ক্ষুদ্রঋণ-ব্যবস্থা পরিবর্তনের তাগিদ
দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও দ্রুত সম্প্রসারণের কারণে ক্ষুদ্রঋণব্যবস্থাকে ঘিরে সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ঋণ জোগানদাতাদের ব্যক্তিগতভাবে লাভালাভের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমকে আরও ব্যপকভাবে এগিয়ে নিতে হলে ব্যবস্থাটিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ গতকাল রোববার এসব কথা বলেন।
খলীকুজ্জমান আরও বলেন, ‘১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে এ দেশে ক্ষুদ্রঋণের যাত্রা শুরু। আশির দশকে এসে এটি বিস্তার লাভ করে। নব্বইয়ের দশকে এসে ক্ষুদ্রঋণের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। যখন কোনো কিছু বড় হয়ে যায়, তখন অনেক নতুন জিনিস প্রবেশ করে। সেই অবস্থা থেকে বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে হলে পরিবর্তনের প্রয়োজন। আর এটা করতে গেলে এখন আমরা কী করছি সেটা ভালোমতো জানতে হবে।’
খলীকুজ্জমান বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণব্যবস্থায় পরিবর্তনের জন্য বিদেশে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চলছে। কিন্তু এ ব্যবস্থাটির পথিকৃৎ হিসেবে পরিবর্তনের পথিকৃৎও আমাদের হতে হবে। এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যেন ক্ষুদ্রঋণ যাঁরা নিচ্ছেন, তাঁদের যেমন উপকার হয়, তেমনি যাঁরা ঋণ জোগান দিচ্ছেন তাঁরাও যাতে টেকসই হতে পারেন। কারণ, ঋণ জোগানদাতারা টেকসই না হলে অর্থের সরবরাহ কমে যাবে। এটা মাথায় রেখেই নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসফের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মেসবাহউদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভীন মাহমুদ।
খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার নিয়ে একটা সমালোচনা ছিল। সম্প্রতি ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এমআরএ) ক্ষুদ্রঋণের জন্য ২৭ শতাংশ সর্বোচ্চ সুদ হার বেঁধে দিয়েছে। অনেকে মনে করেন, আগে ছিল ১৫ শতাংশ, এখন কমানোর কথা বলে উল্টো বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি তা নয়।
খলীকুজ্জমান ব্যাখ্যা করে বলেন, আগে ১৫ শতাংশের কথা বলা হলেও প্রকৃত হার অনেক বেড়ে যেত। কিন্তু এখন সুদহার ব্যাংকের মতো। ২৭ মানে ২৭। এ ছাড়া এখন থেকে ঋণ ছাড় করার এক সপ্তাহের মধ্যে কিস্তি নেওয়া যাবে না। কমপক্ষে ১৫ দিন সময় দিতে হবে। সঞ্চয়ের নামে শুরুতেই বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচ শতাংশ টাকা কেটে রাখা বন্ধ করতে হবে।
সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রধান নির্বাহীদের উদ্দেশে খলীকুজ্জমান বলেন, আগামী জুনের মধ্যে সবাইকে এ নিয়ম বাস্তবায়ন করতে হবে।
খলীকুজ্জমান বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন করতে হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে অর্থের প্রবাহ যেতে হবে। এ জন্য ক্ষুদ্রঋণের সম্প্রসারণ দরকার। এ জন্য তাড়াহুড়া করা যাবে না। আবার এটাও মনে রাখতে হবে, কেবল টাকা দিয়েই দারিদ্র্য দূর করা যাবে না। এ জন্য সমন্বিত প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে।
ক্ষুদ্রঋণ যাতে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে খলীকুজ্জমান বলেন, উৎপাদনশীলতা না বাড়লে সঞ্চয় বাড়বে না। তাই যেসব পরিবার ঋণ নেবে তাদেরও ভেবে দেখতে হবে আদৌ তাদের ঋণ প্রয়োজন রয়েছে কি না।
খলীকুজ্জমান বলেন, ক্ষুদ্রঋণকে ধীরে ধীরে স্বকর্মসংস্থান থেকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে যেতে হবে।
কাজী মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে একটা ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধিই দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখতে পারে না। প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের মধ্যে একটা যোগাযোগ স্থাপিত না হলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হবে না।
ভারতের এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে মেসবাহউদ্দিন বলেন, দেশটিতে আগে যে পরিমাণ শ্রমশক্তি দিয়ে উৎপাদন হতো, এখন তার অর্ধেক শ্রমশক্তি দিয়ে দ্বিগুণ উৎপাদন হয়। প্রযুক্তির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। এতে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও বৈষম্য বেড়েছে।
