তাঁরা দুজন
পুরো বিশ্ব অধীর অপেক্ষায়। অপেক্ষায় আছেন তাঁরাও। তবে সম্ভবত বিনিদ্র রজনী সঙ্গী করে!
কারা? কারা আবার, বিশ্বকাপের ৩২ দলের ম্যানেজার। শুধু ‘কোচ’ বললে ব্যাপ্তিটা পুরো বোঝা যায় না বলেই বোধ হয় ফুটবলে কোচের বদলে ম্যানেজার। শুধু তো প্রথাগত কোচিং নয়। দল কীভাবে খেলবে, কার কী ভূমিকা—এসব তো আছেই। মাঠের বাইরেও তো কত কাজ! ফুটবল যতটা খেলোয়াড়দের খেলা, ম্যানেজারেরও বোধ হয় তার চেয়ে কম নয়।
ফুটবলারদের মতো ম্যানেজারদের মোক্ষধামের নামও বিশ্বকাপ। বড় পার্থক্য হলো, বিশ্বকাপ ম্যানেজারদের বধ্যভূমিও। ‘কোচ দুই প্রকার—বরখাস্ত হয়েছে অথবা বরখাস্ত হতে চলেছে’—কথাটার জন্ম বোধ হয় ফুটবলকে মাথায় রেখেই।
মার্সেলো লিপ্পি অনেক বড় কোচ। মনে হচ্ছে, খুব বুদ্ধিমানও। বিশ্বকাপের আগেই বলে দেন, ‘বিশ্বকাপের পর আর আমি নেই।’ ২০০৬ বিশ্বকাপ জেতার পর অনেক সাধ্যসাধনায়ও থাকেননি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের যখন মোটেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মতো লাগছে না, আবার ফিরেছেন আজ্জুরিদের উদ্ধারকর্তা হয়ে। এবারও বলে দিয়েছেন, বিশ্বকাপই শেষ। উত্তরসূরিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ম্যানেজারদের বিনিদ্র রজনীর কথা বলছিলাম। লিপ্পি বোধ হয় ব্যতিক্রম। তিনি শান্তিতেই ঘুমাচ্ছেন।
কিন্তু দুঙ্গা? ম্যারাডোনা? তাঁদের বোধ হয় ঘুমের বড়িটড়ি লাগছে। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ শুরুর আগেই একটা রেকর্ড করে বসে আছে। এই প্রথম দুজন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ম্যানেজারের ভূমিকায়। দায়িত্বটা নিয়ে দুজনই বড় ঝুঁকি নিয়েছেন। দুঙ্গার চেয়ে ম্যারাডোনাই বেশি। আর্জেন্টাইনদের হূদয়ে তাঁর আসন। বিশ্বকাপের পরও তা থাকবে তো!
দুঙ্গার সেই ভয় নেই। দুঙ্গাকে পছন্দ করেন, এমন একজন ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকের সঙ্গেও পরিচয় হয়নি ২০০৬ বিশ্বকাপে। ২৪ বছর পর ব্রাজিলের বিশ্বকাপ-খরা ঘুচল যাঁর নেতৃত্বে, তাঁর প্রায় খলনায়কের ভাবমূর্তি! ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে ও’গ্লোবো টিভির এক সাংবাদিক তো দুঙ্গাকে ‘প্রতারক’ বলে গালিও দিয়েছিলেন। প্রতারণা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের চিরন্তন আদর্শের সঙ্গে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের কোচ ছিলেন কার্লোস আলবার্তো পাহেইরা। কিন্তু দুঙ্গাই সে দলের ‘আগে জিতি, ফুটবল-সৌন্দর্যের চিন্তা পরে’ দর্শনের প্রতীক।
কোচ দুঙ্গা ব্যতিক্রম হবেন কীভাবে! ইংল্যান্ড দলের ইতালিয়ান কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলো সেদিন বলছিলেন, ফিওরেন্টিনায় কাটানো চার বছরই দুঙ্গাকে ‘বাস্তববাদী’ বানিয়ে দিয়েছে। দুঙ্গার ব্রাজিল তাই ‘জোগো বনিতো’কে বিসর্জন দিয়ে শুধুই জয়ের জন্য খেলে। এ নিয়ে সমালোচনা হলে বলেন, ‘ব্রাজিলের কাছে সুন্দর ফুটবল দেখতে চাওয়াটা ইউরোপের ষড়যন্ত্র।’
কিন্তু ব্রাজিলিয়ান মিডিয়াও যে দুঙ্গার ব্রাজিলকে পছন্দ করছে না। এরও জবাব আছে দুঙ্গার কাছে। এটা নাকি বিতর্ক তৈরি করে পত্রিকা বিক্রি আর টিভি রেটিং বাড়ানোর কৌশল।
