কেন এই সামাজিক নিষ্ঠুরতা by কাজী সাইফুল ইসলাম
অসৎ
উপার্জন চিরকালই মানুষের শত্র“। এ ব্যাপারটা আবারও কঠিনভাবে প্রমাণ হল
ঐশীর ঘটনার মধ্য দিয়ে। ভাবা যায়, একটি মেয়ে নিজের বাবা-মা দু’জনকেই খুন
করেছে! এর চেয়ে নিষ্ঠুর কাজ আর হয় না। একজন পেশাদার খুনি, যে একশ’জন মানুষ
খুন করেছে, তাকেও যদি বলা হয় নিজের বাবা ও গর্ভধারিণী মাকে খুন করতে হবে,
তাহলে সেও হয়তো ভয়ে সঙ্কুচিত হবে। আমার কাছে মনে হয়, নিজের বাবা-মাকে খুন
করার চেয়ে নিজের গলায় দড়ি লাগিয়ে ঝুলে পড়া অনেক সহজ। অথচ কত সহজেই
বাবা-মাকে খুন করতে পেরেছে ঐশী। এর কারণ কী? একটি মেয়ে তার বাবা-মাকে
পরিকল্পিতভাবে খুন করল, এজন্য শুধুই কি মেয়েটা দায়ী? তার দোষ থাকলেও কতটা?
বাবা-মায়ের কি কোনোই দোষ নেই? মানুষ বলে তালগাছে তাল আর বেলগাছে বেলই ধরে।
এই পুরনো কথাটা যদি মূল্যহীনও মনে করি, তাহলেও কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে
যাবে? যদি সমাধান হয়ই, তাহলে ঐশীর মতো এইটুকু মেয়ে এমন কাজ কী করে করতে
পারল?
আমরা দিন দিন গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি। এ সত্য কথাটা উপলব্ধি করার অবসর কি আমাদের আছে? যদি না থাকে তাহলে বলব, এখনই ভেবে দেখার সময়। প্রত্যেক বাবা-মাকেই ভাবতে হবে। যেসব বাবা-মা নিজেদের বিবেকবুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে বোধহীন মানুষের মতো অর্থ আর প্রতিপত্তির পেছনে ছুটছেন, তারা কি একবারও ভাবেন, তাদের এই টাকা কোন কাজে লাগবে? বাস্তবতা বলে, তাদের এই টাকা-পয়সা ছেলেমেয়েদের অহঙ্কারী, উচ্ছৃঙ্খল, নেশাগ্রস্ত আর অসামাজিক করার ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখছে। টাকা দিয়ে যদি মানুষকে সভ্য আর মেধাবী করার সুযোগ থাকত, তাহলে পৃথিবীর সব বুর্জোয়ার ছেলেমেয়েই ‘সেরা’ হতো। সভ্য আর ক্রিয়েটিভ কাজগুলো তারাই করত। তবে একজন ভালো ছাত্রের চেয়ে ভালো একজন মানুষ এদেশের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। সবার কথা বলছি না, তবে বেশিরভাগ ভালো ছাত্রই দেশের বারোটা বাজিয়ে দিতে বড় বড় কর্মকর্তা হয়েছেন, যাদের এতটুকু খেয়াল নেই দেশের বারোটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরও বারোটা বেজে যাচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই একটি ধারা চালু রয়েছে। ১৮ বছর বয়সের পর সন্তানের দায়িত্ব আর বাবা-মায়ের থাকে না। কিন্তু ১৮ বছর বয়সে তাদের লেখাপড়া শেষ হয় না। তাই কাজ করে নিজের পড়ার খরচ চালাতে হয়। একবার এক বইয়ে পড়েছিলাম, এক ইউরোপীয় যুবককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তোমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পাসের হার প্রায় শতভাগ হয় কিভাবে? যুবকটি উত্তর দিয়েছিল, কারণ আমাদের পড়ালেখার খরচ আমাদেরই জোগাড় করতে হয়। যদি কোনো সেমিস্টার খারাপ হয়, তাহলে পরের বছর সেই সেমিস্টার দিতে দ্বিগুণ টাকা লাগে। তাই সবাইকেই লেখাপড়া করতে হয়। ব্যতিক্রম থাকবেই। এখনও সমাজে যারা সৎভাবে জীবনযাপন করছে তাদের ছেলেমেয়েদের সামাজিক অবস্থা আর যেসব মানুষ অসৎ জীবনযাপন করছে তাদের ছেলেমেয়েদের সামাজিক অবস্থান কী লক্ষ্য করুন। সুকান্তের সেই ‘আঠারো বছর বয়স’ কবিতার কথা মনে পড়ে। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সে অসম্ভব ঝুঁকিতে থাকে প্রতিটি ছেলেমেয়ে। এ বয়সটা বিবেচনায় রেখে তাদের সুন্দর পথ দেখানোর দায়িত্ব কার। নিশ্চয়ই বাবা-মায়ের। আর বাবা-মাই যদি সন্তানের দিকে কোনো রকম খেয়াল না রেখে বৈধ-অবৈধ টাকার গরমে হাওয়ায় ভাসে, তাহলে ঐশীরা কতটুকু দোষী?
