পুতিনের টার্গেট ইন্টারনেট! by অর্ণব সান্যাল
প্রথম আলো, ২৪ মার্চ ২০১৯: একটা
সময় ছিল, যখন টেলিভিশন ও বেতারই ছিল সংবাদ পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু
টিম বার্নার্স লি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আবিষ্কারের পর থেকে ধীরে ধীরে পাল্টে
গেছে দৃশ্যপট। এখন ইন্টারনেটের দুনিয়ায় সংবাদের অনেকগুলো বিকল্প উৎস তৈরি
হয়ে গেছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বিশ্বের একনায়ক ঘরানার
শাসকেরা।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজের দেশে শাসক হিসেবে একমেবাদ্বিতীয়ম। দিন দিন নিজের ক্ষমতার পরিধি তিনি বাড়িয়েই চলেছেন। এবার হাত দিয়েছেন ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। অন্তর্জালে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সব আয়োজন শেষ করে এনেছেন পুতিন। এবার জাল গুটিয়ে আনার পালা। এই কাজ শেষ হলেই রুশ ভার্চ্যুয়াল জগৎ নিয়ন্ত্রণের ‘সুইচ’ চলে আসবে পুতিনের পকেটে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে গণমাধ্যমের ওপর কঠোর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছিল। ১৯৯১ সালের ১৯ আগস্ট যখন মিখাইল গর্বাচেভের বিরুদ্ধে ‘ক্যু’ সংঘটিত হয়েছিল, তখন সোভিয়েতের সব টিভি চ্যানেলে বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছিল। বোকা বাক্সের সামনে বসে থাকা রুশ জনগণের বোঝারও উপায় ছিল না যে, দেশে ওলট-পালট ঘটে যাচ্ছে! ক্রেমলিনে তখন চলছিল বুলেট-বোমার কাব্য, আর রুশ জনগণের ড্রয়িংরুমের বোকা বাক্সে চলছিল নাচগান।
বোকা বাক্স দিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর দিন এখন আর নেই। ইন্টারনেট পুরো পৃথিবীকে একটি ছোট গণ্ডির মধ্যে এনে ফেলেছে। সেই ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণ হাতের মুঠোয় নেওয়াও কঠিন। সেই কষ্টসাধ্য কাজটিই করতে চাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সাবেক সোভিয়েত আমলের অভিজ্ঞতা থেকে ভালোই শিখেছেন একসময়কার এই কেজিবি এজেন্ট। তিনি বুঝেছেন যে, জনগণকে যত কম জানানো যায় ততই মঙ্গল। এরা যত বেশি জানে, তত বেশি বোঝে! সুতরাং জনগণের জানা-বোঝার সুযোগ সীমিত করে দেওয়াই ক্ষমতা সংরক্ষণের উৎকৃষ্ট উপায়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজের দেশে শাসক হিসেবে একমেবাদ্বিতীয়ম। দিন দিন নিজের ক্ষমতার পরিধি তিনি বাড়িয়েই চলেছেন। এবার হাত দিয়েছেন ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। অন্তর্জালে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সব আয়োজন শেষ করে এনেছেন পুতিন। এবার জাল গুটিয়ে আনার পালা। এই কাজ শেষ হলেই রুশ ভার্চ্যুয়াল জগৎ নিয়ন্ত্রণের ‘সুইচ’ চলে আসবে পুতিনের পকেটে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে গণমাধ্যমের ওপর কঠোর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছিল। ১৯৯১ সালের ১৯ আগস্ট যখন মিখাইল গর্বাচেভের বিরুদ্ধে ‘ক্যু’ সংঘটিত হয়েছিল, তখন সোভিয়েতের সব টিভি চ্যানেলে বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছিল। বোকা বাক্সের সামনে বসে থাকা রুশ জনগণের বোঝারও উপায় ছিল না যে, দেশে ওলট-পালট ঘটে যাচ্ছে! ক্রেমলিনে তখন চলছিল বুলেট-বোমার কাব্য, আর রুশ জনগণের ড্রয়িংরুমের বোকা বাক্সে চলছিল নাচগান।
