‘জং জি চেং চেং’-এই চীনা প্রবাদ অনুসরণের তাগিদ দিলেন লামি by শওকত হোসেন
বক্তা হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক প্যাসকাল লামির সুনাম বহু পুরোনো। গত সোমবার উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি এবার ব্যবহার করলেন একটি চীনা প্রবাদ, যার বাংলা করলে হয় ‘একতাই শক্তি’।
বাংলাদেশে যেমন বলা হয় ‘একতাই বল’ বা ‘দশে মিলি করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ,’ প্যাসকাল লামিকে তাঁর বক্তৃতার শেষ অংশে এ কথাগুলো বলতে হলো ২০১০ সালের মধ্যে দোহা উন্নয়ন আলোচনা শেষ করার তাগিদ দিতে গিয়ে।
কেননা, এর ওপরই অনেকখানি নির্ভর করে আছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্যতা ও সফলতা।
মন্ত্রী পর্যায়ের এবারের এই সপ্তম সম্মেলনে ঘুরেফিরেই বারবার আসছে এই দোহা উন্নয়ন আলোচনা। আর এর অনুষঙ্গ হিসেবে চলে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের নামটি।
কেননা, দোহা উন্নয়ন আলোচনা সফল করতে হলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা যে যুক্তরাষ্ট্রকে নিতে হবে, এটা সবাই জানেন এবং মানেন।
সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে জেনেভায় অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেলসো অ্যামোরিম তো বলেই ফেললেন, একটি মাত্র দেশ আলোচনাকে অচল রেখেছে, ফলে সামনে এগোনো যাচ্ছে না। নাম না উল্লেখ করলেও তিনি যে যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলছেন, তা সবাই জানেন।
আর বলবেন না-ই বা কেন? মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অগ্রাধিকারের তালিকায় প্রথম তিনটির মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা নেই। অগ্রাধিকারের তালিকায় ওপরে আসতে না পারলে দোহা উন্নয়ন আলোচনা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই।
জেনেভায় এসেও শুরুতে জানা যাচ্ছিল না যে, এবারের এই সম্মেলনে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রন কার্ক আসবেন কি না। তাঁর আসা বা না আসার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার বোঝার চেষ্টা করেছিলেন অনেকেই। পরে জানা গেল, সম্মেলনের শেষ দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য তিনি আসছেন।
সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনেভার আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে। এখানকার মিডিয়া সেন্টারে প্রতিনিয়ত জানানো হচ্ছে কখন কে সংবাদ সম্মেলন করছেন। উদ্বোধনের পর গত সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের যে তালিকা পাওয়া গেল, সেখানে রন কার্কের নাম রয়েছে। তবে সময়টি বলা হয়নি, পরে জানানো হবে। সন্দেহ নেই, এবারের এই সম্মেলনে সবাই অধীর আগ্রহ করে আছেন রন কার্কের সংবাদ সম্মেলনের জন্য।
যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় রন কার্ক অবশ্য সম্মেলন শুরু হতেই একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় বরাবরের মতোই নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখবে। বাণিজ্য আলোচনা সফল করতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও তিনি জানান।
প্যাসকাল লামি অবশ্য আলাদা করে কোনো দেশের নাম বলেননি। তিনি দোহা উন্নয়ন আলোচনা ২০১০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করতে সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন চীনা প্রবাদ— ‘জং জি চেং চেং’, অর্থাত্ একতাই শক্তি।
এই প্রবাদকে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে লামি বলেন, এরই মধ্যে দোহা উন্নয়ন আলোচনা আট বছর ধরে করা হচ্ছে। লক্ষ্য অনুযায়ী ২০১০ সালের মধ্যে শেষ করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ব রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়ে বাস্তবে একমত, তবে পর্যাপ্ত অঙ্গীকারের অভাব রয়েছে। সুতরাং এখন কাজ দেখাতে হবে।
লামির ভাষায়, ‘আগামী কিছুদিন আমাদের অনেক বেশি শক্তিশালী হতে হবে, আরও বেশি একতাবদ্ধ থাকতে হবে এবং ২০১০ সালের মধ্যে আলোচনা শেষ করতে পরিষ্কার লক্ষ্য থাকতে হবে।’
সময়টা যে ভালো না, তা বলতে অবশ্য ভোলেননি প্যাসকাল লামি। ২০০৯ সাল ইতিহাসের এমন একটি সময়, যখন বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে, আরও বেশি মানুষ হারিয়েছে তাদের সঞ্চয় এবং গত কয়েক দশকে যে উন্নতি করেছিল বিভিন্ন দেশ, তা নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে এটিও ঠিক যে, এ রকম একটি সময়ে সারা বিশ্ব একযোগে কাজ করছে, যা আগে তেমনটি দেখা যায়নি।
লামি এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বাণিজ্যকে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এখন বাণিজ্যসুবিধা বাড়াতে দেশগুলো কাজ করতে পারে। বাণিজ্যসুবিধাগুলো ব্যবহার করতে পারে সবাই।’ তবে পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য অভ্যন্তরীণ নীতি গ্রহণের কথা বলতে ভোলেননি তিনি।
