গল্পালোচনা- ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া...’ by ফারুক চৌধুরী
‘বহু দিন ধ’রে বহু ক্রোশ দূরে/ বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে/ দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,/ দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।/ দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া/ ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া/ একটি ধানের শিষের উপরে/ একটি শিশিরবিন্দু্’/ সুবিদিত এই পঙিক্তমালা রবিঠাকুর কি শিলাইদহে লিখেছিলেন না শান্তিনিকেতনে, পতিসরে না কলকাতায়, না বিদেশে, অন্য কোথাও, অন্য কোনোখানে? তবে কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় বিদেশে কাটিয়ে আমার এ ধারণা জন্মেছিল যে কথাগুলো বাংলাদেশের বেলায় যথার্থভাবে প্রযোজ্য।
পর্যটনশিল্প সম্পর্কে আমার জ্ঞান আর ধ্যান-ধারণা খুবই সীমিত; তবে জানি যে বিশ্ব কেন, উপমহাদেশীয় অথবা পূর্ব এশীয় অঞ্চলের প্রেক্ষাপটেও এখনো বাংলাদেশ সাধারণত বিদেশি পর্যটকদের প্রাথমিক অথবা চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল বলে বিবেচিত হয় না। অথচ আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বাংলাদেশ অল্পায়াসেই আনুষঙ্গিক পর্যটক গন্তব্যে (Secondary tourist destination) পরিণত হতে পারে। অভ্যন্তরীণ পর্যটনের বিকাশ আঞ্চলিক আর আন্তর্জাতিক বিকাশের পথে প্রথম পদক্ষেপ। বাংলাদেশে এখন অভ্যন্তরীণ পর্যটনের আগ্রহ এবং এক শ্রেণীর মানুষের আর্থিক সামর্থ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ত্বরান্বিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং উপার্জনের সুষম বণ্টন ঘটলে সেই পর্যটন দ্রুত বাড়বে, ফলে দেশের যাতায়াত-ব্যবস্থা আর পর্যটনের ভৌত কাঠামোকে উন্নততর করার প্রয়োজন অনুভূত হবে। তখন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ ক্রমশ এগিয়ে আসবে। বিষয়টি সময়সাপেক্ষ, তবে প্রক্রিয়াটি যে শুরু হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। বিশ্ববিখ্যাত পর্যটন গাইড পুস্তক Lonely planet ২০১১ সালের জন্য বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে সুলভ পর্যটন গন্তব্য বলে অভিহিত করেছে বলে শুনেছি। এটি খুবই আশাব্যঞ্জক মূল্যায়ন; তবে বাংলাদেশের অর্থহীন সহিংস হরতালের রাজনীতি এই মূল্যায়নের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে, দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করবে, আঘাত হানবে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণসহ গোটা পর্যটনশিল্পের ওপর। আমরা যদি যে তিমিরে ছিলাম সেখানেই ফিরে যাই, এর চেয়ে দুঃখজনক কী আর হতে পারে?