বোকা বাক্স দিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর দিন এখন আর নেই। ইন্টারনেট পুরো পৃথিবীকে একটি ছোট গণ্ডির মধ্যে এনে ফেলেছে। সেই ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণ হাতের মুঠোয় নেওয়াও কঠিন। সেই কষ্টসাধ্য কাজটিই করতে চাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সাবেক সোভিয়েত আমলের অভিজ্ঞতা থেকে ভালোই শিখেছেন একসময়কার এই কেজিবি এজেন্ট। তিনি বুঝেছেন যে, জনগণকে যত কম জানানো যায় ততই মঙ্গল। এরা যত বেশি জানে, তত বেশি বোঝে! সুতরাং জনগণের জানা-বোঝার সুযোগ সীমিত করে দেওয়াই ক্ষমতা সংরক্ষণের উৎকৃষ্ট উপায়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজের দেশে শাসক হিসেবে একমেবাদ্বিতীয়ম। দিন দিন নিজের ক্ষমতার পরিধি তিনি বাড়িয়েই চলেছেন। এবার হাত দিয়েছেন ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। ছবি: রয়টার্স |
রুশ
সংস্থা লেভাদা সেন্টার সম্প্রতি একটি জরিপ করেছে। তাতে দেখা গেছে,
টেলিভিশনের ওপর রাশিয়ার জনগণের আস্থা কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। ২০০৯ সালের পর
এই প্রথম টিভি চ্যানেলের ওপর রুশদের আস্থার পরিমাণ ৫০ শতাংশের নিচে নেমে
এসেছে। উল্টো দিকে তথ্যের ইন্টারনেটভিত্তিক উৎসের ওপর রুশদের আস্থা পাল্লা
দিয়ে বেড়েছে। যদিও রাশিয়ার বয়স্ক মানুষেরা এখনো টেলিভিশন থেকে সংবাদ পেতেই
অভ্যস্ত, কিন্তু ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের মধ্যে
ইন্টারনেটনির্ভরতা অনেক বেশি।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, রাশিয়ায় জাতীয় টেলিভিশনের একচেটিয়া আধিপত্যে ভাগ বসিয়েছে ইউটিউব। রাশিয়ার ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের ৮২ শতাংশই সংবাদ পেতে ইউটিউবে চোখ রাখছেন। রুশদের মধ্যে ইউটিউবে সংবাদ খোঁজার প্রবণতা বেশি। রাশিয়ায় পুতিনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে অন্যতম আলেক্সেই নাভালনি। তিনি খুব ভালো করেই জানেন, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টিভি চ্যানেলে তাঁর খবরাখবর আসার আশা নেই। তাই দুটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাতে নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রচার করছেন নাভালনি। গত বছর এই দুটি ইউটিউব চ্যানেলের দর্শকসংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রতি মাসে কমপক্ষে ২৫ লাখ সাবস্ক্রাইবার পান তিনি।
অর্থাৎ এটি স্পষ্ট যে, খবরের জন্য ইন্টারনেটভিত্তিক উৎসের প্রতি রুশদের নির্ভরতা ক্রমেই বাড়ছে। আর এতেই কপালের ভাঁজ বাড়ছে পুতিনের। ক্রেমলিন এখন সরকারবিরোধী প্রোপাগান্ডা থামাতে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজছে। লন্ডনের কিংস কলেজের শিক্ষক ও রুশ ইন্টারনেট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ গ্রেগরি আসমোলোভ বলেন, ‘ইন্টারনেটকে কীভাবে টিভি চ্যানেলে রূপান্তর করা যায়—সরকার এখন সেই চেষ্টা করছে।’ তিনি আরও বলেন, এর জন্য শুধু কঠোর নিয়মকানুন যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে ইন্টারনেট অবকাঠামো ও কনটেন্টের প্রবাহের ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, রাশিয়ায় জাতীয় টেলিভিশনের একচেটিয়া আধিপত্যে ভাগ বসিয়েছে ইউটিউব। রাশিয়ার ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের ৮২ শতাংশই সংবাদ পেতে ইউটিউবে চোখ রাখছেন। রুশদের মধ্যে ইউটিউবে সংবাদ খোঁজার প্রবণতা বেশি। রাশিয়ায় পুতিনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে অন্যতম আলেক্সেই নাভালনি। তিনি খুব ভালো করেই জানেন, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টিভি চ্যানেলে তাঁর খবরাখবর আসার আশা নেই। তাই দুটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাতে নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রচার করছেন নাভালনি। গত বছর এই দুটি ইউটিউব চ্যানেলের দর্শকসংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রতি মাসে কমপক্ষে ২৫ লাখ সাবস্ক্রাইবার পান তিনি।
