এই বিশ্বকাপ বদলে যাওয়ারও
বিশ্বকাপ একসময় শুধু ইউরোপ আর আমেরিকা মহাদেশেই হয়েছে। ২০০২ সালে প্রথম এশিয়ায় হলো। এবার আফ্রিকায়। এই বিশ্বকাপ কিছু প্রচলিত ধারণার ভিত্তিমূলে আঘাত করেছে। প্রথমত, আফ্রিকা প্রমাণ করে দিয়েছে, এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনে তারা সফল। আর পুরো ফুটবলবিশ্বও আফ্রিকাকে সাদরে বরণ করে নিয়েছে। দ্বিতীয়ত, এবার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে স্পেন আর হল্যান্ড, যারা কখনোই শিরোপা জেতেনি। এই বিশ্বকাপ নতুন চ্যাম্পিয়ন উপহার দিয়ে আরও অনেককে শিরোপার স্বপ্ন দেখার সাহস জুগিয়েছে। তৃতীয়ত, এই বিশ্বকাপ ফেবারিটের প্রথাগত ধারণা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ফুটবল এখন পাল্টাচ্ছে। উঠে আসছে অনেক দল। খেলাটার জন্য এটা সুখবর।
চিরাচরিতভাবে আফ্রিকান দলগুলো বেশি গতি আর শক্তি নিয়ে খেলে। কিন্তু আফ্রিকান খেলোয়াড়েরা এখন ইউরোপের অনেক সেরা ক্লাবে খেলে বলে টেকনিক আর ট্যাকটিকের দিক দিয়ে তাদের খেলায়ও সেই পরিবর্তনের ধারা টের পাওয়া যাচ্ছে। এবার ঘানা অনেক ভালো করেছে। মন থেকেই বলছি, ওদের আরও সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। সেদিন আর বেশি দূরে নেই, যেদিন আফ্রিকার কোনো দেশ জিতবে বিশ্বকাপ। আরও ঘন ঘন এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের অধিকারও পেল আফ্রিকা।
এশিয়ার দেশগুলোও, বিশেষ করে, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া এবার ভালো খেলেছে। ওদের ওয়ান-টাচ পাস-অ্যান্ড-মুভ ফুটবল দৃষ্টিসুখকর। আমেরিকার দলগুলোও ভালো খেলেছে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডও। আবার ইউরোপের বড় শক্তিগুলো কিন্তু ব্যর্থও হয়েছে নিজেদের সুনামের প্রতি সুবিচার করতে। ইংল্যান্ড তো মোটেও ভালো খেলেনি। ফ্রান্স-ইতালি বিদায় নিল গ্রুপ পর্বেই। দক্ষিণ আমেরিকার পরাশক্তি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাও তো তাদের খুদে প্রতিবেশী উরুগুয়ের ঔজ্জ্বল্যে ম্লান। বিশ্বকাপে এবার আগের তুলনায় অনেক বেশি সমশক্তির লড়াই হয়েছে। ভবিষ্যদ্বাণী করতে তাই অক্টোপাসের অতিপ্রাকৃত ক্ষমতারও প্রয়োজন পড়েছে!
দুই তরুণ দল স্পেন ও জার্মানি এবার প্রথম আর তৃতীয় হয়েছে। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে এরা আরও ভালো আর শক্তিশালী হয়েই অংশ নেবে। ফ্রান্স, ইংল্যান্ড আর ইতালি দলটাও এখন তরুণদের নিয়ে নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। আফ্রিকা, এশিয়া আর আমেরিকার দলগুলো আরও ভালো করবে বলে আশা করছি। এও প্রার্থনা করছি, দুঙ্গা অধ্যায়ের সমাপ্তি হওয়ায় ব্রাজিল তাদের পুরোনো ছন্দময় আক্রমণাত্মক ফুটবলে ফিরে যাবে।
একজন জার্মান হিসেবে আমার কাছে ২০১০ বিশ্বকাপ স্মরণীয় হয়ে থাকবে অবশ্যই। ওজিল আর মুলারের মতো তরুণ খেলোয়াড়েরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের তুলে ধরেছে। এই দলটা এখন এমন একটা ধরন আর ছকে খেলে, যেটি ফলদায়ক তো বটেই, দেখলেও চোখ জুড়িয়ে যায়। ল্যাম্পার্ডের সেই গোলের পর ১৯৬৬-র ভূত নিশ্চয়ই এখন তৃপ্তির সঙ্গে বিশ্রাম নেবে।
স্পেন যোগ্যতর দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ম্যাটাডোরদের সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেই তারা লড়াই করেছে। খেলার মধ্যে ছিল স্টাইল, প্যাশন; পাসিং আর মুভমেন্ট। নিজেদের সেরাটা না খেলেই ওরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেরাটা না খেলেও জেতা সব গ্রেট দলের বৈশিষ্ট্য। মাঠে কী হয়েছে, সব ভুলে গিয়ে হল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা যে চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে গার্ড অব অনার দিল, এই দৃশ্যও আমার মন ছুঁয়ে গেছে। বুকের মধ্যে জগদ্দল পাথর হয়ে চেপে বসা কষ্ট ভুলে দাঁড়িয়ে হাততালি দেওয়ার শক্তিই বা কজনের থাকে!
