সরকারি হাসপাতালগুলোর রোগীই ছিল ১৪ হাসপাতালের টার্গেট by সুদীপ অধিকারী
সরকারি
হাসপাতালের ডাক্তারদের দম ফেলার সময় নেই। সকালে নিয়োগকৃত সরকারি
হাসপাতালে, তো বিকালে বসছেন কোনো প্রাইভেট চেম্বারে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনও
ছুটছেন রোগীর পেছনে। পাশাপাশি এসব ডাক্তারের কখনো নিজের নামে আবার কখনো
অন্য নামের মালিকানায়, মোহাম্মদপুর এলাকায় গড়ে উঠেছিল অনুমোদনহীন ১৪টি
প্রাইভেট হাসপাতাল। যাদের বেশিরভাগ চিকিৎসা বাণিজ্যই চলতো সরকারি
হাসপাতালের রোগীর ওপর ভরসা করে। আর এসব রোগী আসতো দালাল, ডাক্তারের
কর্মচারী বা কখনো ডাক্তারের পরামর্শেই।
রাজধানীর মোহম্মদপুরের হুমায়ুন রোড, বাবর রোড ও খিলজি রোডে অবস্থিত অনুমোদনহীন বিডিএম হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক, সেবিকা জেনারেল হাসপাতাল, জনসেবা নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লাইফ কেয়ার নার্সিং হোম, রয়েল মাল্টিস্পেশালিস্ট হসপিটাল, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা মেন্টাল অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডিকশন হসপিটাল, মনমিতা মেন্টাল হসপিটাল, প্লাজমা মেডিকেল সার্ভিস অ্যান্ড ক্লিনিক, শেফা হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইসলামিয়া মেন্টাল হসপিটাল, ক্রিসেন্ট হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক, নিউ ওয়েল কেয়ার হসপিটাল এবং বাংলাদেশ ট্রমা স্পেশালাইজড হসপিটাল চলত এভাবেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হুমায়ুন রোডের ‘বিডিএম হাসপাতালটির’ প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ৭ জন চিকিৎসক।
যাদের মধ্যে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) একজন খাতিমান চিকিৎসকেরও নাম রয়েছে। অনুমোদনহীন প্রতিটি হাসপাতালে এমনই সব সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগী দেখতেন প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন ডাক্তারের নাম দিয়ে রকমারি সব সাইনবোর্ড লাগানো থাকতো হাসপাতালগুলোর সামনে। জানা যায়, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানের সময় এসব চিকিৎসক এক বা একাধিক কর্মচারী নিয়োগ করেন। চিকিৎসক কাজে ব্যস্ত থাকাকালে, যাদের কাজ থাকে চেম্বার অর্থাৎ চিকিৎসকের নির্দিষ্ট রুমের সামনে বসে থাকা। ডাক্তার কোথায় ও কবে, কখন প্রাইভেট রোগী দেখেন তার বিষয়ে মানুষকে বলা। প্রয়োজন মতো প্রাইভেট ভিজিটিং কার্ড সরবরাহসহ রোগীর সিরিয়াল লেখার কাজও করেন তারা। তাদের মাধ্যমেই বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পাঠান সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা।
এলাকাটিতে অবস্থিত সরকারি হাসপাতাল ঢাকা শিশু হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, বাংলাদেশ কিডনি ইনস্টিটিউট, জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আগত দেশের বিভিন্ন এলাকার রোগীদের ওপর ভরসা করে এই এলাকায় গড়ে ওঠে অনুমোদনহীন একাধিক হাসপাতাল। এসব সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শ ও সঙ্ঘবদ্ধ দালালচক্রের মাধ্যমে রোগী আনা হতো অনুমোদনহীন হাসপাতালগুলোয়। এমনই একজন নাসিমা বেগম। পা ভেঙে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন থেকে এক্স-রে করতে হবে, ডাক্তারের এমন নির্দেশে পায়ের এক্স-রে করাতে গিয়েছিলেন সেবিকা জেনারেল হাসপাতাল ও লাইফ কেয়ার নার্সিং হোমে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ভালো হবে না, আপনার ওই ডাক্তার এখানেই বসে। সঠিক ট্রিটমেন্টটা পাবেন। এমন নানা কথা বলে, নার্সিং হোমেই ভর্তি করে নেয় তাকে। কিন্তু দিন গেলেই নিত্য নতুন খরচ দেখে টনক নড়ে তার।
হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পর বৃহস্পতিবার হাসপাতালগুলোর বর্তমান অবস্থা জানতে গেলে দেখা যায়, হাসপাতালগুলোর বেশিরভাগই পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বন্ধ গেটের সামনে বসে আছে কিছু নিরাপত্তাকর্মী। তবে ভেতরে মানুষের অবস্থান বোঝা যাচ্ছে। কথা বলতে গেলে তেমন কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে, দিব্যি খোলা রয়েছে রয়েল মাল্টিস্পেশালিস্ট হাসপাতাল। সব কার্যক্রমই চলছে তাদের।
রিসিপশনে বসে থাকা মানসুরা আক্তার বলেন, আমরা টিভিতে খবরটি দেখেছি। আমাদের হাসপাতালটি দোতলা বাড়িতে অবস্থিত। আমরা মনে করি এতে যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। রোগীর চাপে এখানে আমরা শিফটে ডিউটি করি। নিয়মিত চিকিৎসক আছেন ৬-৭ জন। আর কলে আসেন এমন চিকিৎসক আছেন ১০ জন। আমাদের এখানে সব ধরনেরই অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি দাবি করেন, এই হাসপাতালে ২০ শয্যার অনুমোদন আছে। তবে, এখন শয্যা আছে ১০টি। ভিআইপি কেবিন আছে ২টি এবং সিঙ্গেল কেবিন আছে ২টি। কার্যক্রম চালোনোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান স্যার ডা. আরিফ হোসেন এখন দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশে ফিরে আসার পরই সিদ্ধান্ত নেবেন এই রায়ের ব্যাপারে কী করা যায়।
বাংলাদেশ স্পেশালাইজড ট্রমা সেন্টারের রিসিপশনেও কর্মী বসে থাকতে দেখা যায়। লোকজনের আনাগোনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। যে কেউই বুঝতে পারবে, তাদের কার্যক্রম এখনো থেমে নেই। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পরও কার্যক্রম চালনোর বিষয়ে তারা বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স আছে, তবে তা নবায়ন করা হয়নি। অনুমোদনহীন রোগী সেবা দেয়ার বিষয়ে জানান, আমরা নতুন কোনো রোগী ভর্তি করিনি। পুরনো যে কয়েকজন রোগী ছিল তাদেরই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শুধু বিভিন্ন ফিজিওথেরাপি দেয়া হচ্ছে। সেবিকা জেনারেল হাসপাতাল ও লাইফ কেয়ার নার্সিং হোমে পুরনো দু-একজন রোগীর দেখা মিল্লেও দেখা মেলেনি কোনো চিকিৎসকের। তবে, বিডিএম হাসপাতালে এখনো রোগীর ভিড় চোখে পড়ার মতো।
এ বিষয়ে হাসপাতালের ম্যানেজার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমরা ২০-২২ বছর ধরে রাজধানীতে এই হাসপাতাল পরিচালনা করছি। যদি কোনো খুঁত থাকতো তাহলে এত দিন এই হাসপাতাল পরিচালনা করতে পারতাম না। আমাদের এখানে বড় বড় হাসপাতালের নামি চিকিৎসকরা এসে চিকিৎসা করেন। মূলত অর্থোপেডিক রোগীর চিকিৎসা এখানে বেশি করা হয়। ৮তলা এই হাসপাতালটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট। ১৫০ জন স্টাফ আছেন। ২০ জন চিকিৎসক আছেন। আমরা যতদূর সম্ভব ক্লিনভাবে এই হাসপাতাল চালাই। এই প্রথমবার রিটের মুখোমুখি হলাম। আমরা আইনিভাবেই এর জবাব দেবো। হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে কিছু হাসপাতাল খোলা থাকলেও বাকিগুলোর বেশির ভাগের কার্যক্রমই রয়েছে বন্ধ।
মোহাম্মদপুর কয়েকশ মিটারের মধ্যেই গড়ে উঠেছিল ২৬টি ব্যক্তিমালিকানার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যার মধ্যে ১৪টিরই নেই কোনো লাইসেন্স বা সরকারি অনুমোদন। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে মামলা করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআর পিবি)। গত ১১ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবৈধভাবে পরিচালিত ১৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার দ্রুত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্লিনিকগুলো দ্রুত বন্ধের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।