অর্থাৎ এটি স্পষ্ট যে, খবরের জন্য ইন্টারনেটভিত্তিক উৎসের প্রতি রুশদের নির্ভরতা ক্রমেই বাড়ছে। আর এতেই কপালের ভাঁজ বাড়ছে পুতিনের। ক্রেমলিন এখন সরকারবিরোধী প্রোপাগান্ডা থামাতে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজছে। লন্ডনের কিংস কলেজের শিক্ষক ও রুশ ইন্টারনেট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ গ্রেগরি আসমোলোভ বলেন, ‘ইন্টারনেটকে কীভাবে টিভি চ্যানেলে রূপান্তর করা যায়—সরকার এখন সেই চেষ্টা করছে।’ তিনি আরও বলেন, এর জন্য শুধু কঠোর নিয়মকানুন যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে ইন্টারনেট অবকাঠামো ও কনটেন্টের প্রবাহের ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে।
অন্তর্জালে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সব আয়োজন শেষ করে এনেছেন পুতিন। এবার জাল গুটিয়ে আনার পালা। এই কাজ শেষ হলেই রুশ ভার্চুয়াল জগৎ নিয়ন্ত্রণের ‘সুইচ’ চলে আসবে পুতিনের পকেটে। ছবি: এএফপি |
পুতিনের
সরকার সেই পথেই হাঁটতে শুরু করেছে। সরকারবিরোধী কথাবার্তাকে ‘ফেক নিউজ’-এর
তকমা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাশিয়ায় ফেক নিউজ প্রতিরোধে নতুন আইন
পাস হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেই আইনে স্বাক্ষরও করে দিয়েছেন।
নতুন আইনের আওতায়, যে তথ্যকে সরকারের কাছে মিথ্যা বলে মনে হবে, তা নিষিদ্ধ
করে দেওয়া যাবে। এ ছাড়া যে তথ্যকে জনশৃঙ্খলা লঙ্ঘনের কারণ বলে মনে করবে
সরকার, সেটিও নিষিদ্ধ করা যাবে। এর শাস্তি হিসেবে ৪ লাখ রুবল (প্রায় ৬
হাজার ১০০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তুলে
যেকোনো ওয়েবসাইট ব্লকও করে দিতে পারবে সরকার।
বিজনেস ইনসাইডার অবশ্য বলছে, যে দোষের শাস্তি নিশ্চিত করতে এই আইন পাস করা হয়েছে, সেই দোষে দুষ্ট রাশিয়াই! বিশ্বে যত ফেক নিউজ তৈরি হয়, তার একটি বড় অংশই আসে রাশিয়া থেকে। ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো এই অভিযোগ করেছে। অন্য সরকার ও অধিকার সংস্থাগুলোও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছে।
বিজনেস ইনসাইডার অবশ্য বলছে, যে দোষের শাস্তি নিশ্চিত করতে এই আইন পাস করা হয়েছে, সেই দোষে দুষ্ট রাশিয়াই! বিশ্বে যত ফেক নিউজ তৈরি হয়, তার একটি বড় অংশই আসে রাশিয়া থেকে। ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো এই অভিযোগ করেছে। অন্য সরকার ও অধিকার সংস্থাগুলোও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছে।
তবে
পুতিনের সরকারের দাবি, পুরো বিশ্বেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ফেক নিউজ
তৈরি করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন
প্রোপাগান্ডা তৈরি করছে। এসব সাইবার আক্রমণ ঠেকানোর জন্যই কঠোর আইন
প্রয়োজন।
ইন্টারনেটে বিধি-নিষেধ আরোপের সরকারি কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সম্প্রতি রাশিয়ায় বিক্ষোভও হয়েছে। ছবি: এএফপি |
ব্লুমবার্গ বলছে, নতুন আইন ব্যবহার করে স্রেফ এক সুইচ টিপে
পুরো রাশিয়ার তথ্যপ্রবাহ থমকে দিতে পারবেন পুতিন। এই নকশাতেই তৈরি করা
হয়েছে ‘ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব’ শীর্ষক আইনটি। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ
আন্দ্রেই সোলদাতোভ বলেন, ‘কোনো বিদেশি হুমকি বা ফেসবুক-গুগলকে ঠেকাতে এই
আইন করা হয়নি। ওই কাজ এখনই পারে রুশ সরকার। বেসামরিক বিক্ষোভের সময় কোনো
নির্দিষ্ট এলাকায় ইন্টারনেটের পুরো ট্রাফিক সিস্টেমই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এই
আইনের আওতায়। ফলে সরকারবিরোধী প্রচার সহজেই শনাক্ত করে বন্ধ করা যাবে।’
চীনের পথ ধরছে রাশিয়া?
