ইরানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু
ইরান বলেছে, তার প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশটির বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার আগে এই কার্যক্রম শুরু হলো। রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগর বুশেহরে অবস্থিত।ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ফার্স গতকাল শনিবার জানায়, কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে। এতে প্রয়োজনীয় মাত্রায় জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে, এই কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আগামী এক অথবা দুই মাসের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যাবে। তবে কখন কেন্দ্রটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।১৯৭০-এর দশকে বুশেহর কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়। সেই থেকে তেহরান বলে আসছে, দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে তারা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করেছে। তবে পশ্চিমাদের ধারণা, বিদ্যুতের কথা বলে তেহরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে পরমাণু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তেহরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।ইরান এমন একটা সময় তাদের পরমাণুকেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হওয়ার ঘোষণা দিল, যখন দেশটির বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে স্থগিত আন্তর্জাতিক আলোচনা ফের শুরু হওয়ার পথে। আগামী ৫ ডিসেম্বর জেনেভায় এ আলোচনা শুরু হওয়ার কথা।ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাস্টন বলেছেন, এই আলোচনার তারিখ ও স্থানের ব্যাপারে ইরানের কাছ থেকে তিনি ‘অনানুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা’ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এ আলোচনার ব্যাপারে আমি আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা চাই।’ ২০০৯ সালের পর এই প্রথম ইরান এবং ছয় বিশ্বশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি ফের আলোচনার টেবিলে ফিরে আসছে। বিশ্ব নেতারা বলেছেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হতে হবে। তবে তেহরান বলেছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হতে হবে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি ত্যাগ না করায় ইরানের বিরুদ্ধে চার দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বের আশঙ্কা, সংবেদনশীল ইউরেনিয়াম কর্মসূচির মাধ্যমে পরমাণু জ্বালানি উৎপাদন করে আণবিক বোমা তৈরি করতে পারে ইরান।ইরান গত মাসে বলেছিল, বুশেহর পরমাণুকেন্দ্রের চুল্লিতে জ্বালানি সরবরাহ শুরু হয়েছে। রাশিয়া থেকে আনা এই জ্বালানি ২১ আগস্ট বুশেহর কেন্দ্রে স্থানান্তর শুরু হয়। মূলত তখনই ওই কেন্দ্রের উৎপাদন কার্যক্রমের প্রাথমিক উদ্বোধন করা হয়। ৪ অক্টোবর সালেহি বলেছিলেন, জানুয়ারির মধ্যে বুশেহর কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
No comments