স্বাগত পয়লা বৈশাখ
নতুন বাংলা বছরের আহ্বান সঙ্গে নিয়ে আবার এল পয়লা বৈশাখ। তার এই আসা যেন জানিয়ে দিল—জীবন বয়ে চলছে, পুরাতনের জায়গায় এসেছে নতুন। চৈত্রের দাবদাহে শুষ্ক হয়ে ওঠা প্রকৃতি ও মানুষের মন বৈশাখী ঝড় আর নববৃষ্টির স্নানে সিক্ত হয়ে নতুন করে জাগবে। প্রকৃতির সুরে সুর মিলিয়ে মনও বলে উঠবে, ‘বেড়া ভাঙ্গার মাতম নামে উদ্দাম উল্লাসে।’ নির্মল আনন্দ-উল্লাসের এই নববর্ষে সবাইকে স্বাগতম।
বৈশাখের বৃষ্টির পরই জমিতে লাঙল নামান কৃষক। তার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলার কৃষিজীবন যেন মেতে উঠতে চায় জীবনের উদ্যাপনে। গ্রামবাংলাজুড়ে অজস্র মেলা-আড়ং, শিশু-কিশোরদের আত্মভোলা আনন্দ আর সংসারী ও কারবারি মানুষের হালখাতার মধ্য দিয়ে পুরো সমাজই যেন পুনর্জীবন লাভ করে, নবায়িত হয়। সামাজিকতাহীন, নির্মল আনন্দের অবকাশহীন এই দেশে পয়লা বৈশাখ তাই সব গুমোট ও আবডাল ভেঙে প্রাণের উচ্ছ্বাসের দিন। নিঃস্বার্থ মিলনমেলায় আজ পথ-ঘাট, মাঠ-মঞ্চ ভরে উঠবে। অজস্র তরুণ-তরুণী তাদের রঙিন পোশাক আর রঙিন চোখের দেখাদেখি দিয়ে দিনটিকে তুলবে রাঙিয়ে। বাসন্তী রঙের আবির মাখানো প্রাণের এই উৎসবে নিরেট হতাশাবাদী ছাড়া আর সবাই নতুন করে ভাববে, জীবন এখনো সুন্দর। আকাশে তখন পুঞ্জ পুঞ্জ সাদা মেঘের পেখমের মধ্যে বৈশাখের ছাইরঙা মেঘ ঝড়ের আভাস দিলেও আরেকটি বছরের জন্য জীবন গুছিয়ে নিতে ভুলবে না মানুষ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় তাই বলা যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’
বৈশাখে এই নববর্ষবরণ পারস্যের নওরোজ বা ইংরেজি নববর্ষের তুলনায় একদিক থেকে অনন্য। বাংলা নববর্ষের মতো ধর্মনিরপেক্ষ সর্বজনীন উৎসব বিশ্বে বিরল। বিশ্বে প্রচলিত প্রধান প্রধান বর্ষপঞ্জির উৎপত্তি যেখানে ধর্মের সঙ্গে জড়িত, সেখানে সম্রাট আকবরের চালু করা বাংলা নববর্ষের যোগ যেন জীবনের সঙ্গে, প্রকৃতির সঙ্গে। আদিতে বাংলা নববর্ষ প্রচলন কৃষিকাজ ও খাজনা সংগ্রহের নিমিত্তে হলেও দিনে দিনে এটা হয়ে ওঠে বাঙালির জাতীয় উৎসব। গ্রামীণ চরিত্রের এ উৎসবটি ষাটের দশকে বাঙালির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে পুষ্ট করে। তখনই ভেদাভেদের সমাজে এটি হয়ে ওঠে সর্বজনীন, গ্রামের আবহে জন্ম নিলেও শহরও এর সুধা পান করে ধন্য হতে থাকে।
পয়লা বৈশাখের আমেজ এখন শহরেই বেশি। এবং খেয়াল করার বিষয়, শহুরে মধ্যবিত্তের পাশাপাশি শহুরে শ্রমজীবী তরুণ-তরুণীরাও একে নিজেদের মতো করে আলিঙ্গন করেছে। নববর্ষকে ঘিরে দেশীয় পোশাক ও খাদ্যরুচি কেবল মর্যাদাই পায়নি, বাঙালিয়ানা জীবনধারা নতুন বেগ ও আবেগ অর্জন করেছে। পয়লা বৈশাখের এই আনন্দপ্রবাহ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক। দেশের সব মানুষ একসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কবিতার ভাষায়ই বলে উঠুক—‘এসো হে বৈশাখ।/ তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক \’