রাজধানীর মোহম্মদপুরের হুমায়ুন রোড, বাবর রোড ও খিলজি রোডে অবস্থিত অনুমোদনহীন বিডিএম হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক, সেবিকা জেনারেল হাসপাতাল, জনসেবা নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লাইফ কেয়ার নার্সিং হোম, রয়েল মাল্টিস্পেশালিস্ট হসপিটাল, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা মেন্টাল অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডিকশন হসপিটাল, মনমিতা মেন্টাল হসপিটাল, প্লাজমা মেডিকেল সার্ভিস অ্যান্ড ক্লিনিক, শেফা হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইসলামিয়া মেন্টাল হসপিটাল, ক্রিসেন্ট হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক, নিউ ওয়েল কেয়ার হসপিটাল এবং বাংলাদেশ ট্রমা স্পেশালাইজড হসপিটাল চলত এভাবেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হুমায়ুন রোডের ‘বিডিএম হাসপাতালটির’ প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ৭ জন চিকিৎসক।
যাদের মধ্যে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) একজন খাতিমান চিকিৎসকেরও নাম রয়েছে। অনুমোদনহীন প্রতিটি হাসপাতালে এমনই সব সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগী দেখতেন প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন ডাক্তারের নাম দিয়ে রকমারি সব সাইনবোর্ড লাগানো থাকতো হাসপাতালগুলোর সামনে। জানা যায়, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানের সময় এসব চিকিৎসক এক বা একাধিক কর্মচারী নিয়োগ করেন। চিকিৎসক কাজে ব্যস্ত থাকাকালে, যাদের কাজ থাকে চেম্বার অর্থাৎ চিকিৎসকের নির্দিষ্ট রুমের সামনে বসে থাকা। ডাক্তার কোথায় ও কবে, কখন প্রাইভেট রোগী দেখেন তার বিষয়ে মানুষকে বলা। প্রয়োজন মতো প্রাইভেট ভিজিটিং কার্ড সরবরাহসহ রোগীর সিরিয়াল লেখার কাজও করেন তারা। তাদের মাধ্যমেই বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পাঠান সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা।
এলাকাটিতে অবস্থিত সরকারি হাসপাতাল ঢাকা শিশু হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, বাংলাদেশ কিডনি ইনস্টিটিউট, জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আগত দেশের বিভিন্ন এলাকার রোগীদের ওপর ভরসা করে এই এলাকায় গড়ে ওঠে অনুমোদনহীন একাধিক হাসপাতাল। এসব সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শ ও সঙ্ঘবদ্ধ দালালচক্রের মাধ্যমে রোগী আনা হতো অনুমোদনহীন হাসপাতালগুলোয়। এমনই একজন নাসিমা বেগম। পা ভেঙে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন থেকে এক্স-রে করতে হবে, ডাক্তারের এমন নির্দেশে পায়ের এক্স-রে করাতে গিয়েছিলেন সেবিকা জেনারেল হাসপাতাল ও লাইফ কেয়ার নার্সিং হোমে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ভালো হবে না, আপনার ওই ডাক্তার এখানেই বসে। সঠিক ট্রিটমেন্টটা পাবেন। এমন নানা কথা বলে, নার্সিং হোমেই ভর্তি করে নেয় তাকে। কিন্তু দিন গেলেই নিত্য নতুন খরচ দেখে টনক নড়ে তার।
হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পর বৃহস্পতিবার হাসপাতালগুলোর বর্তমান অবস্থা জানতে গেলে দেখা যায়, হাসপাতালগুলোর বেশিরভাগই পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বন্ধ গেটের সামনে বসে আছে কিছু নিরাপত্তাকর্মী। তবে ভেতরে মানুষের অবস্থান বোঝা যাচ্ছে। কথা বলতে গেলে তেমন কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে, দিব্যি খোলা রয়েছে রয়েল মাল্টিস্পেশালিস্ট হাসপাতাল। সব কার্যক্রমই চলছে তাদের।
রিসিপশনে বসে থাকা মানসুরা আক্তার বলেন, আমরা টিভিতে খবরটি দেখেছি। আমাদের হাসপাতালটি দোতলা বাড়িতে অবস্থিত। আমরা মনে করি এতে যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। রোগীর চাপে এখানে আমরা শিফটে ডিউটি করি। নিয়মিত চিকিৎসক আছেন ৬-৭ জন। আর কলে আসেন এমন চিকিৎসক আছেন ১০ জন। আমাদের এখানে সব ধরনেরই অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি দাবি করেন, এই হাসপাতালে ২০ শয্যার অনুমোদন আছে। তবে, এখন শয্যা আছে ১০টি। ভিআইপি কেবিন আছে ২টি এবং সিঙ্গেল কেবিন আছে ২টি। কার্যক্রম চালোনোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান স্যার ডা. আরিফ হোসেন এখন দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশে ফিরে আসার পরই সিদ্ধান্ত নেবেন এই রায়ের ব্যাপারে কী করা যায়।
বাংলাদেশ স্পেশালাইজড ট্রমা সেন্টারের রিসিপশনেও কর্মী বসে থাকতে দেখা যায়। লোকজনের আনাগোনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। যে কেউই বুঝতে পারবে, তাদের কার্যক্রম এখনো থেমে নেই। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পরও কার্যক্রম চালনোর বিষয়ে তারা বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স আছে, তবে তা নবায়ন করা হয়নি। অনুমোদনহীন রোগী সেবা দেয়ার বিষয়ে জানান, আমরা নতুন কোনো রোগী ভর্তি করিনি। পুরনো যে কয়েকজন রোগী ছিল তাদেরই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শুধু বিভিন্ন ফিজিওথেরাপি দেয়া হচ্ছে। সেবিকা জেনারেল হাসপাতাল ও লাইফ কেয়ার নার্সিং হোমে পুরনো দু-একজন রোগীর দেখা মিল্লেও দেখা মেলেনি কোনো চিকিৎসকের। তবে, বিডিএম হাসপাতালে এখনো রোগীর ভিড় চোখে পড়ার মতো।
এ বিষয়ে হাসপাতালের ম্যানেজার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমরা ২০-২২ বছর ধরে রাজধানীতে এই হাসপাতাল পরিচালনা করছি। যদি কোনো খুঁত থাকতো তাহলে এত দিন এই হাসপাতাল পরিচালনা করতে পারতাম না। আমাদের এখানে বড় বড় হাসপাতালের নামি চিকিৎসকরা এসে চিকিৎসা করেন। মূলত অর্থোপেডিক রোগীর চিকিৎসা এখানে বেশি করা হয়। ৮তলা এই হাসপাতালটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট। ১৫০ জন স্টাফ আছেন। ২০ জন চিকিৎসক আছেন। আমরা যতদূর সম্ভব ক্লিনভাবে এই হাসপাতাল চালাই। এই প্রথমবার রিটের মুখোমুখি হলাম। আমরা আইনিভাবেই এর জবাব দেবো। হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে কিছু হাসপাতাল খোলা থাকলেও বাকিগুলোর বেশির ভাগের কার্যক্রমই রয়েছে বন্ধ।
মোহাম্মদপুর কয়েকশ মিটারের মধ্যেই গড়ে উঠেছিল ২৬টি ব্যক্তিমালিকানার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যার মধ্যে ১৪টিরই নেই কোনো লাইসেন্স বা সরকারি অনুমোদন। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে মামলা করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআর পিবি)। গত ১১ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবৈধভাবে পরিচালিত ১৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার দ্রুত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্লিনিকগুলো দ্রুত বন্ধের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।
No comments