শৌচাগারের দরজা নেই, দর্শনার্থীদের বিড়ম্বনা
তাজহাট জমিদারবাড়িতে অবস্থিত জাদুঘরের শৌচাগারগুলোর বেহাল দশা। এগুলোর দরজা নেই। ফলে দর্শনার্থীদের চরম বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিনেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। রংপুর শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত তাজহাট জমিদারবাড়ি জাদুঘর। প্রাসাদটির দৈর্ঘ্য ৭৬ দশমিক ২০ মিটার। সাদা মার্বেল পাথরে তৈরি ১৫ দশমিক ২৪ মিটার প্রশস্ত কেন্দ্রীয় সিঁড়িটি সরাসরি দোতলায় চলে গেছে। দোতলার ১১টি কক্ষ জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর নিচের ১১টি কক্ষ অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ করেন মহারাজা কুমার গোপাল লাল রায়। প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শন তাজহাট জমিদারবাড়িকে ২০০৫ সালে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। এটি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন। এখানে পুরোনো পাণ্ডুলিপি, উল্কাপিণ্ড, মৃৎশিল্প, কামান, বিষ্ণুমূর্তি, লোহা কাঠ, পাথরের তৈরি নানা আমলের গয়নাসহ আরও অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। জাদুঘর সূত্র জানায়, প্রতিদিন এখানে গড়ে সাত-আট শ দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। তবে বন্ধের দিন শুক্র ও শনিবার এক হাজারের অধিক লোকের সমাগম হয়। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য ২০ টাকা।
তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ৫ টাকা। আর সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশের পর্যটকদের ১০০ টাকা এবং এর বাইরের দেশগুলোর পর্যটকদের জন্য প্রবেশমূল্য ২০০ টাকা। একই টিকিটে দর্শনার্থীরা জমিদারবাড়ির স্থাপত্য নিদর্শন ছাড়াও জাদুঘর দর্শন করতে পারেন। কিন্তু দর্শনার্থীদের প্রাকৃতিক কাজ সারতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এখানে ১০টি শৌচাগার থাকলেও সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ১০টি শৌচাগারের মধ্যে আটটিরই দরজা নেই। দুটির দরজা থাকলেও তা তালাবদ্ধ। অধিকাংশ শৌচাগার ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা এস এস মডেল হাইস্কুলের ৫০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষাসফরে এসেছিল। শৌচাগারের বেহাল দশা দেখে তারা ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে। তাদের অনেককে বলতে শোনা যায়, এত সুন্দর একটি ঐতিহাসিক স্থান দর্শনে এসে বাথরুমের অভাবে অনেক কষ্ট ও দুর্ভোগ পেতে হচ্ছে। কুড়িগ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শৌচাগারগুলোর বেহাল দশা হয়েছে। এগুলো অবিলম্বে সংস্কার না করলে স্থানটির ঐতিহ্য আর ধরে রাখা যাবে না। জানতে চাইলে তাজহাট জমিদারবাড়ি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান আবু সাইদ ইনাম তানভিরুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শৌচাগারগুলো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, ঠিক হয়ে যাবে।’
No comments