অনেক দিক দিয়েই আফ্রিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় হবে, শেষ পর্যন্ত সুন্দর ফুটবল জয়ী হওয়ায়। আগামী চার বছরে ফুটবল কীভাবে এগোয়, কতটা বদলায়, সেটাই এখন দেখার।
চিরাচরিতভাবে আফ্রিকান দলগুলো বেশি গতি আর শক্তি নিয়ে খেলে। কিন্তু আফ্রিকান খেলোয়াড়েরা এখন ইউরোপের অনেক সেরা ক্লাবে খেলে বলে টেকনিক আর ট্যাকটিকের দিক দিয়ে তাদের খেলায়ও সেই পরিবর্তনের ধারা টের পাওয়া যাচ্ছে। এবার ঘানা অনেক ভালো করেছে। মন থেকেই বলছি, ওদের আরও সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। সেদিন আর বেশি দূরে নেই, যেদিন আফ্রিকার কোনো দেশ জিতবে বিশ্বকাপ। আরও ঘন ঘন এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের অধিকারও পেল আফ্রিকা।
এশিয়ার দেশগুলোও, বিশেষ করে, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া এবার ভালো খেলেছে। ওদের ওয়ান-টাচ পাস-অ্যান্ড-মুভ ফুটবল দৃষ্টিসুখকর। আমেরিকার দলগুলোও ভালো খেলেছে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডও। আবার ইউরোপের বড় শক্তিগুলো কিন্তু ব্যর্থও হয়েছে নিজেদের সুনামের প্রতি সুবিচার করতে। ইংল্যান্ড তো মোটেও ভালো খেলেনি। ফ্রান্স-ইতালি বিদায় নিল গ্রুপ পর্বেই। দক্ষিণ আমেরিকার পরাশক্তি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাও তো তাদের খুদে প্রতিবেশী উরুগুয়ের ঔজ্জ্বল্যে ম্লান। বিশ্বকাপে এবার আগের তুলনায় অনেক বেশি সমশক্তির লড়াই হয়েছে। ভবিষ্যদ্বাণী করতে তাই অক্টোপাসের অতিপ্রাকৃত ক্ষমতারও প্রয়োজন পড়েছে!
দুই তরুণ দল স্পেন ও জার্মানি এবার প্রথম আর তৃতীয় হয়েছে। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে এরা আরও ভালো আর শক্তিশালী হয়েই অংশ নেবে। ফ্রান্স, ইংল্যান্ড আর ইতালি দলটাও এখন তরুণদের নিয়ে নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। আফ্রিকা, এশিয়া আর আমেরিকার দলগুলো আরও ভালো করবে বলে আশা করছি। এও প্রার্থনা করছি, দুঙ্গা অধ্যায়ের সমাপ্তি হওয়ায় ব্রাজিল তাদের পুরোনো ছন্দময় আক্রমণাত্মক ফুটবলে ফিরে যাবে।
একজন জার্মান হিসেবে আমার কাছে ২০১০ বিশ্বকাপ স্মরণীয় হয়ে থাকবে অবশ্যই। ওজিল আর মুলারের মতো তরুণ খেলোয়াড়েরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের তুলে ধরেছে। এই দলটা এখন এমন একটা ধরন আর ছকে খেলে, যেটি ফলদায়ক তো বটেই, দেখলেও চোখ জুড়িয়ে যায়। ল্যাম্পার্ডের সেই গোলের পর ১৯৬৬-র ভূত নিশ্চয়ই এখন তৃপ্তির সঙ্গে বিশ্রাম নেবে।
স্পেন যোগ্যতর দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ম্যাটাডোরদের সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেই তারা লড়াই করেছে। খেলার মধ্যে ছিল স্টাইল, প্যাশন; পাসিং আর মুভমেন্ট। নিজেদের সেরাটা না খেলেই ওরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেরাটা না খেলেও জেতা সব গ্রেট দলের বৈশিষ্ট্য। মাঠে কী হয়েছে, সব ভুলে গিয়ে হল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা যে চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে গার্ড অব অনার দিল, এই দৃশ্যও আমার মন ছুঁয়ে গেছে। বুকের মধ্যে জগদ্দল পাথর হয়ে চেপে বসা কষ্ট ভুলে দাঁড়িয়ে হাততালি দেওয়ার শক্তিই বা কজনের থাকে!
অনেক দিক দিয়েই আফ্রিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় হবে, শেষ পর্যন্ত সুন্দর ফুটবল জয়ী হওয়ায়। আগামী চার বছরে ফুটবল কীভাবে এগোয়, কতটা বদলায়, সেটাই এখন দেখার।
No comments