জাপানকে শান্তিবাদ বজায় রাখতে হবে
৭০ বছর আগের কথা। সেদিন একান্তই ভাগ্য আর ভূগোলে নির্ধারিত হয়েছিল জাপানিদের জীবন অথবা মৃত্যু। দৈব সিদ্ধান্তেই সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন হিরোতামি ইয়ামাদা। তখন বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। আজ ৮৪-তে দাঁড়িয়েও স্পষ্ট দেখতে পান আণবিক বোমার সেই বীভৎসতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের পর মৃত্যুপুরী শহরের দৃশ্যটা কিছুতেই ভুলতে পারেন না তিনি। ১৯৪৫ সালের ৯ আগস্ট। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২ মিনিটে বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ আর নরকের তাপে মনে হয়েছিল আকাশ থেকে সূর্যটা নিচে পড়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গেই নিকষ অন্ধকারে ছেয়ে গেল চারদিক। সেদিনের কথা স্মরণ করে ইয়ামাদা বলেন, ‘যখন আলো ফিরে এসেছিল, দেখলাম পুরো নাগাসাকি শহরটা বাষ্পীভূত ধোঁয়ায় পরিণত হয়েছে। আর তা মেঘের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। আমি দেখলাম,
মানুষরা এমনভাবে দগ্ধ, চোখ মুখ বিস্ফোরিত ও ভস্মীভূত হয়ে আছে, দেখে বোঝার উপায় নেই, তারা জীবিত নাকি মৃত।’ বোমা নিক্ষেপের স্থান থেকে প্রায় এক মাইল দূরে একটি স্কুলে ছিলেন ইয়ামাদা। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের মোটামুটি অক্ষত দেখে স্বস্তি পেলাম। শুধু মনে হল একটু আগুনের আঁচ লেগেছে শরীরে। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই তারা প্রায় সবাই মারা গেল।’ নাগাসাকি শান্তি মেমোরিয়াল পার্কে দাঁড়িয়ে ইয়ামাদা বলেন, ‘এসব মূর্তিকে আমি ঘৃণা করি। এগুলো দেখতে বেশ সুন্দর। কিন্তু বাস্তবতা ছিল খুবই কুৎসিত।’ যুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে নাগাসাকিতে বেঁচে যাওয়া ইয়ামাদার মতো মানুষরা মনে করেন, যুদ্ধোত্তর সময়ে জাপানকে অবশ্যই শান্তিবাদী ডকট্রিন মেনে চলতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের সাম্প্রতিক সামরিক ঘনিষ্ঠতাকে সমালোচনা করছেন তারা। জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সামরিক নীতির ওপর বিরক্ত তারা। নাগাসাকির মেয়র তোমিহিসা তাওয়ে বলেন, আমি মনে করি শিনজো আবেকে সতর্কতার সঙ্গে তার সমারিক নীতির প্রয়োজনীতা জনগণের কাছে ব্যাখ্যা করা দরকার।
No comments