যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট শতবর্ষী জিমি কার্টার আর নেই
এতে বলা হয়, ১৯৭৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করে প্রথম বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কার্টার। তিনি ডেমোক্রেট দলের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির জন্য বেশ আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। কেননা ওই চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে কিছুটা স্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছিল। তবে অর্থনৈতিক মন্দা এবং ইরানের সঙ্গে জিম্মি সংকটের কারণে ক্রমাগত অজনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন জিমি কার্টার। ৪৪৪ দিনেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন শেষ করেন তিনি। এরপর ১৯৮০ সালে তিনি পুনরায় নির্বাচন করেন, তবে সেবার রিপাবলিকান দলের রোনাল্ড রিগ্যানের কাছে ভরাডুবি হয় তার। বিপুল ভোটে জয় পান সাবেক অভিনেতা এবং ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর রিগান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস ত্যাগ করার পর থেকে দেশটির প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় বেঁচে ছিলেন কার্টার। তিনি মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। একজন প্রেসিডেন্টের তুলনায় সাবেক হিসেবে অধিক সম্মান পেয়েছিলেন তিনি, যা সহজেই স্বীকার করতেন কার্টার।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির প্রতি সহানুভূতিশীল, নম্র এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হিসেবে প্রশংসিত কার্টারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিশ্বনেতা এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টরা। মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি তার এক্সের পোস্টে লিখেছেন, শান্তি চুক্তি অর্জনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা... ইতিহাসের পাতায় খোদাই করা থাকবে। শেষ বিদায় জানাতে অটলান্টা ও ওয়াশিংটনে জড়ো হবেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বস্তরের মানুষ। এরপর প্লেইনসে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মার্কিন শতবর্ষী এই প্রেসিডেন্ট।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কার্টার বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন। যার মধ্যে ছিল মেলানোমাও। এই রোগটি তার রক্ত এবং মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। কার্টার অতিরিক্ত চিকিৎসা হস্তক্ষেপের পরিবর্তে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে হসপিস যত্ন নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার স্ত্রী- রোজালিন কার্টার, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ৯৬ বছর বয়সে মারা যান। হুইলচেয়ারে তার স্মৃতিচারণ এবং শেষকৃত্যে যোগ দেয়ার সময় কার্টার বেশ দুর্বল ছিলেন।
কার্টার বেশ অজনপ্রিয় অবস্থায় প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়লেও মানবিক কাজের জন্য কয়েক দশক ধরে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক সংঘাতের সমাধান খুঁজে বের করা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে এগিয়ে নেয়া এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন প্রচারে নিরলস প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পান জিমি কার্টার। উল্লেখ্য, ৪ সন্তান ও ১১ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন তিনি।
No comments