মূলত এই নিবন্ধ মোটা দাগে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের ওপর নয়, এটি আসলে রবীন্দ্রনাথের উপরিউক্ত পঙিক্তমালার নিরিখে; বাড়ি থেকে, প্রায় আক্ষরিক অর্থেই দুই পা ফেলে, চোখ মেলে একটি ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা দেখার কাহিনি। স্থাপনাটি হলো, সিলেট শহর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে, ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নে শ্রীচৈতন্যদেবের পৈতৃক পূর্বপুরুষের ভিটা আর মন্দির।
এখানে একটি ঘটনা ব্যক্ত করতে চাই। ১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতের উড়িষ্যা (বর্তমান নামকরণে ওডিশা) রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরে আমি সেই রাজ্যের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী, বর্তমানে প্রয়াত বীজু পট্টনায়েকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। আমি তখন ভারতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলাম। একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও বীজু পট্টনায়েক ছিলেন ভারতীয় রাজনীতির প্রবাদপুরুষ, যিনি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে আজাদ হিন্দ ফৌজে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ-সময়ে তাঁর বয়স ছিল সত্তরের মাঝামাঝি। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এই রাজনীতিবিদ তখন উড়িষ্যার ১৪৭ সদস্যের সংসদে ১২৬টি আসন নিয়ে প্রবল প্রতাপে সেই রাজ্যের জনতা দলের সরকার চালাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার অনেক বিষয়েই সুদীর্ঘ আলোচনা হয়, যার অবতারণা এই নিবন্ধে অপ্রাসঙ্গিকই হবে। বীজু পট্টনায়েক আমাকে জানালেন, তাঁর মায়ের আদি বাড়ি ছিল চট্টগ্রামে এবং তাঁর মাতামহ রাজেশ্বর গুপ্ত ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের আনন্দমঠের দিনগুলোতে সেখানে একটি স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন।
ব্যক্তিগত পর্যায়ের আলোচনার সময় যখন তিনি জানলেন, আমার বাড়ি সিলেটে চৈতন্যদেবের পৈতৃক বাড়ির পাশের গ্রামে, তাঁর আসন থেকে উঠে এসে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, শ্রীচৈতন্যদেব পুরীর একাদশ শতাব্দীতে নির্মিত জগন্নাথ মন্দিরে বহুদিন অবস্থান করেছিলেন। সেদিন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে বলা আমার কাছে অকূটনৈতিক ও রুচিবিরোধী মনে হয়েছিল যে তার দুই দিন আগে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরটি বাইরে থেকেই দেখেছি। অনেক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভেতরে যেতে পারিনি। কারণ, সেখানে অহিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ!
পুরীতে অনেক বাঙালিরই বাস—কেউ কেউ সেখানে আছেন স্বর্গলাভের আশায়, আবার কেউ কেউ পুরীর বিশুদ্ধ সাগরের বাতাসের গুণে, এই মর্ত্যে তাঁদের অবস্থান দীর্ঘায়িত করার কামনায়। যা-ই হোক, আমি যে শ্রীচৈতন্যদেবের দেশের লোক, এই কথা সংশ্লিষ্ট মহলে জানাজানি হতে সময় লাগল না। মুখ্যমন্ত্রী বীজু পট্টনায়েক, তিনতলার তাঁর অফিস থেকে গাড়িবারান্দায় এসে আমাকে বিদায় জানালেন। তাঁর এই উষ্ণ সহূদয়তা ভোলার নয়। মনে আছে, ভুবনেশ্বরে স্বল্প সময়ের অবস্থানের বাকি সময়টুকুতে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পাশের গ্রামের মানুষ হিসেবে একটি পুণ্যবান অবস্থানের সমীহের আস্বাদ আমি লাভ করেছিলাম। না-ই বা পেলাম পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের অধিকার।
