ব্রাসেলস নয়, প্যারিসেই ফের আঘাত হানার ছক ছিল?
ব্রাসেলস নয়, আবার প্যারিসেই হামলার ছক ছিল সন্ত্রাসীদের। কিন্তু প্যারিস হামলায় জড়িত বলে অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন সালাহ আবদেসালাম ধরা পড়ে যাওয়ার পর দ্রুত সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে তারা। এরপর প্যারিসের বদলে পাশের দেশ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে হামলা চালানো হয়। ব্রাসেলস হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার মোহামেদ আবরিনির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে গতকাল রোববার বেলজিয়ামের সরকারি কৌঁসুলি এমনটাই জানিয়েছেন। কৌঁসুলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, আবরিনি স্বীকার করেছেন সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়া তিন সন্দেহভাজনের মধ্যে যাঁকে জ্যাকেট ও মাথায় হ্যাট পরা দেখা গেছে তিনিই সেই ব্যক্তি। সঙ্গে বোমা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি সেটির বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে পালিয়ে যান। পাঁচ সপ্তাহ পালিয়ে থাকার পর শুক্রবার তিনি ধরা পড়েন। কৌঁসুলি জানিয়েছেন, ব্রাসেলসের জাভেনতেম বিমানবন্দরে হামলার জন্য আবরিনিকে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত বছরের ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে স্টেডিয়াম, থিয়েটার হল ও পানশালাসহ কয়েকটি জায়গায় বোমা ও বন্দুক হামলায় ১৩০ জন নিহত হয়। হামলাকারীদের বেশির ভাগই নিজেদের বিস্ফোরণ ঘটানো বোমা অথবা পুলিশের গুলিতে নিহত হন। ওই হামলার অন্যতম সন্দেহভাজন সালাহ আবদেসালাম কয়েক মাস পরে ব্রাসেলস থেকে গ্রেপ্তার হন। তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক দিনের মাথায়ই গত ২২ মার্চ জাভেনতেম বিমানবন্দর ও একটি পাতাল রেলস্টেশনে হামলা করা হয়। এতে ৩২ জন নিহত হয়। প্যারিস ও ব্রাসেলসের হামলার দায় স্বীকার করে ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গতকাল বেলজিয়ামের ফেডারেল কৌঁসুলি বিবৃতিতে বলেন, আবরিনির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, সন্ত্রাসমূলক হত্যাকাণ্ড ঘটানো এবং আরও হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। কৌঁসুলি বলেন, প্যারিস হামলার তদন্ত দ্রুত এগোতে দেখে তাড়াহুড়ো করেই আবরিনি ও তাঁর সঙ্গীরা ব্রাসেলসে হামলা চালান। আবরিনি ছাড়াও আরও তিনজনকে ব্রাসেলস হামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ওসামা কে, হার্ভ বি এম ও বিলাল ই এম। বিবৃতিতে বলা হয়, আবরিনি বলেছেন, হামলার পর তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গায়ের জ্যাকেটটি একটি আবর্জনার গর্তে ফেলে দেন এবং পরে তাঁর সেই হ্যাটটি বিক্রি করে দেন। পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে ফ্রান্সের টেলিভিশন চ্যানেল এলসিআই জানায়, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় তোলা সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুখের ছবি নয়টি দিক থেকে পুলিশ পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে সাতটি পয়েন্টেই ছবিটি আবরিনির চেহারার সঙ্গে মিলে গেছে।
No comments