সত্যিই ব্লেড খেয়েছিলেন সাজনা by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
সার্কাসে
কসরত দেখানোর সময় পারফর্মারদের অনেকেই ব্লেড গিলে ফেলেন। কিংবা কোনো কোনো
জাদুশিল্পীকেও অগুনতি দর্শকের সামনে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে দেখা যায় আস্ত
ব্লেড। দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখেন, কিন্তু জানেন এটা কারসাজি ছাড়া আর কিছু নয়।
ধারালো ব্লেড খেলে ভেতরটা ছিঁড়ে রক্তারক্তি কা-ে প্রাণটাই যাবার যোগাড় হবে।
কিন্তু ধারণাটাকে যেনো বুড়ো আঙুল দেখালেন সিলেটের টিলাগড়ের বাসিন্দা সাজনা
বেগম। তিনি গিলে খেয়েছিলেন ব্রিটিশ কোম্পানি উইলকিনসন সোর্ডের ধারালো একটি
রেজর ব্লেড।
পেটের ব্যথা নিয়ে আসা সাজনা বেগমের এন্ডোসকপির ফিল্ম দেখে ডাক্তারদের চোখ কপালে উঠার যোগাড়। ক্ষুদ্রান্ত্রের অগ্রভাগ বা ‘ডিয়োডেনামে’ আটকে আছে একটি ধাতব বস্তু। একটু ভালো করে দেখলে বেশ স্পষ্টই বুঝা ওটা একটি ব্লেড। ডাক্তাররা ভেবে কুল কিনারা পান না ‘ব্লেডটা’ ওখান পর্যন্ত গেলো কি করে। তাও আবার মুখ হয়ে ডিয়োডেনাম পর্যন্ত যাওয়ার পথটাও বলতে গেলে অক্ষতই রয়েছে। রোগিনীকে জিজ্ঞেস করেও কোনো উত্তর মেলে না, শুধু মুচকি হাসেন তিনি। রোগিনীটি মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। তাই তার কাছ থেকে জবাব আদায় খুব একটা সহজ নয়। তবে তিনি ডাক্তারদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, চিকিৎসা শেষে ফিরে যাওয়ার সময় ‘রহস্য’টা বলে যাবেন।
৩৪ বছর বয়সী সাজনা বেগম বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসা চলছিলো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শফিকুর রহমানের অধীনে। ‘জিনের আসর’ বা সিলেটি ভাষায় ‘উপরি’ সন্দেহে চলছিলো ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজও। এরই মাঝে হঠাৎ করে পেটে তীব্র ব্যথা হতে থাকে তার। মুখ দিয়ে রক্তও যেতে থাকে। চিকিৎসক বললেন এমনটা হতেই পারে। মা-ও ভাবেন ‘উপরি’র কারণেও তার মেয়ের এমন হতে পারে । তবে সাজনা বেগমের ভাই কোনোটাতেই স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। ৩১ আগস্ট বোনকে নিয়ে আসেন নগরীর ইবনে সিনা হাসপাতালে। ডাক্তারের পরামর্শে নয় নিজ উদ্যোগেই সাজনা বেগমের পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম করান। ইঙ্গিত মেলে পেটের ভেতর কিছু একটা আছে। তখন এন্ডোসকপি করান। রাগিব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের গ্যাস্ট্রো এন্টারোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলমগীর সাফওয়াতের এন্ডোসকপিক ক্যামেরায় সব রহস্য উন্মোচিত হয়। চমকে উঠেন ডা. সাফওয়াত। দেখতে পান ডিয়োডেনাম বা গ্রহণীতে আটকে আছে ধারালো একটি ব্লেড। এমনকি ক্যামেরায় ব্লেডের গায়ে লেখা কোম্পানির নামও স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। গলাসহ পেটের ভেতরের অন্যন্য অংশ কেটে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্লেড বের করে আনার ঝুঁকি নিতে চান না তিনি। দ্রুত অপারেশনের মাধ্যমে ব্লেড অপারেশনের পরামর্শ দেন।
