খালেদা জিয়া এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে- বিএনপি
বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বলে অভিযোগ করেছেন
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। বলেছেন, বিএনপি
চেয়ারপারসন কয়েকদিন ধরে স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। শারীরিক ও
মানসিকভাবে নির্যাতন করে তাকে এক শোচনীয় পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বন্দী হওয়ার অনেক আগে থেকেই নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। একজন
বর্ষিয়ান নারীর এই নির্জন মানবেতর কারাবাস স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক
জীবনযাপনের জন্য কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে তা খালেদা জিয়ার বর্তমান গুরুতর
শারীরিক অসুস্থতায় উপলব্ধি করা যায়।
খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, দেশনেত্রীর সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জানা গেছে- ইনসুলিন ব্যবহারের পরও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ তো হচ্ছেই না, বরং তা বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে তার মুখে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্ষতের জন্য মুখে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে তিনি স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। কোনো রকমে জাউ খেয়ে জীবনধারণ করছেন। অথচ সরকার প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন। যা শুধু অমানবিকই নয়, নিষ্ঠুর মনুষ্যত্বহীন মনেরও বহিঃপ্রকাশ।
ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, কারাগারে অবস্থানকালে খালেদা জিয়া কক্ষের বাথরুমে পড়ে গিয়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছেন। নির্জন, নিঃসঙ্গ, নিরাপত্তাহীন পরিবেশের কারণে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, বিষন্নতাসহ মানসিক রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়। বিরূপ, নিপীড়নমূলক পরিবেশ ও অস্বাভাবিক মানসিক চাপের ফলে তার আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বহুগুণ বেড়েছে। মারাত্মক জীবন-বিনাশী জীবাণুর মাধ্যমে ফুসফুসের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল হয়ে উঠেছে। জাতীয় সংসদের সাবেক এই স্পিকার বলেন, ধারণা করা হয় যে- কারাগারে থাকার সময় সেখানকার পরিবেশের জন্য ভয়ংকর মাত্রার ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়ামের শূন্যতা দেখা দিয়েছে খালেদা জিয়ার। যা তার হাড়ের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এমনিতে অনেক আগে থেকেই তিনি বাম কাঁধ ও হাতের ব্যথায় ভুগতেন।
এখন সেই ব্যথা ডান কাঁধ ও হাতেও ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। তিনি এখন দুই হাতেই নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সাবেক এই স্পিকার বলেন, ‘তিনি (বেগম জিয়া) আয়েশ করে পায়েস খাচ্ছেন। তিনি অসুস্থতার নামে নাটক করছেন।’ দেশের একজন বর্ষীয়ান ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদের অসুস্থতা নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী যে ধরনের বিদ্রুপ ও রসিকতা করে আসছেন তা নজিরবিহীন। এ ধরনের দৃষ্টান্ত সভ্য দেশ ও সমাজে একেবারেই বিরল। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- বেগম জিয়ার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য একজন বন্দীর মানবাধিকারকে অবজ্ঞা করার শামিল। কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে খুশী করার জন্যই তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিষ্ঠুর রসিকতায় একটি স্বৈরাচারী সরকারের ভয়াবহ রূপটিই ফুটে ওঠে। প্রবীণ এ নেতা বলেন, সরকারের লোকজন শুরু থেকেই খালেদা জিয়ার যথাযথ সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করছে বলে দেশ ও বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে আসছেন, কিন্তু কারাগারে থাকার সময় বন্দী দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার উদ্যোগ নেয়ার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ আজও দিতে পারেনি সরকার।
খালেদা জিয়ার দীর্ঘকালীন অসুস্থতা কেবলমাত্র দীর্ঘকাল চিকিৎসায় অভিজ্ঞ ও নিয়োজিত ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরই ভালোভাবে জানা আছে। নতুন কোন চিকিৎসক দলের পক্ষে তাঁর সম্পূর্ণ শারীরিক অবস্থা এক নজরে ও এক নিমেষে অনুধাবন ও নির্ণয় করা একেবারেই অসম্ভব। খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের বিষয়ে জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, সরকারের সুচিকিৎসার দাবীকে সামপ্রতিক মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট বিন্দুমাত্র সমর্থন করছে না। এই মেডিকেল বোর্ডের লিখিত প্রতিবেদনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে শংকা ও পূর্বানুমিত ক্রমাবনতির ধারণা এখন প্রতিনিয়ত মারাত্মক অবনতির চিত্রই ক্রমাগত ফুটে উঠছে। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার যাতে চরম অবনতি না ঘটে সেজন্য তাঁকে অবশ্যই বিশেষায়িত হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানো অত্যন্ত জরুরী। তাই আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তাঁর পছন্দনীয় হাসপাতালে সুচিকিৎসার জোর দাবি জানাচ্ছি। ব্যারিস্টার জমির বলেন, প্রায় এক বছর তিন মাসের অধিক সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের একটি সাজানো মামলায় নিম্ন আদালতে সাজা দিয়ে ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে নির্জন কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, প্রতিহিংসামূলক। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও সাজা প্রদানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এর পেছনে প্রতিহিংসা কাজ করেছে। এখন দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অধিকার গ্রুপ, মানবাধিকার সংস্থা, এমনকি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সরকারগুলোর পক্ষ থেকেও বেগম জিয়ার মামলাকে সাক্ষ্য-প্রমানহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করা হয়েছে। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে নিজ দলের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার এক পর্যায়ে বলেছিলেন- বেগম জিয়া কোনদিনই কারাগার থেকে বের হবেন না। তিনি দেশে ফিরে সেটির পুঙ্খানুপুঙ্খ বাস্তবায়ন করছেন। ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে আদালত স্থানান্তরের এসআরও জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশ কিসের জন্য এবং কার জন্য করা হচ্ছে তা জনগণের বুঝতে বাকি নেই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কোন সাজাই চূড়ান্তভাবে নিস্পত্তি হয়নি। এমতাবস্থায় জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে রাখা সম্পূণরূপে সংবিধান ও মানবাধিকার পরিপন্থী। দেশ কর্তৃত্ববাদী শাসনে এক মহাশৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ হয়েছে বলেই ন্যায়বিচার নিরুদ্দেশ হয়েছে।
আর সেই কারণে অন্যায় ও অবিচারের এক চরম বহি:প্রকাশের ফলশ্রুতি হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেয়া। অশুভ উদ্দেশ্যেই কারাগারে আদালত বসানো হচ্ছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকারের একটা অংশ ষড়যন্ত্র করছে। তাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ নেয়া হচ্ছে! অপর এক প্রশ্নের জবাবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে কীভাবে কথা শোনাতে হয় সে ব্যবস্থা আমরা এক সময় করবো। এতো চিন্তা করে লাভ নেই। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্যারোল চাইবো না। তিনি অসুস্থ তার চিকিৎসা দরকার। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শিক্ষা সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, দেশনেত্রীর সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জানা গেছে- ইনসুলিন ব্যবহারের পরও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ তো হচ্ছেই না, বরং তা বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে তার মুখে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্ষতের জন্য মুখে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে তিনি স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। কোনো রকমে জাউ খেয়ে জীবনধারণ করছেন। অথচ সরকার প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন। যা শুধু অমানবিকই নয়, নিষ্ঠুর মনুষ্যত্বহীন মনেরও বহিঃপ্রকাশ।
ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, কারাগারে অবস্থানকালে খালেদা জিয়া কক্ষের বাথরুমে পড়ে গিয়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছেন। নির্জন, নিঃসঙ্গ, নিরাপত্তাহীন পরিবেশের কারণে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, বিষন্নতাসহ মানসিক রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়। বিরূপ, নিপীড়নমূলক পরিবেশ ও অস্বাভাবিক মানসিক চাপের ফলে তার আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বহুগুণ বেড়েছে। মারাত্মক জীবন-বিনাশী জীবাণুর মাধ্যমে ফুসফুসের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল হয়ে উঠেছে। জাতীয় সংসদের সাবেক এই স্পিকার বলেন, ধারণা করা হয় যে- কারাগারে থাকার সময় সেখানকার পরিবেশের জন্য ভয়ংকর মাত্রার ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়ামের শূন্যতা দেখা দিয়েছে খালেদা জিয়ার। যা তার হাড়ের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এমনিতে অনেক আগে থেকেই তিনি বাম কাঁধ ও হাতের ব্যথায় ভুগতেন।
