পারিবারিক দ্বন্দ্বের নির্মম বলি, শৈলকুপায় তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা by আজাদ রহমান
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া তিন শিশুর দুজন সাফিন ও আমিনের মা শিউলী খাতুনের মাতম, তাঁদের বাড়ি থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো |
ঘরের
ভেতরে আগুনে পুড়ছে শিশুরা। আর তাদের বাঁচাতে বাইরে স্থানীয় লোকজনের
আপ্রাণ চেষ্টা। কিন্তু শক্ত দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে পেরিয়ে যায় অনেক
সময়। ততক্ষণে পুড়ে মারা গেছে দুই শিশু। আরেক শিশু ভয়াবহ দগ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছে
যন্ত্রণায়। উদ্ধার করে ঝিনাইদহ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেও মারা যায়।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর মসজিদপাড়া এলাকার গোলাম নবীর বাড়িতে গত রোববার সন্ধ্যায় তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার এই বিবরণ দিয়েছেন পাশের বাড়ির শাহিনুর রহমান। তিনি বলেন, তিন শিশু যখন পুড়ছিল, তখন বাড়ির আরেক পাশ থেকে ইকবাল হোসেন চিৎকার করে বলছিলেন, ‘সব শেষ করে দিয়েছি।’
পরে ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ইকবালকে আসামি করে মামলা করেছেন তাঁর ভাই দেলোয়ার হোসেন। ইকবাল পুলিশকে বলেছেন, ডেকে নেওয়ার পর ঘরে ঢুকিয়ে হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের পর শিশু তিনটিকে রশি দিয়ে বাঁধেন। পরে সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর তিনি বাড়ির ছাদ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে বাইরে অনেক মানুষ জড়ো হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ জানায়, গোলাম নবীর দুই ছেলে ইকবাল ও দেলোয়ারের মধ্যে বিবাদ ছিল। এরই জের ধরে বড় ভাই ইকবাল দুই ভাতিজা মোস্তফা সাফিন শিবলু (৭) ও মোস্তফা আমিন (১০) এবং তাদের ফুপাতো ভাই মাহিন হাসানকে (১৩) ঘরে আটকে আগুন ধরিয়ে দেন। মাহিন ওই বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ঘটনার আগের দিন ইকবাল নিজের স্ত্রীকে দুই সন্তানসহ তাঁর বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
তিনটি শিশুর লাশ গতকাল সোমবার বিকেলে শৈলকুপার মনোহরপুর গ্রামে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। এর আগে তাদের জানাজা হয়। রোমহর্ষক ওই হত্যাকাণ্ডের পর কবিরপুর আর মনোহরপুর এলাকায় গতকাল সকাল থেকেই হাজারো মানুষ ভিড় করে হত্যাকারীর বিচার দাবি করে। পাশাপাশি শৈলকুপার সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে হত্যাকারীর শাস্তির দাবিতে শহরে শোক র্যা লি, বিক্ষোভ মিছিল, থানা ঘেরাও ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর মসজিদপাড়া এলাকার গোলাম নবীর বাড়িতে গত রোববার সন্ধ্যায় তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার এই বিবরণ দিয়েছেন পাশের বাড়ির শাহিনুর রহমান। তিনি বলেন, তিন শিশু যখন পুড়ছিল, তখন বাড়ির আরেক পাশ থেকে ইকবাল হোসেন চিৎকার করে বলছিলেন, ‘সব শেষ করে দিয়েছি।’
পরে ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ইকবালকে আসামি করে মামলা করেছেন তাঁর ভাই দেলোয়ার হোসেন। ইকবাল পুলিশকে বলেছেন, ডেকে নেওয়ার পর ঘরে ঢুকিয়ে হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের পর শিশু তিনটিকে রশি দিয়ে বাঁধেন। পরে সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর তিনি বাড়ির ছাদ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে বাইরে অনেক মানুষ জড়ো হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ জানায়, গোলাম নবীর দুই ছেলে ইকবাল ও দেলোয়ারের মধ্যে বিবাদ ছিল। এরই জের ধরে বড় ভাই ইকবাল দুই ভাতিজা মোস্তফা সাফিন শিবলু (৭) ও মোস্তফা আমিন (১০) এবং তাদের ফুপাতো ভাই মাহিন হাসানকে (১৩) ঘরে আটকে আগুন ধরিয়ে দেন। মাহিন ওই বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ঘটনার আগের দিন ইকবাল নিজের স্ত্রীকে দুই সন্তানসহ তাঁর বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
তিনটি শিশুর লাশ গতকাল সোমবার বিকেলে শৈলকুপার মনোহরপুর গ্রামে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। এর আগে তাদের জানাজা হয়। রোমহর্ষক ওই হত্যাকাণ্ডের পর কবিরপুর আর মনোহরপুর এলাকায় গতকাল সকাল থেকেই হাজারো মানুষ ভিড় করে হত্যাকারীর বিচার দাবি করে। পাশাপাশি শৈলকুপার সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে হত্যাকারীর শাস্তির দাবিতে শহরে শোক র্যা লি, বিক্ষোভ মিছিল, থানা ঘেরাও ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
শিশু মাহিনের বাবা রাশেদ আলীর আহাজারি। তাঁদের বাড়ি থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো |
পুলিশ
ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত দুই শিশুর বাবা দেলোয়ার হোসেন শৈলকুপা
পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তাঁর বড় ভাই ইকবাল হোসেন থাকতেন
সিঙ্গাপুরে। সেখান থেকে টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান
রয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগে ইকবাল দেশে ফিরে বাবা গোলাম নবীর কাছে গত কয়েক
বছরে তাঁর পাঠানো টাকার হিসাব চান। বিষয়টি নিয়ে বাবা ও ছোট ভাই
দেলোয়ারের সঙ্গে ইকবালের বিরোধ শুরু হয়। তবে তিন শিশুকে এই পারিবারিক
দ্বন্দ্বের নির্মম বলি হতে হবে, এমনটা কেউ আন্দাজ করেননি।
মাহিনের বাবা রাশেদ আলী বলেন, শৈলকুপা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই দিন আগে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল মাহিন। আর সাফিন ও আমিনকে হারিয়ে দেলোয়ার ও তাঁর স্ত্রী নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
যশোরে মানববন্ধন: যশোর অফিস জানায়, শৈলকুপায় তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে যশোর শহরের চিত্রা মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ‘আসুন, সবাই শিশুকে বাঁচাই’—এ স্লোগানে শিশু অধিকার সংরক্ষণ কমিটি এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এতে যশোরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনীতিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের অন্তত ৫০০ মানুষ অংশ নেন।
মাহিনের বাবা রাশেদ আলী বলেন, শৈলকুপা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই দিন আগে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল মাহিন। আর সাফিন ও আমিনকে হারিয়ে দেলোয়ার ও তাঁর স্ত্রী নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
যশোরে মানববন্ধন: যশোর অফিস জানায়, শৈলকুপায় তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে যশোর শহরের চিত্রা মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ‘আসুন, সবাই শিশুকে বাঁচাই’—এ স্লোগানে শিশু অধিকার সংরক্ষণ কমিটি এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এতে যশোরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনীতিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের অন্তত ৫০০ মানুষ অংশ নেন।
No comments