পৌনে ৩ ঘণ্টার নিষ্ফল তল্লাশি পুলিশের
গুলশানের ৮৬ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাড়িতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা তল্লাশি চালায়েছে পুলিশ। এদিন সকাল পৌনে ৭টার দিকে মূল ভবনের গেটসহ একে একে চারটি কক্ষের তালা ভেঙে এ অভিযান চালানো হয়। সেখানে কোনো কিছু না পেয়ে শূন্যহাতে ফিরে গেছেন পুলিশ সদস্যরা। তবে দুটি ভাঙা তালা, কিছু কাগজপত্র এবং বিভিন্ন কক্ষের ভিডিও চিত্র নিয়ে যান তারা। তল্লাশিকালে দ্বিতীয় তলায় খালেদা জিয়ার কক্ষে পুলিশ হাত দেয়নি। ওই সময় কার্যালয়ে স্থাপিত সিসি ক্যামেরাগুলো উল্টিয়ে দেয়া হয়। অভিযান শেষে গুলশান থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘অফিসটিতে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা ও নাশকতা চালানোর মতো জিনিসপত্র রয়েছে- এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে’ তারা (পুলিশ) তল্লাশি চালিয়েছেন। এ সময় তিনি ওই অফিসে তল্লাশি চালানোর জন্য আদালতের একটি নির্দেশনাও (সার্চ ওয়ারেন্ট) সাংবাদিকদের দেখান। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, ‘তল্লাশিতে কিছুই পাওয়া যায়নি, তাই তারা খালি হাতেই চলে যাচ্ছেন।’ তল্লাশির জব্দ তালিকার একটি হাতে লেখা কপি সাংবাদিকদের দেখান ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম। সেখানে জব্দ মালামালের বিবরণের স্থানে লেখা ছিল ‘শূন্য’। জব্দ তালিকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অফিসে কর্মরত তিন স্টাফকে সাক্ষী করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- মনির জামান, ফেরদৌস কবির ও মো. রাসেদ।
জানতে চাইলে গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক শনিবার বিকালে টেলিফোনে যুগান্তরকে জানান, তিনি সোর্সের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন, গুলশান ৮৬ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাড়ির আশপাশের এলাকায় রাষ্ট্রবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বিনষ্টসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহণের আহ্বানমূলক বিভিন্ন বক্তব্যসংবলিত বিপুল পরিমাণ স্টিকার এবং নাশকতা সৃষ্টির সামগ্রী বর্ণিত স্টিকার রয়েছে।’ এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সংশ্লিষ্ট থানায় কর্মরত কর্মকর্তাদের দাফতরিক কাজের জন্য নির্দিষ্ট বইয়ে একটি নোট লেখেন। যুগান্তরকে তিনি আরও জানান, ‘এটি তাদের নিয়মিত কাজ। থানায় কর্মরত কর্মকর্তারা যে কোনো তথ্য পেলে, তা উল্লেখ করে নোট দিয়ে থাকেন। এছাড়া কর্মস্থলে যোগদান, কর্মস্থল থেকে বাসায় কিংবা অভিযান পরিচালনা করতে গেলেও নোট দেয়ার নিয়ম রয়েছে।’ জানা গেছে, গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিকের ওই অফিস নোটটি পরে সাধারণ ডায়েরি হিসেবে রেকর্ড করা হয়। সাধারণ ডায়েরি নম্বর-১১৫৯। তারিখ ১৯/৫/১৭। পরে গুলশান থানা পুলিশ শুক্রবার ওই সাধারণ ডায়েরিমূলে গুলশানের ৮৬ নম্বর রোডের ৬ নম্বর বাড়িতে তল্লাশির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করে। তবে নোট কিংবা সাধারণ ডায়েরি সূত্রে আদালতে করা আবেদনের কোথাও বাড়িটি ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়’- এমন কথা উল্লেখ নেই। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তল্লাশির অনুমতি দিলে শনিবার সকালে পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যায়। এদিকে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানরত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার জরুরি ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা ব্যাহত করতে চাচ্ছে। তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশি করে এটাই বুঝিয়েছে যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। বাংলাদেশ সম্পূর্ণ গণতন্ত্রবিহীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্যে এই সরকার দেশ চালাচ্ছে। অবিলম্বে এসব হামলা, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। এদিকে অভিযান শেষে গুলশান কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে পুলিশি হানা- এটি গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থী। তল্লাশির ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপারসনের দফতর অথবা নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের কিছু জানানো হয়নি। এমনকি তাদের কাউকে কার্যালয়েও প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাউকে কিছু না বলে, কারও অজ্ঞাতনামা সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে ম্যাজিস্ট্রেটের ওয়ারেন্ট নিয়ে কার্যালয়ে ঢুকে পড়েছে পুলিশ। এটা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিপর্যস্ত করতে এমনটি করা হয়েছে। অবৈধভাবে সরকার দীর্ঘদিন ধরে যে অশুভ পরিকল্পনা করে আসছে, এটি তারই অংশ। বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভবনের ভেতর ঢুকেই কর্মচারীদের ফোন কেড়ে নেয় পুলিশ সদস্যরা। তিনি বলেন, সরকার একদলীয় নির্বাচন করতে চায়। সেটা আর কখনও করতে পারবে না। তবে নির্বাচনের পরিবেশ বিঘিœত করতে তারা ষড়যন্ত্র করতে পারে।
