ড্রোন শিকারি ইগল
দূরনিয়ন্ত্রিত উড়ন্ত যান বা ড্রোনের ব্যবহার দিনে দিনে বাড়ছে। গুপ্তচরবৃত্তি কিংবা নজরদারির জন্যও এগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে। শত্রুরা সেগুলো ফরাসি ভূখণ্ডে আক্রমণ বা নজরদারির কাজে পাঠাতে পারে—এ রকম প্রচেষ্টা ঠেকাতে ফ্রান্সের বিমানবাহিনী তৎপর হয়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় মঁ-দো-মার্সায় তারা দুই জোড়া সোনালি ইগলকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পাখিগুলো উড়ন্ত ড্রোনকে বাধা দিতে পারবে। ইগলগুলো ইতিমধ্যে সেই সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। বোর্দো শহরের দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে একটি রানওয়ের কাছে ড্রোন উড়ছিল। আচমকা সেখানে জ্বলজ্বলে চোখের এক শিকারি পাখির আবির্ভাব। ২০০ মিটার দূরের নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে উড়ে এসে ড্রোনটিকে ছোঁ মেরে নিল। প্রায় ২০ সেকেন্ডে সেটিকে মাটিতে নামিয়ে সুবিশাল বাদামি ডানায় ঢেকে দিল। ড্রোনটা ততক্ষণে বিধ্বস্ত। বিমানবাহিনীর অভিযানও সফল। ফ্রান্স মোট চারটি বিমানঘাঁটিতে ইগল প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। এগুলোর মধ্যে মঁ-দো-মার্তাও একটি।
রানওয়ে থেকে ছোটখাটো পাখি তাড়ানোর কাজে ইগল বা অন্যান্য শিকারি পাখির ব্যবহার আগে থেকেই চালু আছে। কর্তৃপক্ষ এভাবে উড়োজাহাজ ওড়ার সময়কার দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমায়। কারণ, ছোট পাখির কারণে বিমান দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। তবে ফ্রান্স ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে কয়েক দফা জিহাদি হামলার শিকার হওয়ার পর অনেক বেশি সতর্ক হয়েছে। তাই ইগলগুলো ড্রোন ঠেকানোর কাজে অংশ নিয়ে রীতিমতো জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে। স্থানীয় আকাশ নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান কমান্ডার ক্রিস্তফ বলেন, ইগল প্রশিক্ষণের ফলাফল উৎসাহব্যঞ্জক। ওরা বেশ ভালো করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কাজে নামার আগে পাখিগুলো তিন-চার মাসের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ড্রোন ঠেকাতে ইগল ব্যবহারের ধারণাটি নেদারল্যান্ডসের পুলিশ প্রথম প্রকাশ করে। তারা ২০১৫ সালের শেষদিকে এই কাজও শুরু করে। তবে একই কাজে সোনালি ইগলের ব্যবহার ফ্রান্সই প্রথম শুরু করেছে। সাত ফুট ছড়ানো ডানার এই পাখির দৃষ্টিশক্তি অসাধারণ। এরা দুই কিলোমিটার দূর থেকেই লক্ষ্যবস্তুর ওপর নজর রাখতে পারে।
No comments