শেয়ারবাজারে কারসাজিকারীদের ফাঁদে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা
চাঙা শেয়ারবাজারে ‘বুল কার্টেল’-এর ফাঁদে পড়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। এই চক্র নানাভাবে বাজারে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিনতে থাকে, যা দেখে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ওই সব শেয়ারের পেছনে ছোটেন।
বুল কার্টেল চক্র ঢাকা শহরের পাঁচতারকা হোটেলগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সম্পদের পুনর্মূল্যায়ন, বোনাস শেয়ার ইস্যু বা রাইট শেয়ার ইস্যুর মতো বিষয়গুলোও গোপনে নির্ধারণ করিয়ে নেয়। এসব বিষয়ে কী ঘোষণা দিতে হবে, তারও দিকনির্দেশনা দেয় এই চক্র। তাদের নড়াচড়ার ওপরই এখন নির্ভর করে প্রতি সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজার কেমন যাবে এবং কোন খাতের শেয়ার বেশি কেনাবেচা হবে। এই জালে আটকা পড়ে প্রতিদিনই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনভিজ্ঞ ও নতুন অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী।
বেশ কয়েক দিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজার ছিল চড়া। বদৌলতে একের পর এক লেনদেন ও সূচক বাড়ার রেকর্ড হতে থাকে। কিন্তু গতকাল সোমবার শেয়ারবাজারে সম্পূর্ণ উল্টো পরিস্থিতি দেখা গেছে। এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক ১৪৭ পয়েন্ট পড়ে যায়। যে কারণে দিনশেষে ব্রোকারেজ হাউসগুলো থেকে অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে বিমর্ষ অবস্থায় বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের খবর আমাদের কানেও এসেছে। তবে এগুলো প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেখার দায়িত্ব ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের। তারা এসব যোগসাজশকারীকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাছে পাঠালে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, যারা শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে তা থেকে ফায়দা লুটতে চায়, তারা আন্তর্জাতিকভাবে বুল কার্টেল হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্রোকারেজ হাউসের মালিক ও প্রতিনিধি এই বুল কার্টেল চক্র গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বর্তমানে এ ধরনের ১০ থেকে ১৫টি চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই বুল কার্টেলের বেশ কয়েকজন ১৯৯৬ সালেও দেশের শেয়ারবাজারে ঘটিত কেলেঙ্কারির অভিযুক্ত আসামি।
বাজারের কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই বুল কার্টেলের সঙ্গে আরও কয়েকটি মধ্য স্তরের জুয়াড়ি চক্র বর্তমানে ব্যাপক মাত্রায় সক্রিয়। তাদের মাধ্যমেই প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কার্ব মার্কেটে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের বড় বড় ক্রেতা বা বিক্রেতা কারা, সেই তালিকা বাজারে চলে আসছে। কোম্পানির শেয়ার বিভাগে হাত মিলিয়ে একটি কালোবাজারি চক্র এসব গোপন তথ্য বাজারে ছাড়ছে।
শেয়ারবাজারের প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির প্রকৃত খাতের বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় এবং এসব প্রবণতা চালু থাকার পরও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিস্ময়করভাবে নিশ্চুপ রয়েছে।
এ ব্যাপারে মার্চেন্ট ব্যাংকার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাও একমত পোষণ করেছেন। তাঁরা মনে করেন, মাঝে মাঝে বিভিন্ন শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে একটি চক্রের হাত রয়েছে।
এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আরিফ এ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাজারের ওপর শক্ত নজরদারি রাখা। এ কাজে এসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও স্টক এক্সচেঞ্জকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া কোন বিও হিসাব থেকে নিম্নমানের শেয়ার উচ্চমূল্যে লেনদেন হচ্ছে, তা চিহ্নিত করার কাজ জোরদার করতে হবে। এতে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে এসইসি যদি শক্ত ব্যবস্থা নেয়, তাহলে বাজারের অস্থিরতা কিছুটা হলেও কমবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসইসির বয়স ১৭ বছর অতিক্রম করতে চললেও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং বাজারের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই সংস্থার নিজস্ব কোনো সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যার নেই। এ ধরনের একটি সফটওয়্যারের ব্যয় তিন লাখ ডলার বা দুই কোটি টাকা। এ জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) কারিগরি সহায়তা ও অর্থ দিতেও রাজি আছে। তবে এ ব্যাপারে কমিশন নিজেই কিছুটা ধীরে চলছে।
