বাংলাদেশ এখন
ইতালির
এনজিওকর্মী সিজার তাভেলা ও জাপানি হোশি কুনিওকে হত্যার পর সামাজিক মিডিয়ায়
এর দায় স্বীকার করে আইসিস। তবে বাংলাদেশ সরকার তা মানতে আপত্তি করেছে।
তাদের কথায়, জঙ্গি এ গ্রুপটি বাংলাদেশে সক্রিয় নয়। তবে বিশ্লেষকরা
সন্দিহান। বাংলাদেশের ভেতরে বেড়ে ওঠা কট্টরপন্থি গ্রুপের সঙ্গে আল-কায়েদা ও
আইসিসের মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সম্পর্কের বিষয়টি অস্পষ্ট।
এমনটা মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পলিটিক্যাল
অ্যান্ড গভর্নমেন্ট বিভাগের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শিক্ষক আলী রীয়াজ। বিখ্যাত
টাইম ম্যাগাজিনের অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে
বলা হয়, যখন ইসলামপন্থি সন্ত্রাসীদের কারণে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতার মুখে
থাকা মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ রয়েছে তখন ব্লগারদের হত্যার পর
দুই বিদেশীকে গুলি করে হত্যা একই রকম ইঙ্গিত বহন করে। আলী রীয়াজ বলেন,
স্থানীয় পর্যায়ের জঙ্গি গ্রুপ ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর মধ্যে
সাংগঠনিক কোন সম্পর্ক নেই। তার অর্থ এই নয় যে, স্থানীয় জঙ্গিরা সুযোগ পেলে
তা হাতছাড়া করবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদ্বেগ হলো পরের বারের অপেক্ষায়
থাকলে তাতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। আইসিস যেহেতু মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাদের
দৃষ্টি প্রসারিত করার প্রয়াস নিয়েছে এবং আল-কায়েদা দক্ষিণ এশিয়ায় পুনর্গঠিত
হওয়ার চেষ্টা করছে তখন মৌলবাদী শক্তির জন্য উর্বর ভূমি হয়ে উঠতে পারে
বাংলাদেশ। স্থানীয় রিপোর্টে বলা হয়েছে, আইসিসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার
সন্দেহে গত বছর ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশী পুলিশ। ধর্মনিরপেক্ষ
ব্লগার ও নিহত নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়ের বন্ধু আরিফ জেবতিক বলেন, অগ্রসরমান
বাংলাদেশ ও ইসলামপন্থি, সন্ত্রাসীদের মাঝখানে আমরাই শেষ বাধা। ঢাকা
ট্রিবিউনের প্রকাশক কে আনিস আহমেদ বলেন, আমি অনেক লেখক ও সাংবাদিকের সঙ্গে
কথা বলেছি। তাতে এমন ধারণা পেয়েছি যে, এমন এক আতঙ্কের ধারণা মেলে যা এর আগে
কখনও দেখা যায় নি। এমন আতঙ্ক যখন ফুলেফেঁপে উঠছে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার সরকার তা চেক দেয়ার জন্য তৎপর হয়েছে। চারজন ব্লগারকে হত্যার বিষয়ে
অনুসন্ধান করতে গিয়ে কর্তৃপক্ষ সন্দেহজনকভাবে ২০ জনকে আটক করেছে। হাসিনার
সরকার নিষিদ্ধ করেছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে। সেপ্টেম্বরে টাইম
ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আইন প্রয়োগকারী
সংস্থাগুলো অত্যন্ত সক্রিয়। সরকার অলস বসে নেই।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের জন্য বসবাসের কথা বলছেন তখন অভিজিৎ রায়, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় ও অন্য আরও অনেকে, যাদের কোন ধর্ম নেই, তাদেরকে একটি বার্তা দেয়া হচ্ছে। সেটা সমঝোতার বার্তা নয়। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি এসব সমর্থন করি না। আমি এসব মেনে নিতে পারি না। কেন নয়? কারণ, আপনার কাছে আপনার ধর্মীয় বিশ্বাস আছে। যদি কেউ মনে করেন তার কোন ধর্ম নেই, তাও ঠিক আছে। এটা তাদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু কোন ধর্মের বিরুদ্ধে লেখা বা কথা বলার কোন অধিকার তাদের নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশী ব্লগারদের উচিত হবে না অন্য কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া। যখন আপনি একটি সমাজে বসবাস করছেন তখন সামাজিক মূল্যবোধকে সম্মান করতে হবে আপনার। অন্যদের অনুভূতির বিষয়ে সম্মান দেখাতে হবে আপনাকে। আলী রীয়াজ বলেন, শেখ হাসিনার এ অবস্থান ইসলামপন্থিদের পক্ষে গেছে। আপনি এরকম ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে সমঝোতা করতে পারেন না। এতে দেশটাকে ভয়ানক বিপদের পথে ঠেলে দেয়া হয়। টাইম ম্যাগাজিনের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের মাধ্যমে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। ওই আদালতের একটি রায়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে শাহবাগের আন্দোলন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের বিরোধিতা করেছিল জামায়াতে ইসলামী। এর বেশ কিছু নেতা যুদ্ধাপরাধ করেছিলেন। এখন ওই সব ইসলামপন্থিদের বিচার করছে সরকার একই সঙ্গে তারা ব্লগার ও লেখকদের ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে। ইসলামপন্থি গ্রুপগুলো ২০১৩ সালে সরকারের হাতে ৮৪ জন ব্লগারের তালিকা ধরিয়ে দেয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য কর্তৃপক্ষ চার ব্লগারকে আটক করে। বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেন, যেহেতু এসব ব্লগারকে নাস্তিক বলা হয়, তাদেরকে ইসলামের সমালোচক ডাকা হয়। সরকারের ভীতি রয়েছে যে, যদি তারা এসব নাস্তিককে রক্ষা করে তাহলে তাদের গায়ে নাস্তিক রক্ষকের একটি লেবাস লেগে যাবে। তাই তারা রক্ষণশীল ভোটারদের সমর্থন হারাতে চায় নি। ওই প্রতিবেদনে ব্লগার আরিফ জেবতিকের বর্তমান দিনকালের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তার মতো ব্লগারদের জীবন এখন প্রান্তসীমায়। নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে হত্যার পর আরিফ তার চতুর্থ তলার এপার্টমেন্টে তার মা ও দুই কন্যাকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। অকস্মাৎ ইন্টারকম বেজে ওঠে। ফোনটি করেছিলেন সিকিউরিটি গার্ড। তিনি বললেন, তিনজন মানুষ এসেছে। তারা মাদরাসার জন্য সাহায্য চায়। গার্ড তাদের তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা সেখান থেকে চলে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। আরিফ বলেন, এ অবস্থায় আমার মা ইন্টারকমে কথা বলেন। তখন ফোনে ফিসফিসিয়ে কথা বলছিলেন গার্ড। এতে আরিফ জেবতিকের মায়ের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। নীলাদ্রি যে হিটলিস্টে ছিলেন আরিফ সেই লিস্টের দুই নম্বরে। এ সময় তার মা দরজা বন্ধ করে দেন। আরিফকে বাথরুমে পালাতে বলেন। আরিফ জেবতিকের স্ত্রী কেনাকাটা করতে বাইরে ছিলেন। তাকে ফোন করে দূরে থাকতে বলা হয়। তারপর আরিফ এক বন্ধুকে ফোন করেন। ওই বন্ধুও একজন ব্লগার। তিনি বসবাস করেন দু’ব্লক পরে। তাকে বলা হয় তাদের বাসায় গিয়ে চেক করতে যে, কারা এসেছে এবং কি চায়। একপর্যায়ে ওই বন্ধু এসে উপস্থিত হন। তখন ওই তিন ব্যক্তি সেখান থেকে চলে যান। আরিফ জেবতিক বলেন, পরে আমরা শুনতে পাই যে, তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই ওই লোকগুলো তাদের বাসার নিচে অবস্থান করছিল বৃষ্টি থামার জন্য। আরিফ জেবতিক বলেন, এখন বাংলাদেশে আমাদের জীবন এমনই।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের জন্য বসবাসের কথা বলছেন তখন অভিজিৎ রায়, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় ও অন্য আরও অনেকে, যাদের কোন ধর্ম নেই, তাদেরকে একটি বার্তা দেয়া হচ্ছে। সেটা সমঝোতার বার্তা নয়। