৭ খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে স্বজনদের মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জের
সিদ্ধিরগঞ্জের বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার রায় দ্রুত
কার্যকরের দাবিতে নিহতদের স্বজনরা মানববন্ধন ও শোক র্যালি করেছে। গতকাল
বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে আদমজী
ইপিজেডের সামনে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে তারা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে
বক্তারা বলেন, আজ চার বছর হলো এ হত্যাকাণ্ডের কিন্তু এখনো এর রায় কার্যকর
হচ্ছে না। এতে নিহতদের আত্মাকষ্ট পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা আপনার কাছে সাত খুনের পরিবার কোনো অর্থ চায়নি, চেয়েছিল বিচার।
আপনি এ সরকারের আমলেই ইতিহাসের জঘন্য বর্বরোচিত নিকৃষ্ট হত্যাকাণ্ডের
আসামিদের রায় দ্রুত কার্যকর করবেন। তারা আরো বলেন, এখনো আমাদের সাত খুনের
পরিবার আতঙ্কের মধ্যে আছি। ফাঁসির আসামি নুর হোসেনের অসংখ্য ক্যাডার
বাহিনীর সদস্য নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জে বিচরণ করছে। তাই প্রধানমন্ত্রী
আপনি সাত খুনের বিচারের দিকে একটু নজর দিন এবং আসামিদের রায় দ্রুত কার্যকর
করার ব্যবস্থা করবেন। অপরদিকে বিকাল সাড়ে ৪টায় ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে
একই দাবিতে গণসংহতি আন্দোলন ও সাত খুনের স্বজনরা আরো একটি মানববন্ধন করেন। এ
সময় উপস্থিত ছিলেন, নিহত নাসিক প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলমের ভাই
শফিকুল ইসলাম, নিহত মনিরুল জামান স্বপনের ভাই মিজানুল রহমান রিপন, নিহত
জাহাঙ্গীরের মা মেহানুর নেছা, স্ত্রী নুপুর আাক্তার, শিশু কন্যা রোজা, নিহত
তাইজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের, গণসংহতি আন্দোলনের অঞ্জন দাস, জাহিদুল
ইসলাম জাহিদসহ এলাকাবাসী। এদিকে নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ে সেজুতী
সরকার জানান, আমাদের সাতটি পরিবারের মধ্যে প্রতিটি পরিবারই বিভিন্নভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত, প্রথমত আমরা স্বজন হারিয়েছি, দ্বিতীয়ত আমরা আর্থিকভাবে
মোটামুটি সবাই ভেঙে পড়েছি। এখন সেটা আমাদের কারও পক্ষেই কাটিয়ে উঠা সম্ভব
হচ্ছে না। আর শুধু আমাদের পরিবারকে উল্লেখ করে বলতে হয়, যেহেতু আমার কোনো
ভাই নেই, আমরা দু-বোন। তাই আমাদের বাবাই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম
ব্যক্তি। আর বাবা মারা যাওয়ার ফলে আমার মা তাই আর্থিক ও মানসিকভাবে
পুরোপুরিই ভেঙে পড়েছেন। কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটে যাবার পর প্রায় সবাই
সেটা ভুলে যায়, শুধু যারা কিছু হারায় তারাই সে ঘটনা মনে রাখেন। খুব দ্রুত
রায় কার্যকর হবে, এমনটাই আশা করেন তিনি। সেজুতী আরো জানান, আমরা
প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। এখন পর্যন্ত আদালতের দেয়া রায়টি
আমরা চাই বহাল থাকুক। আর অন্যদিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের এই ক্ষতিগ্রস্ত
পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন থাকবে।
No comments