মাঝে মাঝে একটি কথা ভাবি। আমাদের দেশের বাবা-মায়েরা বিনা প্রশিক্ষণে সন্তান জন্মদান করেন। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, সন্তান জন্ম দেব, তার জন্য আবার প্রশিক্ষণের কী আছে? আসলে প্রশিক্ষণটা হচ্ছে, সন্তান জন্ম দেয়ার পর সন্তানকে কিভাবে মানুষ করে গড়ে তুলতে হয় তার ট্রেনিং। এ রকম সামাজিক প্রশিক্ষণ সেন্টার থাকলে অন্তত বাবা-মায়েরা এতটা নির্বোধ হতেন না। শুধু কি ছেলেমেয়ে জন্ম দিলেই বাবা-মা হওয়া যায়? তাহলে যাদের আমরা পথের শিশু বলে ডাকছি, তাদের বাবা-মা কোথায়? তারা তো আর আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো টুপটাপ করে মাটিতে নেমে আসেনি। এ কারণে অবশ্যই সন্তানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে প্রত্যেক পিতামাতাকে। এমন একটা বয়স কিন্তু সবারই থাকে, যে বয়সে সবকিছুই ভালো লাগে। ভালো-মন্দ সবকিছুতেই আগ্রহ খুব বেশি। ঠিক সেই বয়সে ঐশীদের যে পথে চালানো হবে, তারা সে পথেই চলবে। ঐশীরা শুধু নেশা করে না, বাবা-মাকে হত্যা করে না; তারা দেশের জন্য, মানুষের জন্য ভালো ভালো কাজ করে পৃথিবীকে চমকে দিচ্ছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদান রাখছে।
যে কোনো নিষ্ঠুর কাজকেই ঘৃণা করা উচিত। কোনো ধরনের নিষ্ঠুরতাই সমাজের মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। আমি ঐশীদের পক্ষে কথা বলছি না। আমি বলছি, মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলাই সমাধান নয়। ক’টা মাথাইবা কেটে ফেলা সম্ভব! তার চেয়ে মাথাব্যথার কোনো ওষুধ আবিষ্কার করাই কি ভালো নয়?
এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানের বেতন কত ছিল জানি না। তবে বুঝতে পারি, যে পরিমাণ টাকা তিনি তার পরিবারের পেছনে খরচ করতেন, তার সিকিভাগও বেতন থেকে আসত না। শোনা যায়, তার ওইটুকু মেয়েকে সপ্তাহে ১ লাখ টাকা হাত খরচ দিতেন তিনি। ঐশীর মতো বয়সী যদি কোনো মেয়ে বা ছেলে বাবা-মায়ের কাছ থেকে সপ্তাহে ১ লাখ টাকা হাত খরচ পায়, তাহলে সে ওই টাকা দিয়ে ভালো কিছু করবে নাকি খারাপ কাজ করবে? ভাবা যায়, একজন সরকারি কর্মকর্তা শুধু তার তরুণী মেয়েকে হাত খরচের জন্যই দেন সপ্তাহে ১ লাখ টাকা! মাসে চার লাখ! তাহলে সব মিলিয়ে তার মাসিক খরচ কত?
এর আগে, ৬ জুন ‘পুলিশের সেবাধর্ম কতদিন প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে?’ শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলাম যুগান্তরে। সেখানে উল্লেখ ছিল, ডিবি কর্মকর্তা বলেছিল এক কোটি টাকার নিচে সে ঘুষ খায় না। বিশাল গৌরবের কথা! এ ধরনের ঘুষখোরদের ছেলেমেয়েরা তো ঐশীর মতোই হবে, যতদিন তারা নিজেরা তাদের ভুলগুলো সুধরে নিতে না পারবে। সত্য দিয়েই সুন্দর কিছু গড়া সম্ভব। আর মিথ্যা দিয়ে রচনা হয় পাপ। আমি যদি সারাজীবন ধরে পাপ করতে থাকি আর চাই সুন্দর কিছু, তা কি সম্ভব?
এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান যে তার মেয়েকে এত টাকা হাত খরচ দিতেন, সেই টাকার জোগাড় তিনি কী করে করতেন? আরও প্রশ্ন হল, গোটা দেশে কি এই একজনই মাহফুজুর রহমান ছিলেন? আর কেউ নেই? অবশ্যই আছে। তাদের কি এখনও চোখ খুলে সমাজের বাস্তব রূপটা দেখার সময় হয়নি? কতকাল আর চোখের সামনে কালো কাপড় ঝুলিয়ে রাখবে তারা? যদি রাখে, তার জন্য তাকেও খেসারত দিতে হবে। দেশে সামাজিক নিষ্ঠুরতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এ নিষ্ঠুরতা সমাজ থেকে দূর করতে হলে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকেই। সমাজ বা রাষ্ট্রের ওপর ভরসা করে বসে থাকার অর্থ অন্ধকারে বসে থাকে। কারণ এসব সামাজিক নিষ্ঠুরতার জন্য দায়ী পরিবার। তাই পরিবারকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে।
কাজী সাইফুল ইসলাম : প্রাবন্ধিক
আমরা দিন দিন গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি। এ সত্য কথাটা উপলব্ধি করার অবসর কি আমাদের আছে? যদি না থাকে তাহলে বলব, এখনই ভেবে দেখার সময়। প্রত্যেক বাবা-মাকেই ভাবতে হবে। যেসব বাবা-মা নিজেদের বিবেকবুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে বোধহীন মানুষের মতো অর্থ আর প্রতিপত্তির পেছনে ছুটছেন, তারা কি একবারও ভাবেন, তাদের এই টাকা কোন কাজে লাগবে? বাস্তবতা বলে, তাদের এই টাকা-পয়সা ছেলেমেয়েদের অহঙ্কারী, উচ্ছৃঙ্খল, নেশাগ্রস্ত আর অসামাজিক করার ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখছে। টাকা দিয়ে যদি মানুষকে সভ্য আর মেধাবী করার সুযোগ থাকত, তাহলে পৃথিবীর সব বুর্জোয়ার ছেলেমেয়েই ‘সেরা’ হতো। সভ্য আর ক্রিয়েটিভ কাজগুলো তারাই করত। তবে একজন ভালো ছাত্রের চেয়ে ভালো একজন মানুষ এদেশের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। সবার কথা বলছি না, তবে বেশিরভাগ ভালো ছাত্রই দেশের বারোটা বাজিয়ে দিতে বড় বড় কর্মকর্তা হয়েছেন, যাদের এতটুকু খেয়াল নেই দেশের বারোটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরও বারোটা বেজে যাচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই একটি ধারা চালু রয়েছে। ১৮ বছর বয়সের পর সন্তানের দায়িত্ব আর বাবা-মায়ের থাকে না। কিন্তু ১৮ বছর বয়সে তাদের লেখাপড়া শেষ হয় না। তাই কাজ করে নিজের পড়ার খরচ চালাতে হয়। একবার এক বইয়ে পড়েছিলাম, এক ইউরোপীয় যুবককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তোমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পাসের হার প্রায় শতভাগ হয় কিভাবে? যুবকটি উত্তর দিয়েছিল, কারণ আমাদের পড়ালেখার খরচ আমাদেরই জোগাড় করতে হয়। যদি কোনো সেমিস্টার খারাপ হয়, তাহলে পরের বছর সেই সেমিস্টার দিতে দ্বিগুণ টাকা লাগে। তাই সবাইকেই লেখাপড়া করতে হয়। ব্যতিক্রম থাকবেই। এখনও সমাজে যারা সৎভাবে জীবনযাপন করছে তাদের ছেলেমেয়েদের সামাজিক অবস্থা আর যেসব মানুষ অসৎ জীবনযাপন করছে তাদের ছেলেমেয়েদের সামাজিক অবস্থান কী লক্ষ্য করুন। সুকান্তের সেই ‘আঠারো বছর বয়স’ কবিতার কথা মনে পড়ে। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সে অসম্ভব ঝুঁকিতে থাকে প্রতিটি ছেলেমেয়ে। এ বয়সটা বিবেচনায় রেখে তাদের সুন্দর পথ দেখানোর দায়িত্ব কার। নিশ্চয়ই বাবা-মায়ের। আর বাবা-মাই যদি সন্তানের দিকে কোনো রকম খেয়াল না রেখে বৈধ-অবৈধ টাকার গরমে হাওয়ায় ভাসে, তাহলে ঐশীরা কতটুকু দোষী?