ইন্টারনেটের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ চীনের তৈরি। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে নিজেদের আলাদা করে ফেলে চীন। ওই ব্যবস্থাকে ‘গ্রেট ফায়ারওয়াল’ বলে অভিহিত করা হয়। এখনো ফেসবুক ঘাঁটি গাড়তে পারেনি চীনে। বৈশ্বিক ইন্টারনেটের জগৎ থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন চীন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনের পথেই হাঁটতে চাইছে রাশিয়া। কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন করা বেশ কঠিন। চীন তো শুরু থেকেই কঠোর নিয়মকানুন আরোপ করে রেখেছে। আর রাশিয়া বৈশ্বিক ইন্টারনেটের দুনিয়ায় যুক্ত হয়েছে অনেক আগেই। ইন্টারনেটের বৈশ্বিক অবকাঠামোয় রাশিয়ার বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়ে আছে। রাশিয়ায় সার্ভার স্থাপন করেছে গুগলের মতো টেক জায়ান্ট। তার চেয়ে বড় কথা, ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেছে রুশরা। সেই অভ্যাস সমূলে উৎপাটন করা কঠিন। এতে করে নতুন করে জনবিক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে।
তবে হ্যাঁ, বন্ধ করার চেয়ে, ইচ্ছে হলেই বন্ধ করতে পারি—এমন বার্তা বেশি কাজে দেয়। এতে করে ফেসবুক, গুগলের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানও নিজেদের গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ফেক নিউজ ঠেকাতে নিপীড়নমূলক আইন পাস করে সেটিই করতে চাইছেন পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার অধ্যাপক রংবিন হান বলেন, ‘চীনের দেখানো পথেই যাচ্ছে রাশিয়া। রাজনৈতিক মতভিন্নতা উচ্ছেদ করতে পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ করার দরকার পড়ে না। এর চেয়ে অনলাইন কনটেন্টগুলো ফিল্টার করলেই চলে। সেটিই চমৎকার উপায়।’
ইন্টারনেট পুতিনের হবে?
গত কয়েক বছর ধরেই ফেসবুক, গুগল, টুইটার, লিংকডইনসহ বিভিন্ন বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে দৌড়ের ওপর রেখেছে ক্রেমলিন। অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে সেন্সর করতে চাইছে পুতিনের সরকার। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাশিয়ায় সার্ভার স্থাপনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
চীনের পথ ধরছে রাশিয়া?