মতবিনিময় সভায় পিকেএসএফের সারা দেশ থেকে ১৯৮টি সহযোগী সংস্থার প্রধান নির্বাহীরা অংশ নেন। তাঁরা স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা-সংকটের কথা তুলে ধরেন। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, বর্তমানে এ কার্যক্রমে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রবণতা বাড়ছে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ গতকাল রোববার এসব কথা বলেন।
খলীকুজ্জমান আরও বলেন, ‘১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে এ দেশে ক্ষুদ্রঋণের যাত্রা শুরু। আশির দশকে এসে এটি বিস্তার লাভ করে। নব্বইয়ের দশকে এসে ক্ষুদ্রঋণের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। যখন কোনো কিছু বড় হয়ে যায়, তখন অনেক নতুন জিনিস প্রবেশ করে। সেই অবস্থা থেকে বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে হলে পরিবর্তনের প্রয়োজন। আর এটা করতে গেলে এখন আমরা কী করছি সেটা ভালোমতো জানতে হবে।’
খলীকুজ্জমান বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণব্যবস্থায় পরিবর্তনের জন্য বিদেশে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চলছে। কিন্তু এ ব্যবস্থাটির পথিকৃৎ হিসেবে পরিবর্তনের পথিকৃৎও আমাদের হতে হবে। এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যেন ক্ষুদ্রঋণ যাঁরা নিচ্ছেন, তাঁদের যেমন উপকার হয়, তেমনি যাঁরা ঋণ জোগান দিচ্ছেন তাঁরাও যাতে টেকসই হতে পারেন। কারণ, ঋণ জোগানদাতারা টেকসই না হলে অর্থের সরবরাহ কমে যাবে। এটা মাথায় রেখেই নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসফের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মেসবাহউদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভীন মাহমুদ।
খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার নিয়ে একটা সমালোচনা ছিল। সম্প্রতি ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এমআরএ) ক্ষুদ্রঋণের জন্য ২৭ শতাংশ সর্বোচ্চ সুদ হার বেঁধে দিয়েছে। অনেকে মনে করেন, আগে ছিল ১৫ শতাংশ, এখন কমানোর কথা বলে উল্টো বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি তা নয়।
খলীকুজ্জমান ব্যাখ্যা করে বলেন, আগে ১৫ শতাংশের কথা বলা হলেও প্রকৃত হার অনেক বেড়ে যেত। কিন্তু এখন সুদহার ব্যাংকের মতো। ২৭ মানে ২৭। এ ছাড়া এখন থেকে ঋণ ছাড় করার এক সপ্তাহের মধ্যে কিস্তি নেওয়া যাবে না। কমপক্ষে ১৫ দিন সময় দিতে হবে। সঞ্চয়ের নামে শুরুতেই বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচ শতাংশ টাকা কেটে রাখা বন্ধ করতে হবে।
সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রধান নির্বাহীদের উদ্দেশে খলীকুজ্জমান বলেন, আগামী জুনের মধ্যে সবাইকে এ নিয়ম বাস্তবায়ন করতে হবে।
খলীকুজ্জমান বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন করতে হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে অর্থের প্রবাহ যেতে হবে। এ জন্য ক্ষুদ্রঋণের সম্প্রসারণ দরকার। এ জন্য তাড়াহুড়া করা যাবে না। আবার এটাও মনে রাখতে হবে, কেবল টাকা দিয়েই দারিদ্র্য দূর করা যাবে না। এ জন্য সমন্বিত প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে।
ক্ষুদ্রঋণ যাতে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে খলীকুজ্জমান বলেন, উৎপাদনশীলতা না বাড়লে সঞ্চয় বাড়বে না। তাই যেসব পরিবার ঋণ নেবে তাদেরও ভেবে দেখতে হবে আদৌ তাদের ঋণ প্রয়োজন রয়েছে কি না।
খলীকুজ্জমান বলেন, ক্ষুদ্রঋণকে ধীরে ধীরে স্বকর্মসংস্থান থেকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে যেতে হবে।
কাজী মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে একটা ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধিই দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখতে পারে না। প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের মধ্যে একটা যোগাযোগ স্থাপিত না হলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হবে না।
ভারতের এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে মেসবাহউদ্দিন বলেন, দেশটিতে আগে যে পরিমাণ শ্রমশক্তি দিয়ে উৎপাদন হতো, এখন তার অর্ধেক শ্রমশক্তি দিয়ে দ্বিগুণ উৎপাদন হয়। প্রযুক্তির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। এতে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও বৈষম্য বেড়েছে।
মতবিনিময় সভায় পিকেএসএফের সারা দেশ থেকে ১৯৮টি সহযোগী সংস্থার প্রধান নির্বাহীরা অংশ নেন। তাঁরা স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা-সংকটের কথা তুলে ধরেন। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, বর্তমানে এ কার্যক্রমে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রবণতা বাড়ছে।
No comments