অভিযোগ ভিত্তিহীন, ‘দায়বদ্ধতা’ ও ‘প্রতিশ্রুতি’র বাস্তবায়নে মনোযোগী হোন -মিয়ানমারকে বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা
সমস্যার উপযুক্ত সমাধানে ‘দায়বদ্ধতা’ এবং ‘প্রতিশ্রুতি’র বাস্তবায়নে
পুরোপুরিভাবে মনোনিবেশ করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সঙ্কটের টেকসই সমাধানে এটা ‘জরুরি’ বলে মনে করে ঢাকা। রোববার রোহিঙ্গা ঢলের
দুই বছরপুর্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে জারি করা আনুষ্ঠানিক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ এ আহ্বান জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকটের
জন্য স¤পূর্ন দায়ি দেশটি কর্তৃক প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে
অসহযোগিতার অভিযোগ ভিত্তিহীন, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা সম্পূর্ণ
অগ্রহণযোগ্য। এতে আরো বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া, প্রত্যবাসন প্রক্রিয়া
তদারকি করা এবং মিয়ানমারে বসবাসরত অন্য জাতি-গোষ্ঠির মধ্যে রোহিঙ্গাদের
রিইন্ট্রগ্রেশন বা ফের একত্রিকরণের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে মিয়ানমার
সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে একটি ‘সমন্বিত পদেক্ষেপ’
বা উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা।
বিজ্ঞপ্তিতে এটা স্পষ্ট করেই বলা হয়- যারাই ফিরতে চায়, যে কোনো সময় তাদের ফেরৎ পাঠাতে বাংলাদেশ সরকার জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে ‘কাউকে বাধা না দেয়ার’ নীতিগত অবস্থান বজায় রেখে চলেছে।
মিয়ানমার বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছে যে তারা বাস্তুচ্যুতদের গ্রহণে প্রস্তুত। এই লক্ষ্যে গত ২৭-২৮ জুলাই বাস্তুচ্যুতদের ফিরে যেতে রাজী করাতে তাদের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের কক্সবাজার ক্যাম্প পরিদর্শন করেছে। এসময় তারা বাস্তচ্যুত (রোহিঙ্গা) প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে। এরই প্রেক্ষিতে ২২ শে আগস্ট প্রত্যাবাসন শুরু করতে সহায়তায় রাজি হয়েছিল বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারের ভেরিফাই করা ৩৪৫০ জনের একটি তালিকা জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর মধ্যমে গত ৮ই আগস্ট জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয় সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে হস্তান্তর করেছিল। উদ্যেশ্য ছিল এটা যাচাই করতে যে, সেখানে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাস্তুচ্যুতরা রাখাইনে স্বেচ্ছায় ফিরতে রাজী কি-না? একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার তার দায়িত্ব অনুযায়ী বাস্তুচ্যুতদের নিরাপত্তা এবং ফেরত পাঠানোর প্রয়োজনীয় লজিস্টিক (বাস-ট্রাক) নিয়ে প্রস্তুত ছিল।
তালিকা ধরে ২২ শে আগস্ট পর্যন্ত ইউএনএইচসিআর ১ হাজার ২শ ৭৬ জনের ৩৩৯ টি পরিবারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। সাক্ষাৎকার গ্রহণের ওই প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত সব তথ্য এবং মিয়ানমার সরকার কতৃক প্রেরিত ফ্যাক্ট শিট ( রাখাইনের বিদ্যমান অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য) শেয়ার করা হয় পরিবারগুলোর সঙ্গে। তাদের এমন একটি পরিবেশে বিশেষ করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় যেখানে তারা তাদের মতামত মুক্তভাবে ব্যক্ত করতে পারে। কিন্তু দর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোন পরিবারের একজনও ফেরত যেতে রাজী হয়নি। তারা মনে করে রাখাইনে এখনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। সার্বিকভাবে রাখাইনে তাদের ফেরার মতো পরিবেশ এখনও নিশ্চিত হয়নি। তারা বিশেষভাবে রাখাইনে ফেরার পর তাদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। বেশীরভাগ পরিবারের তরফে বলা হয়, এখনও রাখাইনের প্রত্যাবাসের প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়া, বিশেষ করে আইনের শাসন, তাদের অধিকার বিষয়ক ইস্যুগুলো যেমন নাগরিকত্ব, মুক্তভাবে চলাফেরার নিশ্চয়তা এবং বলপূর্বক কেড়ে নেয়া বসতভিটা-জমি জমার অধিকার ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে।
তারা কেউ বলেনি ফিরতে চায় না, তারা সবাই বলেছে ফিরতে চায়, কিন্তু অবশ্য তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মিয়ানমার সরকারকে মানতে হবে। তাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের যে আলোচনায় তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, প্রত্যাবাসন তদারকি এবং রি-ইন্টিগ্রেশনে রাখাইনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপস্থিতির দাবি করেছিল। মিয়ানমারও তাদের নাগরিকত্বসহ মৌলিক দাবিগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নেয়া এবং সংকটের গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে পেতে নির্দিষ্ট সময় অন্তরান্তর বাস্তচ্যুতদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু এ নিয়ে মিয়ানমারের পরবর্তী কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হওয়ায় রোহিঙ্গারা তাদের বিরক্তি প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী বাস্ত্যচ্যুতদের প্রত্যাবাসনে উৎসাহিত করা স¤পূর্নরূপে মিয়ানমারের দায়িত্ব। একইসঙ্গে রাখাইনে একটি যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করা ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে থাকা আস্থার সংকট দূর করাও তাদের দায়িত্ব। এ জন্য রাখাইনের বাস্তব অবস্থা রোহিঙ্গাদের কাছে তুলে ধরার কথাও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছার কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ব্যহত হলে মিয়ানমার সরকারের অঙ্গীকার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। আনান কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে একটি যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী আগমনের ঢল নেমেছিল। এদিন থেকে পরবর্তী প্রায় একমাসে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এখানে আগে থেকে ছিল প্রায় ৪ লাখ। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া এসব শরণার্থীদের ৯২ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে। সব মিলে কক্সবাজারে এখন প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে এটা স্পষ্ট করেই বলা হয়- যারাই ফিরতে চায়, যে কোনো সময় তাদের ফেরৎ পাঠাতে বাংলাদেশ সরকার জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে ‘কাউকে বাধা না দেয়ার’ নীতিগত অবস্থান বজায় রেখে চলেছে।
মিয়ানমার বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছে যে তারা বাস্তুচ্যুতদের গ্রহণে প্রস্তুত। এই লক্ষ্যে গত ২৭-২৮ জুলাই বাস্তুচ্যুতদের ফিরে যেতে রাজী করাতে তাদের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের কক্সবাজার ক্যাম্প পরিদর্শন করেছে। এসময় তারা বাস্তচ্যুত (রোহিঙ্গা) প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে। এরই প্রেক্ষিতে ২২ শে আগস্ট প্রত্যাবাসন শুরু করতে সহায়তায় রাজি হয়েছিল বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারের ভেরিফাই করা ৩৪৫০ জনের একটি তালিকা জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর মধ্যমে গত ৮ই আগস্ট জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয় সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে হস্তান্তর করেছিল। উদ্যেশ্য ছিল এটা যাচাই করতে যে, সেখানে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাস্তুচ্যুতরা রাখাইনে স্বেচ্ছায় ফিরতে রাজী কি-না? একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার তার দায়িত্ব অনুযায়ী বাস্তুচ্যুতদের নিরাপত্তা এবং ফেরত পাঠানোর প্রয়োজনীয় লজিস্টিক (বাস-ট্রাক) নিয়ে প্রস্তুত ছিল।
তালিকা ধরে ২২ শে আগস্ট পর্যন্ত ইউএনএইচসিআর ১ হাজার ২শ ৭৬ জনের ৩৩৯ টি পরিবারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। সাক্ষাৎকার গ্রহণের ওই প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত সব তথ্য এবং মিয়ানমার সরকার কতৃক প্রেরিত ফ্যাক্ট শিট ( রাখাইনের বিদ্যমান অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য) শেয়ার করা হয় পরিবারগুলোর সঙ্গে। তাদের এমন একটি পরিবেশে বিশেষ করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় যেখানে তারা তাদের মতামত মুক্তভাবে ব্যক্ত করতে পারে। কিন্তু দর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোন পরিবারের একজনও ফেরত যেতে রাজী হয়নি। তারা মনে করে রাখাইনে এখনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। সার্বিকভাবে রাখাইনে তাদের ফেরার মতো পরিবেশ এখনও নিশ্চিত হয়নি। তারা বিশেষভাবে রাখাইনে ফেরার পর তাদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। বেশীরভাগ পরিবারের তরফে বলা হয়, এখনও রাখাইনের প্রত্যাবাসের প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়া, বিশেষ করে আইনের শাসন, তাদের অধিকার বিষয়ক ইস্যুগুলো যেমন নাগরিকত্ব, মুক্তভাবে চলাফেরার নিশ্চয়তা এবং বলপূর্বক কেড়ে নেয়া বসতভিটা-জমি জমার অধিকার ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে।
তারা কেউ বলেনি ফিরতে চায় না, তারা সবাই বলেছে ফিরতে চায়, কিন্তু অবশ্য তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মিয়ানমার সরকারকে মানতে হবে। তাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের যে আলোচনায় তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, প্রত্যাবাসন তদারকি এবং রি-ইন্টিগ্রেশনে রাখাইনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপস্থিতির দাবি করেছিল। মিয়ানমারও তাদের নাগরিকত্বসহ মৌলিক দাবিগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নেয়া এবং সংকটের গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে পেতে নির্দিষ্ট সময় অন্তরান্তর বাস্তচ্যুতদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু এ নিয়ে মিয়ানমারের পরবর্তী কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হওয়ায় রোহিঙ্গারা তাদের বিরক্তি প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী বাস্ত্যচ্যুতদের প্রত্যাবাসনে উৎসাহিত করা স¤পূর্নরূপে মিয়ানমারের দায়িত্ব। একইসঙ্গে রাখাইনে একটি যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করা ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে থাকা আস্থার সংকট দূর করাও তাদের দায়িত্ব। এ জন্য রাখাইনের বাস্তব অবস্থা রোহিঙ্গাদের কাছে তুলে ধরার কথাও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছার কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ব্যহত হলে মিয়ানমার সরকারের অঙ্গীকার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। আনান কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে একটি যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী আগমনের ঢল নেমেছিল। এদিন থেকে পরবর্তী প্রায় একমাসে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এখানে আগে থেকে ছিল প্রায় ৪ লাখ। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া এসব শরণার্থীদের ৯২ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে। সব মিলে কক্সবাজারে এখন প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছে।
No comments