করপোরেট ছোঁয়ায় অন্য বৈশাখ by একরামুল হুদা
নববর্ষের উৎসবে যুক্ত হয়েছে দেশি বিদেশি কর্পোরেট হাউস। ছবি:জিয়া ইষলাম |
‘এসো
হে বৈশাখ, এসো এসো’-এই গানটির মাধ্যমেই স্বাগত জানানো হয় বাঙালির প্রাণের
উৎসব পয়লা বৈশাখকে। আবহমানকাল ধরে নানা উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা
বছরের প্রথম এ দিনটি পালিত হয় আমাদের দেশে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই
দিনটিকে আনন্দের অন্যরকম উপলক্ষ করে তুলেছে বলে বর্তমানে এটি পরিণত হয়েছে
সর্বজনীন উৎসবে।
নতুন বছরের উৎসবের মধ্যে ফুটে উঠে গ্রাম বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগের বিষয়টি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে উৎসবের আয়োজনেও। ঢাকায় রমনার বটমূলের বর্ষবরণ ও চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা, সোনারগাঁওয়ের বউমেলা ও ঘোড়া মেলা, পার্বত্য জেলায় আদিবাসীদের বর্ষবরণসহ সব জেলা, উপজেলা ও গ্রামে নিজেদের মতো করে, নিজেদের অর্থায়নে এ উৎসবটি পালিত হয়ে আসছিল। তবে কয়েক বছর ধরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলোতে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্ত হচ্ছে দেশি বিদেশি বিভিন্ন করপোরেট হাউসগুলো।
পয়লা বৈশাখের উৎসবে করপোরেট হাউসগুলোর এই যুক্ত হওয়াকে ইতিবাচকই বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, এটা ভালো। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে এভাবে করপোরেট হাউসগুলো যুক্ত হবেই। এমনটা যদি হয় তাহলে উৎসবটা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, এর ফলে উৎসবে পরিবর্তন আসতে পারে ঠিক, যদি ইতিবাচক পরিবর্তন হয় সেটা কোনো সমস্যা না।
১৯৮৯ সাল থেকে পয়লা বৈশাখের উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে পয়লা বৈশাখের সকালে এ শোভাযাত্রাটি বের হয়। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের নিজেদের বানানো বিভিন্ন রং-বেরংয়ের মুখোশ, ফেস্টুন ও বিভিন্ন প্রতিকৃতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে এ শোভাযাত্রা। তবে কারও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই প্রতিবছর এ কাজটি করে চারুকলা অনুষদ। চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন বলেন, আমরা কারও পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণ করি না।
পয়লা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠানটি হয় রাজধানী ঢাকায়। রমনা বটমূলে বৈশাখের প্রথম প্রত্যুষে সুরের মূর্ছনা ও কবিতার মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় নতুন বছরকে। ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানট এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আসছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এ অনুষ্ঠানটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে মুঠোফোন কোম্পানি গ্রামীণফোন। তবে এ বছর পৃষ্ঠপোষকতা করছে না গ্রামীণ ফোন। বরং এ বছর মুঠোফোন কোম্পানিটি বিভিন্ন জেলার বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলোকেই পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
ঢাকাকেন্দ্রিক যে পয়লা বৈশাখ পালন করা হয় সেটাকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এটা করা হচ্ছে বলে জানালেন গ্রামীণ ফোনের বহির্যোগাযোগ বিভাগের প্রধান সাইয়েদ তালাত কামাল। তিনি বলেন, যে জিনিসটি অনেক বছর ধরে চলে আসছে আমরা সেটাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কাজ করছি।
একটা সময় রাজধানীতে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল রমনা বটতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ এবং চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। এরপর ধীরে ধীরে যুক্ত হলো দেশের বড় বড় ব্যান্ড দলগুলোর অংশগ্রহণে কনসার্ট। বিভিন্ন দেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় সাধারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কলাবাগান মাঠ ও রবীন্দ্রসরোবর সহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় এ কনসার্টগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এ ধরনের কনসার্ট আয়োজনকে ভালোই বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শামসুর রহমান। তাঁর মতে, কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন হচ্ছে ঠিক, তবে তরুণ প্রজন্মও বিনোদন পাচ্ছে এর মাধ্যমে।
সবকিছুরই ভালো খারাপ এ দুটি দিক থাকে। পয়লা বৈশাখের উৎসবের সঙ্গে করপোরেট হাউসগুলোর যুক্ত হওয়াকে খারাপ চোখে দেখেন অনেকেই। অনেকেই বলে থাকেন এর ফলে উৎসবের ঐতিহ্যগত দিকটি হারিয়ে যাবে। তবে ইতিবাচক দিকটাই বেশি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, যারা সাহায্য করেন তাঁরা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই করেন ঠিক, কিন্তু সবটাই যদি বাণিজ্যিক হয় তাহলে সে সহায়তা নেওয়া উচিত নয়। ঐতিহ্য যদি আমাদের মতো করে চর্চা করতে পারি এবং এমন চর্চা করতে কেউ যদি সাহায্য করে তাহলে সেটাকে সাধুবাদ জানাই।
