‘জামিনের জন্য আমার স্ত্রী মন্ত্রীকে ফোন করেনি’ -জামিনে মুক্তির পর সাংবাদিক প্রবীর সিকদার
জামিনে
মুক্তি পাওয়া সাংবাদিক প্রবীর সিকদার বলেছেন, তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা
তিনি জানেন না। তবে এ নিয়ে তাঁর স্ত্রী অনিতা সিকদার স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে ফোন করেননি। বরং মন্ত্রী উল্টো তাঁকে ফোন করে
জামিনের ব্যবস্থা হবে বলে জানিয়েছেন। আর জামিন পেয়েও তিনি নিজেকে নিরাপদ
ভাবছেন না। কারণ, এখনো মামলাটি রয়ে গেছে। গতকাল বুধবার জামিন পাওয়ার পর
টেলিফোনে প্রবীর সিকদার প্রথম আলোর কাছে দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
কীভাবে জামিন হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক কিছু কম বুঝি। হুটহাট
করে যা বুঝি তা করে ফেলি। বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে করে ফেলি। আমার
বিরুদ্ধে করা মামলাটা কোন ধারায়, তা আমি জানি না। আমার কোনো আগ্রহও নেই।
আজই জামিনের প্রক্রিয়ার পর শুনেছি যে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে করা এই
মামলাটি জামিন অযোগ্য। কিন্তু কীভাবে জামিনযোগ্য হলো—এ প্রশ্নের উত্তর
আমার কাছে নেই।
‘কালকে আমাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিল। জামিন নিয়ে আমার স্ত্রী কখনো মন্ত্রীকে ফোন করেনি। তবে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। সকালে আমি যখন কোর্ট দারোগার কাছে বসা, তখন এক পুলিশ কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে যান। ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে ডেকে নিয়ে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলেন, বৌদি একটু কথা বলেন। অপর প্রান্ত থেকে এক ভদ্রলোক পরিচয় না দিয়ে বলেন, বউমা কেমন আছেন। প্রবীর কেমন আছে। ফোনে তাকে বলা হয়, আমি জামিনের ব্যবস্থা করছি, জামিন হয়ে যাবে, চিন্তা কোরো না। এ কথার প্রেক্ষিতে আমার স্ত্রী তাঁর প্রতি ধন্যবাদ জানায়। তখন পর্যন্ত আমার স্ত্রী নিশ্চিত না যে সে কার সঙ্গে কথা বলেছে। তবে জামিনের কথা বলায় ধারণা করেছে যে প্রভাবশালী কেউ কথা বলেছেন।’
প্রবীর সিকদার বলেন, ‘মঙ্গলবার রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর পুলিশ আমাকে আর থানায় নিয়ে যায়নি। কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সকাল সাতটার দিকে আমি যখন দাঁত মাজছিলাম, তখন আমাকে জানানো হলো, থানা থেকে পুলিশ এসেছে নিয়ে যেতে। আমি বললাম, গোসল না করে যাওয়া সম্ভব নয়। আমি ভেবেছিলাম রিমান্ডে থাকব তিন দিন। এক শার্ট-প্যান্ট পড়ে থাকব। ওখানে গোসল করা হবে না। আমি গোসল শুরু করলে অন্তত ১০ বার আমাকে জেলগেটে যাওয়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়। আমি সেভ ও নাশতা করতেও পারিনি। জেলগেটে এসে দেখতে পাই আমার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনির হোসেন বসে আছেন। মনির আমাকে দেখে বলেন, দাদা কী বুঝতেছেন? আমি বলি, আপনি যদি আমাকে খুন করতে চান, তবে খুন করে ফেলুন, কিন্তু টর্চার করবেন না। এসআই মনির আমাকে বলেন, আপনার জামিনের ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে। আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করিনি। কারণ পুলিশ গ্রেপ্তার হওয়ার আগে কেমন আচরণ করে আর গ্রেপ্তার হওয়ার পরে কেমন আচরণ করে, তা তো আমি এই কদিনে টের পেয়েছি।’
জামিনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রবীর সিকদার বলেন, ‘আজ আমাকে হাতকড়া পরায়নি। অথচ গত কয়েক দিন আমার দুই হাতেই হাতকড়া পরানো হয়েছে। আমি বললাম, আপনি হাতকড়া পরান। কিন্তু তিনি বলেন, মনে করেন আপনার জামিন হয়ে গেছে। তারপরও আমাকে হাতকড়া না পরিয়ে জেলগেট থেকে গাড়িতে ওঠাল এবং ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় ওসির রুমে নিয়ে যায়। আমাকে মনির বলে, দাদা এখন কী করবেন? আমি বলি, আপনিই জানেন আপনি কী করবেন। এসআই মনির বলেন, আমি তো ইন্টারোগেশন শেষ করে ফেলেছি। আমি বলি, কী রকম? তিনি বলেন, আমার কাজ শেষ।
‘এরপর আমাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁরাই বাদী ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের খবর দিয়ে নিয়ে আসেন। আমার জামিনের আবেদন দেওয়া হলো। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, দাদা মনে কিছু কইরেন না, সব ব্যবস্থা হচ্ছে। আপনার জামিন হবে। আমরা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে যাচ্ছি। পরে আমি যখন আদালতে যাই, দেখলাম তাঁরা ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষ থেকে বের হয়ে গেলেন। তারপর আমার আইনজীবী জামিনের আবেদন করলেন। কোর্ট দারোগা কোনো আপত্তি করলেন না এবং আমার জামিন হয়ে গেল।’
নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রবীর সিকদার বলেন, ‘আমার নিরাপত্তা কে দেবে? এবার তো আমাকে বাঁচিয়েছে জনগণ। পাশাপাশি সরকারের শীর্ষমহলের নিশ্চয়ই হস্তক্ষেপ আছে। তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। তবে গণমানুষের কাছে আমার ঋণ থাকবে। তারা যদি মাঠে না নামত, তাহলে বিষয়টা আরও দীর্ঘায়িত বা আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারত। তারপরেও মামলাটা কিন্তু রয়েই গেল। এর জন্য আমার মনে হচ্ছে তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য একটা সাময়িক উপশম করা হয়েছে। কিন্তু মামলা থেকে যাওয়ায় পরে ঝামেলা করা হতে পারে। আমার বিপদ কেটে গেছে, এটা আমি মনে করি না। দেশে-বিদেশে যেভাবে প্রতিক্রিয়া হয়েছে, গণমাধ্যম সোচ্চার ছিল। ফলে সাময়িক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য হয়তো এটা করা হয়েছে। কিন্তু মামলাটি পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমি নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না।’
‘কালকে আমাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিল। জামিন নিয়ে আমার স্ত্রী কখনো মন্ত্রীকে ফোন করেনি। তবে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। সকালে আমি যখন কোর্ট দারোগার কাছে বসা, তখন এক পুলিশ কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে যান। ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে ডেকে নিয়ে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলেন, বৌদি একটু কথা বলেন। অপর প্রান্ত থেকে এক ভদ্রলোক পরিচয় না দিয়ে বলেন, বউমা কেমন আছেন। প্রবীর কেমন আছে। ফোনে তাকে বলা হয়, আমি জামিনের ব্যবস্থা করছি, জামিন হয়ে যাবে, চিন্তা কোরো না। এ কথার প্রেক্ষিতে আমার স্ত্রী তাঁর প্রতি ধন্যবাদ জানায়। তখন পর্যন্ত আমার স্ত্রী নিশ্চিত না যে সে কার সঙ্গে কথা বলেছে। তবে জামিনের কথা বলায় ধারণা করেছে যে প্রভাবশালী কেউ কথা বলেছেন।’