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি এসব সমর্থন করি না। আমি এসব মেনে নিতে পারি না। কেন নয়? কারণ, আপনার কাছে আপনার ধর্মীয় বিশ্বাস আছে। যদি কেউ মনে করেন তার কোন ধর্ম নেই, তাও ঠিক আছে। এটা তাদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু কোন ধর্মের বিরুদ্ধে লেখা বা কথা বলার কোন অধিকার তাদের নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশী ব্লগারদের উচিত হবে না অন্য কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া। যখন আপনি একটি সমাজে বসবাস করছেন তখন সামাজিক মূল্যবোধকে সম্মান করতে হবে আপনার। অন্যদের অনুভূতির বিষয়ে সম্মান দেখাতে হবে আপনাকে। আলী রীয়াজ বলেন, শেখ হাসিনার এ অবস্থান ইসলামপন্থিদের পক্ষে গেছে। আপনি এরকম ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে সমঝোতা করতে পারেন না। এতে দেশটাকে ভয়ানক বিপদের পথে ঠেলে দেয়া হয়। টাইম ম্যাগাজিনের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের মাধ্যমে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। ওই আদালতের একটি রায়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে শাহবাগের আন্দোলন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের বিরোধিতা করেছিল জামায়াতে ইসলামী। এর বেশ কিছু নেতা যুদ্ধাপরাধ করেছিলেন। এখন ওই সব ইসলামপন্থিদের বিচার করছে সরকার একই সঙ্গে তারা ব্লগার ও লেখকদের ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে। ইসলামপন্থি গ্রুপগুলো ২০১৩ সালে সরকারের হাতে ৮৪ জন ব্লগারের তালিকা ধরিয়ে দেয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য কর্তৃপক্ষ চার ব্লগারকে আটক করে। বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেন, যেহেতু এসব ব্লগারকে নাস্তিক বলা হয়, তাদেরকে ইসলামের সমালোচক ডাকা হয়। সরকারের ভীতি রয়েছে যে, যদি তারা এসব নাস্তিককে রক্ষা করে তাহলে তাদের গায়ে নাস্তিক রক্ষকের একটি লেবাস লেগে যাবে। তাই তারা রক্ষণশীল ভোটারদের সমর্থন হারাতে চায় নি। ওই প্রতিবেদনে ব্লগার আরিফ জেবতিকের বর্তমান দিনকালের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তার মতো ব্লগারদের জীবন এখন প্রান্তসীমায়। নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে হত্যার পর আরিফ তার চতুর্থ তলার এপার্টমেন্টে তার মা ও দুই কন্যাকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। অকস্মাৎ ইন্টারকম বেজে ওঠে। ফোনটি করেছিলেন সিকিউরিটি গার্ড। তিনি বললেন, তিনজন মানুষ এসেছে। তারা মাদরাসার জন্য সাহায্য চায়। গার্ড তাদের তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা সেখান থেকে চলে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। আরিফ বলেন, এ অবস্থায় আমার মা ইন্টারকমে কথা বলেন। তখন ফোনে ফিসফিসিয়ে কথা বলছিলেন গার্ড। এতে আরিফ জেবতিকের মায়ের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। নীলাদ্রি যে হিটলিস্টে ছিলেন আরিফ সেই লিস্টের দুই নম্বরে। এ সময় তার মা দরজা বন্ধ করে দেন। আরিফকে বাথরুমে পালাতে বলেন। আরিফ জেবতিকের স্ত্রী কেনাকাটা করতে বাইরে ছিলেন। তাকে ফোন করে দূরে থাকতে বলা হয়। তারপর আরিফ এক বন্ধুকে ফোন করেন। ওই বন্ধুও একজন ব্লগার। তিনি বসবাস করেন দু’ব্লক পরে। তাকে বলা হয় তাদের বাসায় গিয়ে চেক করতে যে, কারা এসেছে এবং কি চায়। একপর্যায়ে ওই বন্ধু এসে উপস্থিত হন। তখন ওই তিন ব্যক্তি সেখান থেকে চলে যান। আরিফ জেবতিক বলেন, পরে আমরা শুনতে পাই যে, তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই ওই লোকগুলো তাদের বাসার নিচে অবস্থান করছিল বৃষ্টি থামার জন্য। আরিফ জেবতিক বলেন, এখন বাংলাদেশে আমাদের জীবন এমনই।
No comments