নতুন বছরের উৎসবের মধ্যে ফুটে উঠে গ্রাম বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগের বিষয়টি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে উৎসবের আয়োজনেও। ঢাকায় রমনার বটমূলের বর্ষবরণ ও চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা, সোনারগাঁওয়ের বউমেলা ও ঘোড়া মেলা, পার্বত্য জেলায় আদিবাসীদের বর্ষবরণসহ সব জেলা, উপজেলা ও গ্রামে নিজেদের মতো করে, নিজেদের অর্থায়নে এ উৎসবটি পালিত হয়ে আসছিল। তবে কয়েক বছর ধরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলোতে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্ত হচ্ছে দেশি বিদেশি বিভিন্ন করপোরেট হাউসগুলো।
পয়লা বৈশাখের উৎসবে করপোরেট হাউসগুলোর এই যুক্ত হওয়াকে ইতিবাচকই বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, এটা ভালো। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে এভাবে করপোরেট হাউসগুলো যুক্ত হবেই। এমনটা যদি হয় তাহলে উৎসবটা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, এর ফলে উৎসবে পরিবর্তন আসতে পারে ঠিক, যদি ইতিবাচক পরিবর্তন হয় সেটা কোনো সমস্যা না।
১৯৮৯ সাল থেকে পয়লা বৈশাখের উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে পয়লা বৈশাখের সকালে এ শোভাযাত্রাটি বের হয়। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের নিজেদের বানানো বিভিন্ন রং-বেরংয়ের মুখোশ, ফেস্টুন ও বিভিন্ন প্রতিকৃতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে এ শোভাযাত্রা। তবে কারও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই প্রতিবছর এ কাজটি করে চারুকলা অনুষদ। চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন বলেন, আমরা কারও পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণ করি না।
পয়লা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠানটি হয় রাজধানী ঢাকায়। রমনা বটমূলে বৈশাখের প্রথম প্রত্যুষে সুরের মূর্ছনা ও কবিতার মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় নতুন বছরকে। ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানট এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আসছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এ অনুষ্ঠানটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে মুঠোফোন কোম্পানি গ্রামীণফোন। তবে এ বছর পৃষ্ঠপোষকতা করছে না গ্রামীণ ফোন। বরং এ বছর মুঠোফোন কোম্পানিটি বিভিন্ন জেলার বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলোকেই পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
ঢাকাকেন্দ্রিক যে পয়লা বৈশাখ পালন করা হয় সেটাকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এটা করা হচ্ছে বলে জানালেন গ্রামীণ ফোনের বহির্যোগাযোগ বিভাগের প্রধান সাইয়েদ তালাত কামাল। তিনি বলেন, যে জিনিসটি অনেক বছর ধরে চলে আসছে আমরা সেটাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কাজ করছি।
একটা সময় রাজধানীতে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল রমনা বটতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ এবং চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। এরপর ধীরে ধীরে যুক্ত হলো দেশের বড় বড় ব্যান্ড দলগুলোর অংশগ্রহণে কনসার্ট। বিভিন্ন দেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় সাধারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কলাবাগান মাঠ ও রবীন্দ্রসরোবর সহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় এ কনসার্টগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এ ধরনের কনসার্ট আয়োজনকে ভালোই বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শামসুর রহমান। তাঁর মতে, কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন হচ্ছে ঠিক, তবে তরুণ প্রজন্মও বিনোদন পাচ্ছে এর মাধ্যমে।
সবকিছুরই ভালো খারাপ এ দুটি দিক থাকে। পয়লা বৈশাখের উৎসবের সঙ্গে করপোরেট হাউসগুলোর যুক্ত হওয়াকে খারাপ চোখে দেখেন অনেকেই। অনেকেই বলে থাকেন এর ফলে উৎসবের ঐতিহ্যগত দিকটি হারিয়ে যাবে। তবে ইতিবাচক দিকটাই বেশি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, যারা সাহায্য করেন তাঁরা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই করেন ঠিক, কিন্তু সবটাই যদি বাণিজ্যিক হয় তাহলে সে সহায়তা নেওয়া উচিত নয়। ঐতিহ্য যদি আমাদের মতো করে চর্চা করতে পারি এবং এমন চর্চা করতে কেউ যদি সাহায্য করে তাহলে সেটাকে সাধুবাদ জানাই।
No comments