ডিএনডি খাল দখলদারদের তালিকা হয়, উচ্ছেদ হয় না by শরীফ সুমন
ডিএনডি
(ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) বাঁধ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে দেড় বছর আগে অবৈধ
দখলদারের তালিকা তৈরি করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ
না হলেও প্রতি বছরই বাড়ছে তাদের সংখ্যা। অব্যাহত দখলদারিত্বে অনেক
এলাকাতেই এখন ডিএনডি সেচ খাল সরু নালায় পরিণত হয়েছে। এক সময় কৃষকদের
আশীর্বাদ সেচ খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন ডিএনডিবাসীর দুঃখের কারণ
হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ডিএনডি বাঁধ এলাকার ফতুল্লার ওয়াপদার পুল এলাকায় ডিএনডি খাল দখল করে দোকান নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। একইভাবে সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন খালটিও দখল করে অসংখ্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকায় রূপসী গ্রুপের গার্মেন্ট সংলগ্ন এলাকায় ডিএনডি খাল ভরাট করে সরু নালায় পরিণত করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী পূর্বপাড়ায় মিজমিজি টিসি রোড সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয় ইসহাক মিয়া নিষ্কাশন খাল (কংস নদী) ভরাট করে তার বাড়ির জন্য রাস্তা নির্মাণ করেছেন। একই অবস্থা ডিএনডির বিভিন্ন এলাকার খালগুলোর।
জানা গেছে, ১৯৬২-৬৮ সালে ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি নিয়ে তৈরি করা হয় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধ। ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডিএনডি বাঁধের ভেতর ৫৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০ লাখ লোকের বাস। ইরি ধান চাষাবাদের জন্য ১৯৬৫ সালে ডিএনডি বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। তখন ডিএনডির ভেতরে সেচ প্রকল্প ছিল ৫ হাজার ৬৪ হেক্টর। সূত্র জানায়, ডিএনডি বাঁধের ভেতর কংস নদী এবং নলখালী খালের মতো ৯টি খাল ছিল; যা ডিএনডির ইরিগেশন প্রজেক্টে সেচ খাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এসব খালের ছিল আরও ৯টি শাখা খাল। এছাড়াও ছিল ২১০টি আউটলেট, ১০টি নিষ্কাশন খাল। এসব খালের সর্বমোট দৈর্ঘ্য ছিল ১৮৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে এক কিলোমিটার দীর্ঘ ইনটেক খাল, ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ মেইন ক্যানেল টার্ন আউট খাল ছিল। এর মধ্যে আবার চ্যানেল-১ খালের দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার, চ্যানেল-২ এর দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮০ কিলোমিটার, পাগলা খাল ৩ কিলোমিটার, জালকুড়ি খাল ২ দশমিক ১০ কিলোমিটার, শ্যামপুর খাল ২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার, ফতুল্লা খাল ১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার ও সেকেন্ডারি চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ছিল ১০ কিলোমিটার। এসব খালের অধিকাংশই ভরাট হয়ে গেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আশির দশকের পর থেকে লোকজন ডিএনডি বাঁধের ভেতর জমি কিনে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, ইটের ভাটা, ছোট-বড় শিল্প-কারখানা নির্মাণ করেন। কিন্তু জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় খাল দখল ও ভরাট করে দোকানপাট, ঘরবাড়ি, কলকারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনা অল্প বৃষ্টিতেই হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। এ নিয়ে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন। দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞার কাছে স্মারকলিপি দেন ফতুল্লার কায়েমপুরসহ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্প্রতি প্রায় ১০০ কিলোমিটার নিষ্কাশন খালের মধ্যে ৩৯ কিলোমিটার জায়গার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। তবে এই অর্থ শুধু কচুরিপানা পরিষ্কারেই শেষ হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ উদ দৌলা আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, দেড় বছর আগে খাল ও অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সম্প্রতি দখলদারের সংখ্যা আরও বেড়েছে। আবারও অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দুই মাসের মধ্যে নতুন তালিকা তৈরি করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, অবৈধ দখলের বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে গেলে যে লজিস্টিক সাপোর্ট (অর্থ) প্রয়োজন, সেটা আমরা পাই না। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার চৌধুরী জানান, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের লক্ষ্যে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ডিএনডি বাঁধ এলাকার ফতুল্লার ওয়াপদার পুল এলাকায় ডিএনডি খাল দখল করে দোকান নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। একইভাবে সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন খালটিও দখল করে অসংখ্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকায় রূপসী গ্রুপের গার্মেন্ট সংলগ্ন এলাকায় ডিএনডি খাল ভরাট করে সরু নালায় পরিণত করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী পূর্বপাড়ায় মিজমিজি টিসি রোড সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয় ইসহাক মিয়া নিষ্কাশন খাল (কংস নদী) ভরাট করে তার বাড়ির জন্য রাস্তা নির্মাণ করেছেন। একই অবস্থা ডিএনডির বিভিন্ন এলাকার খালগুলোর।
জানা গেছে, ১৯৬২-৬৮ সালে ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি নিয়ে তৈরি করা হয় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধ। ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডিএনডি বাঁধের ভেতর ৫৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০ লাখ লোকের বাস। ইরি ধান চাষাবাদের জন্য ১৯৬৫ সালে ডিএনডি বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। তখন ডিএনডির ভেতরে সেচ প্রকল্প ছিল ৫ হাজার ৬৪ হেক্টর। সূত্র জানায়, ডিএনডি বাঁধের ভেতর কংস নদী এবং নলখালী খালের মতো ৯টি খাল ছিল; যা ডিএনডির ইরিগেশন প্রজেক্টে সেচ খাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এসব খালের ছিল আরও ৯টি শাখা খাল। এছাড়াও ছিল ২১০টি আউটলেট, ১০টি নিষ্কাশন খাল। এসব খালের সর্বমোট দৈর্ঘ্য ছিল ১৮৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে এক কিলোমিটার দীর্ঘ ইনটেক খাল, ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ মেইন ক্যানেল টার্ন আউট খাল ছিল। এর মধ্যে আবার চ্যানেল-১ খালের দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার, চ্যানেল-২ এর দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮০ কিলোমিটার, পাগলা খাল ৩ কিলোমিটার, জালকুড়ি খাল ২ দশমিক ১০ কিলোমিটার, শ্যামপুর খাল ২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার, ফতুল্লা খাল ১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার ও সেকেন্ডারি চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ছিল ১০ কিলোমিটার। এসব খালের অধিকাংশই ভরাট হয়ে গেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আশির দশকের পর থেকে লোকজন ডিএনডি বাঁধের ভেতর জমি কিনে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, ইটের ভাটা, ছোট-বড় শিল্প-কারখানা নির্মাণ করেন। কিন্তু জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় খাল দখল ও ভরাট করে দোকানপাট, ঘরবাড়ি, কলকারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনা অল্প বৃষ্টিতেই হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। এ নিয়ে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন। দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞার কাছে স্মারকলিপি দেন ফতুল্লার কায়েমপুরসহ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্প্রতি প্রায় ১০০ কিলোমিটার নিষ্কাশন খালের মধ্যে ৩৯ কিলোমিটার জায়গার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। তবে এই অর্থ শুধু কচুরিপানা পরিষ্কারেই শেষ হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ উদ দৌলা আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, দেড় বছর আগে খাল ও অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সম্প্রতি দখলদারের সংখ্যা আরও বেড়েছে। আবারও অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দুই মাসের মধ্যে নতুন তালিকা তৈরি করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, অবৈধ দখলের বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে গেলে যে লজিস্টিক সাপোর্ট (অর্থ) প্রয়োজন, সেটা আমরা পাই না। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার চৌধুরী জানান, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের লক্ষ্যে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।
No comments