ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি নেই -ভয়েস অব আমেরিকাকে প্রধানমন্ত্রী

ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি থাকার খবর ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ধরনের খবর উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এটা তাদের পলিটিক্স। তাদেরই নাগরিক, তারা যদি কাউকে অবৈধ বা বৈধ বলে এটা তাদের বিষয়। স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো মনে করি না যে, আমাদের কোনো অবৈধ বাংলাদেশি সেখানে আছে। আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী, যথেষ্ট মজবুত। তারা সেখানে গিয়ে কেন অবৈধ হবে? বিষয়টি নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কাউকে ফেরত পাঠানোর চিন্তা তাদের নেই।
নির্বাচন কমিশন মুক্ত ও স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একটি স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। বলেন, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা আমার মূল লক্ষ্য।
আমার স্লোগানই ছিল আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব। এটা আমি নিশ্চিত করতে পেরেছি। তিনি বলেন, এখন উৎসাহের সঙ্গে লাইন বেঁধে মানুষ ভোট দেয়। আমার আমলে ছয় হাজার ইলেকশন হয়েছে। এখানে ব্যাপক উৎসাহ। ভোট দিতে পেরে গর্ববোধ করে। এ জন্য আমি বলতে পারি, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। মানুষ ভোট দেবে।
ভয়েস অব আমেরিকা জানতে চেয়েছিল শেখ হাসিনা নিজে যদি এখন বিরোধী দলে থাকতেন, আজকের বাংলাদেশের নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতি তিনি কীভাবে দেখতেন। নির্বাচন কমিশনকে কেমন ধারার মনে হতো। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে বলে তার মনে হত কি না। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আগের সরকারগুলো নিজেদের ইচ্ছেমত নির্বাচন কমিশন করত। আর তার সময়ে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে ‘এই স্বচ্ছতা’ আনতে পেরেছে। গত ১০ বছরে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার নির্বাচন হয়েছে এবং সেখানে মানুষ উৎসবের আমেজে ভোট দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনি যদি যাচাই বাছাই করেন, অবশ্যই আপনাকে স্বীকার করতে হবে, অবশ্যই বর্তমানে ইলেকশন করার মতো সুন্দর একটা পরিবেশ আছে এবং নির্বাচন কমিশন সে নির্বাচন করতে পারবে।
বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোতে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে- সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে বেসরকারি খাত একা কিছু করতে পারে না। বেসরকারি খাতের কাজ করার সুযোগ সরকারকেই করে দিতে হয়। তার সরকার সেটাই করে দিয়েছে।
গত ১০ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের পরও যারা ‘উন্নয়ন হয়নি’ বলে অভিযোগ করে, তাদের সমালোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, চোখ থাকলেও যদি অন্ধ হয়, তাকে কি আপনি কিছু দেখাতে পারবেন? আমার মনে হয় না।
রোহিঙ্গা সংকটে সবচেয়ে বেশি কাদের সহযোগিতা পেয়েছেন- এই প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।
অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। বিশেষ করে কক্সবাজারের মানুষগুলো। কারণ তাদের জমি। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিটি সংস্থা। সারা বিশ্বই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য নিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি করতে কাজ করছে। আমরা চাচ্ছি যে প্রথমে আমরা কিছু পাঠাব, তাদের সঙ্গে ওরা কি রকম ব্যবহার করে এটা দেখব, ইতিমধ্যে আমরা ভাসান চরে তাদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি, তারা থাকতে পারবে।

No comments

Powered by Blogger.