সবাই খুশি, আবাহনী একটু বেশি
প্রথম ১০ রাউন্ডে ডাকা হলো খেলোয়াড়দের। ‘এ’, ‘বি’ প্লাস, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’, ‘ই’ ও ‘এফ’ শ্রেণি থেকে ১০ দফায় মোট ১১৫ জন খেলোয়াড় ডাক পেলেন। ১২ ক্লাবের ১০টিই পরে ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর রাউন্ড নিয়ে আগ্রহই দেখাল না। অবশেষে এল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ‘প্লেয়ার ড্রাফট’-এর মূল আকর্ষণ আইকন ও ‘এ’ প্লাস খেলোয়াড় ডাকার পর্ব।কাল লা মেরিডিয়ানের স্কাই বলরুমে ‘প্লেয়ার ড্রাফটের’ এই পর্ব শুরু হতেই ক্লাব কর্মকর্তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল উত্তেজনা। এই পর্বেই নিশ্চিত হয়েছে দেশের শীর্ষ তারকা ক্রিকেটারদের ক্লাব। লটারিতে প্রথম নাম ওঠে ধানমন্ডি শেখ জামালের। তারা ডেকে নেয় মাহমুদউল্লাহকে। একে একে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, নাসির হোসেন, মুমিনুল হক, এনামুল হককে বেছে নিয়েছে অন্য ক্লাবগুলো। কিন্তু তখনো ‘অবিক্রীত’ থেকে যান বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা! এই রাউন্ডের ১১ নম্বর ডাকে মাশরাফিকে নেয় কলাবাগান ক্রীড়াচক্র। সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ মিঠুন অবশ্য প্রথম দফায় অবিক্রীত থেকে গেছেন। সাকিব-মুস্তাফিজকে না নেওয়ার কারণ অবশ্যই আইপিএল। ভারতের ঘরোয়া এই টি-টোয়েন্টি লিগে তাঁরা ব্যস্ত থাকবেন বলে ২২ এপ্রিল থেকে শুরু প্রিমিয়ার লিগে তাঁদের খেলার সম্ভাবনা কম। দুই তারকাকে তাই শুরুতেই নিতে চায়নি ক্লাবগুলো। পরে সাকিবকে নিয়েছে আবাহনী, মুস্তাফিজকে মোহামেডান। আইপিএল শেষ হবে ২৯ মে। দল শেষ চারে না উঠলে সাকিব-মুস্তাফিজের টুর্নামেন্ট শেষ হবে ২২ মে। হয়তো ‘সুপার লিগে’ তাঁরা খেলতে পারবেন বলে আশা দুই ক্লাবের। তবে আইকন খেলোয়াড় দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বেশি প্রভাবিত করেছে ক্লাবগুলোকে। এ কারণে প্রথম ডাকের সুযোগ পেয়েই বাংলাদেশ দলের ‘ফিনিশার’ হয়ে ওঠা মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে নিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। দ্বিতীয় ডাকের সুযোগ পেয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ধারাবাহিক ভালো করা সাব্বিরকে নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ‘প্লেয়ার ড্রাফট’ পদ্ধতিতে দল গোছানোর প্রতিযোগিতায় অবশ্য সবার মুখেই হাসি ঝুলেছে। যেহেতু ইচ্ছেমতো খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ ছিল না, তারকা ক্রিকেটাররা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়লেন বিভিন্ন ক্লাবে। আবদুর রাজ্জাক, মেহরাব হোসেন জুনিয়র, রবিউল ইসলাম, সাদমান ইসলামদের নিয়ে গড়া কলাবাগান ক্রীড়াচক্রকে শুরুতে সাদামাটা দেখালেও আইকন মাশরাফিকে পেয়ে ভীষণ খুশি ক্লাবের ক্রিকেট সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, ‘মাশরাফিকে পেয়ে আমাদের দলটা অন্য রকম হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সে-ই বাংলাদেশ দলের সেরা অধিনায়ক। তার সফল নেতৃত্বে আমাদের দল ভালো করবে আশা করি। চ্যাম্পিয়ন হতে পারব কি না বলতে পারছি না। শিরোপা জিততে আসলে ভাগ্য লাগে। তবে আশা করি সুপার লিগে আমরা ভালোভাবেই উঠতে পারব।’ খেলোয়াড় তালিকা দেখলে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখতে হবে আবাহনীকে। আইকন তামিম-সাকিব তো আছেনই, দলকে সমৃদ্ধ করছেন তাসকিন আহমেদ, সাকলাইন সজীব, লিটন দাস, জুবায়ের হোসেন, তাপস বৈশ্যের মতো ক্রিকেটাররাও। আছেন অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক নাজমুল হোসেন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ডাবল সেঞ্চুরি করা মোসাদ্দেক হোসেন। দল গুছিয়ে আবাহনীর কর্মকর্তা জালাল ইউনুস বেশ সন্তুষ্ট, ‘অনেক দিন ধরে আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে না। এবার চেষ্টা ছিল ভালো দল করার। প্লেয়ার্স বাই চয়েসে সুযোগ ছিল ভালো খেলোয়াড় ডাকার। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা ভালো দল করতে পেরেছি।’ আবাহনীর সঙ্গে সাকিব-তামিমের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়। তবে অতীতকে বর্তমানের সঙ্গে মেলাতে চান না জালাল ইউনুস। তিনি মনে করেন, দুই তারকা আবাহনীতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন। ১৮৮ খেলোয়াড়ের মধ্যে ১৩২ জন কাল ‘প্লেয়ার ড্রাফট’ পদ্ধতিতে দল পেয়েছেন। আর ১১টি ক্লাব পুরোনো ২ জন করে ক্রিকেটার রেখে দিয়েছে। অবিক্রীত থেকে গেছেন ৩৪ জন। প্রতিটি ক্লাবে একজন বিদেশি খেলোয়াড় নেওয়ারও সুযোগ থাকছে।
No comments