নাসা বিশেষজ্ঞের করুণ জীবন
কম্পিউটার
টেকনিশিয়ান হিসেবে তিনি কাজ করেছেন বিশ্বখ্যাত মহাকাশ গবেষণা সংস্থা
নাসায়। চাঁদে মানুষের যাত্রার জন্য নাসার এ্যাপোলো অভিযানেও কাজ করেছেন
তিনি। কিন্তু বর্তমানে নিজের পায়ের রোগ নিয়ে এক দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে
তাকে। নাসার সাবেক এই বিশেষজ্ঞের নাম মাইকেল কার্ল (৬৭)। বছর দশেক আগে
লন্ডনের রাস্তায় এক গাড়ি দুর্ঘটনার পর থেকেই তার বাম পা ফুলতে শুরু করে।
স্কটল্যান্ডের এনএইচএস গ্র্যামপিয়ানে তার চিকিৎসা চললেও অবস্থার কোনো
উন্নতি হয়নি। বরং ফুলতে ফুলতে তার পায়ের ওজন এখন দাঁড়িয়েছে ২৫ কেজিরও বেশি।
ফলে কার্লের পক্ষে দৈনন্দিন কাজকর্ম করা ক্রমেই অসম্ভব হয়ে পড়ছে। রাস্তায়
বের হলে মানুষের টিটকিরিও হয়েছে তার নিত্যসঙ্গী। এদিকে রোগ নির্ণয় ও
চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বচসা চলছে মাইকেল কার্লের। তার
দাবি, তার সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারছে না স্কটল্যান্ডের আঞ্চলিক
স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র এনএইচএস। একই সঙ্গে সঠিক পরামর্শটিও তারা তাকে দিতে
পারছেন না বলেই অভিযোগ তার। মাইকেল কার্ল বলছেন তার রোগটি আসলে
পরজীবীবাহিত লিফ্যানটিয়াসিস। এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে পা কেটে ফেলে তার
জায়গায় কৃত্রিম পা ব্যবহারের পক্ষে কথা বলছেন তিনি। বছরখানেক আগে ডান্ডিতে
একজন চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছিলেন যে, তার এই রোগ হয়েছে।
এনএইচএসের পক্ষ থেকে একবারই এই রোগের পরীক্ষা করেই রোগটি হয়নি বলে জানানো
হয় কার্লকে। তার বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও এই রোগ নির্ণয়ের জন্য কার্যকরী
পরীক্ষাগুলো সম্পাদন করেনি এনএইচএস। এদিকে এনএইচএসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে
মাইকেল কার্ল লিমফোডিমাতে ভুগছেন। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরের কোনো অঙ্গ
ফুলে যেতে থাকে। তারা আরও বলছে, এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে কার্ল যদি তার পা
কেটে ফেলেন, তবে তাকে বাকি জীবন হুইল চেয়ারে বসেই কাটাতে হবে। কার্ল বলছেন,
নিরাপদ হলেই কেবল তিনি পা কাটার কথা বলেছেন। তাছাড়া, কৃত্রিম অঙ্গ
সংযোজনের বিষয়টি নিয়েও এনএইচএস কোনো মন্তব্য করেনি বলে বলছেন কার্ল। মাইকেল
কার্ল বলেন, ‘আমি বাকি জীবন হুইল চেয়ারে কাটাতে চাই না। তবে আমার চাইতেও
তো আরও খারাপ অবস্থায় অনেক সৈন্য হাসপাতালে আসেন। তারা দিব্যি কৃত্রিম পা
লাগিয়ে সুস্থ জীবন কাটাচ্ছেন। আমি পারবো না কেন?’ নিজের অবস্থার কথা জানাতে
গিয়ে কার্ল বলেন, ‘আমি প্রকৃতপক্ষে জানিও না আমার পুরো পা না কি অর্ধেকটা
নষ্ট হয়েছে, না কী হয়েছে।’ এনএইচএস গ্র্যামপিয়ানের পক্ষ থেকে অবশ্য রোগীর
তথ্যের গোপনীয়তার কারণ দেখিয়ে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে তাদের
একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, রোগীর সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য
তারা কাজ করে থাকেন এবং প্রতিটি রোগীই যাতে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসাটি পান তার
চেষ্টা করা হয়।
No comments