‘দেখেছেন না বাহে, হামরা বাংলাদেশি হইছি’ লাঠিখেলায় আনন্দ আয়োজন by আনোয়ার হোসেন ও এ বি সফিউল আলম
৬০ বছরের বৃদ্ধ বাহেদ আলীর হাতে একটি বাঁশের লাঠি। লাঠিটি দিয়ে তিনি আঘাত করার চেষ্টা করছেন ৩৫ বছর বয়সী নুরুজ্জামানকে। নানা কসরতে সেই আঘাতের চেষ্টা হাতের লাঠি দিয়ে ঠেকিয়ে পাল্টা আঘাতের চেষ্টা করেন নুরুজ্জামান। তা প্রতিহত করেন বাহেদ আলী।
বাহেদ আলী ও নুরুজ্জামান সম্পর্কে বাবা-ছেলে। তাঁদের এই ‘লড়াই’ পারিবারিক কোনো কলহ নয়। গ্রাম-বাংলার চিরায়ত উৎসব লাঠিখেলায় মেতেছিলেন তাঁরা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ১১৯ নম্বর বাঁশকাটা ছিটমহলে গিয়ে এই লাঠিখেলা দেখা গেল। স্থানীয় লোকজন বললেন, ৬৮ বছর পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার মুহূর্ত উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এই লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়।
বাবা-ছেলের লাঠিখেলা বেশ উপভোগ করেন বাঁশকাটা এলাকার কয়েকটি ছিটমহলের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষ। এঁদের মধ্যে ছিলেন বাহেদের স্ত্রী সুরাতন্নেছা, নুরুজ্জামানের স্ত্রী সামিনা খাতুনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও। তাঁরা হাততালি দিয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন দুজনকেই। দর্শকদের বেশির ভাগই ছিলেন নানা বয়সের নারী।
৪২ বছর বয়সী নুরনাহার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘কী কমো বাহে। দেখেছেন না বাহে, হামরা বাংলাদেশি হইছি। এ জন্য আনন্দ-উল্লাস করছি বাহে।’
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রাক্কালে এমন নানা উৎসবের আয়োজন করেছেন বাঁশকাটার ছিটমহলের বাসিন্দারা। গতকাল রাত ১২টার সময় ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে উৎসব করেন তাঁরা। ওই এলাকায় ২১টি ছিটমহল রয়েছে। এর মধ্যে ১১টিতে কোনো বাসিন্দা নেই। বাকি ১০টি ছিটমহলের বাসিন্দা ২ হাজার ৮২৪ জন। এর মধ্যে বসটারি গ্রামের ৯৭ জন ভারতে চলে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অবশ্য তেমন কোনো উৎসব দেখা যায়নি।
ছিটমহল বিনিময় কমিটির নেতা ও বাঁশকাটার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, আজ শনিবার সকাল সাতটায় বাঁশকাটাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হবে। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ ছিটমহলবাসীরা উপস্থিত থাকবেন।
ছিটমহলের নারীদের জন্য বিকেলে রয়েছে বালিশ খেলা। বিকেলে পুরুষেরা খেলবেন বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু।
ছিটমহলের বাসিন্দা ও পল্লিচিকিৎসক রেজাউল করিম বলেন, ছিটমহলের বাসিন্দাদের জীবনে খেলাধুলা বা উৎসবের স্থান ছিল না। তাঁদের বিনোদন বলতে ছিল খেতে কাজ করা। এবার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়াটা উদ্যাপনের জন্য সবাই নানা আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। ছিটমহলের সব বাসিন্দার জন্য আজকের দিনটি ঈদের মতো।
ছিটমহলে মাঠ নেই। আনন্দ আয়োজনের এসব অনুষ্ঠান তাই গ্রামের বড় একটি বাড়ির উঠানেই সম্পন্ন হচ্ছে। বাড়ির বাসিন্দারাও সানন্দে এই আয়োজনে অংশ হতে পেরে গর্বিত বলে জানিয়েছেন।
লাঠিখেলা দেখতে আসা ছিটমহলের বাসিন্দা ৫০ বছরের রফিকুল ইসলামের চোখে-মুখেও ফুটে উঠেছিল উচ্ছ্বাস। তিনি বলেন, ‘হামরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হমো বাহে। এই জন্যে আনন্দের শেষ নাই। বাংলার ঐতিহ্য খেলার মধ্য দিয়ে আরও একবার স্বাধীন হইনো।’
