ভোটের ছায়া রাজনীতি by সাজেদুল হক
মামলা।
আদালত। সাজা। কারাগার। রাজনীতিবিদদের জন্য নতুন কিছু নয়। এমনও দেখা গেছে
কখনো কখনো কোনো কোনো মামলা রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছে। বদলে
দিয়েছে সকল হিসাব-নিকাশ। এমনটা ঘটেছে বাংলাদেশেও। এখন সময় বদলেছে। বদলেছে
রাজনীতির ধরনও। কিন্তু বদলায়নি সেই চিত্র। রাজনীতিবিদদের আরেক ঘর যেন
আদালত। বিশেষ করে তৃতীয় দুনিয়ায়। গত কিছুদিন ধরে গরম ইস্যু খালেদা জিয়ার
‘সাজা’। নাহ! কোনো আদালত এখনো পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে কোনো
মামলায় রায় ঘোষণা করেনি। তবে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা দু’টি মামলা চূড়ান্ত
পর্যায়ে রয়েছে। যেকোনো দিন নিম্ন আদালতে মামলা দুটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ
হতে পারে।
এ অবস্থায় চলতি রাজনীতিতে বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হচ্ছে মামলা দুটির রায় কী হবে। খালেদা জিয়ার কী সাজা হবে। সাজা হলে তাকে কি কারাগারে যেতে হবে। দণ্ডিত হলে কি তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারাবেন? অথচ সবই নির্ভর করছে ‘যদি’র উপর। তারপরও এইসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। বিশেষ করে উচ্চকিত হচ্ছে রাজনীতিতে। হয়তো অনেকটা কাকতালীয়ভাবেই এক ধরনের ভোটের প্রচারণাও শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন এখনো অনেক বাকি। ২০১৮-এর ডিসেম্বর অথবা ১৯-এর শুরুর দিকে হতে পারে আগামী সংসদ নির্বাচন। তবে রোববার বগুড়ার জনসভায় নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরআগে একাধিকবার তিনি দলটির নেতাদের নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষ করে এমপিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে তিনি ভোটের প্রস্তুতির কথা বলেছেন। অন্যদিকে, রোববারই ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে ভোট নিয়ে কথা বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বলেছেন- চুরি নয়, ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতায় যেতে চায় বিএনপি। আগামী নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীনদের নীল নকশা রয়েছে বলেও দাবি তার। বিএনপি নেত্রী এমনিতেও কথা কম বলেন। ইদানীং তিনি কথা আরো কমিয়ে দিয়েছেন। সরকারে থাকলে এমন কৌশলের প্রশংসা হলেও বিরোধী রাজনীতিতে এ ধরনের কৌশলের সমালোচনাও রয়েছে।
ভোট কবে হবে, ভোটের রাজনীতিতে কারা এগিয়ে সে বিতর্ক আলাদা। আপাত বিতর্ক চলছে খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে। বিশেষ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একটি বক্তব্য বিএনপির কোনো কোনো নেতার মধ্যে উষ্মা তৈরি করেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত মওদুদ আহমদের ভাষ্যে দেখা যায়, তিনি বলেছেন, সাজা হলেও খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। বিএনপির আরো অনেক নেতাও এ নিয়ে কথা বলেছেন। অনেক পর্যবেক্ষকই বুঝতে পারছেন না, বিএনপি নেতারা আগ বাড়িয়ে কেন সাজার কথা বলছেন। তাদের কাছে কি কোনো মেসেজ আছে। অতীতে বিএনপি মান্নান ভূঁইয়ার মতো নেতা দেখেছে। যিনি সংস্কার কবুল করেছিলেন। আবার খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মতো নেতাও দেখেছে বিএনপি। যিনি অনড় ছিলেন শেষ পর্যন্ত। বিএনপি যদি ফের জরুরি জমানার পরিস্থিতিতে পড়ে তবে কারা মান্নান ভূঁইয়া হবেন আর কারা দেলোয়ার হবেন- সে প্রশ্নও রয়েছে। তবে সংকটময় এই মুহূর্তে দলের ভেতরে ঐক্যের রাজনীতিই জোরদার করেছেন খালেদা জিয়া। যার প্রশংসা করেছেন অনেকে। দীর্ঘ ১০ বছর পর তিনি সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত দুই নেতাকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দলে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে অন্য নিষ্ক্রিয় নেতাদেরও রাজনীতিতে সক্রিয় করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির হাইকমান্ডের।
আগামী নির্বাচনে ভোটের চিত্র কেমন হবে- তা নিয়ে নানা আলোচনা। প্রশ্ন রয়েছে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে সুবিধা, না কি অংশ না নিলে সুবিধা। বিএনপি কি অংশ নেবে? বিএনপি নেতারা প্রায়শই বলে থাকেন, ভবিষ্যতে আর খালি মাঠে গোল দিতে দেয়া হবে না। তবে কোন পথে বা কোন উপায়ে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি- এ ব্যাপারে দলটির নীতিনির্ধারকরা নিশ্চিত নন। রাজনীতির চালে প্রতিপক্ষ যখন অনেক ধাপ এগিয়ে থাকে তখন অনেক সময় কোনো পথই পাওয়া যায় না। নির্বাচন প্রস্তুতির রাজনীতিতেও আওয়ামী লীগ কয়েক ধাপ এগিয়ে রয়েছে। বিএনপি থাকলে পরিস্থিতি কেমন হবে আর না থাকলে কেমন হবে দু’টি দিকই বিবেচনায় রয়েছে নীতিনির্ধারকদের। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই আরো একবার কৌশলের রাজনীতিতে বাজিমাত করতে চায়। তাই তো আওয়ামী লীগ নেতাদের বলতে শোনা যায়, আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আসতেই হবে। না হলে তাদের নিবন্ধন বাতিল হবে। আর বিএনপি নেতারা বলছেন নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবেন না। কোনো কোনো নেতা বলছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে গেলে পাঁচ বছর পরে কেন? যে যাই বলুক- দেশে এখন চলছে ভোটের ছায়া রাজনীতি। এ রাজনীতির শেষ হবে ভোটের ময়দানে। আখেরে কারা বাজিমাত করেন দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হবে।
