ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার ‘দোয়েল’ by হিটলার এ. হালিম
মূলধন
নেই, নিজস্ব উৎপাদিত কোনও যন্ত্রাংশ নেই, এমনকী ঋণের ব্যবস্থাও নেই—
তারপরও দোয়েল ল্যাপটপ দিয়ে বাজার ধরা এবং দেশীয় শিল্প রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া
হয়েছে। (যদিও এর আগে ধারের টাকায় ল্যাপটপ তৈরি হয়েছিল)। মিনিটে একটি দোয়েল
ল্যাপটপ তৈরির সক্ষমতা থাকলেও শুরুর পর থেকেই এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার সংকট
স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
এবার সংকট কাটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ঋণ নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। জুন মাসের মধ্যে পুরোদমে উৎপাদনে গিয়ে মূল ধারায় ফিরতে চায় দোয়েল। তেমনটাই জানালেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘দোয়েলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) বাই জুন ফুললি অপারেশনাল হবে।’
প্রসঙ্গত, দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্পের জন্য কখনও মূলধন বা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এর কাছ থেকে ৪৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প শুরু হয়। পরে বিটিসিএল ঋণের অর্থ ফিরিয়ে নেয়। দোয়েল ল্যাপটপের উদ্বোধন ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে হলেও সংকটের শুরু আরও আগে থেকে। এই প্রকল্পের অংশীদার হিসেবে মালয়েশিয়ার টিএফটি (টিএফটি টেকনোলজি গ্রুপ) এবং বাংলাদেশের টুএম করপোরেশন মোট বিনিয়োগের ৭০ শতাংশ করার কথা থাকলেও বিনিয়োগ করে মাত্র ২০ শতাংশ। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান দু’টি সম্পূর্ণ টাকা বিনিয়োগ না করায় এবং সরকার থেকেও বরাদ্দ না রাখায় শুরু থেকেই সংকটের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে ল্যাপটপ প্রকল্প।
নিজেদের সক্ষমতার বিষয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দোয়েলের কারখানায় খোঁজ নিয়েছি, আমরা মিনিটে একটা করে ল্যাপটপ বানাতে পারি। এর পুরোটাই (দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প) মিসম্যানেজড ছিল। যদি দোয়েল ল্যাপটপ চলতো, তাহলে এই সমস্যা হতো না। ২০১১ সাল থেকেই দেখে আসছি একটা সমস্যা রয়েছে এতে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দোয়েল নিয়ে আশাবাদের একটা জায়গা হলো— সরকারি কেনাকাটা। এটা আমাদের জন্য বড় একটা সুবিধা। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যদি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় তাহলে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এগুলো কিনে নিতে হবে। এরই মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দোয়েল ল্যাপটপ ক্রয় করছে। এর অর্থ হলো, গভর্নমেন্ট মার্কেট আছে।’
মূলধন সংকটে ঋণ গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগই ছিল না। এখন সবকিছু নতুন করে ঠিক করা হবে। আমাদের ব্র্যান্ডটিই (দোয়েল) চালু ছিল না। আমরা এখন ব্র্যান্ডটি চালু করছি। এখন আপগ্রেডেড প্রোডাক্ট তৈরি করছি। আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হলো দোয়েলের দুর্বলতা কাটাতে হবে। দোয়েল যদি শক্তিশালীভাবে বাজারে থাকতে পারতো, তাহলে এই সমস্যা হতো না। আমাদের সক্ষমতা আছে। লোকবল আছে। অ্যাসেম্বিলি লাইনে ৮০ জন কর্মী রয়েছে। দোয়েল যদি শক্তিশালীভাবে ফিরে আসে, তাহলে নিশ্চিতভাবে আমরা ভালো ব্যবসা করতে পারবো।