স্থানীয় লোকজন বললেন, লাঠিখেলায় দুজন খেলোয়াড় একসঙ্গে অংশ নেন। তাঁদের পালা শেষ হলে আসেন আরেক দল। এভাবে গতকাল বিকেল থেকে সাত-আটটি দল লাঠিখেলায় অংশ নেয়। এরা সবাই ছিটমহলের বাসিন্দা।
বাহেদ আলী ও নুরুজ্জামান সম্পর্কে বাবা-ছেলে। তাঁদের এই ‘লড়াই’ পারিবারিক কোনো কলহ নয়। গ্রাম-বাংলার চিরায়ত উৎসব লাঠিখেলায় মেতেছিলেন তাঁরা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ১১৯ নম্বর বাঁশকাটা ছিটমহলে গিয়ে এই লাঠিখেলা দেখা গেল। স্থানীয় লোকজন বললেন, ৬৮ বছর পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার মুহূর্ত উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এই লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়।
বাবা-ছেলের লাঠিখেলা বেশ উপভোগ করেন বাঁশকাটা এলাকার কয়েকটি ছিটমহলের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষ। এঁদের মধ্যে ছিলেন বাহেদের স্ত্রী সুরাতন্নেছা, নুরুজ্জামানের স্ত্রী সামিনা খাতুনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও। তাঁরা হাততালি দিয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন দুজনকেই। দর্শকদের বেশির ভাগই ছিলেন নানা বয়সের নারী।
৪২ বছর বয়সী নুরনাহার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘কী কমো বাহে। দেখেছেন না বাহে, হামরা বাংলাদেশি হইছি। এ জন্য আনন্দ-উল্লাস করছি বাহে।’
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রাক্কালে এমন নানা উৎসবের আয়োজন করেছেন বাঁশকাটার ছিটমহলের বাসিন্দারা। গতকাল রাত ১২টার সময় ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে উৎসব করেন তাঁরা। ওই এলাকায় ২১টি ছিটমহল রয়েছে। এর মধ্যে ১১টিতে কোনো বাসিন্দা নেই। বাকি ১০টি ছিটমহলের বাসিন্দা ২ হাজার ৮২৪ জন। এর মধ্যে বসটারি গ্রামের ৯৭ জন ভারতে চলে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অবশ্য তেমন কোনো উৎসব দেখা যায়নি।
ছিটমহল বিনিময় কমিটির নেতা ও বাঁশকাটার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, আজ শনিবার সকাল সাতটায় বাঁশকাটাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হবে। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ ছিটমহলবাসীরা উপস্থিত থাকবেন।
ছিটমহলের নারীদের জন্য বিকেলে রয়েছে বালিশ খেলা। বিকেলে পুরুষেরা খেলবেন বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু।
ছিটমহলের বাসিন্দা ও পল্লিচিকিৎসক রেজাউল করিম বলেন, ছিটমহলের বাসিন্দাদের জীবনে খেলাধুলা বা উৎসবের স্থান ছিল না। তাঁদের বিনোদন বলতে ছিল খেতে কাজ করা। এবার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়াটা উদ্যাপনের জন্য সবাই নানা আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। ছিটমহলের সব বাসিন্দার জন্য আজকের দিনটি ঈদের মতো।
ছিটমহলে মাঠ নেই। আনন্দ আয়োজনের এসব অনুষ্ঠান তাই গ্রামের বড় একটি বাড়ির উঠানেই সম্পন্ন হচ্ছে। বাড়ির বাসিন্দারাও সানন্দে এই আয়োজনে অংশ হতে পেরে গর্বিত বলে জানিয়েছেন।
লাঠিখেলা দেখতে আসা ছিটমহলের বাসিন্দা ৫০ বছরের রফিকুল ইসলামের চোখে-মুখেও ফুটে উঠেছিল উচ্ছ্বাস। তিনি বলেন, ‘হামরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হমো বাহে। এই জন্যে আনন্দের শেষ নাই। বাংলার ঐতিহ্য খেলার মধ্য দিয়ে আরও একবার স্বাধীন হইনো।’
স্থানীয় লোকজন বললেন, লাঠিখেলায় দুজন খেলোয়াড় একসঙ্গে অংশ নেন। তাঁদের পালা শেষ হলে আসেন আরেক দল। এভাবে গতকাল বিকেল থেকে সাত-আটটি দল লাঠিখেলায় অংশ নেয়। এরা সবাই ছিটমহলের বাসিন্দা।
No comments