সাফল্য কিন্তু দুঙ্গা ভালোই পেয়েছেন। কোপা আমেরিকায় ফাইনালের আগ পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলল আর্জেন্টিনা, অথচ চ্যাম্পিয়ন ঠিকই ব্রাজিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কনফেডারেশন কাপও। তার পরও দুঙ্গা খলনায়ক! আজকের খেলার পাতায়ই পড়ুন না, ১৯৮২ বিশ্বকাপের অধিনায়ক সক্রেটিস কেমন ধুয়ে দিয়েছেন দুঙ্গাকে।
খেলোয়াড় হিসেবে যেমন দুজন ছিলেন দুই মেরুর, কোচিং-দর্শনেও তাই। একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার, আরেকজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ম্যারাডোনার কাজ ছিল সৃষ্টি করা আর দুঙ্গার ধ্বংস করা। ম্যারাডোনা কদিন আগেই তো বললেন, সুন্দর ফুটবল খেলাটাও তাঁর কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কিন্তু ফুটবল কোচকে তো দলকে শুধু ‘যাও, সুন্দর ফুটবল খেলো’ বললেই হয় না। আরও অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। নিজের দলের শক্তির জায়গা, প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা, সে অনুযায়ী ট্যাকটিকস। পরিস্থিতি বুঝে যা বদলাতেও হয়। এটা ম্যারাডোনার মতো আবেগপ্রবণ মানুষের কাজ কি না—এই প্রশ্ন কিন্তু আর্জেন্টিনাতেই গুরুতরভাবে উঠে আছে।
বড় খেলোয়াড়েরা কখনো বড় কোচ হয় না—কথাটা প্রায় স্বতঃসিদ্ধ। ম্যারাডোনার মতো সহজাত প্রতিভাবানদের জন্য তা হওয়া আরও কঠিন। যে কাজটা তিনি অবলীলায় করতেন, অন্য কেউ কেন সেটি করতে গলদঘর্ম হচ্ছে—এটা বোঝাই তো কঠিন তাঁর জন্য। পেলের সর্বকালের সেরার স্বীকৃতি পাওয়ার মূলে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল, খেলার মাঠে চিন্তার এমন সব অভিনবত্ব দেখাতেন, যা দেখে মানুষ বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যেত। কোনো একটা পরিস্থিতিতে এক কোটি সম্ভাবনা থাকলে পেলে নাকি করতেন এক কোটি এক নম্বরটা! সেই পেলে নিজের ভিডিও ফুটেজ দেখে বিস্মিত হয়ে বলেছিলেন, ‘কীভাবে সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ে আমি সিদ্ধান্তটা নিতাম, ভেবে নিজেই অবাক হই।’
বড় খেলোয়াড়দের এটা সহজাত ক্ষমতা। যে কারণে তাঁদের বিশ্লেষণী ক্ষমতাও সাধারণত খুব ভালো হয় না। বিশ্বকাপ নিয়ে পেলের বিফল ভবিষ্যদ্বাণীগুলোই এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কোচের ভূমিকায় বড় কোনো খেলোয়াড়ের বিশ্বকাপ-সাফল্য পাওয়ার একমাত্র উদাহরণ বলতে হবে ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারকে। ১৯৮৪ সালে যখন জার্মানির দায়িত্ব নেন, কোচিংয়ের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতাই ছিল না তাঁর। দুই বছর পর ফাইনালে তুললেন জার্মানিকে, ১৯৯০ বিশ্বকাপে তো জেতালেন ট্রফিই। তবে বেকেনবাওয়ার তো খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই চিন্তাশীলতার প্রমাণ রেখে এসেছেন। তাঁর ইতিহাসবোধটাও খুব প্রখর। রসবোধও। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের দিন এক জার্মান সাংবাদিক তাঁর রুমে যান কথা বলতে। হঠাৎ বেকেনবাওয়ার হো হো করে হাসতে শুরু করলেন। হতভম্ব সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘চিন্তা করো, এই পচা দল নিয়ে আমরা ফাইনালে উঠে গেছি!’
অধিনায়ক-কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব আছে শুধুই বেকেনবাওয়ারের। ‘শুধুই’ শব্দটা কি এই বিশ্বকাপের পরও থাকবে? থাকলে কিন্তু দুঙ্গা-ম্যারাডোনার কপালে দুঃখ আছে!