সেই ঘটনার প্রায় দুই যুগ পরে, গত ঈদের ছুটিতে, ১৮ নভেম্বর ২০১০ সালে অবশেষে ‘ঘর থেকে দুই পা ফেলিয়া’ আমার বাড়ির কাছের ঐতিহাসিক ‘শিশিরবিন্দু’ শ্রীচৈতন্যদেবের মন্দিরটি প্রথমবারের মতো দেখলাম। দুর্ঘটনামুক্ত থাকতে সক্ষম হলে আর যানজটে ফেঁসে না পড়লে, মোটরপথে ঢাকা থেকে সিলেট এখন সাড়ে চার ঘণ্টার রাস্তা। আমার জন্য সিলেটে অবস্থান এখন বেশি আকর্ষণীয় হয়েছে এ কারণে যে, আমার মামাতো ভাই নাজিম কামরান চৌধুরীর প্রশংসনীয় উদ্যোগে সিলেট শহরে আমার মামার বাড়িটি বর্তমানে জনপ্রিয় ‘নাজিমগড় রিসোর্ট’-এ পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মাঝে পাহাড়ঘেরা নদী-নালা-খালের নীল-সবুজ জল আর অদূরের রহস্যময় গিরিশ্রেণী আর শ্যামল বনস্থান, নৈসর্গিক সৌন্দর্যদর্শনের একটি অপূর্ব অভিজ্ঞতা। ‘নাজিমগড় রিসোর্ট’ থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নে অবস্থিত শ্রীচৈতন্যদেবের পৈতৃকভিটা আর মন্দির, যা ঠাকুরবাড়ি নামে পরিচিত। ঢাকা দক্ষিণ হলো আমার প্রজন্মে প্রায় পরিত্যক্ত বারকোট গ্রামের আমাদের বাড়িটি থেকে ছোট ছোট টিলার পাশ কাটিয়ে, পিচ ঢালা সরু পথে, মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে। তবে আনন্দের কথা এই যে উন্নততর যাতায়াত-ব্যবস্থা, গ্রামীণ বিদ্যুৎ আর তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক অগ্রগতির কারণে পরবর্তী প্রজন্মের গ্রামের প্রতি একটি নতুন আগ্রহ জন্মাচ্ছে। গত শতাব্দীর প্রথম দশকে আমার বাবা হেঁটে ঢাকা দক্ষিণে, ঠাকুরবাড়ির সন্নিকটে সেই যুগের মাধ্যমিক স্কুলে অধ্যয়ন করেছিলেন আর তাঁর মুখেই প্রথম শুনেছিলাম শ্রীচৈতন্যদেবের কথা। কয়েক বছর আগে সিলেটে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের (বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব) উদ্যোগে ৫০০ বছর পুরোনো জরাজীর্ণ মন্দির ঠাকুরঘর ও মণ্ডপের সংস্কার সাধন করা হয়েছে এবং এখন তা উপমহাদেশীয় অথবা পূর্ব এশীয় মানের একটি মন্দির বলে পরিগণিত হতে পারে।
আমাদের অঞ্চলের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে শ্রীচৈতন্যকে দেখা যাক। ১৪৮৫ সালে যখন নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্যের জন্ম হলো, তখন হজরত শাহজালাল এবং তাঁর সঙ্গীদের সিলেটে আগমনের প্রায় ১৫০ বছর হয়ে গেছে। আমাদের অঞ্চলে ইসলাম তখন যথেষ্ট বিস্তার লাভ করেছে এবং মুসলিম শাসন তখন এখানে সুপ্রতিষ্ঠিত। শ্রীচৈতন্যের মৃত্যু ঘটে ১৫৩৩ সালে; অর্থাৎ ১৫২৬ সালে আগ্রায় বাবরের সিংহাসন দখলের সাত বছর পর।
শ্রীচৈতন্য ছিলেন প্রবাসী সিলেটি। তাঁর পিতা জগন্নাথ মিশ্র ও পিতামহ উপেন্দ্র মিশ্রের নিবাস ছিল সিলেটের ঢাকা দক্ষিণে। শ্রীচৈতন্যের মা শচীদেবীর বাড়িও ছিল বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জের জয়পুরে। সেখান থেকে তাঁর পিতা নীলাম্বর চক্রবর্তী নবদ্বীপে বাসা বাঁধেন। জগন্নাথ মিশ্র ও শচীদেবীর ঢাকা দক্ষিণ সফরকালে শচীদেবী গর্ভ ধারণ করেন, তবে নিতাই অর্থাৎ শ্রীচৈতন্যের জন্ম হয় নবদ্বীপেই। নবদ্বীপে সেই সময়ে প্রবাসী সিলেটিদের একটি বিরাট বসতি ছিল, যা গড়ে উঠেছিল নবদ্বীপের বিখ্যাত ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঘিরে। এই সিলেটি সমাজে নিজেদের মধ্যে বিবাহ সুপ্রচলিত ছিল।