মাঝে মাঝে একটি কথা ভাবি। আমাদের দেশের বাবা-মায়েরা বিনা প্রশিক্ষণে সন্তান জন্মদান করেন। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, সন্তান জন্ম দেব, তার জন্য আবার প্রশিক্ষণের কী আছে? আসলে প্রশিক্ষণটা হচ্ছে, সন্তান জন্ম দেয়ার পর সন্তানকে কিভাবে মানুষ করে গড়ে তুলতে হয় তার ট্রেনিং। এ রকম সামাজিক প্রশিক্ষণ সেন্টার থাকলে অন্তত বাবা-মায়েরা এতটা নির্বোধ হতেন না। শুধু কি ছেলেমেয়ে জন্ম দিলেই বাবা-মা হওয়া যায়? তাহলে যাদের আমরা পথের শিশু বলে ডাকছি, তাদের বাবা-মা কোথায়? তারা তো আর আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো টুপটাপ করে মাটিতে নেমে আসেনি। এ কারণে অবশ্যই সন্তানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে প্রত্যেক পিতামাতাকে। এমন একটা বয়স কিন্তু সবারই থাকে, যে বয়সে সবকিছুই ভালো লাগে। ভালো-মন্দ সবকিছুতেই আগ্রহ খুব বেশি। ঠিক সেই বয়সে ঐশীদের যে পথে চালানো হবে, তারা সে পথেই চলবে। ঐশীরা শুধু নেশা করে না, বাবা-মাকে হত্যা করে না; তারা দেশের জন্য, মানুষের জন্য ভালো ভালো কাজ করে পৃথিবীকে চমকে দিচ্ছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদান রাখছে।
যে কোনো নিষ্ঠুর কাজকেই ঘৃণা করা উচিত। কোনো ধরনের নিষ্ঠুরতাই সমাজের মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। আমি ঐশীদের পক্ষে কথা বলছি না। আমি বলছি, মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলাই সমাধান নয়। ক’টা মাথাইবা কেটে ফেলা সম্ভব! তার চেয়ে মাথাব্যথার কোনো ওষুধ আবিষ্কার করাই কি ভালো নয়?
এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানের বেতন কত ছিল জানি না। তবে বুঝতে পারি, যে পরিমাণ টাকা তিনি তার পরিবারের পেছনে খরচ করতেন, তার সিকিভাগও বেতন থেকে আসত না। শোনা যায়, তার ওইটুকু মেয়েকে সপ্তাহে ১ লাখ টাকা হাত খরচ দিতেন তিনি। ঐশীর মতো বয়সী যদি কোনো মেয়ে বা ছেলে বাবা-মায়ের কাছ থেকে সপ্তাহে ১ লাখ টাকা হাত খরচ পায়, তাহলে সে ওই টাকা দিয়ে ভালো কিছু করবে নাকি খারাপ কাজ করবে? ভাবা যায়, একজন সরকারি কর্মকর্তা শুধু তার তরুণী মেয়েকে হাত খরচের জন্যই দেন সপ্তাহে ১ লাখ টাকা! মাসে চার লাখ! তাহলে সব মিলিয়ে তার মাসিক খরচ কত?
এর আগে, ৬ জুন ‘পুলিশের সেবাধর্ম কতদিন প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে?’ শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলাম যুগান্তরে। সেখানে উল্লেখ ছিল, ডিবি কর্মকর্তা বলেছিল এক কোটি টাকার নিচে সে ঘুষ খায় না। বিশাল গৌরবের কথা! এ ধরনের ঘুষখোরদের ছেলেমেয়েরা তো ঐশীর মতোই হবে, যতদিন তারা নিজেরা তাদের ভুলগুলো সুধরে নিতে না পারবে। সত্য দিয়েই সুন্দর কিছু গড়া সম্ভব। আর মিথ্যা দিয়ে রচনা হয় পাপ। আমি যদি সারাজীবন ধরে পাপ করতে থাকি আর চাই সুন্দর কিছু, তা কি সম্ভব?
এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান যে তার মেয়েকে এত টাকা হাত খরচ দিতেন, সেই টাকার জোগাড় তিনি কী করে করতেন? আরও প্রশ্ন হল, গোটা দেশে কি এই একজনই মাহফুজুর রহমান ছিলেন? আর কেউ নেই? অবশ্যই আছে। তাদের কি এখনও চোখ খুলে সমাজের বাস্তব রূপটা দেখার সময় হয়নি? কতকাল আর চোখের সামনে কালো কাপড় ঝুলিয়ে রাখবে তারা? যদি রাখে, তার জন্য তাকেও খেসারত দিতে হবে। দেশে সামাজিক নিষ্ঠুরতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এ নিষ্ঠুরতা সমাজ থেকে দূর করতে হলে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকেই। সমাজ বা রাষ্ট্রের ওপর ভরসা করে বসে থাকার অর্থ অন্ধকারে বসে থাকে। কারণ এসব সামাজিক নিষ্ঠুরতার জন্য দায়ী পরিবার। তাই পরিবারকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে।
কাজী সাইফুল ইসলাম : প্রাবন্ধিক
No comments