গাজার বিভীষিকাময় একটি রাত -বর্বরতায় হিটলারকে ছাড়িয়ে গেছে ইসরায়েল
রাতের গাজা হয়ে উঠেছে আরো বিভীষিকাময়।
রাতভর ইসরায়েলের বোমা হামলা আর কানফাটা শব্দ। বিদ্যুৎ নেই। ইসরায়েলের
ট্যাংক থেকে ছোড়া গোলা বাড়িঘরের ওপর এসে পড়ছে। পালানোর কোনো পথ নেই।
প্রতিবেশীদের মরণ-চিৎকার ভেসে এলও তাদেরকে উদ্ধারের কোনো উপায় নেই। রাত ৯টা
থেকে এই ভয়ঙ্কর বোমা হামলা শুরু হয় আর রাত যত বাড়ে ততই হামলার তীব্রতা
বাড়তে থাকে। রাতটা গাজাবাসীর জন্য হয়ে ওঠে আরো ভয়ঙ্কর। সারারাত চলতে থাকে এ
হামলা। আর ভয়ঙ্কর মৃত্যুপুরি হয়ে ওঠে গাজার উত্তরের শেজাইয়া এলাকাটি। খবর :
এএফপির
প্রতিটির মানুষ তার চাপাশে গোলা বর্ষণের শোঁ শোঁ শব্দ আর বিস্ফোরণের কান ফাটা শব্দে থর থর করে কেঁপে উঠে ঘরবাড়ি। আর তীব্র কেঁপে উঠে প্রতিটি ঘুমহীন ভয়ার্ত মানুষের প্রাণ। পাশের বাড়ি থেকে কারো আহত হওয়ার ভয়ঙ্কর চিৎকার ভেসে এলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আহতদের সহযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে না। রাতের অন্ধকারে রাস্তায় বেরিয়ে অ্যাম্বুলেন্স খোঁজার চেষ্টা চলে, কিন্তু তীব্র গোলাবর্ষণের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্সের দেখা পাওয়া অসম্ভব। আর এলাকা ছেড়ে পালানোর জন্য কোনো গাড়িঘোড়া নেই। রাতের অনিরাপদ ফাঁকা রাস্তা কেবল প্রাণ হারানোর ঝুঁকিই বাড়িয়ে দেয়।
প্রতিটির মানুষ তার চাপাশে গোলা বর্ষণের শোঁ শোঁ শব্দ আর বিস্ফোরণের কান ফাটা শব্দে থর থর করে কেঁপে উঠে ঘরবাড়ি। আর তীব্র কেঁপে উঠে প্রতিটি ঘুমহীন ভয়ার্ত মানুষের প্রাণ। পাশের বাড়ি থেকে কারো আহত হওয়ার ভয়ঙ্কর চিৎকার ভেসে এলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আহতদের সহযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে না। রাতের অন্ধকারে রাস্তায় বেরিয়ে অ্যাম্বুলেন্স খোঁজার চেষ্টা চলে, কিন্তু তীব্র গোলাবর্ষণের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্সের দেখা পাওয়া অসম্ভব। আর এলাকা ছেড়ে পালানোর জন্য কোনো গাড়িঘোড়া নেই। রাতের অনিরাপদ ফাঁকা রাস্তা কেবল প্রাণ হারানোর ঝুঁকিই বাড়িয়ে দেয়।
তাই শেষ পর্যন্ত আহতদের বাঁচানোর আশা ছেড়ে নিজেরাই প্রাণে বাঁচতে ভোরের আলো ফোঁটার আগমূহূর্তে বেরিয়ে এসেছে রাস্তায়। হাজার হাজারে ফিলিস্তিনি গাজা থেকে পালানো চেষ্টা করতে গিয়ে খালি পায়ে, পোশাক-আশাক ছাড়াই কেবল পাজামা পরা অবস্থায় বাইরে বেরিয়ে এসেছে। প্রাণ হারানোর ঝুঁকি নিয়ে দু'ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে কোনো রকমে গাজা শহরে পেঁৗছাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। তারা নাজাফ, শাফসহ গাজা সিটি এবং ইসরায়েলের সীমান্তের তীব্র সংঘাতময় এলাকা থেকে তারা শহরেটির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়া হাজার হাজার নিরীহ গাজাবাসীদেরই একজন আহমেদ। সে নিজের স্ত্রী এবং তাদের সন্তানদের নিয়ে এলাকা থেকে পালাচ্ছে। তার ছোট্ট মেয়েটির পা খালি। গাজা শহরের পূর্ব এলাকাতে শিশুটি যখন হাঁটছে তখনও তার চোখে ঘুমের ভার। আহমেদ জানালেন, 'আমাদের চারপাশে কেবলই বোমা বিস্ফোরণের কানফাটা শব্দ। কোনো আলো নেই, আমরা কোন উপায়ই খুঁজে পাচ্ছি না।'
এদিকে গাজা সিটির সিফা হাসপাতালে প্রতি পাঁচ মিনিট পর পরই আসছে অ্যম্বুল্যান্স। তবে অ্যম্বুলেন্স ছাড়াও গাড়ি বা ট্রাকে করেও আহত কিংবা মৃতদেহ এসে পেঁৗছাচ্ছে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে। বেশিরভাগ আহতরাই বিস্ফোরিত বোমার টুকরো টাকরায় বিক্ষত দেহ নিয়ে। একটি বালকের সারা শরীরই আঘাতের চিহ্নে ঢাকা পড়ে গেছে_ তীব্র আর্তনাদ করছে। আহত অনেকেরই শরীর ধুলোয় ঢাকা। কেউ আবার তারে পোশাকের ভেতররে রক্তে চুপসে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ডাক্তার সৈয়দ হাসান জানালেন, বেশির ভাগই তীব্রভাবে আহত রক্তাক্ত অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে হেঁটে হাসপাতালে আসতে হচ্ছে। রাস্ততেও আহত রক্তাক্ত মানুষ শুয়ে অপেক্ষা করছেন কেউ যদি তাকে হাসপাতালে পেঁৗছে দেয়। তিনি বললেন, এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এর আগে কখনো দেখেননি।
'বর্বরতায় হিটলারকে ছাড়িয়ে গেছে ইসরায়েল' -এরদোগান
'বর্বরতার
দিক দিয়ে ইসরায়েল হিটলারকেও ছাড়িয়ে গেছে। এদের কোনো লজ্জা-সম্মান নেই,
মানবতাবোধ নেই। তাদের নৃশংসতার সঙ্গে তুলনা দেওয়ার মতো আর কিছুই নেই।'
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান গাজায় ইসরায়েলের অমানবিক
হামলার সমালোচনা করতে গিয়ে এসব কথা বলেন। এর আগে ইসরায়েল তার নাগরিকদের
তুরস্ক ভ্রমণে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেয়। এরদোগান তার জবাবে
ক্ষুব্ধ হয়ে এসব মন্তব্য করলেও তিনি তুরস্কের অধিবাসীদের তাদের দেশে যে সব
ইহুদি ধর্মাবলম্বী রয়েছে তাদের প্রতি যেন কোনো রকম আক্রমণ না করা হয় সে
ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। খবর এএফপি, রয়টার্স, এপি।
No comments