গ্রামীণ ব্যাংক বিতর্ক
গ্রামীণ ব্যাংক এবং এর প্রতিষ্ঠাতা শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে সাম্প্রতিককালে যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, তা যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত, তেমনি শিষ্টাচারের সীমাও অতিক্রম করেছে বলে আমাদের ধারণা। যেসব ব্যক্তি তাঁদের কর্ম ও সাধনা দিয়ে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস নিঃসন্দেহে তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সমালোচনা হওয়া উচিত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে। গয়রহ অভিযোগ এনে কোনো সিদ্ধান্তে আসা বা মন্তব্য করা হলে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অবিচারই করা হয়।
সম্প্রতি নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ক্ষুদ্রঋণের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের পর এই বিতর্কের সূচনা হয়েছে। ওই প্রামাণ্যচিত্রের বরাত দিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৯৭ সালে গ্রামীণ ব্যাংককে নোরাডের দেওয়া ১০ কোটি ডলারের তহবিল এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণে স্থানান্তর করেছেন, যা নিয়ে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, বিষয়টি ১৯৯৮ সালেই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে এবং নরওয়ে সরকার তাদের যুক্তি মেনে নিয়েছে।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন, সেটি অনভিপ্রেত। তদন্তের আগেই কাউকে দোষারোপ করা যায় না। এ ব্যাপারে সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রেখেছেন। জাতীয় সংসদের আইন দ্বারা পরিচালিত গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে ক্ষুদ্র গ্রাহক প্রতিনিধিদের পাশাপাশি সরকারেরও তিনজন প্রতিনিধি আছেন। প্রতিষ্ঠানটি যদি এতই অনিয়ম করে থাকে, সরকার আগে তদন্ত করল না কেন? প্রশ্ন হলো, তহবিল স্থানান্তরে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, কিংবা এর মাধ্যমে মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়েছেন কি না? তহবিল স্থানান্তর করে তিনি সুবিধা নিয়েছেন, সেই দাবি কিন্তু নরওয়ের টেলিভিশন বা প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতাও করেননি।
দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণের উপযোগিতা নিয়ে মতভেদ থাকতে পারে এবং আছেও। তবে স্বীকার করতে হবে, প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যাঁরা ঋণ পাওয়ার যোগ্য নন, গ্রামীণ ব্যাংক তাঁদেরই ঋণ দিয়ে থাকে। গ্রাহকদের ৯০ শতাংশ নারী বলে তাঁদের ক্ষমতায়নেও বিরাট ভূমিকা রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দেশে এই মডেলে বহু আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণসেবা দিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ তো বটেই, ইউরোপ-আমেরিকার বহু দেশে গ্রামীণ ব্যাংক মডেল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ ব্যাংকের তহবিল স্থানান্তরসহ সব বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। মুহাম্মদ ইউনূসও প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরাও মনে করি, অভিযোগগুলো নিয়ে তদন্ত হোক এবং তদন্তের মাধ্যমে বিতর্কের অবসান হোক।’ এখন সরকারের দায়িত্ব হবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা। কাজটি অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও করতে পারে। যেই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের জীবনজীবিকা ও দেশের ভাবমূর্তি জড়িত, সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অহেতুক বিতর্ক কাম্য নয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব এই বিতর্কের অবসান হওয়া উচিত।
সম্প্রতি নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ক্ষুদ্রঋণের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের পর এই বিতর্কের সূচনা হয়েছে। ওই প্রামাণ্যচিত্রের বরাত দিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৯৭ সালে গ্রামীণ ব্যাংককে নোরাডের দেওয়া ১০ কোটি ডলারের তহবিল এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণে স্থানান্তর করেছেন, যা নিয়ে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, বিষয়টি ১৯৯৮ সালেই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে এবং নরওয়ে সরকার তাদের যুক্তি মেনে নিয়েছে।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন, সেটি অনভিপ্রেত। তদন্তের আগেই কাউকে দোষারোপ করা যায় না। এ ব্যাপারে সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রেখেছেন। জাতীয় সংসদের আইন দ্বারা পরিচালিত গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে ক্ষুদ্র গ্রাহক প্রতিনিধিদের পাশাপাশি সরকারেরও তিনজন প্রতিনিধি আছেন। প্রতিষ্ঠানটি যদি এতই অনিয়ম করে থাকে, সরকার আগে তদন্ত করল না কেন? প্রশ্ন হলো, তহবিল স্থানান্তরে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, কিংবা এর মাধ্যমে মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়েছেন কি না? তহবিল স্থানান্তর করে তিনি সুবিধা নিয়েছেন, সেই দাবি কিন্তু নরওয়ের টেলিভিশন বা প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতাও করেননি।
দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণের উপযোগিতা নিয়ে মতভেদ থাকতে পারে এবং আছেও। তবে স্বীকার করতে হবে, প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যাঁরা ঋণ পাওয়ার যোগ্য নন, গ্রামীণ ব্যাংক তাঁদেরই ঋণ দিয়ে থাকে। গ্রাহকদের ৯০ শতাংশ নারী বলে তাঁদের ক্ষমতায়নেও বিরাট ভূমিকা রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দেশে এই মডেলে বহু আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণসেবা দিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ তো বটেই, ইউরোপ-আমেরিকার বহু দেশে গ্রামীণ ব্যাংক মডেল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ ব্যাংকের তহবিল স্থানান্তরসহ সব বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। মুহাম্মদ ইউনূসও প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরাও মনে করি, অভিযোগগুলো নিয়ে তদন্ত হোক এবং তদন্তের মাধ্যমে বিতর্কের অবসান হোক।’ এখন সরকারের দায়িত্ব হবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা। কাজটি অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও করতে পারে। যেই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের জীবনজীবিকা ও দেশের ভাবমূর্তি জড়িত, সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অহেতুক বিতর্ক কাম্য নয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব এই বিতর্কের অবসান হওয়া উচিত।
No comments