ছিঁচকে চোর থেকে শত কোটি টাকার মালিক by নিয়াজ মাহমুদ
একসময় রিকশা চালিয়ে, কখনও চুরি করে জীবন
চলতো তার। চাঁদপুর শহরে পরিচয় ছিল চোরা সেইল্লা হিসেবে। আর এখন তিনি শত
কোটি টাকার মালিক। হয়েছেন সাহেব। সেলিম সাহেব। চলেন র্যাব ফোর-এর গাড়িতে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছের মানুষ। বেশি দিন
আগের
কথা নয়। আশির দশকে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। আর চুরির অপরাধে ইউনিয়ন
পরিষদের সিলিংয়ে টাঙিয়ে বিচার করা হয়। ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে পেটানো হয়।
অপরাধের কারণে তার পিতা মুচলেকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন। মুচলেকা দেন এই বলে- তার ছেলে মারা গেলে কোন অভিযোগ নেই। আর এখন সেলিম ওই ইউনিয়ন পরিষদেরই চেয়ারম্যান। চাঁদপুর ১০নং মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু বলেন, ‘চুরি করলেও সেলিম এখন জনপ্রতিনিধি। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে।’ লক্ষ্মীপুরের সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে সেলিমের পক্ষে সাফাই গান এভাবে- সেলিম ছোট হলেও তার হাত অনেক লম্বা। তবে চাঁদপুর শহরে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় চোরা সেইল্লা। সরজমিন চাঁদপুর ঘুরে জানা গেছে তার উত্থান কাহিনী। ওছমান খান ওরফে সেলিম। পিতা অবদুল হাই খান। ছিলেন সাখুয়া ইউনিয়নের কেরানি। স্থানীয় সূত্র জানায়, সেলিম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডিও পার হতে পারেননি। ১০-১২ বছর বয়স থেকেই ছিলেন ছিঁচকে চোর। কারও ঘরের মুরগি, কারও ঘটি-বাটি চুরি করতেন। চাঁদপুরের বিভিন্ন লঞ্চে পকেট কাটার কাজও করতেন। একপর্যায়ে চোরা সেইল্ল্যা হিসেবে পরিচিতি পান। চুরির ঘটনায় আশির দশকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মনা খান তার বহুবার জরিমানা করেন। নব্বইয়ের দশকে তার বাড়িঘরের মালামাল চুরি করেন সেলিনা। এ নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সাবেক চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। জীবনে কোনদিন চুরি করবেন না বলে ৫০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দেন সেলিম। এ ঘটনার কিছুদিন পর একটি হত্যা মামলার আসামি হয়ে চাঁদপুর থেকে পালিয়ে ঢাকায় আশ্রয় নেন সেলিম। উত্তরার একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে চালান। জনশ্রুতি রয়েছে ঘটনাক্রমে একদিন আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন মায়া চৌধুরী তার রিকশায় ওঠেন। ওই রিকশা গ্যারেজ মায়া চৌধুরীর বাসার কাছে হওয়ায় তার বাসার কাজকর্ম করার সুযোগ পায় সেলিম। সেখান থেকে তার পরিচয় হয় ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে। একপর্যায়ে রিকশা চালানো ছেড়ে দেয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মায়া চৌধুরীর হাতে-পায়ে ধরে সাখুয়া ইউনিয়নের জন্য কিছু কাজ করার চেষ্টা-তদবির করেন। সাখুয়ার সাবেক দুই চেয়ারম্যান তাকে চুরি করার অপরাধে মারধর করেছে- তাই চেয়ারম্যান হওয়ার টার্গেট করেন। ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে হাফেজ বেপারীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। নির্বাচনে হেরে শুরু করেন নদী থেকে বালু উত্তোলন ব্যবসা। দীপু মনি মন্ত্রী হওয়ায় তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ। দীপু মনির আশীর্বাদ থাকায় ২০১১ সালের ১০ই জুনের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতেও যান। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি তার বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেলে বিষয়টি নেতিবাচকভাবে দেখে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। তবে এখন সেলিম নয়, সেলিম সাহেব বলে তাকে সবাই সম্বোধন করেন। কারণ তিনি শত কোটি টাকার মালিক। কি কি ব্যবসা আছে তার? জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ঠিকাদারিসহ নানা ধরনের ব্যবসা। গত বছর ৩০ লাখ টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
রিফিউজিদের বরাদ্দকৃত জমি দখল: চাঁদপুরের ডিসি-এসপির কাছে আবেদন করেও রিফিউজিদের জন্য বরাদ্দকৃত জমি রক্ষা পায়নি। পরিবর্তন হয়নি তাদের ভাগ্যের। বরং, সেলিম তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছেন। পুলিশ সুপারের কাছে রিফিউজিদের আবেদনে বিবাদী করা হয় সেলিম চেয়ারম্যানকে। এতে বলা হয়, ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ২৬ পরিবারকে তরপুরচন্ডী মৌজার মহাজের কলোনিতে বসবাস করার জন্য বন্দোবস্ত প্রদান করেন। তারা ৫৬ বছর ধরে সেখানে বসবাস করেন। ভূমিদস্যু সেলিম চেয়ারম্যানসহ তার দলীয় সন্ত্রাসীরা তাদের রিফিউজি কলোনি থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। পরে সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করে। ওই জমি বালি দিয়ে ভরাট করে কিছু অংশ বিক্রি করে। রিফিউজিদের উচ্ছেদে হুমকি প্রসঙ্গে সেলিম চেয়ারম্যান জানান, ওই এলাকা তার নয়। তাই সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না তার। তবে ডিসি ও এসপির কাছে আবেদনে বিবাদী হিসেবে নাম রয়েছে তার।
আয়ের উৎস: পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিআইপি বেড়িবাঁধ থেকে ২০ ফুট গভীর করে বালু নিয়েছেন। এর ফলে বেড়িবাঁধ যে কোন মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। চাঁদপুর সদর, হাইমচর, লক্ষ্মীপুর, রামগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর বাজার হয়ে হানারচর ইউনিয়নের গৌবিন্দা মৌজা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের পাশের মাটি তুলে নিয়ে প্রতি ফুট ৫ টাকা করে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মেডিকেল কলেজের নামে কৃষিজমি নামমাত্র মূল্যে ক্রয়: পিস্তলের ভয় দেখিয়ে বাড়ির সামনে মেডিকেল কলেজ করার কথা বলে প্রায় ৫০০ শতক জমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন সেলিম খান। বর্তমানে ওই জমির বাজার মূল্য প্রতি শতক ৫০ হাজার টাকা। এ হিসাবে ৫০০ শতক জমির বাজার মূল্য ২৫০ কোটি টাকা। তবে জমির মালিকদের প্রতি শতকের দাম দিয়েছেন গড়ে ৫-৭ হাজার টাকা করে। কেউ টাকা পেয়েছেন, কেউ পাননি। টাকা চাইলে তাদের পিস্তলের ভয় দেখিয়ে মারধর করা হয়। ওই এলাকার জাহাঙ্গীর উকিল, খাজে আহমেদ উকিল, হামিদ হাওলাদার ও মোতালেব গাজী টাকা পাননি। এ প্রশ্নে সেলিম চেয়ারম্যান জানান, এ যুগে টাকা না পেয়ে কি কেউ জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়? মেডিকেল কলেজের নাম করে নিজের নামে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়া- এ কেমন কাজ? এ প্রশ্নে সেলিম চেয়ারম্যান বলেন, জমি কিনেছি আমি রেজিস্ট্রি কি অন্য কারও নামে হবে?
