এবার কি মুকুট খুলবেন রানি? by ফৌজিয়া সুলতানা
রাজপরিবারের পাশাপাশি খুশিতে ভাসছে পুরো
ব্রিটেন। প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটনের প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবরে
ব্রিটেনের বাইরেও বইছে আনন্দের ঢেউ। হাজারো সমস্যা-সংকট সত্ত্বেও ব্রিটিশ
রাজপরিবার যে ব্রিটিশদের একসূত্রে গেঁথে রেখেছে, রাজশিশুর জন্ম তা মনে
করিয়ে দিয়েছে।
নবাগত এই শিশু দাদা প্রিন্স চার্লস ও বাবা
উইলিয়ামের পর ব্রিটিশ সিংহাসনের তৃতীয় উত্তরাধিকারী। তার জন্মে সিংহাসনে
আরোহণের জন্য অপেক্ষমাণদের সারি আরেকটু লম্বা হয়েছে। তাই আবার সেই পুরনো
প্রশ্ন ফিরে এসেছে। এবার কি তবে অবসরে যাবেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ? ৬০ বছর
ধরে ক্ষমতা ধরে রাখা রানি এবার কি মুকুট খুলবেন?
গত সোমবার ব্রিটেনের স্থানীয় সময় বিকেলে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন কেট। সন্তান জন্মের খবরে বাবা ডিউক অব ক্যামব্রিজ উইলিয়াম বলেন, 'এর চেয়ে বেশি খুশি হওয়ার আর কিছু ছিল না।' প্রপৌত্রের জন্মের খবরে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথও 'পরম আনন্দের' অনুভূতি জানিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এ শিশুই একদিন রাজা হিসেবে ব্রিটেনের সিংহাসনে বসবে। তবে তার সামনে এই সুযোগ কবে আসবে- তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
১৯৫২ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে সিংহাসনে রাজমুকুট মাথায় পরেন এলিজাবেথ। বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জের (৫৬) অকাল মৃত্যুর পর ১৯৫৩ সালের ২ জুন রানি হিসেবে তাঁর অভিষেক হয়। ৬০ বছর ধরে তিনি ব্রিটেনে রাজতন্ত্রের হাল ধরে আছেন। ৮৭ বছর বয়সেও তাঁর শারীরির সুস্থতা ও মানসিক শক্তি অটুট আছে। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন (৬৩ বছর ২১৬ দিন) সিংহাসনে থাকার রেকর্ডটি বর্তমানে রানি ভিক্টোরিয়ার দখলে। ধারণা করা হচ্ছে, সব ঠিকঠাক থাকলে এলিজাবেথ সেটা ভেঙ্গে দেবেন। সিংহাসনে আরোহনের সময় আজীবন দায়িত্ব পালনের যে অঙ্গীকার করেছিলেন, এখন পর্যন্ত তাতে অবিচল আছেন তিনি। সম্প্রতি এক হাজার ব্রিটিশের ওপর রয়াল সেন্ট্রাল পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, শুধু বয়সের কারণে নারী সিংহাসন ছাড়ুক- এমনটা দেখতে চায় না ৮৩ শতাংশ ব্রিটিশ।
তবে এলিজাবেথ যত দিন ক্ষমতায় থাকবেন, তাঁর বড় ছেলে চার্লসের (৬৪) সিংহাসনে বসার সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ হতে থাকবে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সংবিধান শাখার পরিচালক রবার্ট হ্যাজেল বলেন, 'এলিজাবেথ তাঁর মায়ের মতো শতবর্ষী হতে পারেন। রানির মা ১০১ বছর বয়সে মারা গেছেন। রানীর ক্ষেত্রেও এমন ঘটলে সিংহাসনে আরোহণের জন্য চার্লসকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা প্রবীণ এক সম্রাটের অভিষেক দেখব।' ইতিমধ্যে সিংহাসনে আরোহণের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষার দিক থেকে রেকর্ড গড়েছেন চার্লস।
চলতি বছর নেদারল্যান্ডসের রানি বিয়েত্রিচ, বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় আলবার্ত ও কাতারের আমির তাঁদের উত্তরাধিকারীর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। আজীবন ক্ষমতায় থাকার কথা থাকলেও পরবর্তী প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে মুকুট হস্তান্তর করেছেন তাঁরা। বয়সের অজুহাত দেখিয়ে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টও ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু রানি এলিজাবেথ এখনো এমন কোনো ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। তবে সম্প্রতি তিনি ছেলের কাছে বেশ কিছু দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। আগামী নভেম্বরে কমনওয়েলথ প্রধান হিসেবে চার্লসকে প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন রানি।
চার্লস নিজেও সিংহাসনের বসার জন্য তাঁর অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। জনপ্রিয়তায়ও ছেলে উইলিয়ামের চেয়ে পিছিয়ে আছেন তিনি। ১৯৯২ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর এবং ক্যামিলা পার্কারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। ডায়ানার সাবেক প্রেসসচিব প্যাট্রিক জোসেফ বলেন, 'সত্তরের বেশি বয়সী এক জোড়া দম্পতি মুকুট মাথায় দিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে ঘোরাঘুরি করছে- এ দৃশ্য খুব একটা মনোরম নয়।' এলিজাবেথের পর উইলিয়ামের সিংহাসনে আরোহণের মাঝের সময়টাতে চার্লস কেবল 'অন্তর্বর্তী রাজা' হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন বলেও ধারণা করছেন অনেকে। ১৯৩৭ সালের রিজেনসি অ্যাক্ট অনুযায়ী রাজা বা রানির অসুস্থতা বা অন্য কোনো ধরনের অনুপস্থিতির কারণে সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারীকে দায়িত্বে বসানোর নিয়ম রয়েছে। সে কারণে সিংহাসনের হাতছানি চার্লসের কাছ থেকে যত দূরে, উইলিয়ামের জন্য তা তত দূরে নয় বলেও ধারণা করা হচ্ছে। উইলিয়ামের ছেলে প্রিন্স অব ক্যামব্রিজ কোন পরিস্থিতিতে পড়বে, শুধু সময়ই এখন তার জবাব দেবে। তবে শেষ পর্যন্ত এই শিশু সিংহাসনে বসলে সে হবে ব্রিটিশদের ৪৩তম রাজা। সূত্র : এএফপি।
গত সোমবার ব্রিটেনের স্থানীয় সময় বিকেলে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন কেট। সন্তান জন্মের খবরে বাবা ডিউক অব ক্যামব্রিজ উইলিয়াম বলেন, 'এর চেয়ে বেশি খুশি হওয়ার আর কিছু ছিল না।' প্রপৌত্রের জন্মের খবরে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথও 'পরম আনন্দের' অনুভূতি জানিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এ শিশুই একদিন রাজা হিসেবে ব্রিটেনের সিংহাসনে বসবে। তবে তার সামনে এই সুযোগ কবে আসবে- তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
১৯৫২ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে সিংহাসনে রাজমুকুট মাথায় পরেন এলিজাবেথ। বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জের (৫৬) অকাল মৃত্যুর পর ১৯৫৩ সালের ২ জুন রানি হিসেবে তাঁর অভিষেক হয়। ৬০ বছর ধরে তিনি ব্রিটেনে রাজতন্ত্রের হাল ধরে আছেন। ৮৭ বছর বয়সেও তাঁর শারীরির সুস্থতা ও মানসিক শক্তি অটুট আছে। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন (৬৩ বছর ২১৬ দিন) সিংহাসনে থাকার রেকর্ডটি বর্তমানে রানি ভিক্টোরিয়ার দখলে। ধারণা করা হচ্ছে, সব ঠিকঠাক থাকলে এলিজাবেথ সেটা ভেঙ্গে দেবেন। সিংহাসনে আরোহনের সময় আজীবন দায়িত্ব পালনের যে অঙ্গীকার করেছিলেন, এখন পর্যন্ত তাতে অবিচল আছেন তিনি। সম্প্রতি এক হাজার ব্রিটিশের ওপর রয়াল সেন্ট্রাল পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, শুধু বয়সের কারণে নারী সিংহাসন ছাড়ুক- এমনটা দেখতে চায় না ৮৩ শতাংশ ব্রিটিশ।
তবে এলিজাবেথ যত দিন ক্ষমতায় থাকবেন, তাঁর বড় ছেলে চার্লসের (৬৪) সিংহাসনে বসার সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ হতে থাকবে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সংবিধান শাখার পরিচালক রবার্ট হ্যাজেল বলেন, 'এলিজাবেথ তাঁর মায়ের মতো শতবর্ষী হতে পারেন। রানির মা ১০১ বছর বয়সে মারা গেছেন। রানীর ক্ষেত্রেও এমন ঘটলে সিংহাসনে আরোহণের জন্য চার্লসকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা প্রবীণ এক সম্রাটের অভিষেক দেখব।' ইতিমধ্যে সিংহাসনে আরোহণের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষার দিক থেকে রেকর্ড গড়েছেন চার্লস।
চলতি বছর নেদারল্যান্ডসের রানি বিয়েত্রিচ, বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় আলবার্ত ও কাতারের আমির তাঁদের উত্তরাধিকারীর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। আজীবন ক্ষমতায় থাকার কথা থাকলেও পরবর্তী প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে মুকুট হস্তান্তর করেছেন তাঁরা। বয়সের অজুহাত দেখিয়ে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টও ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু রানি এলিজাবেথ এখনো এমন কোনো ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। তবে সম্প্রতি তিনি ছেলের কাছে বেশ কিছু দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। আগামী নভেম্বরে কমনওয়েলথ প্রধান হিসেবে চার্লসকে প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন রানি।
চার্লস নিজেও সিংহাসনের বসার জন্য তাঁর অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। জনপ্রিয়তায়ও ছেলে উইলিয়ামের চেয়ে পিছিয়ে আছেন তিনি। ১৯৯২ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর এবং ক্যামিলা পার্কারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। ডায়ানার সাবেক প্রেসসচিব প্যাট্রিক জোসেফ বলেন, 'সত্তরের বেশি বয়সী এক জোড়া দম্পতি মুকুট মাথায় দিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে ঘোরাঘুরি করছে- এ দৃশ্য খুব একটা মনোরম নয়।' এলিজাবেথের পর উইলিয়ামের সিংহাসনে আরোহণের মাঝের সময়টাতে চার্লস কেবল 'অন্তর্বর্তী রাজা' হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন বলেও ধারণা করছেন অনেকে। ১৯৩৭ সালের রিজেনসি অ্যাক্ট অনুযায়ী রাজা বা রানির অসুস্থতা বা অন্য কোনো ধরনের অনুপস্থিতির কারণে সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারীকে দায়িত্বে বসানোর নিয়ম রয়েছে। সে কারণে সিংহাসনের হাতছানি চার্লসের কাছ থেকে যত দূরে, উইলিয়ামের জন্য তা তত দূরে নয় বলেও ধারণা করা হচ্ছে। উইলিয়ামের ছেলে প্রিন্স অব ক্যামব্রিজ কোন পরিস্থিতিতে পড়বে, শুধু সময়ই এখন তার জবাব দেবে। তবে শেষ পর্যন্ত এই শিশু সিংহাসনে বসলে সে হবে ব্রিটিশদের ৪৩তম রাজা। সূত্র : এএফপি।
No comments