ভবনে ঝোপঝাড়, খসে পড়ছে ইট
প্রায় তিন শ বছরের পুরোনো লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া জমিদারবাড়ি কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে। ১০০ কক্ষবিশিষ্ট অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জমিদারবাড়িটি বর্তমানে একরকম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কালের সাক্ষী এই স্থাপত্য নিদর্শন রক্ষার দাবি জানিয়েছে পদুয়ার জনসাধারণ। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, বিশাল এই বাড়িটি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি বাইরের অংশ, অপরটি ভেতরের। বাইরের অংশে আছে কাচারিঘর। যেখানে জমিদারেরা বৈঠক করতেন, প্রজাদের অভিযোগ শুনতেন ও বিচার করতেন। ভেতরের অংশটি হলো অন্দরমহল।
বাড়িটির চারদিকে আছে বড় বড় পুকুর, দিঘি ও মন্দির। তবে এখন সর্বত্র আগাছা ও ঝোপ–জঙ্গলে ভরে গেলে। দরজা, জানালার কোনো চিহ্ন নেই। দেয়ালে ও বড় ফটকে জন্মেছে বটের চারা। বাড়ির আঙিনা ও ভেতরের অংশে বাসা বেঁধেছে সাপ। এই বাড়ির প্রতিবেশী সাধন মিত্র বলেন, দীর্ঘদিন এই জমিদারবাড়ির সংস্কার না হওয়ায় মূল ভবন থেকে ইট খসে পড়ছে। দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। লোহাগাড়া মোস্তাফিজুর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মফিজুর রহমান বলেন, জমিদার রামমোহন গুপ্ত ১৭০০ সালের শেষের দিকে এই ভবন নির্মাণ করেন। ১৯৪৮ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হয়ে গেলে এই বাড়ির দুর্দশার শুরু। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রাজাকারেরা বাড়িটিতে আগুন দেয়। বহু মূল্যবান পুরাকীর্তি লুট করে। কালের সাক্ষী এই ভবন সরকারিভাবে সংরক্ষণ প্রয়োজন। পদুয়ার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন পরিষদের উপদেষ্টা এস কে শামসুল আলম বলেন, পদুয়া জমিদারবাড়ির সংরক্ষণের দাবি অনেক দিনের।
এই ভবনকে অবিলম্বে পুরাকীর্তির স্বীকৃতি দিয়ে সংস্কার করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন বলেন, পদুয়া জমিদারবাড়ি এলাকার ঐতিহ্য ও ইতিহাসের অংশ। এটি সংস্কারে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফিজনূর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষা করতে বর্তমান সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমিদারবাড়িটি সংরক্ষণ করা যায় কি না, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
No comments