১৪ই নভেম্বরের পর নতুন মোড়কে মহাজোট সরকার by দীন ইসলাম
‘সর্বদলীয়’ সরকার গঠনের আগে মন্ত্রিসভার
সদস্যরা পদত্যাগ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠিক করবেন কার
পদত্যাগ গ্রহণ করবেন বা কারটি করবেন না।
১৪ই নভেম্বর দুই
দিনের সফরে শ্রীলঙ্কা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে দেশে
ফেরার পরই সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হবে। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ
বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় এ
প্রসঙ্গটি উঠে আসে। তবে নামে সর্বদলীয় হলেও মহাজোটের সদস্যদের নিয়েই নতুন
সরকার গঠিত হবে। কয়েক জন সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বৈঠকে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার সদস্যদের নির্বাচনের জন্য জোর
প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী গঠিত সর্বদলীয়
সরকারে বিএনপি যোগ দেবে বলে আমার বিশ্বাস। শিগগিরই সর্বদলীয় সরকার হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের জন্য অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা
তৈরির চেষ্টা করবে তারা। এসব বিষয় ঠাণ্ডা মাথায় মোকাবিলা করতে হবে। আপনাদের
নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।
প্রশাসন ইতিমধ্যে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কয়েক মিনিটের বক্তব্যের পর কয়েক জন সিনিয়র মন্ত্রী সর্বদলীয়
সরকারের ফরমুলা নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মিডিয়ার সামনে দেয়া তার বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করে বলেন,
আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, হরতাল প্রত্যাহার করলে বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনা হতে
পারে। তারাও জানান, জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচির মাধ্যমে জাতিকে কি দিতে চান।
দেশ আর আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না। যা কিছু হবে সব কিছুই সাংবিধানিকভাবেই
হবে। এর ব্যত্যয় হবে না। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বক্তব্যে
জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যকর কিছু কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন,
জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য স্বাধীনতার পক্ষ
শক্তির মধ্যে একতার দরকার। আগামী ১৪ই নভেম্বর শ্রীলঙ্কায় একটি গুরুত্বপূর্ণ
সফর রয়েছে। ওই সফরের পর পরই সর্বদলীয় সরকার গঠন করা প্রয়োজন বলে মনে হয়।
বৈঠকে বলা হয়, বিএনপি নির্বাচনে এলে সর্বদলীয় সরকারের কাঠামো বাড়ানো যেতে
পারে। এছাড়া, সর্বদলীয় সরকারে নতুন মুখের প্রাধান্য দেয়া যেতে পারে।
আলোচনায় নভেম্বরের শেষ দিকে নির্বাচনের তফসিল এবং জানুয়ারির শুরুর দিকে
নির্বাচনের সম্ভাবনা বিষয়টি উঠে আসে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচনায় সর্বদলীয়
সরকার গঠনের ভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেয়া
হয়। তবে ওই সরকারে জামায়াতের কোন প্রতিনিধিকে সদস্য না করার বিষয়ে কঠোর
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা থেকে
মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের সাবধান থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বিএনপি
হত্যা-সন্ত্রাসের মাধ্যমে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তারা নির্বাচনে আসবে না। এ জন্য আমাদের এখন থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে
হবে।
No comments