কারা? কারা আবার, বিশ্বকাপের ৩২ দলের ম্যানেজার। শুধু ‘কোচ’ বললে ব্যাপ্তিটা পুরো বোঝা যায় না বলেই বোধ হয় ফুটবলে কোচের বদলে ম্যানেজার। শুধু তো প্রথাগত কোচিং নয়। দল কীভাবে খেলবে, কার কী ভূমিকা—এসব তো আছেই। মাঠের বাইরেও তো কত কাজ! ফুটবল যতটা খেলোয়াড়দের খেলা, ম্যানেজারেরও বোধ হয় তার চেয়ে কম নয়।
ফুটবলারদের মতো ম্যানেজারদের মোক্ষধামের নামও বিশ্বকাপ। বড় পার্থক্য হলো, বিশ্বকাপ ম্যানেজারদের বধ্যভূমিও। ‘কোচ দুই প্রকার—বরখাস্ত হয়েছে অথবা বরখাস্ত হতে চলেছে’—কথাটার জন্ম বোধ হয় ফুটবলকে মাথায় রেখেই।
মার্সেলো লিপ্পি অনেক বড় কোচ। মনে হচ্ছে, খুব বুদ্ধিমানও। বিশ্বকাপের আগেই বলে দেন, ‘বিশ্বকাপের পর আর আমি নেই।’ ২০০৬ বিশ্বকাপ জেতার পর অনেক সাধ্যসাধনায়ও থাকেননি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের যখন মোটেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মতো লাগছে না, আবার ফিরেছেন আজ্জুরিদের উদ্ধারকর্তা হয়ে। এবারও বলে দিয়েছেন, বিশ্বকাপই শেষ। উত্তরসূরিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ম্যানেজারদের বিনিদ্র রজনীর কথা বলছিলাম। লিপ্পি বোধ হয় ব্যতিক্রম। তিনি শান্তিতেই ঘুমাচ্ছেন।
কিন্তু দুঙ্গা? ম্যারাডোনা? তাঁদের বোধ হয় ঘুমের বড়িটড়ি লাগছে। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ শুরুর আগেই একটা রেকর্ড করে বসে আছে। এই প্রথম দুজন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ম্যানেজারের ভূমিকায়। দায়িত্বটা নিয়ে দুজনই বড় ঝুঁকি নিয়েছেন। দুঙ্গার চেয়ে ম্যারাডোনাই বেশি। আর্জেন্টাইনদের হূদয়ে তাঁর আসন। বিশ্বকাপের পরও তা থাকবে তো!
দুঙ্গার সেই ভয় নেই। দুঙ্গাকে পছন্দ করেন, এমন একজন ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকের সঙ্গেও পরিচয় হয়নি ২০০৬ বিশ্বকাপে। ২৪ বছর পর ব্রাজিলের বিশ্বকাপ-খরা ঘুচল যাঁর নেতৃত্বে, তাঁর প্রায় খলনায়কের ভাবমূর্তি! ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে ও’গ্লোবো টিভির এক সাংবাদিক তো দুঙ্গাকে ‘প্রতারক’ বলে গালিও দিয়েছিলেন। প্রতারণা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের চিরন্তন আদর্শের সঙ্গে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের কোচ ছিলেন কার্লোস আলবার্তো পাহেইরা। কিন্তু দুঙ্গাই সে দলের ‘আগে জিতি, ফুটবল-সৌন্দর্যের চিন্তা পরে’ দর্শনের প্রতীক।
কোচ দুঙ্গা ব্যতিক্রম হবেন কীভাবে! ইংল্যান্ড দলের ইতালিয়ান কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলো সেদিন বলছিলেন, ফিওরেন্টিনায় কাটানো চার বছরই দুঙ্গাকে ‘বাস্তববাদী’ বানিয়ে দিয়েছে। দুঙ্গার ব্রাজিল তাই ‘জোগো বনিতো’কে বিসর্জন দিয়ে শুধুই জয়ের জন্য খেলে। এ নিয়ে সমালোচনা হলে বলেন, ‘ব্রাজিলের কাছে সুন্দর ফুটবল দেখতে চাওয়াটা ইউরোপের ষড়যন্ত্র।’
কিন্তু ব্রাজিলিয়ান মিডিয়াও যে দুঙ্গার ব্রাজিলকে পছন্দ করছে না। এরও জবাব আছে দুঙ্গার কাছে। এটা নাকি বিতর্ক তৈরি করে পত্রিকা বিক্রি আর টিভি রেটিং বাড়ানোর কৌশল।