ইন্টারনেটের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ চীনের তৈরি। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে নিজেদের আলাদা করে ফেলে চীন। ওই ব্যবস্থাকে ‘গ্রেট ফায়ারওয়াল’ বলে অভিহিত করা হয়। এখনো ফেসবুক ঘাঁটি গাড়তে পারেনি চীনে। বৈশ্বিক ইন্টারনেটের জগৎ থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন চীন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনের পথেই হাঁটতে চাইছে রাশিয়া। কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন করা বেশ কঠিন। চীন তো শুরু থেকেই কঠোর নিয়মকানুন আরোপ করে রেখেছে। আর রাশিয়া বৈশ্বিক ইন্টারনেটের দুনিয়ায় যুক্ত হয়েছে অনেক আগেই। ইন্টারনেটের বৈশ্বিক অবকাঠামোয় রাশিয়ার বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়ে আছে। রাশিয়ায় সার্ভার স্থাপন করেছে গুগলের মতো টেক জায়ান্ট। তার চেয়ে বড় কথা, ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেছে রুশরা। সেই অভ্যাস সমূলে উৎপাটন করা কঠিন। এতে করে নতুন করে জনবিক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে।
তবে হ্যাঁ, বন্ধ করার চেয়ে, ইচ্ছে হলেই বন্ধ করতে পারি—এমন বার্তা বেশি কাজে দেয়। এতে করে ফেসবুক, গুগলের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানও নিজেদের গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ফেক নিউজ ঠেকাতে নিপীড়নমূলক আইন পাস করে সেটিই করতে চাইছেন পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার অধ্যাপক রংবিন হান বলেন, ‘চীনের দেখানো পথেই যাচ্ছে রাশিয়া। রাজনৈতিক মতভিন্নতা উচ্ছেদ করতে পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ করার দরকার পড়ে না। এর চেয়ে অনলাইন কনটেন্টগুলো ফিল্টার করলেই চলে। সেটিই চমৎকার উপায়।’
ইন্টারনেট পুতিনের হবে?
গত কয়েক বছর ধরেই ফেসবুক, গুগল, টুইটার, লিংকডইনসহ বিভিন্ন বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে দৌড়ের ওপর রেখেছে ক্রেমলিন। অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে সেন্সর করতে চাইছে পুতিনের সরকার। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাশিয়ায় সার্ভার স্থাপনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
৬৬ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট পুতিনের ওপর রুশ জনগণের আস্থা কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে, ঠেকেছে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশে। ২০০৬ সালের পর এবারই তা সর্বনিম্ন। ছবি: রয়টার্স |
অনলাইন
নিষেধাজ্ঞার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে মস্কোভিত্তিক গোষ্ঠী রসকমসনাবোদা। এই
গোষ্ঠীর হিসাব বলছে, বর্তমানে মোট ৮০ হাজার ওয়েবসাইটকে কালো তালিকাভুক্ত
করা হয়েছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা আগোরা বলছে, ২০১৫ সাল থেকে সাইবার
আক্রমণের দায়ে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মামলা হয়েছে রাশিয়ায়, রায় হয়েছে ১৪৩টিতে।
রুশ তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায় ঢোকানো হচ্ছে পুতিনপন্থীদের।
এর জন্য বলপ্রয়োগও করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হচ্ছে
সরকারের হাতে।
ওদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ৬৬ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের ওপর রুশ জনগণের আস্থা কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে, ঠেকেছে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশে। ২০০৬ সালের পর এবারই তা সর্বনিম্ন। অথচ ২০১৫ সালের জুলাইয়ে তা পৌঁছেছিল ৭১ শতাংশে।
অর্থাৎ, লক্ষণ খুব একটা ভালো নয়। দেশের ইন্টারনেট দুনিয়ায় থাবা বসিয়ে কত দিন স্বস্তিতে থাকতে পারেন পুতিন, তাই এখন দেখার বিষয়।
ওদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ৬৬ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের ওপর রুশ জনগণের আস্থা কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে, ঠেকেছে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশে। ২০০৬ সালের পর এবারই তা সর্বনিম্ন। অথচ ২০১৫ সালের জুলাইয়ে তা পৌঁছেছিল ৭১ শতাংশে।
অর্থাৎ, লক্ষণ খুব একটা ভালো নয়। দেশের ইন্টারনেট দুনিয়ায় থাবা বসিয়ে কত দিন স্বস্তিতে থাকতে পারেন পুতিন, তাই এখন দেখার বিষয়।
No comments