প্রবীর সিকদার বলেন, ‘মঙ্গলবার রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর পুলিশ আমাকে আর থানায় নিয়ে যায়নি। কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সকাল সাতটার দিকে আমি যখন দাঁত মাজছিলাম, তখন আমাকে জানানো হলো, থানা থেকে পুলিশ এসেছে নিয়ে যেতে। আমি বললাম, গোসল না করে যাওয়া সম্ভব নয়। আমি ভেবেছিলাম রিমান্ডে থাকব তিন দিন। এক শার্ট-প্যান্ট পড়ে থাকব। ওখানে গোসল করা হবে না। আমি গোসল শুরু করলে অন্তত ১০ বার আমাকে জেলগেটে যাওয়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়। আমি সেভ ও নাশতা করতেও পারিনি। জেলগেটে এসে দেখতে পাই আমার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনির হোসেন বসে আছেন। মনির আমাকে দেখে বলেন, দাদা কী বুঝতেছেন? আমি বলি, আপনি যদি আমাকে খুন করতে চান, তবে খুন করে ফেলুন, কিন্তু টর্চার করবেন না। এসআই মনির আমাকে বলেন, আপনার জামিনের ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে। আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করিনি। কারণ পুলিশ গ্রেপ্তার হওয়ার আগে কেমন আচরণ করে আর গ্রেপ্তার হওয়ার পরে কেমন আচরণ করে, তা তো আমি এই কদিনে টের পেয়েছি।’
জামিনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রবীর সিকদার বলেন, ‘আজ আমাকে হাতকড়া পরায়নি। অথচ গত কয়েক দিন আমার দুই হাতেই হাতকড়া পরানো হয়েছে। আমি বললাম, আপনি হাতকড়া পরান। কিন্তু তিনি বলেন, মনে করেন আপনার জামিন হয়ে গেছে। তারপরও আমাকে হাতকড়া না পরিয়ে জেলগেট থেকে গাড়িতে ওঠাল এবং ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় ওসির রুমে নিয়ে যায়। আমাকে মনির বলে, দাদা এখন কী করবেন? আমি বলি, আপনিই জানেন আপনি কী করবেন। এসআই মনির বলেন, আমি তো ইন্টারোগেশন শেষ করে ফেলেছি। আমি বলি, কী রকম? তিনি বলেন, আমার কাজ শেষ।
‘এরপর আমাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁরাই বাদী ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের খবর দিয়ে নিয়ে আসেন। আমার জামিনের আবেদন দেওয়া হলো। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, দাদা মনে কিছু কইরেন না, সব ব্যবস্থা হচ্ছে। আপনার জামিন হবে। আমরা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে যাচ্ছি। পরে আমি যখন আদালতে যাই, দেখলাম তাঁরা ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষ থেকে বের হয়ে গেলেন। তারপর আমার আইনজীবী জামিনের আবেদন করলেন। কোর্ট দারোগা কোনো আপত্তি করলেন না এবং আমার জামিন হয়ে গেল।’
নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রবীর সিকদার বলেন, ‘আমার নিরাপত্তা কে দেবে? এবার তো আমাকে বাঁচিয়েছে জনগণ। পাশাপাশি সরকারের শীর্ষমহলের নিশ্চয়ই হস্তক্ষেপ আছে। তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। তবে গণমানুষের কাছে আমার ঋণ থাকবে। তারা যদি মাঠে না নামত, তাহলে বিষয়টা আরও দীর্ঘায়িত বা আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারত। তারপরেও মামলাটা কিন্তু রয়েই গেল। এর জন্য আমার মনে হচ্ছে তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য একটা সাময়িক উপশম করা হয়েছে। কিন্তু মামলা থেকে যাওয়ায় পরে ঝামেলা করা হতে পারে। আমার বিপদ কেটে গেছে, এটা আমি মনে করি না। দেশে-বিদেশে যেভাবে প্রতিক্রিয়া হয়েছে, গণমাধ্যম সোচ্চার ছিল। ফলে সাময়িক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য হয়তো এটা করা হয়েছে। কিন্তু মামলাটি পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমি নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না।’
No comments