আয়োজক সুইজারল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী ডরিস লেথার্ড দোহা আলোচনা খুব বেশি না এগোনোর জন্য বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাকেই দায়ী করলেন। তিনি বলেছেন, ২০০৮ সালের পর আলোচনা আসলে তেমন আর এগোয়নি। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, বাণিজ্য আলোচনায় তাঁর দেশের ভেতর থেকেই প্রবল বাধা আছে। বিশেষ করে কৃষি আলোচনা নিয়ে। এর পরও আলোচনা এগিয়ে নিতে হবে বলেই তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশে যেমন বলা হয় ‘একতাই বল’ বা ‘দশে মিলি করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ,’ প্যাসকাল লামিকে তাঁর বক্তৃতার শেষ অংশে এ কথাগুলো বলতে হলো ২০১০ সালের মধ্যে দোহা উন্নয়ন আলোচনা শেষ করার তাগিদ দিতে গিয়ে।
কেননা, এর ওপরই অনেকখানি নির্ভর করে আছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্যতা ও সফলতা।
মন্ত্রী পর্যায়ের এবারের এই সপ্তম সম্মেলনে ঘুরেফিরেই বারবার আসছে এই দোহা উন্নয়ন আলোচনা। আর এর অনুষঙ্গ হিসেবে চলে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের নামটি।
কেননা, দোহা উন্নয়ন আলোচনা সফল করতে হলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা যে যুক্তরাষ্ট্রকে নিতে হবে, এটা সবাই জানেন এবং মানেন।
সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে জেনেভায় অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেলসো অ্যামোরিম তো বলেই ফেললেন, একটি মাত্র দেশ আলোচনাকে অচল রেখেছে, ফলে সামনে এগোনো যাচ্ছে না। নাম না উল্লেখ করলেও তিনি যে যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলছেন, তা সবাই জানেন।
আর বলবেন না-ই বা কেন? মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অগ্রাধিকারের তালিকায় প্রথম তিনটির মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা নেই। অগ্রাধিকারের তালিকায় ওপরে আসতে না পারলে দোহা উন্নয়ন আলোচনা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই।
জেনেভায় এসেও শুরুতে জানা যাচ্ছিল না যে, এবারের এই সম্মেলনে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রন কার্ক আসবেন কি না। তাঁর আসা বা না আসার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার বোঝার চেষ্টা করেছিলেন অনেকেই। পরে জানা গেল, সম্মেলনের শেষ দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য তিনি আসছেন।
সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনেভার আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে। এখানকার মিডিয়া সেন্টারে প্রতিনিয়ত জানানো হচ্ছে কখন কে সংবাদ সম্মেলন করছেন। উদ্বোধনের পর গত সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের যে তালিকা পাওয়া গেল, সেখানে রন কার্কের নাম রয়েছে। তবে সময়টি বলা হয়নি, পরে জানানো হবে। সন্দেহ নেই, এবারের এই সম্মেলনে সবাই অধীর আগ্রহ করে আছেন রন কার্কের সংবাদ সম্মেলনের জন্য।
যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় রন কার্ক অবশ্য সম্মেলন শুরু হতেই একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় বরাবরের মতোই নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখবে। বাণিজ্য আলোচনা সফল করতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও তিনি জানান।
প্যাসকাল লামি অবশ্য আলাদা করে কোনো দেশের নাম বলেননি। তিনি দোহা উন্নয়ন আলোচনা ২০১০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করতে সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন চীনা প্রবাদ— ‘জং জি চেং চেং’, অর্থাত্ একতাই শক্তি।
এই প্রবাদকে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে লামি বলেন, এরই মধ্যে দোহা উন্নয়ন আলোচনা আট বছর ধরে করা হচ্ছে। লক্ষ্য অনুযায়ী ২০১০ সালের মধ্যে শেষ করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ব রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়ে বাস্তবে একমত, তবে পর্যাপ্ত অঙ্গীকারের অভাব রয়েছে। সুতরাং এখন কাজ দেখাতে হবে।
লামির ভাষায়, ‘আগামী কিছুদিন আমাদের অনেক বেশি শক্তিশালী হতে হবে, আরও বেশি একতাবদ্ধ থাকতে হবে এবং ২০১০ সালের মধ্যে আলোচনা শেষ করতে পরিষ্কার লক্ষ্য থাকতে হবে।’
সময়টা যে ভালো না, তা বলতে অবশ্য ভোলেননি প্যাসকাল লামি। ২০০৯ সাল ইতিহাসের এমন একটি সময়, যখন বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে, আরও বেশি মানুষ হারিয়েছে তাদের সঞ্চয় এবং গত কয়েক দশকে যে উন্নতি করেছিল বিভিন্ন দেশ, তা নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে এটিও ঠিক যে, এ রকম একটি সময়ে সারা বিশ্ব একযোগে কাজ করছে, যা আগে তেমনটি দেখা যায়নি।
লামি এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বাণিজ্যকে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এখন বাণিজ্যসুবিধা বাড়াতে দেশগুলো কাজ করতে পারে। বাণিজ্যসুবিধাগুলো ব্যবহার করতে পারে সবাই।’ তবে পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য অভ্যন্তরীণ নীতি গ্রহণের কথা বলতে ভোলেননি তিনি।
আয়োজক সুইজারল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী ডরিস লেথার্ড দোহা আলোচনা খুব বেশি না এগোনোর জন্য বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাকেই দায়ী করলেন। তিনি বলেছেন, ২০০৮ সালের পর আলোচনা আসলে তেমন আর এগোয়নি। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, বাণিজ্য আলোচনায় তাঁর দেশের ভেতর থেকেই প্রবল বাধা আছে। বিশেষ করে কৃষি আলোচনা নিয়ে। এর পরও আলোচনা এগিয়ে নিতে হবে বলেই তিনি মনে করেন।
No comments