আসামি বাঁধার পুলিশি দড়ি -শিশুর প্রতি এ নিষ্ঠুরতার বিহিত হোক
শিশুর চোখে জল, হাতে হাতকড়া by মজিবর রহমান খান
পৃথিবী এগোয় আর বাংলাদেশ যেন একই জায়গায় ঘুরপাক খেতে থাকে। পুলিশের অপরাধী বাঁধার দড়ি এখনো বয়স্ক থেকে শিশু—সবাইকেই ‘পশু’র মতো বেঁধে রাখছে। ঠাকুরগাঁয়ে ১৩ বছরের এক শিশুকে হাতে হাতকড়া ও দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য মানবাধিকারের প্রতি নির্বোধের পরিহাস।
পৃথিবী এগোয় আর বাংলাদেশ যেন একই জায়গায় ঘুরপাক খেতে থাকে। পুলিশের অপরাধী বাঁধার দড়ি এখনো বয়স্ক থেকে শিশু—সবাইকেই ‘পশু’র মতো বেঁধে রাখছে। ঠাকুরগাঁয়ে ১৩ বছরের এক শিশুকে হাতে হাতকড়া ও দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য মানবাধিকারের প্রতি নির্বোধের পরিহাস।
>>সামনে হাতকড়া পরা শিশুটি। পেছনে তার স্বজন। গতকাল বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের আদালত চত্বরে তাকেসহ দুজনকে পুলিশি পাহারায় হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল l ছবি: প্রথম আলো
শিশুটির
বিরুদ্ধে যে হত্যা মামলা আছে, সেটি সত্য বা মিথ্যা যা-ই হোক, তাকে
কোনোভাবেই হাতকড়া পরানো বা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা যায় না। ২০১৩ সালের আইনে
এটা নিষিদ্ধ। পুলিশের যে উপপরিদর্শক মামলায় নাম পাওয়ামাত্রই শিশুটিকে
গ্রেপ্তার করেছেন, তিনি আদালতে তার সাত দিনের রিমান্ডও চেয়েছিলেন। রিমান্ডে
কী হয় তা সবারই জানা। স্বস্তির কথা যে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাদের
শিশু-কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর অর্থ, শিশুটি এ
অবস্থায় সংশোধনের আওতায়, শাস্তির আওতায় নয়। তাহলে আইনের রক্ষকেরা কি আইন
জানে না? হাতকড়া ও দড়ি বেঁধে রাখার জন্য ওই পুলিশের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন,
নইলে অন্যরা সংশোধন হবে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, পুলিশের সংশোধনই বেশি
প্রয়োজন।
ঠাকুরগাঁওয়ের শিশুকে জেলখানা থেকে পরিবারের অজ্ঞাতে যশোরের সংশোধনকেন্দ্র পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে। ঠাকুরগাঁও থেকে যশোর অনেক দূর। ১৩ বছরের এই শিশুটি আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই হাতকড়া ও দড়ি-বাঁধা অবস্থায় মামলার তারিখে তারিখে যশোর-ঠাকুরগাঁও করবে? মধ্য আয়ের দেশ হতে চাওয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার গর্বে গর্বিত বাংলাদেশ কি এ রকম অমানবিক আচরণে গ্লানিবোধ করে না?
আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ, আইন ও সংস্কৃতি শিশুবান্ধব তো নয়ই, বরং শিশুর প্রতি উদাসীনতাই এর স্বভাবের অংশ। শিশুর যেখানে বিশেষ যত্ন প্রয়োজন, সেখানে উদাসীনতা বঞ্চনারই শামিল।
ঠাকুরগাঁওয়ের শিশুকে জেলখানা থেকে পরিবারের অজ্ঞাতে যশোরের সংশোধনকেন্দ্র পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে। ঠাকুরগাঁও থেকে যশোর অনেক দূর। ১৩ বছরের এই শিশুটি আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই হাতকড়া ও দড়ি-বাঁধা অবস্থায় মামলার তারিখে তারিখে যশোর-ঠাকুরগাঁও করবে? মধ্য আয়ের দেশ হতে চাওয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার গর্বে গর্বিত বাংলাদেশ কি এ রকম অমানবিক আচরণে গ্লানিবোধ করে না?
আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ, আইন ও সংস্কৃতি শিশুবান্ধব তো নয়ই, বরং শিশুর প্রতি উদাসীনতাই এর স্বভাবের অংশ। শিশুর যেখানে বিশেষ যত্ন প্রয়োজন, সেখানে উদাসীনতা বঞ্চনারই শামিল।
No comments