দেরি না করেই সাজনা বেগমকে ভর্তি করা হয় ইবনে সিনা হাসপাতালেই। শুরু হয় অপারেশনের প্রস্তুতি। রাত ১০টার দিকে সাজনা বেগমকে নিয়ে আসা হয় অপারেশন টেবিলে। অ্যানেসথেশিয়ার মাধ্যমে তাকে অচেতন করেন ডা. মোহাম্মদ আলী। এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় নিয়ে অপারেশনের মাধ্যমে ব্লেডটি অপসারণ করেন সার্জারির অধ্যাপক ডা. রফিকুস সালেহীন। সহযোগিতা করেন ডা. সৈয়দ আরিফ আদিলসহ চিকিৎসকদের ৫ সদস্যের একটি টিম। চিকিৎসা শেষে ৭ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল ছাড়েন সাজনা বেগম।
কথা হয় অপারেশন টিমের প্রধান ডা. রফিকুস সালেহীনের সাথে। তিনি বলেন, রোগীটির ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। ধারালো ব্লেড গিলে খাওয়ার সময়ই খাদ্যনালী ছিঁড়ে গিয়ে প্রাণ নিয়েই সংশয় দেখা দিতো তার। তিনি বলেন, আমি ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছিলাম না সাজনা বেগম ব্লেডটি গিলে খেলেন কিভাবে। বারবার প্রশ্ন করেও জবাব পাইনি। জিজ্ঞেস করলেই শুধু হাসতেন। অনেক পীড়াপীড়ির পর কথা দিয়েছিলেন যাবার সময় বলবেন কিভাবে ব্লেডটি ‘খেয়েছিলেন’ তিনি।
অপারেশনের সাথে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে সাজনা বেগম তার কথা রেখেছিলেন। হাসপাতাল ছেড়ে যাবার আগে তিনি খোলাসা করেন ব্লেড খাওয়ার গোপন রহস্য। তার ভাষায়, ‘একদিন ভীষণ মন খারাপ ছিলো আমার। কিচ্ছু ভালো লাগছিলো না। একঘেয়েমি কাটাতে কিছু একটা করতে ইচ্ছা করছিলো। একটা ম্যাংগো বারের মধ্যে ব্লেড পুরে নিয়ে গিলে ফেললাম।’ রহস্য ভেঙে দিয়ে আরো একবার মুচকি হাসেন সাজনা বেগম।
পেটের ব্যথা নিয়ে আসা সাজনা বেগমের এন্ডোসকপির ফিল্ম দেখে ডাক্তারদের চোখ কপালে উঠার যোগাড়। ক্ষুদ্রান্ত্রের অগ্রভাগ বা ‘ডিয়োডেনামে’ আটকে আছে একটি ধাতব বস্তু। একটু ভালো করে দেখলে বেশ স্পষ্টই বুঝা ওটা একটি ব্লেড। ডাক্তাররা ভেবে কুল কিনারা পান না ‘ব্লেডটা’ ওখান পর্যন্ত গেলো কি করে। তাও আবার মুখ হয়ে ডিয়োডেনাম পর্যন্ত যাওয়ার পথটাও বলতে গেলে অক্ষতই রয়েছে। রোগিনীকে জিজ্ঞেস করেও কোনো উত্তর মেলে না, শুধু মুচকি হাসেন তিনি। রোগিনীটি মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। তাই তার কাছ থেকে জবাব আদায় খুব একটা সহজ নয়। তবে তিনি ডাক্তারদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, চিকিৎসা শেষে ফিরে যাওয়ার সময় ‘রহস্য’টা বলে যাবেন।