এসইসি বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সফটওয়্যার ব্যবহার করে নজরদারি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে সংস্থাটির কারিগরি সামর্থ্য ও জনবলের রয়েছে চরম ঘাটতি। মাত্র দুজন লোক দিয়ে কমিশন প্রতিদিনের বাজার নজরদারি করে থাকে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরেই শেয়ারবাজারে সুশাসন আনতে নজরদারি ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার কথা বলে আসছেন। এডিবির পক্ষ থেকেও দীর্ঘদিন ধরে কমিশনকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি তাদের এক প্রতিবেদনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘প্রতিদিনের শেয়ারবাজারের লেনদেনকে নজরদারির জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা স্টক এক্সচেঞ্জ—কারোরই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই।’
এদিকে নজরদারি-ব্যবস্থার দুর্বলতার বিষয়টি উল্লেখ করে কয়েকবার সরকারের শীর্ষ মহলকে অবহিত করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তারা মন্তব্য করে, শেয়ার কেনাবেচার পদ্ধতি কম্পিউটারভিত্তিক হয়েছে। কিন্তু এ জন্য কোনো ডিজিটাল নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়নি। এডিবি ২০০৭ সালে বাজারে নজরদারি ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষণ ও আরও কিছু উন্নয়নের জন্য ৩০ লাখ ডলার বা ২১ কোটি টাকার একটি কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এর বেশির ভাগ অর্থই এখন অব্যবহূত অবস্থায় পড়ে আছে।
এ ব্যাপারে এসইসির বক্তব্য হচ্ছে, এডিবির প্রকল্পটির কাজ চলছে। সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যারটি কেনার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে দর ও গুণগত মান যাচাই করা হচ্ছে।
তবে এ ব্যাপারে ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, ‘এখন আর সময় বিলম্ব না করে সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা আনতে যেসব সংস্কার ও প্রযুক্তিগত উন্নতির কথা ভাবা হচ্ছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা দরকার। না হলে আবারও একটি বড় ধরনের অঘটনের দিকে যেতে পারে দেশের শেয়ারবাজার।’
গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক ১৪৭ পয়েন্ট পড়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৭১০ কোটি টাকার। এদিন ডিএসইতে ২৪৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এর মধ্যে আগের চেয়ে দরপতন ঘটে ১৮১টির, বাড়ে মাত্র ৬৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল ২০০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। মোট লেনদেন হয় ৩০৯ কোটি টাকার। এর মধ্যে আগের চেয়ে দাম বেড়েছে ৫৪টির, কমে ১৪২টির এবং অপরিবর্তিত থাকে মাত্র চারটি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বুল কার্টেল চক্র ঢাকা শহরের পাঁচতারকা হোটেলগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সম্পদের পুনর্মূল্যায়ন, বোনাস শেয়ার ইস্যু বা রাইট শেয়ার ইস্যুর মতো বিষয়গুলোও গোপনে নির্ধারণ করিয়ে নেয়। এসব বিষয়ে কী ঘোষণা দিতে হবে, তারও দিকনির্দেশনা দেয় এই চক্র। তাদের নড়াচড়ার ওপরই এখন নির্ভর করে প্রতি সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজার কেমন যাবে এবং কোন খাতের শেয়ার বেশি কেনাবেচা হবে। এই জালে আটকা পড়ে প্রতিদিনই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনভিজ্ঞ ও নতুন অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী।
বেশ কয়েক দিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজার ছিল চড়া। বদৌলতে একের পর এক লেনদেন ও সূচক বাড়ার রেকর্ড হতে থাকে। কিন্তু গতকাল সোমবার শেয়ারবাজারে সম্পূর্ণ উল্টো পরিস্থিতি দেখা গেছে। এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক ১৪৭ পয়েন্ট পড়ে যায়। যে কারণে দিনশেষে ব্রোকারেজ হাউসগুলো থেকে অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে বিমর্ষ অবস্থায় বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের খবর আমাদের কানেও এসেছে। তবে এগুলো প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেখার দায়িত্ব ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের। তারা এসব যোগসাজশকারীকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাছে পাঠালে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, যারা শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে তা থেকে ফায়দা লুটতে চায়, তারা আন্তর্জাতিকভাবে বুল কার্টেল হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্রোকারেজ হাউসের মালিক ও প্রতিনিধি এই বুল কার্টেল চক্র গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বর্তমানে এ ধরনের ১০ থেকে ১৫টি চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই বুল কার্টেলের বেশ কয়েকজন ১৯৯৬ সালেও দেশের শেয়ারবাজারে ঘটিত কেলেঙ্কারির অভিযুক্ত আসামি।
