মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার -রাজনৈতিক মতৈক্য প্রতিষ্ঠা জরুরি
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্যোগকে যে গোটা জাতি স্বাগত জানিয়েছে, তার প্রতিধ্বনি শোনা গেল গত মঙ্গলবার প্রথম আলো আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকেও। এতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন মন্ত্রী, বিরোধীদলীয় সাংসদ, বিচারক, আইন বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামও কম হয়নি। একাত্তরে দেশের সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে শরিক হলেও কতিপয় গাদ্দার এর কেবল বিরোধিতাই করেনি, দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো গুরুতর অপরাধ করেছে। এরা দেশদ্রোহী ও মানবতার শত্রু। স্বাধীনতার পর ভিন্ন নামে হলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে তা কেবল বন্ধই হয়নি, চিহ্নিত অপরাধীদের কেউ কেউ রাজনৈতিকভাবেও পুনর্বাসিত হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে প্রণীত হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ (আদালত) আইন। সে আইনেই একাত্তরে এ দেশের মাটিতে সংঘটিত সব অপরাধের বিচার হওয়া সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু কিছু সংশোধনীরও সুপারিশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে যদি সংবিধানের সংশ্লিষ্ট কোন অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তা করার জন্য সংসদে যে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দরকার তা এই সরকারের আছে। অতীতে বেশ কিছু আইন আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে এবং তা যথারীতি বাতিলও হয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ায় সে ধরনের আইনগত ত্রুটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর সঙ্গে যেমন ন্যায়বিচারের প্রশ্ন জড়িত, তেমনি জড়িত জাতির আবেগ-অনুভূতিও। আইনগত ত্রুটির কারণে বা সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে প্রকৃত অপরাধীরা যাতে ছাড়া না পায়, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। যারা এই বিচারকে ৩৯ বছর আগের মীমাংসিত ঘটনা বলে কূটতর্কে লিপ্ত হচ্ছে, তাদের মতলব বুঝতে অসুবিধা হয় না। অপরাধীরা বরাবর সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের দায়ে নািস বাহিনীর সদস্যদের এখনো আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো গেলে একাত্তরের অপরাধীদের বিচারে বাধা কোথায়?
সরকার ইতিমধ্যে বিচারক, তদন্তকারী ও আইনজীবী নিয়োগ করেছে। প্রয়োজনে তদন্ত কর্মকর্তা ও আইনজীবীর সংখ্যা বাড়াতে হবে, গোলটেবিল বৈঠকের বক্তারাও সেরূপ দাবি জানিয়েছেন। সরকারকে এর রাজনৈতিক, সামাজিক ও জাতীয় তাৎপর্য অনুধাবন করতে হবে। বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মন্ত্রীদেরও এ বিষয়ে বেশি কথা বলা ঠিক নয়। বরং বিচারের আনুষঙ্গিক সমর্থন জোগানোর দিকেই সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাজনৈতিক মতৈক্য। অন্তত এই একটি বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দলকে একমত হতে হবে। বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে, ক্ষমতার পালাবদলেও তা ব্যাহত হবে না, সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে বিরোধী দলকে। অনুরূপ বিচারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে না বলে সরকার যে অঙ্গীকার করেছে, কার্যক্ষেত্রেও তার প্রতিফলন থাকা চাই। সংকীর্ণ রাজনৈতিক ভেদবুদ্ধির ঊর্ধ্বে থেকে জাতির এই আরব্ধ কাজকে এগিয়ে নিতে সবাই একযোগে কাজ করবেন, সেটাই প্রত্যাশিত।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামও কম হয়নি। একাত্তরে দেশের সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে শরিক হলেও কতিপয় গাদ্দার এর কেবল বিরোধিতাই করেনি, দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো গুরুতর অপরাধ করেছে। এরা দেশদ্রোহী ও মানবতার শত্রু। স্বাধীনতার পর ভিন্ন নামে হলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে তা কেবল বন্ধই হয়নি, চিহ্নিত অপরাধীদের কেউ কেউ রাজনৈতিকভাবেও পুনর্বাসিত হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে প্রণীত হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ (আদালত) আইন। সে আইনেই একাত্তরে এ দেশের মাটিতে সংঘটিত সব অপরাধের বিচার হওয়া সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু কিছু সংশোধনীরও সুপারিশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে যদি সংবিধানের সংশ্লিষ্ট কোন অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তা করার জন্য সংসদে যে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দরকার তা এই সরকারের আছে। অতীতে বেশ কিছু আইন আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে এবং তা যথারীতি বাতিলও হয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ায় সে ধরনের আইনগত ত্রুটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর সঙ্গে যেমন ন্যায়বিচারের প্রশ্ন জড়িত, তেমনি জড়িত জাতির আবেগ-অনুভূতিও। আইনগত ত্রুটির কারণে বা সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে প্রকৃত অপরাধীরা যাতে ছাড়া না পায়, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। যারা এই বিচারকে ৩৯ বছর আগের মীমাংসিত ঘটনা বলে কূটতর্কে লিপ্ত হচ্ছে, তাদের মতলব বুঝতে অসুবিধা হয় না। অপরাধীরা বরাবর সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের দায়ে নািস বাহিনীর সদস্যদের এখনো আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো গেলে একাত্তরের অপরাধীদের বিচারে বাধা কোথায়?
সরকার ইতিমধ্যে বিচারক, তদন্তকারী ও আইনজীবী নিয়োগ করেছে। প্রয়োজনে তদন্ত কর্মকর্তা ও আইনজীবীর সংখ্যা বাড়াতে হবে, গোলটেবিল বৈঠকের বক্তারাও সেরূপ দাবি জানিয়েছেন। সরকারকে এর রাজনৈতিক, সামাজিক ও জাতীয় তাৎপর্য অনুধাবন করতে হবে। বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মন্ত্রীদেরও এ বিষয়ে বেশি কথা বলা ঠিক নয়। বরং বিচারের আনুষঙ্গিক সমর্থন জোগানোর দিকেই সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাজনৈতিক মতৈক্য। অন্তত এই একটি বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দলকে একমত হতে হবে। বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে, ক্ষমতার পালাবদলেও তা ব্যাহত হবে না, সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে বিরোধী দলকে। অনুরূপ বিচারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে না বলে সরকার যে অঙ্গীকার করেছে, কার্যক্ষেত্রেও তার প্রতিফলন থাকা চাই। সংকীর্ণ রাজনৈতিক ভেদবুদ্ধির ঊর্ধ্বে থেকে জাতির এই আরব্ধ কাজকে এগিয়ে নিতে সবাই একযোগে কাজ করবেন, সেটাই প্রত্যাশিত।
No comments