ভারতে ৩১ মাওবাদীকে হত্যা
গোয়েন্দা সূত্রে কমপক্ষে ৫০ মাওবাদীর উপস্থিতির খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়েছে ভারত। এতে কমপক্ষে ৩১ মাওবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। বাস্তার এলাকায় আবুজমাদের ঘন জঙ্গল, যাকে ‘অজ্ঞাতদের পাহাড়’ হিসেবে অভিহিত করা হয়, সেটা দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদীদের শক্তঘাঁটি। রহস্যময় ওই জঙ্গলে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অভিযান চালানো অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শুক্রবার ছত্তিশগড়ের এই প্রত্যন্ত অঞ্চল পরিণত হয় সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এক এনকাউন্টারে। ওই অঞ্চলে বামধারার এই চরমপন্থিদের জন্য এটা ছিল একটি বিরাট আঘাত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। মাওবাদীদের এক মুখপাত্র বলেছেন, বড় এই অভিযানে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা কমপক্ষে ৩১ মাওবাদীকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে আছেন কমলেশ ওরফে আরকে। মাওবাদী মোস্টওয়ান্টেড আসামির মধ্যে তিনি অন্যতম। এ ছাড়া নিহত হয়েছেন নীতি ওরফে ঊর্মিলা। দান্দাকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এ দু’জনই। এর মধ্যে ৫টি রাজ্যে ওয়ান্টেড ছিলেন কমলেশ। মাওবাদী প্রপাগান্ডা মেশিন হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন ঊর্মিলা। কমলেশের মূল বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়াওয়াদায়। তিনি সিভিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটের একজন ছাত্র ছিলেন। প্রাথমিকভাবে তিনি সক্রিয় ছিলেন নর্থ বাস্তার, তেলাঙ্গানার নালগোন্ডা, বিহারের মণিপুর এবং ওড়িশার সীমান্ত অঞ্চলে। তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে ছত্তিশগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা এবং মহারাষ্ট্রে। অন্যদিকে স্পেশাল জোনাল কমিটির সদস্য ছিলেন ঊর্মিলা। তিনি বিজাপুরের গঙ্গালুরের বাসিন্দা। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা গোয়েন্দা সূত্রে খবর পায় যে, ইন্দ্রাবতী এরিয়া কমিটি এবং পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি কোম্পানি নং ৬-এর গুরুত্বপূর্ণ নেতা সহ কমপক্ষে ৫০ জন মাওবাদী একত্রিত হয়েছে। এরপরই অপারেশন চালানোর পরিকল্পনা হয়। গোয়েন্দাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল কমলেশ, ঊর্মিলা এবং নান্দু সহ বেশ কয়েকজন কমান্ডারের বিষয়ে।
এসব নেতা ওরচ্ছা এবং বারসুর পুলিশ স্টেশনের অধীনে থুলথুলি এবং নেন্দুর গ্রামের মধ্যে বিভিন্ন ঘন জঙ্গলে আত্মগোপন করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের সহযোগিতা নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড ও স্পেশাল টাস্কফোর্স যৌথ অভিযান চালায়। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা জঙ্গলের ২৫ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। এতে বিস্মিত হয়ে পড়ে মাওবাদীরা। কয়েক ঘণ্টা ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হতে থাকে। কর্মকর্তা বলেছেন, এর ফলে কমপক্ষে ৩১টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হালকা মেশিনগান, একে-৪৭, সেলফ-লোডেড রাইফেল, আইএনএসএএস রাইফেল এবং ০.৩০৩ ক্যালিবারের আগ্নেয়াস্ত্র।
No comments