গুলশান কার্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী সোহরাব হোসেন ও অফিস সহকারী মো. রাসেদসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, হঠাৎ শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশের গুলশান জোনের ডিসির নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক পুলিশ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। এ সময় তারা ৮৬ নম্বর সড়কের দুই পাশে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। সেখানে সব ধরনের যান চলাচলসহ সড়কটিতে সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এর পরপরই কার্যালয়ের মূল ভবনের বাইরের গেটে দায়িত্ব পালন করা নিরাপত্তা কর্মীকে গেট খুলতে বলে পুলিশ। জবাবে নিরাপত্তা কর্মীরা বলেন, নির্দেশ ছাড়া গেট খোলা নিষেধ। ঠিক তখনই একজন পুলিশ সদস্য গেটের গ্রিলের ভেতর দিয়ে হাত বাড়িয়ে একজন নিরাপত্তাকর্মীর জামার কলার ধরে ফেলেন। ওই সময় ভবনের বাইরের মূল ফটক খুলে দেন নিরাপত্তাকর্মীরা। অফিস সহকারী মো. রাসেদ যুগান্তরকে জানান, তিনি ও পিয়ন আমিনুল ইসলাম স্বপন প্রতি রাতেই গুলশান কার্যালয়ে ঘুমান। শুক্রবার রাতেও তার ব্যতীক্রম হয়নি। সকালের ওই ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্যদের জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেই তাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। যার কারণে পরে আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করেননি বলে জানান রাসেদ। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাসেদ আরও জানান, পুলিশ যখন বাইরের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে, তখন ঘড়ির কাঁটায় ঠিক পৌনে ৭টা বাজে। মূল ভবনের প্রবেশপথে কলাপসিবল গেট দেখে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে পুলিশ কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। একে একে বিভিন্ন কক্ষের চারটি চালা ভেঙে তল্লাশি চালায় পুলিশ। রাসেদ আরও জানান, প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন পুলিশ সদস্য শুধু ভবনের ভেতরের তল্লাশি অভিযানে অংশ নেন। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য কার্যালয়ের আশপাশে সতর্ক অবস্থায় ছিলেন।
ভবনের দ্বিতীয়তলায় তল্লাশিকালে পুলিশ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কক্ষের চাবি চায়। জবাবে রাসেদ পুলিশ সদস্যদের বলেন, ম্যাডামের কক্ষের চাবি তাদের কাছে থাকে না। তবে, ম্যাডামের কক্ষে প্রবেশের বিষয়ে তারা কোনো বাড়াবাড়ি করেননি। যদিও তারা একজন তালা ভাঙার মিস্ত্রি নিয়ে এসেছিল। রাসেদ জানান, পুলিশ সদস্যরা ভবনের তিন তলায় একটি কক্ষে রাখা বাইন্ডিং করা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে দেখেন। এ সময় একজন পুলিশ সদস্য বলতে থাকেন, এগুলো নিয়ে চল, যাতে করে সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি কোনো বক্তব্য দিতে না পারে। তবে, ওই সময়ে অন্য পুলিশ সদস্যরা বলতে থাকেন, এগুলো নিয়ে কি হবে, এগুলো তো লন্ডনে তারেক রহমানের কাছেও আছে। এরপর ওই কক্ষ থেকে পুলিশ সদস্যরা আর কিছু না পেয়ে চলে যান। তবে যাওয়ার সময়ে তারা সম্প্রতি বিএনপির ভিশন-২০৩০ যে ঘোষণা করেছে, সেসব বইগুলো কোথায় আছে তাও জানতে চান। রাসেদ জানান, পুলিশ সদস্যরা কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ক্যাসেটও চেয়েছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, এসব বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। তবে পুলিশ কিছু কাগজপত্র ফটোকপি করিয়ে নিয়েছে বলে জানান রাসেদ। তিনি বলেন, যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের দুটি তালা নিয়ে যায় তবে অভিযানের শুরুতে নেয়া মোবাইল ফোন ফেরত দেয়। তল্লাশি শেষ করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সরেজমিন সেখানে দেখা গেছে, নিচের তলা ও দোতলায় দুটি সিসি ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে রাখা হয়েছে। দোতলা ও তিন তলায় কাগজপত্র, ফাইলপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। অভিযান চলাকালীন সকাল ৯টার দিকে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) তৌহিদ, সার্জেন্ট (অব.) নুরুন্নবী। এরপরই আসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল। এছাড়া অভিযানের খবর পেয়ে কার্যালয়ে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদীন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মোহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরীন, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা, আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, ডা. ফাওয়াজ হোসেন শুভসহ মহিলা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল,
