শাফিন বাঁচবে কি করে? by জিয়া চৌধুরী
মুহূর্তেই
এলোমেলো হয়ে গেলো মুক্তার ও সালমার জীবন। অমাবস্যার কালো ছাঁয়ায় ঢেকে গেছে
তাদের স্বপ্ন। একমাত্র সন্তান শাফিন। মাত্র পাঁচ বছর বয়স তার। গ্যাসের
আগুনে তার মা, বাবা এখন জন্ম মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। মৃত্যু কি শাফিন জানেনা।
বুঝেনা এর অর্থ। মা বাবা ছাড়া শাফিন দুটি দিন পার করেছে। মা, বাবাকে খুঁজে
ফিরছে শাফিন। তাকে বলা হয়েছে তারা বেড়াতে গেছেন। তাতেই তার মন বিষাদে ঢাকা।
ক্ষণে ক্ষণে কেঁদে উঠছে। এইতো গত জানুয়ারি থেকে স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে
শাফিন। ইউনিফর্ম, সাদা কেডস-মোজা পরে, কাঁধে ব্যাগ চেপে সকাল সকাল মায়ের
আঙ্গুলে ধরে স্কুলে যেত। বাসার কাছেই স্কুল। শাফিনের কচি হাত মুঠিতে শক্ত
করে রোজ স্কুলে নিয়ে যেতেন সালমা। ছুটি হলে আবার স্কুল থেকে বাসায়।
গত বৃহস্পতিবারও মায়ের সঙ্গে পশ্চিম আগারগাঁও এলাকার কর্ডিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে যায় শাফিন। ওই দিনই পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসায় গ্যাস থেকে লাগা আগুনে দগ্ধ হন শাফিনের বাবা মুক্তার হোসেন (৩৮) ও মা সালমা (২৮)। দুজনই এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা চলছে তাদের। দুজনের শরীরই প্রায় ৯৫ ও ৯৭ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের বিছানায় সালমার আকুতি, তোমরা আমরা পোলাডারে দেইখা রাইখো। পাশের বিছানায় স্বামী মুক্তার হোসেন শুয়ে থাকলেও তার মুখে কোন শব্দ নেই। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। শাফিন জানে না তার বাবা-মা কোথায়? তাকে শুধু বলা হয়েছে, তারা বেড়াতে গেছে। গত শুক্রবার দুপুরে শাফিনদের পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে বাসাটি বাইরে থেকে তালা দেয়া। আগুন লাগার পর শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ বাসায় তালা মেরে দিয়ে চলে গেছে।
বাবা মুক্তার হোসেনের এক বন্ধুর বাসায় ঠাঁয় হয়েছে শাফিনের। তার মামা গোলাম হোসেন তাকে নানা কাজে ব্যস্ত রাখছে। শাফিন শুধু আজ শনিবার মায়ের হাত ধরে স্কুলে যেতে চায়। সেখানে নাজিম, মাহির ও সামিয়ার সঙ্গে দেখা হবে তার। এরা শাফিনের বন্ধু। এদের সঙ্গে সে স্কুলের বিরতিতে সময় কাটায়। বৃহস্পতিবারও স্কুল থেকে শাফিন মায়ের সঙ্গে বাসায় গিয়েছিল। বিকালে পাশের একটি কোচিংয়ে ক্লাস করতো সে। সেদিনও মা সালমা শাফিনকে নিয়ে কোচিংয়ে দিয়ে আসেন। বাসায় ফিরে ইফতারি বানাতে গ্যাসের চুলা ধরান। এরপর তো এক বিভীষিকা। পুরো ঘরে আগুন লেগে যায়। ঘরে ঘুমিয়ে থাকা শাফিনের বাবা মুক্তারও বেশ দগ্ধ হন। স্থানীয় আহসান হাবীবসহ কয়েকজন মিলে শাফিনের বাবা-মাকে নিয়ে যান শেরেবাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকরা সেখান থেকে পাঠিয়ে দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে। এখন সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীকে। ঘটনা শুনে মুক্তারের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছুটে এসেছেন। পালা করে হাসপাতাল ও শাফিনকে সময় দিচ্ছেন।