বাংলার শাসক হোসেন শাহ আর শ্রীচৈতন্য ছিলেন সমসাময়িক। হোসেন শাহ কখনো শ্রীচৈতন্যের ধর্ম প্রচারে বাধা দেননি। বৃন্দাবন দাসের চৈতন্য ভগবত-এর রচনাকাল শ্রীচৈতন্যের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে। তাতে আছে, হোসেন শাহ তাঁর সভাসদদের বলছেন যে হিন্দুরা যাঁকে কৃষ্ণ বলে, মুসলমানেরা (যবনে) তাঁকে বলে খোদা। শ্রীচৈতন্য সম্পর্কে চৈতন্য ভগবত অনুযায়ী, হোসেন শাহ বলছেন,
‘...যেখানে তাহার ইচ্ছা থাকুক সেখানে
আপনার শাস্ত্রমতো করুন বিধানে\
সর্ব্ব লোকে লই সুখে করুন কীর্ত্তন
কি বিরলে থাকুন, যা লয় তার মন\
কাজী বা কোটাল বা তাহাকে কোনো জনে
কিছু বলিলেই তার লইমু জীবনে।’
শ্রীচৈতন্যদেব সিলেট অঞ্চল দুবার সফর করেন। তিনি সিলেটের (বর্তমান হবিগঞ্জ) বুরুঙ্গা গ্রামে যান, যেখান থেকে তাঁর পিতামহ উপেন্দ্র মিশ্র ঢাকা দক্ষিণে তাঁর ভিটে স্থানান্তর করেছিলেন। তখনো শ্রীচৈতন্য সন্ন্যাস লাভ করেননি। তাঁর পরিচিতি তখন নিমাই পণ্ডিত হিসেবে। নবদ্বীপ থেকে তাঁর অনুপস্থিতির সময়ে সেখানে সর্পাঘাতে মৃত্যুবরণ করেন তাঁর প্রথম স্ত্রী লক্ষ্মী দেবী। কথিত আছে, সেই সঙ্গে নবদ্বীপে ফিরে গিয়ে তিনি তাঁর নতুন শেখা সিলেটের আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে কৌতুক করতেন। চৈতন্য ভগবত-এর কথায়,
‘বিশেষ চালেন প্রভু দেখি শ্রী হট্টয়া
কদর্থেন সেই মত বচন বলিয়া\’
বিষ্ণু প্রিয়া দেবীর সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে হয় এবং তার কিছুদিন পর তিনি সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করলেন এবং ঘরে ঘরে হরিনাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করলেন। ভ্রমণ করলেন ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চল। সেই সময়ে চৈত্র মাসের কোনো এক রোববারে ঢাকা দক্ষিণ পৌঁছালেন। সেখানে তিনি মিলিত হলেন তাঁর বৃদ্ধা পিতামহী শোভা দেবীর সঙ্গে। সেই ঘটনাটির স্মরণে প্রতিবছর চৈত্র মাসের রোববার ঢাকা দক্ষিণে বড় মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদুল আজহার পরদিনই (১৮ নভেম্বর) সিলেটের নাজিমগড় রিসোর্ট থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের ঢাকা দক্ষিণের ঠাকুরবাড়ি দেখতে যাই। আমাদের স্থানীয় সাথি নিহার রঞ্জন দাসকে নিয়ে আমরা ছিলাম পাঁচজন। সেখানে আমাদের স্বাগত জানালেন শ্রীচৈতন্যের চতুর্দশ বংশধর, শ্রীরাধাবিনোদ মিশ্র। সেদিন ‘হরেরুত্থান, ধ্বজারোপণ ও কাঁচকলা মহোৎসব’ বলে একটি বার্ষিক ধর্মোৎসব পালিত হচ্ছিল এবং ঠাকুরবাড়িতে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে মণ্ডপে বসে প্রায় দুই শত পুরুষ ও নারীভক্ত একসঙ্গে চৈতন্য চরিতামৃত পাঠ করছিলেন। তারই সামনে শ্রীচৈতন্যের পারিবারিক তিনটি ঠাকুরঘর। তা ছিল সুন্দর পরিপাটি ও রুচিসম্মত এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। শ্রীচৈতন্যের চতুর্দশ বংশধর শ্রীরাধাবিনোদ মিশ্র নিজেই আমাদের ঘুরে দেখালেন, কিন্তু পদে পদে আমাদের থমকে দাঁড়াতে হচ্ছিল। কারণ, তাঁকে দেখামাত্রই ভক্তরা তাঁর পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণতি জানাচ্ছিলেন। তাঁকে স্পর্শ করেই যেন তাঁরা ধন্য।