এখন সেই ব্যথা ডান কাঁধ ও হাতেও ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। তিনি এখন দুই হাতেই নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সাবেক এই স্পিকার বলেন, ‘তিনি (বেগম জিয়া) আয়েশ করে পায়েস খাচ্ছেন। তিনি অসুস্থতার নামে নাটক করছেন।’ দেশের একজন বর্ষীয়ান ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদের অসুস্থতা নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী যে ধরনের বিদ্রুপ ও রসিকতা করে আসছেন তা নজিরবিহীন। এ ধরনের দৃষ্টান্ত সভ্য দেশ ও সমাজে একেবারেই বিরল। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- বেগম জিয়ার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য একজন বন্দীর মানবাধিকারকে অবজ্ঞা করার শামিল। কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে খুশী করার জন্যই তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিষ্ঠুর রসিকতায় একটি স্বৈরাচারী সরকারের ভয়াবহ রূপটিই ফুটে ওঠে। প্রবীণ এ নেতা বলেন, সরকারের লোকজন শুরু থেকেই খালেদা জিয়ার যথাযথ সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করছে বলে দেশ ও বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে আসছেন, কিন্তু কারাগারে থাকার সময় বন্দী দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার উদ্যোগ নেয়ার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ আজও দিতে পারেনি সরকার।
খালেদা জিয়ার দীর্ঘকালীন অসুস্থতা কেবলমাত্র দীর্ঘকাল চিকিৎসায় অভিজ্ঞ ও নিয়োজিত ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরই ভালোভাবে জানা আছে। নতুন কোন চিকিৎসক দলের পক্ষে তাঁর সম্পূর্ণ শারীরিক অবস্থা এক নজরে ও এক নিমেষে অনুধাবন ও নির্ণয় করা একেবারেই অসম্ভব। খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের বিষয়ে জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, সরকারের সুচিকিৎসার দাবীকে সামপ্রতিক মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট বিন্দুমাত্র সমর্থন করছে না। এই মেডিকেল বোর্ডের লিখিত প্রতিবেদনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে শংকা ও পূর্বানুমিত ক্রমাবনতির ধারণা এখন প্রতিনিয়ত মারাত্মক অবনতির চিত্রই ক্রমাগত ফুটে উঠছে। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার যাতে চরম অবনতি না ঘটে সেজন্য তাঁকে অবশ্যই বিশেষায়িত হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানো অত্যন্ত জরুরী। তাই আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তাঁর পছন্দনীয় হাসপাতালে সুচিকিৎসার জোর দাবি জানাচ্ছি। ব্যারিস্টার জমির বলেন, প্রায় এক বছর তিন মাসের অধিক সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের একটি সাজানো মামলায় নিম্ন আদালতে সাজা দিয়ে ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে নির্জন কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, প্রতিহিংসামূলক। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও সাজা প্রদানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এর পেছনে প্রতিহিংসা কাজ করেছে। এখন দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অধিকার গ্রুপ, মানবাধিকার সংস্থা, এমনকি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সরকারগুলোর পক্ষ থেকেও বেগম জিয়ার মামলাকে সাক্ষ্য-প্রমানহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করা হয়েছে। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে নিজ দলের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার এক পর্যায়ে বলেছিলেন- বেগম জিয়া কোনদিনই কারাগার থেকে বের হবেন না। তিনি দেশে ফিরে সেটির পুঙ্খানুপুঙ্খ বাস্তবায়ন করছেন। ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে আদালত স্থানান্তরের এসআরও জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশ কিসের জন্য এবং কার জন্য করা হচ্ছে তা জনগণের বুঝতে বাকি নেই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কোন সাজাই চূড়ান্তভাবে নিস্পত্তি হয়নি। এমতাবস্থায় জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে রাখা সম্পূণরূপে সংবিধান ও মানবাধিকার পরিপন্থী। দেশ কর্তৃত্ববাদী শাসনে এক মহাশৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ হয়েছে বলেই ন্যায়বিচার নিরুদ্দেশ হয়েছে।
আর সেই কারণে অন্যায় ও অবিচারের এক চরম বহি:প্রকাশের ফলশ্রুতি হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেয়া। অশুভ উদ্দেশ্যেই কারাগারে আদালত বসানো হচ্ছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকারের একটা অংশ ষড়যন্ত্র করছে। তাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ নেয়া হচ্ছে! অপর এক প্রশ্নের জবাবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে কীভাবে কথা শোনাতে হয় সে ব্যবস্থা আমরা এক সময় করবো। এতো চিন্তা করে লাভ নেই। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্যারোল চাইবো না। তিনি অসুস্থ তার চিকিৎসা দরকার। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শিক্ষা সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উপস্থিত ছিলেন।
No comments