শাফিনের বাবা-মায়ের এমন পরিণতি নিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া। মাইনুল ইসলাম রাসেল নামে একজন জানান, মুক্তার ছিল আমাদের এলাকার সবচেয়ে সজ্জন ব্যক্তি। তাকে পছন্দ করতো না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাদের এমন অবস্থায় ছেলেটার কি হবে সেটাই এখন চিন্তার বিষয়। কিন্তু বাবা-মায়ের এমন কষ্ট এখনো শাফিনকে ছুঁতে পারেনি। পছন্দের স্মার্টফোনে সে এখনো আনমনে ভিডিও গেমস খেলে চলেছে। বড় হয়ে কি হতে চাও এমন প্রশ্নে শাফিন জানায় সে পুলিশ হতে চায়। কেন? এমন প্রশ্নে শুধুই হাসি। শাফিনের এই হাসিটা যেন কোনভাবে মিইয়ে না যায় এ প্রার্থনা স্বজন ও প্রতিবেশির।
গত বৃহস্পতিবারও মায়ের সঙ্গে পশ্চিম আগারগাঁও এলাকার কর্ডিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে যায় শাফিন। ওই দিনই পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসায় গ্যাস থেকে লাগা আগুনে দগ্ধ হন শাফিনের বাবা মুক্তার হোসেন (৩৮) ও মা সালমা (২৮)। দুজনই এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা চলছে তাদের। দুজনের শরীরই প্রায় ৯৫ ও ৯৭ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের বিছানায় সালমার আকুতি, তোমরা আমরা পোলাডারে দেইখা রাইখো। পাশের বিছানায় স্বামী মুক্তার হোসেন শুয়ে থাকলেও তার মুখে কোন শব্দ নেই। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। শাফিন জানে না তার বাবা-মা কোথায়? তাকে শুধু বলা হয়েছে, তারা বেড়াতে গেছে। গত শুক্রবার দুপুরে শাফিনদের পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে বাসাটি বাইরে থেকে তালা দেয়া। আগুন লাগার পর শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ বাসায় তালা মেরে দিয়ে চলে গেছে।
বাবা মুক্তার হোসেনের এক বন্ধুর বাসায় ঠাঁয় হয়েছে শাফিনের। তার মামা গোলাম হোসেন তাকে নানা কাজে ব্যস্ত রাখছে। শাফিন শুধু আজ শনিবার মায়ের হাত ধরে স্কুলে যেতে চায়। সেখানে নাজিম, মাহির ও সামিয়ার সঙ্গে দেখা হবে তার। এরা শাফিনের বন্ধু। এদের সঙ্গে সে স্কুলের বিরতিতে সময় কাটায়। বৃহস্পতিবারও স্কুল থেকে শাফিন মায়ের সঙ্গে বাসায় গিয়েছিল। বিকালে পাশের একটি কোচিংয়ে ক্লাস করতো সে। সেদিনও মা সালমা শাফিনকে নিয়ে কোচিংয়ে দিয়ে আসেন। বাসায় ফিরে ইফতারি বানাতে গ্যাসের চুলা ধরান। এরপর তো এক বিভীষিকা। পুরো ঘরে আগুন লেগে যায়। ঘরে ঘুমিয়ে থাকা শাফিনের বাবা মুক্তারও বেশ দগ্ধ হন। স্থানীয় আহসান হাবীবসহ কয়েকজন মিলে শাফিনের বাবা-মাকে নিয়ে যান শেরেবাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকরা সেখান থেকে পাঠিয়ে দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে। এখন সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীকে। ঘটনা শুনে মুক্তারের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছুটে এসেছেন। পালা করে হাসপাতাল ও শাফিনকে সময় দিচ্ছেন।
শাফিনের বাবা-মায়ের এমন পরিণতি নিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া। মাইনুল ইসলাম রাসেল নামে একজন জানান, মুক্তার ছিল আমাদের এলাকার সবচেয়ে সজ্জন ব্যক্তি। তাকে পছন্দ করতো না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাদের এমন অবস্থায় ছেলেটার কি হবে সেটাই এখন চিন্তার বিষয়। কিন্তু বাবা-মায়ের এমন কষ্ট এখনো শাফিনকে ছুঁতে পারেনি। পছন্দের স্মার্টফোনে সে এখনো আনমনে ভিডিও গেমস খেলে চলেছে। বড় হয়ে কি হতে চাও এমন প্রশ্নে শাফিন জানায় সে পুলিশ হতে চায়। কেন? এমন প্রশ্নে শুধুই হাসি। শাফিনের এই হাসিটা যেন কোনভাবে মিইয়ে না যায় এ প্রার্থনা স্বজন ও প্রতিবেশির।
No comments