ছাত্রদল, জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন স্তরের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির খবরে সকাল থেকে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। ঘুম থেকে উঠেই তারা গুলশানের দিকে ছুটে যান। একপর্যায়ে কার্যালয়ের আশপাশে হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত হন। এ তল্লাশিকে ন্যক্কারজনক আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান তারা। এ সময় সিনিয়র নেতারা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের সুনাম নষ্ট ও তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়েই এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। তল্লাশির প্রতিবাদে বিএনপি, মহিলা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল দফায় দফায় বিক্ষোভ করে। আজ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল। অভিযানে অংশ নেয়া কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়ার এ কার্যালয়ে এক ট্রাক বই আনার খবর তারা পেয়েছেন। সেই বইকে ঘিরে তাদের সন্দেহ। তবে বিএনপির গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, এগুলো ছিল বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের বাঁধাই করা পত্রিকা। সরকারের ধারণা ছিল, বিএনপি সরকারের নানা দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে। সেই ডকুমেন্টগুলো বই আকারে গুলশান কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। গুলশান কার্যালয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নানা অপকর্মের কারণে সরকারের জনপ্রিয়তা এখন শূন্যের কোঠায়। এ কারণে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। যার কারণে তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মতো তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সরকার তার পুলিশ দিয়ে অভিযান চালিয়েছে। এভাবে আর চলতে দেয়া যায় না। বিনাভোটের সরকারকে বিদায় করতে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নামা ছাড়া কোনো বুদ্ধি নেই। এজন্য তিনি নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা সন্দেহ করছি, তারা আমাদের সঙ্কটে ফেলার জন্য কোনো কিছু রেখে গেছে কিনা বা কোনো কিছু করেছে কিনা তা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। জনগণের ভোটবিহীন সরকারই এ ধরনের অপকর্ম করতে পারে। যে কাজটা তারা করেছে, এটা সাংঘাতিক অপরাধ। এটার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি। বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিক্ষোভ : অভিযান শেষে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি, মহিলা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী। দফা দফায় করা মিছিলে অংশ নেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, জাসাসের সভাপতি ড. মামুন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হেলাল খানসহ অঙ্গ সংগঠনের মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজ, শরিফ উদ্দিন জুয়েল, মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল, ইয়াসিন আলীসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী। এদিকে দুুপুরে কাকরাইল এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এতে দক্ষিণের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ রফিক হাওলাদার, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাদ মোর্শেদ পাপ্পা সিকদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশ নেন।
কর্মসূচি : চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে তল্লাশির প্রতিবাদে আজ রোববার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করবে বিএনপি। তল্লাশি অভিযানের পর দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে এই কর্মসূচি সাংবাদিকদের জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ ছাড়া যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আজ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।
No comments