচে আছেন, যা তাকে বাকি জীবন বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তাদের প্রয়োজন জরুরি পুনর্বাসন সেবা। এর মধ্যে আছে কেটে ফেলা অঙ্গের যত্ন, মেরুদণ্ডের ক্ষতের যত্ন নেয়া। নীরবে নিভৃতে যেসব মানুষ দুর্ভোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন তাদের বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন লাজ্জারিনি। তিনি বলেন, তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে স্পেশাল কেয়ার নেয়া প্রয়োজন। ৭ই অক্টোবরের আগে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে- প্রতি ৫টি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারে কমপক্ষে একজন মানুষ বিকলাঙ্গ হয়েছেন। ওদিকে লেবাননের দক্ষিণে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরাইলি সেনারা। এতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে কার্যকর হওয়া হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছে তারা। ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরাইলি নৃশংসতায় গাজায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৪,৪৬৬ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন কমপক্ষে এক লাখ ৫ হাজার ৩৫৮ জন। অন্যদিকে লেবাননে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩,৯৬১ জন। আহত হয়েছেন ১৬,৫২০ জন।
ফিলিস্তিনের সিভিল ডিফেন্স বলেছে, রাফায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। তাদের হামলায় ওই এলাকায় ফিলিস্তিনি উদ্ধারকর্মীরা রক্ষা পেয়েছেন। তাদেরকে লক্ষ্য করে ইসরাইলিরা ভারী বোমা হামলা করেছিল। ওইসব ফিলিস্তিনি রাফায় আহতদের উদ্ধার এবং তাদেরকে স্থানান্তরের কাজ করছিলেন। এর আগে সিভিল ডিফেন্স থেকে বলা হয়েছে, রাফায় আল জিনেইনা এবং খিরবেত আল-আদাস এলাকায় ইসরাইলের ড্রোন হামলায় বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চল দিয়ের আল বালা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজম বলছেন, সংকটজনক অবস্থায় চার ফিলিস্তিনিকে পাশের শহর খান ইউনুসে নাসের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ওদিকে শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের বক্তব্যের মধ্যে বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগে ৯ সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
No comments