সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় হোক
শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে সারা বিশ্বের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী ব্যক্তিরা আজ এক মহিমান্বিত ধর্মীয় উৎসবে যোগ দিচ্ছেন। তবে এর কল্যাণময় আনন্দ সর্বজনীন। সব জাতি ও ধর্মাবলম্বী এটি ভাগাভাগি করে নেবে। ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও উদারতার মতো অমোঘ শান্তির বাণী যিশুর মহান শিক্ষা। হিংসা-দ্বেষ পরিহার করে উন্নততর মানবিক সম্পর্ক ও সুসমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান নিয়ে আবার এসেছে বড়দিন। বাংলাদেশেও বড়দিন উদ্যাপনের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কারণ, ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে সবার কাছেই যিশুখ্রিষ্ট মহামানব হিসেবে গভীর শ্রদ্ধার পাত্র। বাংলাদেশের উন্নয়ন- অগ্রগতিতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের রয়েছে উল্লেখযোগ্য অবদান। বিশেষভাবে সেবাধর্মী কাজে তারা মানবিকতার উজ্জ্বল স্বাক্ষর বজায় রেখে চলেছেন। তবে এবারে বড়দিনের প্রাক্কালে বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। কয়েকজন যাজককে হুমকিও দেওয়া হয়েছে; যা খুবই উদ্বেগজনক। সরকারের কর্তব্য হবে খ্রিষ্টান সম্প্রদায় যাতে আনন্দময় ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বড়দিনটি উদ্যাপন করতে পারে,
সে জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। একই সঙ্গে তাঁদের ওপর হামলা ও হুমকি প্রদানকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। সংযম-সহিষ্ণুতা, ভালোবাসা ও সেবার পথ ধরে মানুষকে সত্য ও কল্যাণের পথে আনার প্রয়াসে যিশুকে অবর্ণনীয় নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছিল। কিন্তু সত্য ও কল্যাণের পথ থেকে কোনো কিছুই তাঁকে বিচ্যুত করতে পারেনি। নিপীড়কের বিরুদ্ধে তিনি পাল্টা আঘাতের কথা বলেননি; তিনি অকাতরে ক্ষমা করেছেন, আর সমগ্র মানবজাতির হয়ে সব দুঃখ-যন্ত্রণা যেন একাই আত্মস্থ করতে চেয়েছেন। আজ সবকিছু ছাপিয়ে সর্বত্র এই অঙ্গীকারই ফুটে উঠুক—আর বিভেদ নয়, সম্প্রীতির বন্ধনে আমরা পরস্পরকে বেঁধে রাখব। সেবাধর্মে নিজেকে উৎসর্গ করব। আর সেটা সম্ভব হলে এই ভূখণ্ডে যিশুর শিক্ষা সত্যিকার মহিমায় উদ্ভাসিত হবে। আমরা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের অকৃত্রিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
No comments