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘জুনের মধ্যেই আমরা আবারও উৎপাদন শুরু করবো। আমাদের হাতে এমনই গাইডলাইন রয়েছে। আমাদের হাতে এখন কোয়াড কোর প্রসের আছে, এটা দিয়ে ল্যাপটপ তৈরি হবে। ঈদের পরে আসবে কোর আই-থ্রি, কোর আই-ফাইভ, কোর আই সেভেনের ল্যাপটপ। বাজার ধরতে হলে সময়ের সঙ্গে থাকতে হবে। তা নাহলে কেন সবাই দোয়েল ল্যাপটপ কিনবে?’ তিনি জানান, ঈদের পরে ৪-৫টা মডেলের দোয়েল ল্যাপটপ আসতে পারে। যদিও মানের কারণেই দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প এক প্রকার ব্যর্থ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত। তারা বলেছেন, শুরু থেকেই দোয়েল ল্যাপটপের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘দোয়েলের ল্যাপটপ উৎপাদন বন্ধ থাকে না। যন্ত্রাংশের সংকট হলে তখন এসব পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়। এজন্য তখন উৎপাদন হয় না। এটাকে উৎপাদন বন্ধ বলা যাবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে পাওয়া যায় একই মানের ল্যাপটপের চেয়ে দোয়েল ল্যাপটপের দাম কম থাকবে। তা নাহলে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বাদ দিয়ে ক্রেতারা আমাদের ল্যাপটপ নেবে কেন। আমরা মান দিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন নো প্রফিট, নো লস— এই নীতিতে কাজ চালিয়ে যেতে চাই।’
জানা গেলো, সারাদেশে দোয়েল ল্যাপটপের মাত্র ১৭টি আউটলেট (বিক্রয় কেন্দ্র) রয়েছে। ঢাকার বাইরেরগুলোতে সাধারণত দোয়েল ল্যাপটপ বিক্রির পরবর্তী সেবা দেওয়া হয়। আর ঢাকারগুলো থেকে শুধু ল্যাপটপ বিক্রি হয়। শিগগিরই আউটলেটের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। টেশিস কর্তৃপক্ষ ডিলারও নিয়োগ করতে চলেছে। কিন্তু ডিলারদের কাছ থেকে সে ধরনের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলাররা আগ্রহী হচ্ছে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ বলে ডিলাররা বিক্রিতে কমিশন পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। টেশিস কর্তৃপক্ষ ‘ডিলাররা অন্য ল্যাপটপে যেমন কমিশন পায়, আমরাও একই পরিমাণ দেবো’ বলে আশ্বস্ত করলেও ডিলারদের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে দোয়েল ল্যাপটপ প্রাপ্তি সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এবার সংকট কাটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ঋণ নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। জুন মাসের মধ্যে পুরোদমে উৎপাদনে গিয়ে মূল ধারায় ফিরতে চায় দোয়েল। তেমনটাই জানালেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘দোয়েলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) বাই জুন ফুললি অপারেশনাল হবে।’
প্রসঙ্গত, দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্পের জন্য কখনও মূলধন বা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এর কাছ থেকে ৪৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প শুরু হয়। পরে বিটিসিএল ঋণের অর্থ ফিরিয়ে নেয়। দোয়েল ল্যাপটপের উদ্বোধন ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে হলেও সংকটের শুরু আরও আগে থেকে। এই প্রকল্পের অংশীদার হিসেবে মালয়েশিয়ার টিএফটি (টিএফটি টেকনোলজি গ্রুপ) এবং বাংলাদেশের টুএম করপোরেশন মোট বিনিয়োগের ৭০ শতাংশ করার কথা থাকলেও বিনিয়োগ করে মাত্র ২০ শতাংশ। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান দু’টি সম্পূর্ণ টাকা বিনিয়োগ না করায় এবং সরকার থেকেও বরাদ্দ না রাখায় শুরু থেকেই সংকটের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে ল্যাপটপ প্রকল্প।