বৈশাখের বৃষ্টির পরই জমিতে লাঙল নামান কৃষক। তার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলার কৃষিজীবন যেন মেতে উঠতে চায় জীবনের উদ্যাপনে। গ্রামবাংলাজুড়ে অজস্র মেলা-আড়ং, শিশু-কিশোরদের আত্মভোলা আনন্দ আর সংসারী ও কারবারি মানুষের হালখাতার মধ্য দিয়ে পুরো সমাজই যেন পুনর্জীবন লাভ করে, নবায়িত হয়। সামাজিকতাহীন, নির্মল আনন্দের অবকাশহীন এই দেশে পয়লা বৈশাখ তাই সব গুমোট ও আবডাল ভেঙে প্রাণের উচ্ছ্বাসের দিন। নিঃস্বার্থ মিলনমেলায় আজ পথ-ঘাট, মাঠ-মঞ্চ ভরে উঠবে। অজস্র তরুণ-তরুণী তাদের রঙিন পোশাক আর রঙিন চোখের দেখাদেখি দিয়ে দিনটিকে তুলবে রাঙিয়ে। বাসন্তী রঙের আবির মাখানো প্রাণের এই উৎসবে নিরেট হতাশাবাদী ছাড়া আর সবাই নতুন করে ভাববে, জীবন এখনো সুন্দর। আকাশে তখন পুঞ্জ পুঞ্জ সাদা মেঘের পেখমের মধ্যে বৈশাখের ছাইরঙা মেঘ ঝড়ের আভাস দিলেও আরেকটি বছরের জন্য জীবন গুছিয়ে নিতে ভুলবে না মানুষ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় তাই বলা যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’
বৈশাখে এই নববর্ষবরণ পারস্যের নওরোজ বা ইংরেজি নববর্ষের তুলনায় একদিক থেকে অনন্য। বাংলা নববর্ষের মতো ধর্মনিরপেক্ষ সর্বজনীন উৎসব বিশ্বে বিরল। বিশ্বে প্রচলিত প্রধান প্রধান বর্ষপঞ্জির উৎপত্তি যেখানে ধর্মের সঙ্গে জড়িত, সেখানে সম্রাট আকবরের চালু করা বাংলা নববর্ষের যোগ যেন জীবনের সঙ্গে, প্রকৃতির সঙ্গে। আদিতে বাংলা নববর্ষ প্রচলন কৃষিকাজ ও খাজনা সংগ্রহের নিমিত্তে হলেও দিনে দিনে এটা হয়ে ওঠে বাঙালির জাতীয় উৎসব। গ্রামীণ চরিত্রের এ উৎসবটি ষাটের দশকে বাঙালির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে পুষ্ট করে। তখনই ভেদাভেদের সমাজে এটি হয়ে ওঠে সর্বজনীন, গ্রামের আবহে জন্ম নিলেও শহরও এর সুধা পান করে ধন্য হতে থাকে।
পয়লা বৈশাখের আমেজ এখন শহরেই বেশি। এবং খেয়াল করার বিষয়, শহুরে মধ্যবিত্তের পাশাপাশি শহুরে শ্রমজীবী তরুণ-তরুণীরাও একে নিজেদের মতো করে আলিঙ্গন করেছে। নববর্ষকে ঘিরে দেশীয় পোশাক ও খাদ্যরুচি কেবল মর্যাদাই পায়নি, বাঙালিয়ানা জীবনধারা নতুন বেগ ও আবেগ অর্জন করেছে। পয়লা বৈশাখের এই আনন্দপ্রবাহ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক। দেশের সব মানুষ একসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কবিতার ভাষায়ই বলে উঠুক—‘এসো হে বৈশাখ।/ তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক \’
No comments