বাজারের কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই বুল কার্টেলের সঙ্গে আরও কয়েকটি মধ্য স্তরের জুয়াড়ি চক্র বর্তমানে ব্যাপক মাত্রায় সক্রিয়। তাদের মাধ্যমেই প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কার্ব মার্কেটে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের বড় বড় ক্রেতা বা বিক্রেতা কারা, সেই তালিকা বাজারে চলে আসছে। কোম্পানির শেয়ার বিভাগে হাত মিলিয়ে একটি কালোবাজারি চক্র এসব গোপন তথ্য বাজারে ছাড়ছে।
শেয়ারবাজারের প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির প্রকৃত খাতের বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় এবং এসব প্রবণতা চালু থাকার পরও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিস্ময়করভাবে নিশ্চুপ রয়েছে।
এ ব্যাপারে মার্চেন্ট ব্যাংকার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাও একমত পোষণ করেছেন। তাঁরা মনে করেন, মাঝে মাঝে বিভিন্ন শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে একটি চক্রের হাত রয়েছে।
এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আরিফ এ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাজারের ওপর শক্ত নজরদারি রাখা। এ কাজে এসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও স্টক এক্সচেঞ্জকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া কোন বিও হিসাব থেকে নিম্নমানের শেয়ার উচ্চমূল্যে লেনদেন হচ্ছে, তা চিহ্নিত করার কাজ জোরদার করতে হবে। এতে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে এসইসি যদি শক্ত ব্যবস্থা নেয়, তাহলে বাজারের অস্থিরতা কিছুটা হলেও কমবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসইসির বয়স ১৭ বছর অতিক্রম করতে চললেও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং বাজারের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই সংস্থার নিজস্ব কোনো সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যার নেই। এ ধরনের একটি সফটওয়্যারের ব্যয় তিন লাখ ডলার বা দুই কোটি টাকা। এ জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) কারিগরি সহায়তা ও অর্থ দিতেও রাজি আছে। তবে এ ব্যাপারে কমিশন নিজেই কিছুটা ধীরে চলছে।
এসইসি বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সফটওয়্যার ব্যবহার করে নজরদারি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে সংস্থাটির কারিগরি সামর্থ্য ও জনবলের রয়েছে চরম ঘাটতি। মাত্র দুজন লোক দিয়ে কমিশন প্রতিদিনের বাজার নজরদারি করে থাকে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরেই শেয়ারবাজারে সুশাসন আনতে নজরদারি ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার কথা বলে আসছেন। এডিবির পক্ষ থেকেও দীর্ঘদিন ধরে কমিশনকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি তাদের এক প্রতিবেদনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘প্রতিদিনের শেয়ারবাজারের লেনদেনকে নজরদারির জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা স্টক এক্সচেঞ্জ—কারোরই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই।’
এদিকে নজরদারি-ব্যবস্থার দুর্বলতার বিষয়টি উল্লেখ করে কয়েকবার সরকারের শীর্ষ মহলকে অবহিত করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তারা মন্তব্য করে, শেয়ার কেনাবেচার পদ্ধতি কম্পিউটারভিত্তিক হয়েছে। কিন্তু এ জন্য কোনো ডিজিটাল নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়নি। এডিবি ২০০৭ সালে বাজারে নজরদারি ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষণ ও আরও কিছু উন্নয়নের জন্য ৩০ লাখ ডলার বা ২১ কোটি টাকার একটি কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এর বেশির ভাগ অর্থই এখন অব্যবহূত অবস্থায় পড়ে আছে।
এ ব্যাপারে এসইসির বক্তব্য হচ্ছে, এডিবির প্রকল্পটির কাজ চলছে। সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যারটি কেনার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে দর ও গুণগত মান যাচাই করা হচ্ছে।
তবে এ ব্যাপারে ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, ‘এখন আর সময় বিলম্ব না করে সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা আনতে যেসব সংস্কার ও প্রযুক্তিগত উন্নতির কথা ভাবা হচ্ছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা দরকার। না হলে আবারও একটি বড় ধরনের অঘটনের দিকে যেতে পারে দেশের শেয়ারবাজার।’
গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক ১৪৭ পয়েন্ট পড়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৭১০ কোটি টাকার। এদিন ডিএসইতে ২৪৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এর মধ্যে আগের চেয়ে দরপতন ঘটে ১৮১টির, বাড়ে মাত্র ৬৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল ২০০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। মোট লেনদেন হয় ৩০৯ কোটি টাকার। এর মধ্যে আগের চেয়ে দাম বেড়েছে ৫৪টির, কমে ১৪২টির এবং অপরিবর্তিত থাকে মাত্র চারটি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
No comments