নিজেদের সক্ষমতার বিষয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দোয়েলের কারখানায় খোঁজ নিয়েছি, আমরা মিনিটে একটা করে ল্যাপটপ বানাতে পারি। এর পুরোটাই (দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প) মিসম্যানেজড ছিল। যদি দোয়েল ল্যাপটপ চলতো, তাহলে এই সমস্যা হতো না। ২০১১ সাল থেকেই দেখে আসছি একটা সমস্যা রয়েছে এতে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দোয়েল নিয়ে আশাবাদের একটা জায়গা হলো— সরকারি কেনাকাটা। এটা আমাদের জন্য বড় একটা সুবিধা। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যদি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় তাহলে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এগুলো কিনে নিতে হবে। এরই মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দোয়েল ল্যাপটপ ক্রয় করছে। এর অর্থ হলো, গভর্নমেন্ট মার্কেট আছে।’
মূলধন সংকটে ঋণ গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগই ছিল না। এখন সবকিছু নতুন করে ঠিক করা হবে। আমাদের ব্র্যান্ডটিই (দোয়েল) চালু ছিল না। আমরা এখন ব্র্যান্ডটি চালু করছি। এখন আপগ্রেডেড প্রোডাক্ট তৈরি করছি। আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হলো দোয়েলের দুর্বলতা কাটাতে হবে। দোয়েল যদি শক্তিশালীভাবে বাজারে থাকতে পারতো, তাহলে এই সমস্যা হতো না। আমাদের সক্ষমতা আছে। লোকবল আছে। অ্যাসেম্বিলি লাইনে ৮০ জন কর্মী রয়েছে। দোয়েল যদি শক্তিশালীভাবে ফিরে আসে, তাহলে নিশ্চিতভাবে আমরা ভালো ব্যবসা করতে পারবো।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘জুনের মধ্যেই আমরা আবারও উৎপাদন শুরু করবো। আমাদের হাতে এমনই গাইডলাইন রয়েছে। আমাদের হাতে এখন কোয়াড কোর প্রসের আছে, এটা দিয়ে ল্যাপটপ তৈরি হবে। ঈদের পরে আসবে কোর আই-থ্রি, কোর আই-ফাইভ, কোর আই সেভেনের ল্যাপটপ। বাজার ধরতে হলে সময়ের সঙ্গে থাকতে হবে। তা নাহলে কেন সবাই দোয়েল ল্যাপটপ কিনবে?’ তিনি জানান, ঈদের পরে ৪-৫টা মডেলের দোয়েল ল্যাপটপ আসতে পারে। যদিও মানের কারণেই দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প এক প্রকার ব্যর্থ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত। তারা বলেছেন, শুরু থেকেই দোয়েল ল্যাপটপের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘দোয়েলের ল্যাপটপ উৎপাদন বন্ধ থাকে না। যন্ত্রাংশের সংকট হলে তখন এসব পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়। এজন্য তখন উৎপাদন হয় না। এটাকে উৎপাদন বন্ধ বলা যাবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে পাওয়া যায় একই মানের ল্যাপটপের চেয়ে দোয়েল ল্যাপটপের দাম কম থাকবে। তা নাহলে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বাদ দিয়ে ক্রেতারা আমাদের ল্যাপটপ নেবে কেন। আমরা মান দিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন নো প্রফিট, নো লস— এই নীতিতে কাজ চালিয়ে যেতে চাই।’
জানা গেলো, সারাদেশে দোয়েল ল্যাপটপের মাত্র ১৭টি আউটলেট (বিক্রয় কেন্দ্র) রয়েছে। ঢাকার বাইরেরগুলোতে সাধারণত দোয়েল ল্যাপটপ বিক্রির পরবর্তী সেবা দেওয়া হয়। আর ঢাকারগুলো থেকে শুধু ল্যাপটপ বিক্রি হয়। শিগগিরই আউটলেটের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। টেশিস কর্তৃপক্ষ ডিলারও নিয়োগ করতে চলেছে। কিন্তু ডিলারদের কাছ থেকে সে ধরনের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলাররা আগ্রহী হচ্ছে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ বলে ডিলাররা বিক্রিতে কমিশন পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। টেশিস কর্তৃপক্ষ ‘ডিলাররা অন্য ল্যাপটপে যেমন কমিশন পায়, আমরাও একই পরিমাণ দেবো’ বলে আশ্বস্ত করলেও ডিলারদের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে দোয়েল ল্যাপটপ প্রাপ্তি সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
No comments