বালু উত্তোলন ও ড্রেজিং: প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩৫টি ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে সেলিম খানের নির্দেশে। গত পৌনে পাঁচ বছর ধরে এ ব্যবসা চলছে। এখান থেকে সেলিমের আয় গড়ে প্রতিদিন অন্তত ৫-৬ লাখ টাকা। সেলিম দাবি করেন এখন বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। তবে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটের পাশে উত্তোলন করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে তার বালু উত্তোলন ব্যবসার পার্টনার ডা. দীপু মনির ভাই।
এছাড়া টিআর, জিআর, কাবিখা’য় তো তদবির বাণিজ্য তো রয়েছেই। রয়েছে নামে-বেনামে নানা প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার ধান্ধা।
অপরাধের কারণে তার পিতা মুচলেকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন। মুচলেকা দেন এই বলে- তার ছেলে মারা গেলে কোন অভিযোগ নেই। আর এখন সেলিম ওই ইউনিয়ন পরিষদেরই চেয়ারম্যান। চাঁদপুর ১০নং মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু বলেন, ‘চুরি করলেও সেলিম এখন জনপ্রতিনিধি। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে।’ লক্ষ্মীপুরের সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে সেলিমের পক্ষে সাফাই গান এভাবে- সেলিম ছোট হলেও তার হাত অনেক লম্বা। তবে চাঁদপুর শহরে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় চোরা সেইল্লা। সরজমিন চাঁদপুর ঘুরে জানা গেছে তার উত্থান কাহিনী। ওছমান খান ওরফে সেলিম। পিতা অবদুল হাই খান। ছিলেন সাখুয়া ইউনিয়নের কেরানি। স্থানীয় সূত্র জানায়, সেলিম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডিও পার হতে পারেননি। ১০-১২ বছর বয়স থেকেই ছিলেন ছিঁচকে চোর। কারও ঘরের মুরগি, কারও ঘটি-বাটি চুরি করতেন। চাঁদপুরের বিভিন্ন লঞ্চে পকেট কাটার কাজও করতেন। একপর্যায়ে চোরা সেইল্ল্যা হিসেবে পরিচিতি পান। চুরির ঘটনায় আশির দশকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মনা খান তার বহুবার জরিমানা করেন। নব্বইয়ের দশকে তার বাড়িঘরের মালামাল চুরি করেন সেলিনা। এ নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সাবেক চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। জীবনে কোনদিন চুরি করবেন না বলে ৫০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দেন সেলিম। এ ঘটনার কিছুদিন পর একটি হত্যা মামলার আসামি হয়ে চাঁদপুর থেকে পালিয়ে ঢাকায় আশ্রয় নেন সেলিম। উত্তরার একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে চালান। জনশ্রুতি রয়েছে ঘটনাক্রমে একদিন আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন মায়া চৌধুরী তার রিকশায় ওঠেন। ওই রিকশা গ্যারেজ মায়া চৌধুরীর বাসার কাছে হওয়ায় তার বাসার কাজকর্ম করার সুযোগ পায় সেলিম। সেখান থেকে তার পরিচয় হয় ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে। একপর্যায়ে রিকশা চালানো ছেড়ে দেয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মায়া চৌধুরীর হাতে-পায়ে ধরে সাখুয়া ইউনিয়নের জন্য কিছু কাজ করার চেষ্টা-তদবির করেন। সাখুয়ার সাবেক দুই চেয়ারম্যান তাকে চুরি করার অপরাধে মারধর করেছে- তাই চেয়ারম্যান হওয়ার টার্গেট করেন। ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে হাফেজ বেপারীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। নির্বাচনে হেরে শুরু করেন নদী থেকে বালু উত্তোলন ব্যবসা। দীপু মনি মন্ত্রী হওয়ায় তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ। দীপু মনির আশীর্বাদ থাকায় ২০১১ সালের ১০ই জুনের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতেও যান। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি তার বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেলে বিষয়টি নেতিবাচকভাবে দেখে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। তবে এখন সেলিম নয়, সেলিম সাহেব বলে তাকে সবাই সম্বোধন করেন। কারণ তিনি শত কোটি টাকার মালিক। কি কি ব্যবসা আছে তার? জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ঠিকাদারিসহ নানা ধরনের ব্যবসা। গত বছর ৩০ লাখ টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
