হেফাজতে ইসলামকে নিয়ে সরকারের ত্রিমুখী পদক্ষেপ by দীন ইসলাম
হেফাজতে ইসলামকে বাগে আনতে সরকারের অন্দরে
নানা চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দফায় দফায় এ নিয়ে
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
গত
বুধবার রাতে হেফাজতে ইসলামের বিষয়টি নিয়ে গণভবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে
দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সার্বিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ এবং পরবর্তী
বিষয় সম্পর্কে অবহিত করেন। ওদিকে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে প্রথম চেষ্টা
হিসেবে সরকার চাইছে, লংমার্চ কর্মসূচি স্থগিত করাতে। দ্বিতীয়ত, লংমার্চ
কর্মসূচি পালনে সহায়তা ও সব ধরনের সম্ভাব্য নাশকতা মোকাবিলায় প্রস্তুতি।
তৃতীয়ত, সংগঠনটি যাতে ঢাকায় লোকসমাগম বেশি করতে না পারে এজন্য নানা
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। এসব নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল সরকারের সিনিয়র
মন্ত্রীরা চতুর্থ দিনের মতো রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ
করেছেন। মিডিয়াকর্মীদের কাছে খুব বেশি মুখ খোলেননি কেউ। তবে হেফাজতে
ইসলামের দাবি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া, তাদের সঙ্গে যোগাযোগসহ নানা চেষ্টা করা
হয়েছে। চার দিনের এ বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর
ছাড়াও নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, বন ও
পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, আইন
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির
নানক, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল আলম হানিফ প্রমুখ উপস্থিত
ছিলেন। এর আগে গত সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা এ সংক্রান্ত অনানুষ্ঠানিক কমিটি গঠন করে দেন। এরপর থেকে উচ্চ
পর্যায়ের কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েই সব কিছুতে এগোচ্ছে। সিনিয়র মন্ত্রীদের
সঙ্গে বৈঠকের পর গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন,
আমাদের কাছে খবর আছে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকা লংমার্চে জঙ্গিবাদী
শিবির ও বিপথগামী বিএনপির নেতারা নাশকতার চেষ্টা চালাবেন। তাদের অপচেষ্টা
দমন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে দেশে
মানুষ খুন করার লাইসেন্স দিইনি। তিনি বলেন, রাজনীতির নামে একটি গোষ্ঠী
নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ করছে, গাড়ি পোড়াচ্ছে, বাস পোড়াচ্ছে। এটা কোন
সভ্য দেশে হতে পারে না। সারা দেশে সৃষ্টি হওয়া আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সম্পর্কে
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার পরিস্থিতি যত্ন নিয়ে
পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি আইনের বাইরে চলে গেলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
হেফাজতে ইসলামকে সমাবেশের অনুমতি কেন দেয়া হলো জানতে চাইলে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনুমতি দেয়া হলেও সমাবেশের জন্য তাদের একটি জায়গা
নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সমাবেশে কোন ধরনের অপচেষ্টা মেনে নেয়া হবে না।
তিনি বলেন, বাস মালিক সমিতির নেতারা লংমার্চ ও হরতাল সমর্থন করেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে কটূক্তি করায় খেলাফতে মজলিশের নেতা
জাফরউল্লাহ খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগের
নেতা-কর্মীরা। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
No comments