তখন একটি ভাবনা আমাকে পুলকিত করে তুলেছিল, তা হলো, ঈদের পরদিন, যখন কোরবানির পশুর রক্তের দাগ মাটি থেকে মুছে যায়নি, তখন এই মুসলমানপ্রধান এলাকায় অবস্থিত ঠাকুরবাড়িতে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে পুজোর মহোৎসব। সাম্প্রদায়িক সহ-অবস্থান এবং ধর্মীয় অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের এই উদার বহিঃপ্রকাশ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিতকুলকে অনুপ্রাণিত করত নিশ্চয়ই। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ না করতে পারার দুঃখ আমার মনে গাঁথা রয়েছে, বিশেষ করে এ কারণে যে আমি জানতাম, তা শ্রীচৈতন্যের স্মৃতিবিজড়িত একটি মন্দির।
টিলার উঁচুতে অবস্থিত মন্দিরটি থেকে সদ্য সংস্কারকৃত প্রশস্ত সিঁড়ি ধরে যখন নামছি, কানে এল ‘আসরের’ নামাজের সুমধুর আজান। ‘নামাজের জন্য এসো, কল্যাণের জন্য এসো।’ সাম্প্রদায়িক স্মৃতি ও ধর্মীয় সহ-অবস্থানের এই প্রীতিপদ অভিজ্ঞতাটি চোখ মেলে দেখা আর মন ভরে অনুভব করা, আমার গ্রামের বাড়ির পথের দুই ধারের হেমন্তের সোনালি ধানের ওপর অযুত শিশিরবিন্দুর মতোই প্রীতিদায়ক। এসব নিয়েই তো আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ।
==================================
আন্তর্জাতিক- উইকিলিকসঃ হাটে হাঁড়ি ভাঙা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ গল্পসল্প- ওরা ধান কুড়ানির দল শিক্ষা- আদিবাসী পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় চাই জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের অর্থের মূল উৎস সৌদি আরব রাজনৈতিক আলোচনা- এমন বন্ধু থাকলে... শিল্প-অর্থনীতি শেয়ারবাজারের সুন্দরী প্রতিযোগিতা-তত্ত্ব সাক্ষাৎকার- খাদ্যনিরাপত্তার জন্য বিকল্প উপায় খুঁজতা হবে খবর, প্রথম আলোর- দলীয় স্বার্থ বড় করে দেখবেন না মার্কিন কূটনীতিকদের গোপন তারবার্তাঃ পাকিস্তানে জঙ্গি নির্মূলে ১০-১৫ বছর লাগবে অধ্যাপক ইউনূসের অর্থ স্থানান্তর : গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাখ্যা শিল্প-অর্থনীতি 'সময় এসেছে মাথা তুলে দাঁড়াবার' প্রকৃতি- 'কিয়োটো প্রটোকল ভেস্তে যাচ্ছে, কানকুনে কী হবে? আলোচনা- 'মেয়েদের লাঞ্ছনা বন্ধ করতে কঠোর হতে হবে' যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'আগ্নেয়গিরির ওপরে পিকনিক' আলোচনা- 'হিমালয়ের কোলে এক টুকরো দক্ষিণ এশিয়া' স্মরণ- 'মানুষের জন্য যিনি জেগে থাকতেন' রাজনৈতিক আলোচনা- 'আবার আসিব ফিরে!' আলোচনা- 'রাজকীয় সম্মেলন' যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'অসারের তর্জন-গর্জন' আলোচনা- 'একজন নোবেল বিজয়ী, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদ' স্মৃতি ও গল্প- সেই আমি এই আমি গল্প- 'ঘুঁটি' আন্তর্জাতিক- অং সান সু চির মুক্তি : মিয়ানমারে কি কি গণতন্ত্র আসছে? শিল্পি- শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের সৃষ্টিসমগ্র সাহিত্যালোচনা- তান তুয়ান এঙের উপন্যাস দ্য গিফট গিফট অব রেইন খবর- বন্ধ তাবানীতে লোক নিয়োগ ইতিহাস- আমাদের ভাববিশ্ব ও বৌদ্ধবিহার স্মৃতি ও ইতিহাস- ঢাকায় আমার প্রথম তিন দিনের স্মৃতিরোমন্থন আলোচনা- একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি কি হারিয়ে যাবে আলোচনা- বাংলাদেশের সমাজ : মধ্যবিত্ত সমাচার গল্প- দূর গাঁয়ের গল্প সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠা সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠাই কবির তপস্যা পাঁচ গাড়িসহ দুই ছেলের মালপত্র বুঝে নেওয়া হলো আজ বাকিগুলো
দৈনিক প্রথম আলোর সৌজন্যর
লেখকঃ ফারুক চৌধুরী
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব। কলাম লেখক।
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
আন্তর্জাতিক- উইকিলিকসঃ হাটে হাঁড়ি ভাঙা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ গল্পসল্প- ওরা ধান কুড়ানির দল শিক্ষা- আদিবাসী পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় চাই জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের অর্থের মূল উৎস সৌদি আরব রাজনৈতিক আলোচনা- এমন বন্ধু থাকলে... শিল্প-অর্থনীতি শেয়ারবাজারের সুন্দরী প্রতিযোগিতা-তত্ত্ব সাক্ষাৎকার- খাদ্যনিরাপত্তার জন্য বিকল্প উপায় খুঁজতা হবে খবর, প্রথম আলোর- দলীয় স্বার্থ বড় করে দেখবেন না মার্কিন কূটনীতিকদের গোপন তারবার্তাঃ পাকিস্তানে জঙ্গি নির্মূলে ১০-১৫ বছর লাগবে অধ্যাপক ইউনূসের অর্থ স্থানান্তর : গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাখ্যা শিল্প-অর্থনীতি 'সময় এসেছে মাথা তুলে দাঁড়াবার' প্রকৃতি- 'কিয়োটো প্রটোকল ভেস্তে যাচ্ছে, কানকুনে কী হবে? আলোচনা- 'মেয়েদের লাঞ্ছনা বন্ধ করতে কঠোর হতে হবে' যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'আগ্নেয়গিরির ওপরে পিকনিক' আলোচনা- 'হিমালয়ের কোলে এক টুকরো দক্ষিণ এশিয়া' স্মরণ- 'মানুষের জন্য যিনি জেগে থাকতেন' রাজনৈতিক আলোচনা- 'আবার আসিব ফিরে!' আলোচনা- 'রাজকীয় সম্মেলন' যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'অসারের তর্জন-গর্জন' আলোচনা- 'একজন নোবেল বিজয়ী, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদ' স্মৃতি ও গল্প- সেই আমি এই আমি গল্প- 'ঘুঁটি' আন্তর্জাতিক- অং সান সু চির মুক্তি : মিয়ানমারে কি কি গণতন্ত্র আসছে? শিল্পি- শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের সৃষ্টিসমগ্র সাহিত্যালোচনা- তান তুয়ান এঙের উপন্যাস দ্য গিফট গিফট অব রেইন খবর- বন্ধ তাবানীতে লোক নিয়োগ ইতিহাস- আমাদের ভাববিশ্ব ও বৌদ্ধবিহার স্মৃতি ও ইতিহাস- ঢাকায় আমার প্রথম তিন দিনের স্মৃতিরোমন্থন আলোচনা- একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি কি হারিয়ে যাবে আলোচনা- বাংলাদেশের সমাজ : মধ্যবিত্ত সমাচার গল্প- দূর গাঁয়ের গল্প সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠা সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠাই কবির তপস্যা পাঁচ গাড়িসহ দুই ছেলের মালপত্র বুঝে নেওয়া হলো আজ বাকিগুলো
দৈনিক প্রথম আলোর সৌজন্যর
লেখকঃ ফারুক চৌধুরী
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব। কলাম লেখক।
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
No comments