স্কটল্যান্ডে গণভোট : রানী নিরপেক্ষ
শত শত বছরের বন্ধন ছিন্ন করে যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের পথে স্কটল্যান্ড। এ প্রশ্নে ১৯ সেপ্টেম্বর সেখানে গণভোট হবে। জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে স্বাধীনতাকামীরাই। বিশ্বজোড়া বিপুল জনপ্রিয় ব্রিটিশ রানী এলিজাবেথ যদি একবার স্কটিশদের উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দেন, তাহলে ওই সব জরিপের ফলাফল উল্টে যেতে পারে নিমিষেই। তবে রানী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, স্কটিশদের স্বাধীনতার ব্যাপারে তিনি কোনো মতামত দেবেন না। মঙ্গলবার ব্রিটিশ রাজপ্রসাদ বাকিংহাম প্যালেস থেকে রানীর এ অবস্থান জানানো হয়েছে। বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কটল্যান্ড স্বাধীন হবে কি-না, এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে গণভোট হওয়ার কথা। গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয়ার জন্য এখন চলছে প্রচার। সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, যুক্তরাজ্য ভেঙে যাওয়ার আশংকায় রানী এলিজাবেথ উদ্বিগ্ন। এছাড়া বিষয়টিতে রানীর হস্তক্ষেপ চাওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ওপর চাপ রয়েছে। এদিকে, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন নিজ দলের বিদ্রোহের মুখে পড়েছেন। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে গণভোটের অনুমতি দেয়ায় ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল দলের এমপিরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আহ্বান জানিয়েছে।
রক্ষণশীল দলের প্রবীণ সংসদ সদস্যরা ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফকে বুধবার বলেছেন, আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় গণভোটে যদি স্কটল্যান্ড স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেয় তা হলে ক্যামেরনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে অনাস্থা ভোট হতে পারে। রক্ষণশীল দলের কোনো কোনো এমপির ধারণা স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোটের সম্মত হয়ে যুক্তরাজ্যকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন ক্যামেরন। দলের মধ্যে ক্যামেরনের অবস্থা বেশ শোচনীয় হয়ে উঠেছে। নেতৃত্ব থেকে ক্যামরনকে সরিয়ে দেয়ার পর রক্ষণশীল দলের কি অবস্থা হবে তা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করছেন এ দলের সংসদ সদস্যরা। এছাড়া, যুক্তরাজ্যের পক্ষে কথা বলার জন্য রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে আহ্বান জানানোর জন্যও ক্যামেরনের ওপর চাপ দিচ্ছেন আইনপ্রণেতারা। এ দলের আইনপ্রণেতাদের সংখ্যাও বাড়ছে দিনে দিনে। অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা না হতে স্কটল্যান্ডবাসীর প্রতি শেষমুহূর্তের আহ্বান জানিয়েছেন। স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থাকবে কি থাকবে না, সে প্রশ্নে আগামী সপ্তাহে ভোটাভুটি হবে। এদিকে এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে ও বিপক্ষে প্রায় সমান সমান প্রচারণা চলছে। ৩০০ বছরের পুরানো ইউনিয়নের ভাঙন ঠেকাতে প্রচারণা চালাতে বিরোধী ওয়েস্টমিনিস্টার দলের নেতাদের সঙ্গে স্কটল্যান্ডে আকস্মিক ভ্রমণের আগে ক্যামেরন ডেইলি মেইল পত্রিকায় খোলা চিঠি লিখেছেন। তিনি স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাকে ‘অন্ধকারে ঝাঁপ দেয়ার শামিল’ বলে হুশিয়ার করেছেন।
No comments