এ অবস্থায় চলতি রাজনীতিতে বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হচ্ছে মামলা দুটির রায় কী হবে। খালেদা জিয়ার কী সাজা হবে। সাজা হলে তাকে কি কারাগারে যেতে হবে। দণ্ডিত হলে কি তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারাবেন? অথচ সবই নির্ভর করছে ‘যদি’র উপর। তারপরও এইসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। বিশেষ করে উচ্চকিত হচ্ছে রাজনীতিতে। হয়তো অনেকটা কাকতালীয়ভাবেই এক ধরনের ভোটের প্রচারণাও শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন এখনো অনেক বাকি। ২০১৮-এর ডিসেম্বর অথবা ১৯-এর শুরুর দিকে হতে পারে আগামী সংসদ নির্বাচন। তবে রোববার বগুড়ার জনসভায় নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরআগে একাধিকবার তিনি দলটির নেতাদের নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষ করে এমপিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে তিনি ভোটের প্রস্তুতির কথা বলেছেন। অন্যদিকে, রোববারই ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে ভোট নিয়ে কথা বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বলেছেন- চুরি নয়, ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতায় যেতে চায় বিএনপি। আগামী নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীনদের নীল নকশা রয়েছে বলেও দাবি তার। বিএনপি নেত্রী এমনিতেও কথা কম বলেন। ইদানীং তিনি কথা আরো কমিয়ে দিয়েছেন। সরকারে থাকলে এমন কৌশলের প্রশংসা হলেও বিরোধী রাজনীতিতে এ ধরনের কৌশলের সমালোচনাও রয়েছে।
ভোট কবে হবে, ভোটের রাজনীতিতে কারা এগিয়ে সে বিতর্ক আলাদা। আপাত বিতর্ক চলছে খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে। বিশেষ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একটি বক্তব্য বিএনপির কোনো কোনো নেতার মধ্যে উষ্মা তৈরি করেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত মওদুদ আহমদের ভাষ্যে দেখা যায়, তিনি বলেছেন, সাজা হলেও খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। বিএনপির আরো অনেক নেতাও এ নিয়ে কথা বলেছেন। অনেক পর্যবেক্ষকই বুঝতে পারছেন না, বিএনপি নেতারা আগ বাড়িয়ে কেন সাজার কথা বলছেন। তাদের কাছে কি কোনো মেসেজ আছে। অতীতে বিএনপি মান্নান ভূঁইয়ার মতো নেতা দেখেছে। যিনি সংস্কার কবুল করেছিলেন। আবার খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মতো নেতাও দেখেছে বিএনপি। যিনি অনড় ছিলেন শেষ পর্যন্ত। বিএনপি যদি ফের জরুরি জমানার পরিস্থিতিতে পড়ে তবে কারা মান্নান ভূঁইয়া হবেন আর কারা দেলোয়ার হবেন- সে প্রশ্নও রয়েছে। তবে সংকটময় এই মুহূর্তে দলের ভেতরে ঐক্যের রাজনীতিই জোরদার করেছেন খালেদা জিয়া। যার প্রশংসা করেছেন অনেকে। দীর্ঘ ১০ বছর পর তিনি সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত দুই নেতাকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দলে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে অন্য নিষ্ক্রিয় নেতাদেরও রাজনীতিতে সক্রিয় করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির হাইকমান্ডের।
আগামী নির্বাচনে ভোটের চিত্র কেমন হবে- তা নিয়ে নানা আলোচনা। প্রশ্ন রয়েছে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে সুবিধা, না কি অংশ না নিলে সুবিধা। বিএনপি কি অংশ নেবে? বিএনপি নেতারা প্রায়শই বলে থাকেন, ভবিষ্যতে আর খালি মাঠে গোল দিতে দেয়া হবে না। তবে কোন পথে বা কোন উপায়ে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি- এ ব্যাপারে দলটির নীতিনির্ধারকরা নিশ্চিত নন। রাজনীতির চালে প্রতিপক্ষ যখন অনেক ধাপ এগিয়ে থাকে তখন অনেক সময় কোনো পথই পাওয়া যায় না। নির্বাচন প্রস্তুতির রাজনীতিতেও আওয়ামী লীগ কয়েক ধাপ এগিয়ে রয়েছে। বিএনপি থাকলে পরিস্থিতি কেমন হবে আর না থাকলে কেমন হবে দু’টি দিকই বিবেচনায় রয়েছে নীতিনির্ধারকদের। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই আরো একবার কৌশলের রাজনীতিতে বাজিমাত করতে চায়। তাই তো আওয়ামী লীগ নেতাদের বলতে শোনা যায়, আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আসতেই হবে। না হলে তাদের নিবন্ধন বাতিল হবে। আর বিএনপি নেতারা বলছেন নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবেন না। কোনো কোনো নেতা বলছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে গেলে পাঁচ বছর পরে কেন? যে যাই বলুক- দেশে এখন চলছে ভোটের ছায়া রাজনীতি। এ রাজনীতির শেষ হবে ভোটের ময়দানে। আখেরে কারা বাজিমাত করেন দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হবে।
No comments