ভূমি দিবসের বিক্ষোভে উত্তাল গাজা, ইসরায়েলি গুলিতে নিহত ১০
অবরুদ্ধ
গাজা উপত্যকায় ভূমি দিবস উপলক্ষে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন
হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। শুক্রবার গাজার ইসরায়েল সীমান্তের ছয়টি স্থানে এই
বিক্ষোভ হয়। উত্তাল বিক্ষোভ ও তা দমনে ইসরায়েলি বাহিনীর কঠোর অবস্থানের
কারণে গাজা উপত্যকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ নামের
এই বিক্ষোভ চলাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল আহতের সংখ্যা সহস্রাধিক বলে
জানিয়েছে।
১৯৭৬ সাল থেকে বছরের ৩০শে মার্চ ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ‘ভূমি দিবস’ পালন করছে। ওইদিন নিজেদের মাতৃভূমির দখল ঠেকাতে বিক্ষোভে নামলে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তাদের স্মরণে ওই বছর থেকেই ভূমি দিবস পালন করে আসছেন ফিলিস্তিনিরা। ২০০৭ সাল থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। এবছর ওই দিনটি স্মরণে বিশাল বিক্ষোভের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবে।
দ্য গ্রেট রিটার্ন মার্চ’ নামে এই বিক্ষোভটি প্রতি বছর আয়োজিত হলেও এবার এতে ভিন্নতা রয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাস আন্দোলনসহ ফিলিস্তিনিদের বেশ কয়েকটি উপদল এ প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
১৯৭৬ সাল থেকে বছরের ৩০শে মার্চ ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ‘ভূমি দিবস’ পালন করছে। ওইদিন নিজেদের মাতৃভূমির দখল ঠেকাতে বিক্ষোভে নামলে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তাদের স্মরণে ওই বছর থেকেই ভূমি দিবস পালন করে আসছেন ফিলিস্তিনিরা। ২০০৭ সাল থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। এবছর ওই দিনটি স্মরণে বিশাল বিক্ষোভের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবে।
দ্য গ্রেট রিটার্ন মার্চ’ নামে এই বিক্ষোভটি প্রতি বছর আয়োজিত হলেও এবার এতে ভিন্নতা রয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাস আন্দোলনসহ ফিলিস্তিনিদের বেশ কয়েকটি উপদল এ প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম, বিবিসি ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, এবার গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের অন্তত ছয়টি স্থানকে বিক্ষোভের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের বিক্ষোভে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হামাসসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ অংশ নেবে। বিক্ষোভ দমনে বড় ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরায়েলও। গাজা সীমান্তে শতাধিক শার্প শুটার (লক্ষ্যভেদ করতে দক্ষ সেনা) মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার।
বিক্ষোভের শুরুর দিন শুক্রবার সকালেই খান ইউনিস শহরে এক ফিলিস্তিনি কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। আরকে ব্যক্তি ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলায় আহত হয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিক্ষোভের সময় আরেক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সংবাদমাধ্যম।
হামাস পরিচালিত আল-আকসা টিভি জানিয়েছে, ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলায় ওমর ওয়াহিদ সামুর (২৭) নিহত হয়েছেন। দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন জাবিয়া এলাকায়। নিহতের নাম মোহাম্মদ কামাল (২৫) বলে জানিয়েছে গাজার হাসপাতাল সূত্র। তৃতীয় নিহত ফিলিস্তিনির নাম আমিন মাহমুদ মুয়ামার। মান বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, রাফায় সংঘর্ষে মুয়ামার মৃত্যু হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহত চতুর্থ ফিলিস্তিনির নাম মোহাম্মদ আবু ওমর।
গাজা উপত্যকার পূর্বাঞ্চলে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ দিনের পর দিন দেখিয়ে দিয়েছেন তারা বড় ধরনের কিছু করার জন্য উদ্যোগ নিতে পারেন। পুরো ফিলিস্তিনকে ফিরে পাওয়ার পদক্ষেপের সূচনা এই মিছিল।
হামাস নেতা জানান, পুরো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ফেরত পাওয়ার আগ পর্যন্ত ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের কোনও সমাধান তারা মানবেন না এবং সমঝোতায় রাজি হবেন না। তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ ইসরায়েলি দখল ও অবরোধের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণ যে ঐক্যবদ্ধ তা প্রমাণ করেছে। যে কোনও ধরনের সন্দেহজনক চুক্তি ও সমঝোতা রুখে দাঁড়াবে এই ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিনিরা।
বিক্ষোভ দমনে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সীমান্ত বেস্টনির কাছাকাছি এলাকাকে সংরক্ষিত সামরিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অন্তত ১৪ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী।
এদিকে, পৃথক ঘটনায় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে দুজনকে গুলি করেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাবালিয়া, রাফাহ ও গাজা উপত্যকায় গুলিতে তিন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগডোর লিয়েবারম্যান গাজাবাসীদের প্রতি টুইটারে আরবিতে হুমকি দিয়েছেন এবং হামাসের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। বিক্ষোভের আগে শুক্রবার সকালে তিনি লিখেছেন, গাজার নেতৃত্ব আপনাদের জীবন নিয়ে খেলছে। যারা সীমান্তের কাছাকাছি আসবে তারা জীবনের ঝুঁকি নেবে। আমার পরামর্শ হলো নিজেদের জীবন রক্ষা করুণ এবং উসকানিতে পা দেবেন না।
ফিলিস্তিনিদের ওপর তাজা গুলি করার সরাসরি নিদের্শনা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল গাদি আইজেনকোট বলেছেন, আমরা গাজা উপত্যকায় সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করছি। যে কোনও ধরনের নাশকতা এড়াতে সেনারা প্রস্তুত থাকবে।’
হামাসের প্রায় এক লাখ সক্রিয় সমর্থক এবারের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করতে পারেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে হামাস নেতাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভে চরম কিছু করা হলে হামাস নেতাদের হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র অভিচায় আদারি। তিনি বলেন, ‘আমরা নারী ও শিশুদের পেছনে হামাস নেতাদের লুকিয়ে থাকতে দেব না। প্রয়োজনে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
ইসরায়েলি হুমকির জবাবে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা খলিল আল হায়ায় বলেন, ফিলিস্তিনির ইসরায়েলি হুমকিতে ভীত নয়। তারা ইসরায়েলি সীমান্ত লক্ষ্যে পদযাত্রা করবেই।
No comments