৩৪ বছর বয়সী সাজনা বেগম বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসা চলছিলো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শফিকুর রহমানের অধীনে। ‘জিনের আসর’ বা সিলেটি ভাষায় ‘উপরি’ সন্দেহে চলছিলো ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজও। এরই মাঝে হঠাৎ করে পেটে তীব্র ব্যথা হতে থাকে তার। মুখ দিয়ে রক্তও যেতে থাকে। চিকিৎসক বললেন এমনটা হতেই পারে। মা-ও ভাবেন ‘উপরি’র কারণেও তার মেয়ের এমন হতে পারে । তবে সাজনা বেগমের ভাই কোনোটাতেই স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। ৩১ আগস্ট বোনকে নিয়ে আসেন নগরীর ইবনে সিনা হাসপাতালে। ডাক্তারের পরামর্শে নয় নিজ উদ্যোগেই সাজনা বেগমের পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম করান। ইঙ্গিত মেলে পেটের ভেতর কিছু একটা আছে। তখন এন্ডোসকপি করান। রাগিব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের গ্যাস্ট্রো এন্টারোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলমগীর সাফওয়াতের এন্ডোসকপিক ক্যামেরায় সব রহস্য উন্মোচিত হয়। চমকে উঠেন ডা. সাফওয়াত। দেখতে পান ডিয়োডেনাম বা গ্রহণীতে আটকে আছে ধারালো একটি ব্লেড। এমনকি ক্যামেরায় ব্লেডের গায়ে লেখা কোম্পানির নামও স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। গলাসহ পেটের ভেতরের অন্যন্য অংশ কেটে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্লেড বের করে আনার ঝুঁকি নিতে চান না তিনি। দ্রুত অপারেশনের মাধ্যমে ব্লেড অপারেশনের পরামর্শ দেন।
দেরি না করেই সাজনা বেগমকে ভর্তি করা হয় ইবনে সিনা হাসপাতালেই। শুরু হয় অপারেশনের প্রস্তুতি। রাত ১০টার দিকে সাজনা বেগমকে নিয়ে আসা হয় অপারেশন টেবিলে। অ্যানেসথেশিয়ার মাধ্যমে তাকে অচেতন করেন ডা. মোহাম্মদ আলী। এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় নিয়ে অপারেশনের মাধ্যমে ব্লেডটি অপসারণ করেন সার্জারির অধ্যাপক ডা. রফিকুস সালেহীন। সহযোগিতা করেন ডা. সৈয়দ আরিফ আদিলসহ চিকিৎসকদের ৫ সদস্যের একটি টিম। চিকিৎসা শেষে ৭ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল ছাড়েন সাজনা বেগম।
কথা হয় অপারেশন টিমের প্রধান ডা. রফিকুস সালেহীনের সাথে। তিনি বলেন, রোগীটির ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। ধারালো ব্লেড গিলে খাওয়ার সময়ই খাদ্যনালী ছিঁড়ে গিয়ে প্রাণ নিয়েই সংশয় দেখা দিতো তার। তিনি বলেন, আমি ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছিলাম না সাজনা বেগম ব্লেডটি গিলে খেলেন কিভাবে। বারবার প্রশ্ন করেও জবাব পাইনি। জিজ্ঞেস করলেই শুধু হাসতেন। অনেক পীড়াপীড়ির পর কথা দিয়েছিলেন যাবার সময় বলবেন কিভাবে ব্লেডটি ‘খেয়েছিলেন’ তিনি।
অপারেশনের সাথে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে সাজনা বেগম তার কথা রেখেছিলেন। হাসপাতাল ছেড়ে যাবার আগে তিনি খোলাসা করেন ব্লেড খাওয়ার গোপন রহস্য। তার ভাষায়, ‘একদিন ভীষণ মন খারাপ ছিলো আমার। কিচ্ছু ভালো লাগছিলো না। একঘেয়েমি কাটাতে কিছু একটা করতে ইচ্ছা করছিলো। একটা ম্যাংগো বারের মধ্যে ব্লেড পুরে নিয়ে গিলে ফেললাম।’ রহস্য ভেঙে দিয়ে আরো একবার মুচকি হাসেন সাজনা বেগম।
No comments