রিফিউজিদের বরাদ্দকৃত জমি দখল: চাঁদপুরের ডিসি-এসপির কাছে আবেদন করেও রিফিউজিদের জন্য বরাদ্দকৃত জমি রক্ষা পায়নি। পরিবর্তন হয়নি তাদের ভাগ্যের। বরং, সেলিম তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছেন। পুলিশ সুপারের কাছে রিফিউজিদের আবেদনে বিবাদী করা হয় সেলিম চেয়ারম্যানকে। এতে বলা হয়, ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ২৬ পরিবারকে তরপুরচন্ডী মৌজার মহাজের কলোনিতে বসবাস করার জন্য বন্দোবস্ত প্রদান করেন। তারা ৫৬ বছর ধরে সেখানে বসবাস করেন। ভূমিদস্যু সেলিম চেয়ারম্যানসহ তার দলীয় সন্ত্রাসীরা তাদের রিফিউজি কলোনি থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। পরে সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করে। ওই জমি বালি দিয়ে ভরাট করে কিছু অংশ বিক্রি করে। রিফিউজিদের উচ্ছেদে হুমকি প্রসঙ্গে সেলিম চেয়ারম্যান জানান, ওই এলাকা তার নয়। তাই সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না তার। তবে ডিসি ও এসপির কাছে আবেদনে বিবাদী হিসেবে নাম রয়েছে তার।
আয়ের উৎস: পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিআইপি বেড়িবাঁধ থেকে ২০ ফুট গভীর করে বালু নিয়েছেন। এর ফলে বেড়িবাঁধ যে কোন মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। চাঁদপুর সদর, হাইমচর, লক্ষ্মীপুর, রামগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর বাজার হয়ে হানারচর ইউনিয়নের গৌবিন্দা মৌজা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের পাশের মাটি তুলে নিয়ে প্রতি ফুট ৫ টাকা করে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মেডিকেল কলেজের নামে কৃষিজমি নামমাত্র মূল্যে ক্রয়: পিস্তলের ভয় দেখিয়ে বাড়ির সামনে মেডিকেল কলেজ করার কথা বলে প্রায় ৫০০ শতক জমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন সেলিম খান। বর্তমানে ওই জমির বাজার মূল্য প্রতি শতক ৫০ হাজার টাকা। এ হিসাবে ৫০০ শতক জমির বাজার মূল্য ২৫০ কোটি টাকা। তবে জমির মালিকদের প্রতি শতকের দাম দিয়েছেন গড়ে ৫-৭ হাজার টাকা করে। কেউ টাকা পেয়েছেন, কেউ পাননি। টাকা চাইলে তাদের পিস্তলের ভয় দেখিয়ে মারধর করা হয়। ওই এলাকার জাহাঙ্গীর উকিল, খাজে আহমেদ উকিল, হামিদ হাওলাদার ও মোতালেব গাজী টাকা পাননি। এ প্রশ্নে সেলিম চেয়ারম্যান জানান, এ যুগে টাকা না পেয়ে কি কেউ জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়? মেডিকেল কলেজের নাম করে নিজের নামে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়া- এ কেমন কাজ? এ প্রশ্নে সেলিম চেয়ারম্যান বলেন, জমি কিনেছি আমি রেজিস্ট্রি কি অন্য কারও নামে হবে?
বালু উত্তোলন ও ড্রেজিং: প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩৫টি ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে সেলিম খানের নির্দেশে। গত পৌনে পাঁচ বছর ধরে এ ব্যবসা চলছে। এখান থেকে সেলিমের আয় গড়ে প্রতিদিন অন্তত ৫-৬ লাখ টাকা। সেলিম দাবি করেন এখন বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। তবে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটের পাশে উত্তোলন করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে তার বালু উত্তোলন ব্যবসার পার্টনার ডা. দীপু মনির ভাই।
এছাড়া টিআর, জিআর, কাবিখা’য় তো তদবির বাণিজ্য তো রয়েছেই। রয়েছে নামে-বেনামে নানা প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার ধান্ধা।
No comments