সাফল্য কিন্তু দুঙ্গা ভালোই পেয়েছেন। কোপা আমেরিকায় ফাইনালের আগ পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলল আর্জেন্টিনা, অথচ চ্যাম্পিয়ন ঠিকই ব্রাজিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কনফেডারেশন কাপও। তার পরও দুঙ্গা খলনায়ক! আজকের খেলার পাতায়ই পড়ুন না, ১৯৮২ বিশ্বকাপের অধিনায়ক সক্রেটিস কেমন ধুয়ে দিয়েছেন দুঙ্গাকে।
খেলোয়াড় হিসেবে যেমন দুজন ছিলেন দুই মেরুর, কোচিং-দর্শনেও তাই। একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার, আরেকজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ম্যারাডোনার কাজ ছিল সৃষ্টি করা আর দুঙ্গার ধ্বংস করা। ম্যারাডোনা কদিন আগেই তো বললেন, সুন্দর ফুটবল খেলাটাও তাঁর কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কিন্তু ফুটবল কোচকে তো দলকে শুধু ‘যাও, সুন্দর ফুটবল খেলো’ বললেই হয় না। আরও অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। নিজের দলের শক্তির জায়গা, প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা, সে অনুযায়ী ট্যাকটিকস। পরিস্থিতি বুঝে যা বদলাতেও হয়। এটা ম্যারাডোনার মতো আবেগপ্রবণ মানুষের কাজ কি না—এই প্রশ্ন কিন্তু আর্জেন্টিনাতেই গুরুতরভাবে উঠে আছে।
বড় খেলোয়াড়েরা কখনো বড় কোচ হয় না—কথাটা প্রায় স্বতঃসিদ্ধ। ম্যারাডোনার মতো সহজাত প্রতিভাবানদের জন্য তা হওয়া আরও কঠিন। যে কাজটা তিনি অবলীলায় করতেন, অন্য কেউ কেন সেটি করতে গলদঘর্ম হচ্ছে—এটা বোঝাই তো কঠিন তাঁর জন্য। পেলের সর্বকালের সেরার স্বীকৃতি পাওয়ার মূলে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল, খেলার মাঠে চিন্তার এমন সব অভিনবত্ব দেখাতেন, যা দেখে মানুষ বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যেত। কোনো একটা পরিস্থিতিতে এক কোটি সম্ভাবনা থাকলে পেলে নাকি করতেন এক কোটি এক নম্বরটা! সেই পেলে নিজের ভিডিও ফুটেজ দেখে বিস্মিত হয়ে বলেছিলেন, ‘কীভাবে সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ে আমি সিদ্ধান্তটা নিতাম, ভেবে নিজেই অবাক হই।’
বড় খেলোয়াড়দের এটা সহজাত ক্ষমতা। যে কারণে তাঁদের বিশ্লেষণী ক্ষমতাও সাধারণত খুব ভালো হয় না। বিশ্বকাপ নিয়ে পেলের বিফল ভবিষ্যদ্বাণীগুলোই এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কোচের ভূমিকায় বড় কোনো খেলোয়াড়ের বিশ্বকাপ-সাফল্য পাওয়ার একমাত্র উদাহরণ বলতে হবে ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারকে। ১৯৮৪ সালে যখন জার্মানির দায়িত্ব নেন, কোচিংয়ের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতাই ছিল না তাঁর। দুই বছর পর ফাইনালে তুললেন জার্মানিকে, ১৯৯০ বিশ্বকাপে তো জেতালেন ট্রফিই। তবে বেকেনবাওয়ার তো খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই চিন্তাশীলতার প্রমাণ রেখে এসেছেন। তাঁর ইতিহাসবোধটাও খুব প্রখর। রসবোধও। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের দিন এক জার্মান সাংবাদিক তাঁর রুমে যান কথা বলতে। হঠাৎ বেকেনবাওয়ার হো হো করে হাসতে শুরু করলেন। হতভম্ব সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘চিন্তা করো, এই পচা দল নিয়ে আমরা ফাইনালে উঠে গেছি!’
অধিনায়ক-কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব আছে শুধুই বেকেনবাওয়ারের। ‘শুধুই’ শব্দটা কি এই বিশ্বকাপের পরও থাকবে? থাকলে কিন্তু দুঙ্গা-ম্যারাডোনার কপালে দুঃখ আছে!
No comments